নাটক রিভিউ || পথে হলো দেরী
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে পথে হলো দেরী। এই নাটকটি ১৩/১৪ দিন আগে রিলিজ হয়েছে। এই নাটকটি রিলিজ হওয়ার পরের দিন দেখেছিলাম,তবে আপনাদের সাথে রিভিউ করার সুযোগ পাইনি। যাইহোক এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে জিয়াউল ফারুক অপূর্ব এবং তানজিম সাইয়ারা তটিনী। এই জুটির খুব সম্ভবত প্রথম নাটক দেখলাম আমি। তবে এই দুজনের জুটি বেশ ভালো লেগেছে আমার কাছে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
নাটক | পথে হলো দেরী |
---|---|
রচনা ও পরিচালনা | জাকারিয়া সৌখিন |
অভিনয়ে | জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, তানজিম সাইয়ারা তটিনী,মনোজ প্রামাণিক, সালহা খানম নাদিয়া এবং আর অনেকে |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
প্রচার | ২৪ শে ডিসেম্বর ২০২৩ |
দৈর্ঘ্য | ১ ঘন্টা ৩৬ মিনিট |
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনী নিম্নরুপঃ
নাটকের শুরুতে দেখা যায় নাটকের নায়ক অপূর্ব একটি জুয়েলারির দোকানে যায় হাতের আংটি কিনতে। কারণ অপূর্বর বিয়ে ঠিক করেছে তার পরিবার এবং অপূর্বর হবু বউয়ের জন্য তার বাসা থেকে আংটি কিনতে বলে। অপূর্ব এনগেজমেন্ট এর জন্য অফিস থেকে ছুটি নিয়েছে কয়েকদিনের জন্য। কিন্তু আংটি কেনার পরও ছুটি বাতিল করা হয় এবং অপূর্বর এনগেজমেন্ট এর তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়। কারণ মেলবোর্ন থেকে তটিনী বাংলাদেশে আসে হৃদয়নগর যাওয়ার জন্য। আর তটিনী হচ্ছে অপূর্বর অফিসের চেয়ারম্যানের বন্ধুর মেয়ে। তাই চেয়ারম্যানের অর্ডার ছিলো তটিনীর সাথে অপূর্বকে ই হৃদয়নগর যেতে হবে। কারণ অপূর্ব হচ্ছে সেই অফিসের সেরা কর্মচারী এবং পরপর ৩ বছর অপূর্ব সেরা কর্মচারীর পুরষ্কার জিতে। যাইহোক তটিনীর ইচ্ছে হচ্ছে গাড়িতে চড়ে চমৎকার দৃশ্য দেখতে দেখতে হৃদয়নগর যাবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
তাই শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে অপূর্বকে রওনা দিতে হলো তটিনীকে নিয়ে হৃদয় নগরের উদ্দেশ্যে। যাইহোক অপূর্ব গাড়ি ড্রাইভ করছিল এবং তটিনী পাশে বসেছিল। গাড়িটি ছিলো অপূর্বর অফিসের চেয়ারম্যান স্যারের। তটিনী বেশ উপভোগ করছিল জার্নিটা। অপূর্ব তটিনীর প্রতিটি কথায় বিরক্ত হতে থাকে। তটিনী অপূর্বকে জিজ্ঞেস করার পর, অপূর্ব তটিনীকে খুলে বলে তার এনগেজমেন্ট এর ব্যাপারে। তখন তটিনী বুঝতে পারে অপূর্বর বিরক্তির কারণটা। যাইহোক এরপর তারা দুইজন মন খুলে কথা বলতে বলতে যেতে লাগলো। তবে কিছুক্ষণ পর তাদের গাড়ি ডিস্টার্ব দিলো। এরপর একজন মেকানিক রাস্তায় গাড়ি ঠিক করে, গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। তারপর তারা হেঁটে হেঁটে হৃদয় নগরের উদ্দেশ্যে যেতে লাগে এবং গাড়ি খুঁজতে থাকে। যেতে যেতে তাদের বিভিন্ন ধরনের মজার অভিজ্ঞতা হয় এবং একজন আরেকজনকে পছন্দ করতে শুরু করে। তারা এক পর্যায়ে ফুলতলী নামক একটি জায়গায় পৌঁছে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
ফুলতলী তে অপূর্বর এক্স গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে হয়েছে। তাই অপূর্ব তার এক্স গার্লফ্রেন্ড নাদিয়াকে জ্বালানোর জন্য, তটিনীকে নিজের বউ সাজিয়ে, নাদিয়ার বাড়িতে যায়। নাদিয়া অপূর্ব এবং তটিনীর ভালোবাসার অভিনয় দেখে,প্রথমে সত্যি সত্যি মনে করে তারা দু'জন স্বামী স্ত্রী। কিন্তু পরবর্তীতে ধরা পড়ে যায়। যাইহোক তারা শেষ পর্যন্ত হৃদয় নগর পৌঁছাতে সক্ষম হয়। মূলত মেলবোর্নে থাকা অবস্থায় অনলাইনের মাধ্যমে, তটিনী একজন কবির কবিতা পড়তে পড়তে ভালোবেসে ফেলেছিল কবিকে। সেই কবি হচ্ছে মনোজ প্রামাণিক এবং তটিনী ও মনোজ নিয়মিত ফোনে কথা বলতো। আর মনোজের সাথে দেখা করতেই হৃদয়নগর যায় তটিনী। কিন্তু যাওয়ার পর বুঝতে পারে আসলে এটা ভালোবাসা না,শুধুমাত্র একটা মোহ কাজ করেছিল কবির প্রতি। আসলে সে মনে মনে অনেক ভালোবেসে ফেলেছিল অপূর্বকে। কিন্তু অপূর্বর তো বিয়ে ঠিক হয়ে আছে আগে থেকেই। যদিও অপূর্বও তটিনীকে মনে মনে অনেক ভালোবাসে। পরবর্তীতে কি হলো সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই নাটকটি দেখতে হবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের লিংক👇👇
ব্যক্তিগত মতামত
আসলে আমরা অনেক সময় বুঝতে ভুল করি যে, কোনটা সত্যিকারের প্রেম এবং কোনটা মোহ। মোহ বা আকর্ষণ কিছু সময় পর কেটে যায়, কিন্তু প্রকৃত ভালোবাসা আজীবন থাকে। এই নাটকে নায়িকা তটিনী প্রথমে বুঝতে না পারলেও, পরবর্তীতে বুঝতে পারে যে মনোজের প্রতি তার একটা মোহ ছিলো। তবে প্রকৃত ভালোবাসা অনেক সময় মনের অজান্তেই হয়ে যায়। তাইতো অপূর্ব এবং তটিনী একে অপরকে কখন ভালোবেসে ফেলেছিল,সেটা বুঝতেই পারেনি। তবে ভালোবাসলে মুখ ফুটে বলে দেওয়া উচিত। কারণ অনেক সময় না বলার কারণে প্রিয় মানুষকে হারাতে হয়। তারপর সারাজীবন আফসোস করতে হয় এবং প্রিয় মানুষকে হারানোর যন্ত্রণা বয়ে বেড়াতে হয়। নাটকটি একেবারে বাস্তব সম্মত ছিলো। কারণ বাস্তবেও এমন ঘটনা অহরহ ঘটতে দেখা যায়। সবাই বেশ ভালো অভিনয় করেছে। সবমিলিয়ে নাটকটি বেশ উপভোগ করেছি।
আমার রেটিং
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | নাটক রিভিউ |
---|---|
স্ক্রিনশট ক্রেডিট | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ৭.১.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
পথে হলো দেরি এই নাটকটা আমি দেখেছিলাম কয়েকদিন আগে। এই নাটকের মূল কাহিনী টা অনেক বেশি সুন্দর ছিল। তারা দুজনে একে পরের সাথে সময় কাটানোর সময় কখন যে নিজেদের অজান্তে একে অন্যকে ভালোবেসে ফেলেছিল, তা তাঁরা নিজেরাও জানত না। শেষ পর্যায়ে তাদের দুজনের মিল হয়েছিল। আমার কাছে পুরো নাটকটা দেখতে কেমন ভালো লেগেছিল, তেমনি নাটকের রিভিউটাও অনেক বেশি ভালো লেগেছে। পুরো নাটকের রিভিউটা সুন্দর ভাবে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এই নাটকটি আপনি দেখেছিলেন,জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। হ্যাঁ শেষে দু'জনের মিল হয়েছিল। যাইহোক এভাবে উৎসাহিত করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
এই নাটক এতটাই সুন্দর যার জন্য দুবার দেখা হয়ে গিয়েছে। অপূর্ব আর তটিনীর অভিনয় অসাধারণ হয়েছে। এই নাটকে খুব সুন্দর কয়েকটি গ্ৰামের কথা বলা হয়েছে আর সম্পূর্ণ নাটকের দৃশ্য গ্ৰামে ছিলো বলে আরো বেশি ভালো লেগেছে। আপনার রিভিউ পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
আসলেই আপু নাটকটি ভীষণ সুন্দর। একবার দেখলে বারবার দেখতে ইচ্ছে করে। যাইহোক রিভিউ পড়ে এমন প্রশংসনীয় মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Twitter Link
খুব সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি। অপূর্বের নাটকগুলো আমার কাছে বরাবরই খুবই ভালো লাগে। এই নাটকের মূল কাহিনীটা অনেক বেশি সুন্দর ছিল। নাটকটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
হ্যাঁ আপু অপূর্বর নাটকগুলো আমারও ভীষণ পছন্দ। তাই সবসময় চেষ্টা করি অপূর্বর নাটকগুলো দেখতে। যাইহোক রিভিউ পড়ে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া ভালোবাসা এবং মোহ কোন টি বোঝা বেশ মুশকিল।তটিনী অপূর্ব সঙ্গে যেতে যেতে অপূর্বকে ভালোবেসে ফেলেছে। কিন্তু অপূর্বরতো এনগেজমেন্ট ঠিক হয়ে আছে। এমন জায়গা শেষ করলেন ভাইয়া পরবর্তী কাহিনী জানার জন্য নাটকটি অবশ্যই দেখতে হবে। বেশ মজার ছিল নাটকটি মনে হচ্ছে। আপনিও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন।
আপু সম্পূর্ণ কাহিনী বলে দিলে তো আর নাটকটি কেউ দেখবে না। নাটকটি আসলেই খুব সুন্দর। সময় পেলে দেখে নিবেন আপু। যাইহোক রিভিউ পড়ে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
আমি নাটক দেখতে অনেক বেশি পছন্দ করি। আর আমার কাছে নাটক দেখতে অনেক বেশি ভালো লাগে, সেই সাথে নাটকের রিভিউ পোস্টও আমার ভালো লাগে। আসলেই প্রকৃত ভালোবাসা কখনো জেনে বুঝে হয় না। প্রকৃত ভালোবাসা নিজেদের অজান্তে কখন হয়ে যায়, তা আমরা কেউই বলতে পারব না। তটিনী এবং অপূর্ব একে অপরকে মনে মনে পছন্দ করে ফেলেছিল। এই নাটকটা যেহেতু আমার এখন পর্যন্ত দেখা হয়নি, তাই নাটকের কাহিনী দেখার জন্য অবশ্যই চেষ্টা করব এই নাটকটা দেখে নেওয়ার। আশা করছি রিভিউর মতো নাটক টা দেখতেও ভালো লাগবে।
নাটকটি দেখে অবশ্যই ভালো লাগবে আপু। তাই অবশ্যই এই নাটকটি দেখে নিবেন। যাইহোক রিভিউ পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আমার কাছে ২০২৩ সালের বেস্ট একটি নাটক এটি! অসাধারণ ছিল সিনেমাটোগ্রাফি থেকে শুরু করে স্ক্রিপ্ট সব! অপূর্বকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই আসলে। আপনি দারুনভাবে রিভিউ দিয়েছেন
ঠিক বলেছেন ভাই,আমার মতে এটা গত বছরের সেরা নাটক। আসলে অপূর্ব সবসময়ই সেরা। যাইহোক রিভিউ পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।