আবোল-তাবোল জীবনের গল্প [ হাসি মুখ ]
হ্যালো বন্ধুরা,
আশা করছি সবাই ভালো আছেন, আর যদি ভালো নাও থাকেন তাহলে অন্তত ভালো থাকার অভিনয়টা সুন্দরভাবে করার চেষ্টা করুন। যদিও আমি নিজেও এই অভিনয়টাকে খুব বেশী পছন্দ করি না। জীবনে দুই ধরনের লোককে আমি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি, এক যারা অভিনয় করে আর দুই যাদের মুখের উপর একটা আলগা মুখোশ থাকে। তবুও আপনাকে বলছি অভিনয় করতে, না ঠিক অভিনয় করতে না অভিনয়ের মতো একটু ভান করতে। কারন এটা আপনার জন্য, আপনার শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এবং নিজের অবস্থান ধরে রাখার জন্য।
মনে হচ্ছে বুঝতে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে, আচ্ছা একটু পরিস্কার করেই বলি তাহলে। আসলে জীবনের আবোল তাবোল গল্পের মাধ্যমে আমি কিছু বিষয় একটু ভিন্নভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করি, তবে হ্যা, এটা নিতান্তই আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে। এখানে যদি কারো জীবন বা চরিত্রের সাথে অপ্রত্যাশিতভাবে মিলে যায় তাহলে সেটা শুধুই কাকতালিয়, এর জন্য কর্তৃপক্ষ না থুক্কু আমি মোটেও দায়ী থাকবো না। মামলা করলেও এই ক্ষেত্রে আপনি হেরে যাবেন, কারন আমি আমার বক্তব্য এবং অবস্থান আগেই সুস্পষ্ট করে নিলাম, হি হি হি। আরে ভাই অভিনয় করেন আর মুখোশ পড়েন যেটাই করেন না কেন? নিজের নিরাপত্তা আগে নাকি, নিজেকে তো বাঁচাতে নাকি? তাই নিজের বিষয়টি আগে ক্লিয়ার করে নিলাম, এবার মূল বিষয়ে ফিরে আসি।
নানা কারনে কিংবা নানা বিষয় নিয়ে আমরা অসন্তুষ্ট থাকি বা হই। কারন চারপাশের ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো সব সময় আমাদের পক্ষে থাকে না, সেগুলোর নেগেটিভ প্রভাব নানাভাবে আমাদের উপর পতিত হয়। যার ফলশ্রুতিতে আমাদের মন খারাপ হয়ে যায় কিংবা আমরা মানসিকভাবে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যাই। আর এখান হতেই আমাদের কিছুটা পরাজয়ের সূত্রপাত ঘটে। পরাজয় শুনে নিশ্চিত আপনি কিছুটা অবাক হয়েছেন? মন খারাপের সাথে আবার পরাজয় কোথা হতে আসলো? দেখুন আপনার চারপাশে যারা আছেন তারা সবাই কিন্তু আপনার পক্ষে কিংবা আপনার শুভাকাংখি নয়। তাই আপনাকে অপ্রস্তুত কিংবা আপনার মন খারাপ দেখলে তারা খুশি হতে পারে, নিজেদের বিজয়ী ভাবতে শুরু করতে পারে। তাই কি দরকার, আপনার মন খারাপ সেটা চারপাশের মানুষগুলোকে প্রদর্শন করার?
একটু অভিনয়ের ছলে হলেও নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করুন, নিজের খারাপ লাগার বিষয়টিকে একটু আড়ালে রাখার চেষ্টা করুন। আপনি নিজের অজান্তেই নিজেকে পরাজয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন, মন খারাপের মানসিকতার আড়ালে আপনার মাঝে হেরে যাওয়ার মানসিকতা তৈরী হচ্ছে, আপনি না চাইলেও আপনার ভিতরে থাকা জাগ্রত শক্তিটিকে অন্ধকারে ঢেকে দিচ্ছেন। হয়তো কখনো এভাবে চিন্তা করেন নাই, আপনার মন খারাপের প্রথম প্রভাবটি গিয়ে আঘাক করবে আপনার মানসিকতার উপর, দ্বিতীয় আঘাতটি করবে আপনার ব্রেনের উপর আর তৃতীয় আঘাতটি করবে আপনার আত্মবিশ্বাসের উপর। যার চূড়ান্ত ফলাফল হবে আপনার অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া এবং নিজের অবস্থান হতে ধীরে ধীরে নিম্নমুখী হওয়া। কথাগুলো শুধু কথা প্রসঙ্গেই বলা না, একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন।
হয়তো আমি নিজে সেটা পারি না, হয়তো এই কারনেই আমি অভিনয়টা পছন্দ করি না। কিন্তু তবুও এটা করতে আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছি, কারন আপনার পরাজয়ে আমার ভিতর কোন রকমের আনন্দের সৃষ্টি হয় না কিন্তু আপনার বিজয়ে আমার মাঝে এক ধরনের অনুভূতি কার্যকর হয়ে উঠে। হ্যা, বিশ্বাস অবিশ্বাস এটা নিতান্তই আপনার বিষয়, কিন্তু আমি এই বিষয়টি ব্লকচেইন জার্নির শুরুর পর হতেই অনুভব করছি। আর এই কারনেই নানাভাবে অচেনা-অজানা মানুষগুলোকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। সময়ে কিংবা অসময়ে যখন যেভাবে আমার কাছে সহযোগিতা চেয়েছে, আমি পারতপক্ষে কোনদিনও কাউকে নিরাশ করি নাই আর ভবিষ্যতে হয়তো করার ইচ্ছাও নেই। এই একটা বিষয়ে আমি বার বার আপনাদের ভাবির কাছে হেরে যাই, যখন সেই মানুষগুলো (যাদের আমি নানাভাবে উপকার করেছি)সব ভুলে আমাকে আঘাত করার চেষ্টা করে, তখনই আপনাদের ভাবির কণ্ঠস্বরটা একটু উঁচু হয়ে যায় আর খোঁচা মারা শুরু করে, বলছিলাম না নিজের খেয়ে অন্যের মহিষ তাড়াতে না!
এখানে আরো একটা বিষয় লুকায়িত রয়েছে, যেটা হয়তো আপনি কখনো চিন্তাও করেন নাই। আপনার মুখের এই হাসিটা, সেটা হোক অভিনয় কিংবা সত্যি। আপনার মানসিকতাকে দারুণভাবে পাল্টে দিতে পারে, আপনার মুখের হাসিটা আপনার চারপাশে থাকা ভিন্ন মতের মানুষগুলোর হৃদয়ে আঘাত হানতে পারে, আপনার মুখের হাসি আপনার কর্মচঞ্চলতা বাড়িয়ে দিতে পারে এবং সর্বোপরি নিজের আত্মবিশ্বাসকে ধরে রাখতে দারুনভাবে কাজ করে। আপনি কি জানেন? আপনার হাসি মুখটার দারুণ একটা প্রভাব আপনার ব্রেনে পড়ে এবং তার প্রভাবে আপনার মাঝে সুখি হওয়ার অনুভূতিগুলো নির্জীব থেকে চঞ্চল হয়ে উঠে? এটা আমি না শুধু আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর বিজ্ঞান বলছে। আর বিশ্বাস না হলে ট্রাই করে দেখতে পারেন।
সুতরাং দিনশেষে নিজের অবস্থা যাই হোক, জয় পরাজয় কিংবা ব্যর্থতা যাই আসুক নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করুন। হেরে যাওয়ার আগেই কেন হারতে যাবেন? ব্যর্থ হওয়ার পূর্বেই কেন নিজেকে ব্যর্থ প্রমানীত করবেন? একটু চেষ্টা কিংবা অভিনয়ের ছলে যদি পুরো পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে, তাহলে সেই চেষ্টাটা কেন করবেন না? উত্তরটি নিজে নিজের ভিতর হতে বের করার চেষ্টা করুন। আমি আমার পথে চলছি এবং চলতে থাকবো, হয়তো কিছুটা হলেও আপনার বিবেককে জাগ্রত করবে আর না হলেও আমার কোন ক্ষতি নেই, আমিতো আমার মতো থাকবো।
Image Taken from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
মাঝে মাঝে ভালো থাকার অভিনয় করার মাঝেও প্রশান্তি আছে। হয়তো ভিতরে দীর্ঘশ্বাস কিন্তু মুখে হাসি এর নাম হয়তো বেঁচে থাকা। জীবন যুদ্ধে মাঝে মাঝে আমরা হার মেনে যাই। হয়তো অভিনয় করতে গিয়েও নিজের কাছে হেরে যাই। হয়তো লোকের চোখে আমি সেরা অভিনেতা কিন্তু নিজের অন্তরের অনুভূতি গুলো কিংবা কষ্টগুলো অভিনয় দিয়ে আড়াল করা যায় না। পরাজয়ের গ্লানি জীবনতে তিলে তিলে শেষ করে দেয়। যাই হোক ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আপনি বরাবরই দারুন লিখেন।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার আবোল তাবোল জীবনের গল্পের মাঝে ফুটে উঠেছে বাস্তব জীবনের হাজার কথা। যদিও আপনি কোথাও কিছু কম বলেছেন, কিন্তু আবার বাকিও রাখেননি বলতে। নিজের মনের আঘাত গুলো ভিতরে চেপে রেখে যতটাই অভিনয় করার চেষ্টা করি না কেন, কিন্তু মন খারাপের সেই দৃশ্যটা চেহারায় সুস্পষ্টভাবে দেখা যায়। নিজের খেয়ে অন্যের মহিষ তাড়ানো কথাটা একেবারেই সত্য। যদিও ভাবির রাগারাগি করে। কিন্তু আমার বেলা এর ব্যতিক্রম কিছু নয়, কারো ভালো করতে গিয়ে যখন বাঁশ খাই, তখন পরিবারের সবাই আঙ্গুল তুলে কথা বলে। তখন নিরুপায় হওয়া ছাড়া কিছুই থাকে না। হাজার ব্যর্থতার মাঝেও নিজেকে শক্ত রাখার চেষ্টা করছি। তবুও কেন জানি মনে হয় হেরে যাওয়ার আগেই হেরে যাচ্ছি। এত সুন্দর কথাগুলো বলে মনে কিছুটা প্রশান্তি যোগানোর জন্য, আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম ভাইয়া।
নিজেকে টেনশন ফ্রি ভাবে উপস্থাপন করলে আসলেই অনেক সময় অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শত্রুরাও বিভ্রান্ত হয়। হিতাকাংখীরাও আশ্বস্ত হয়।
এটা আসলে সত্যিই বলেছেন ভাইয়া।এই ফলাফলটা নিজের সাথে না জড়ানোর জন্যেই সবসময় দরকার নিজেকে নিজের মতো করে উপস্থাপন করা।মন খারাপ কিংবা ভালো যাই হোক না কেনো,মানুষকে দেখাতে তা বুঝে শুনে দেখানোই উচিত।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
শিক্ষণীয় কিছু বিষয় উপস্থাপন করেছেন ভাইয়া, আপনার পোস্টের মাধ্যমে অনেক কিছু শিক্ষার আছে ,তবে সত্যি বলতে কিছু মানুষের জন্যে সময়ে সময়ে নিজের সাথেই অভিনয় করতে হয় , আর হা মন খারাপ থেকে মনের সাথে আর নিজের সাথে যুদ্ধ না করে নিজেকে অন্ধকারে ঠেলে না দিয়ে সামনের দিকে আগানো উচিত।