গল্প: ভৌতিক সাইকেল। (পর্ব -৫) || Story: Ghost Cycle.
রুবিউক সব শুনে ভেতরে ভেতরে বেশ কষ্ট পেলো, সত্যিই লোকটার সাথে অনেক বড় অন্যায় হয়েছে। তবে সে এই অতৃপ্ত আত্মা আর সাইকেলটা নিয়ে সে বেশ ভয়ে আছে। তবুও কিছুটা সাহস করে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো এখন আমার কাছে তুমি কি চাও? ভৌতিক সাইকেল প্রথমেই জোরে হাসতে লাগলো, এরপর আবার কাঁদতে শুরু করলো। এরপর বলে উঠলো, রুবিউক আমার মৃত্যুর বদলা নিতে হবে। তোমার না করার কোন সুযোগ নেই কারণ তুমি যদি আমার কথা না শোন তাহলে তোমার বাবার মতো জংখাইখো রোগে মারা যাবে। না আমি তোমাকে ভয় দেখাতে চাই না, আমি তোমাকে অনুরোধ করছি তুমি আমার মুক্তির ব্যাবস্থা করে দাও। আর ঐ অসভ্য লোকগুলোর সর্বনাশ চাই আমি।
রুবিউক কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা, তার কথায় সম্মতি দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় তার হাতে নেই। সাইকেলটা বলে উঠে ভয় নেই তুমি বেরিয়ে এসো, আজ থেকে আমরা বন্ধু হলাম। তবে আমাদের কাজ হলো লোকগুলোকে তাদের কৃতকর্মের শাস্তি দেয়া। ভয়কে জয় করে রুবিউক সাইকেলটার দিকে এগিয়ে আসে। সাইকেলটা বলে চেপে বসো আমার পিঠে, আমরা বাড়ির পথে রওনা দেবো। ঠিক সে এবার সাইকেলটায় চেপে বেশ চোখের পলকে বাসায় ফিরে এসেছে।
বাসায় ফিরে রুবিউক ভাবতে থাকে পুরো ব্যাপারটা নিয়ে, কাজটা ভীষণ ভয়ংকর। কিভাবে করবে সে এই রহস্যের সমাধান? যাইহোক ভাবতে ভাবতে তার মাথায় বেশ কিছু বুদ্ধি আসে, প্রথমত সাইকেলটার এই ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সে বেশ পয়সা কামাতে পারে। আর খুনিদের শাস্তির ব্যাবস্থা করতে হবে। তবে প্রথমে তার বেশ কিছু পয়সা আর নামডাক করতে হবে। সে বিভিন্ন বড় বড় সাইকেল প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে, এতে করে খুব সহজেই সে তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। আর সুখ্যাতি কামানোর পর প্রতিশোধ নেবে সেই আইসক্রিম বিক্রেতার উপর। এরকম সব উল্টা পাল্টা চিন্তা করতে করতেই ভোর রাতে সে ঘুমিয়ে পরে।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই ছুটে যায় গ্যারেজে যদিও ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে, তবুও সে সাইকেলটার দিকে এগিয়ে যায়। কাছে আসতেই সাইকেলটা তার আগের ভঙ্গিমায় হাসি দিয়ে বললো, কি ভাবলে রুবিউক? রুবিউক কাঁপা কাঁপা গলায় বলে হ্যা আমি আপনাকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত তবে আমার বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। সাইকেলটা বলে কি পরিকল্পনা করেছো? প্রথমেই আমি তোমাকে নিয়ে বেশ কিছু বড় বড় সাইকেল চ্যাম্পিয়নশীপ প্রতিযোগিতায় অংশ নেবো, আশাকরি তোমার ক্ষমতা দিয়ে আমরা সেখান থেকে জিতে আসবো। আর এভাবেই সবার কাছে পরিচিত হয়ে হতে হতে, আমার বিশ্বাস ঐ লোভী আইসক্রিম বিক্রেতা তোমাকে কিনতে চাইবে। আর এভাবেই ওর কাছাকাছি যাওয়া যাবে। এবার ভৌতিক সাইকেল বলে উঠলো তাহলে চলো শুরু করি আমাদের অভিযান।
ওরা প্রথমেই নববর্ষ উপলক্ষে এলাকার সাইকেল প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। সবাই নতুন এবং দামী সাইকেল নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। আর রুবিউক তার পুরনো আর অদ্ভুত দেখতে সাইকেল নিয়ে প্রতিযোগীতায় দাড়িয়েছে। সবাই হাসতে থাকে রুবিউককে দেখে। কিন্তু মনে মনে রুবিউক জানে সে এখানে বিজয়ী হবে। প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে রুবিউক সাইকেলে প্যাডেল ঘুরিয়ে দেয়ার সাথে সাথে চোখের নিমেষেই সাইকেল এগিয়ে যেতে থাকে। সবাইকে টপকে নিমেষেই ফিনিশিং টাচ স্পর্শ করে। সবাই হা হয়ে তাকিয়ে থাকে এই অদ্ভুত দেখতে সাইকেলটার দিকে 😲
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1761789942970319308?t=SS3_jbURyNk4j8iAzaycAg&s=19
সামনের পর্বে হয়তো লোভী আইসক্রিম বিক্রেতার সাথে খেলা জমে যাবে। সাইকেল এবং রুবিউক এর বন্ধুত্ব হয়ে গেলো জেনে ভালো লাগলো। ভিন্ন রকম একটি গল্প। যত পরতেছি গল্পটি তত বেশি ভালো লাগতেছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।
বাহ খুব সুন্দর গল্প লিখেন তো। আপনার এই ভৌতিক সাইকেলের পাঁচ নম্বার পর্ব পড়ে খুব ভালো লেগেছে। একদিক দিয়ে বলতে গেলে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে রুবিউক এখন বড়লোক হতে পারবে। তবে এতে ভৌতিক সাইকেলেরও লাভ হবে লোভী আইসক্রিম বিক্রেতার সাথে দেখা হবে। দেখা যাক পরবর্তীতে রুবিউক ভৌতিক সাইকেলের মৃত্যুর বদলা নিতে পারে কিনা জানার অপেক্ষায় রইলাম।