শহরের উষ্ণতম দিনে(তৃতীয় পর্ব)।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
এভাবেই ফরমালভাবে কথা চলল কিছুদিন। একদিন হঠাৎ আমার কাছে প্রশ্ন করল, আচ্ছা তুমি ঢাকায় কোথায় থাক? আমি জিজ্ঞেস করলাম কেন বলো তো? অদিতি বলল যতটুকু জিজ্ঞেস করছি ততটুকু বলবা। একটু হেসে বলে দিলাম আমার ঠিকানা। পরে অদিতি বলল ঠিক আছে।
প্রায় একমাস ওর সঙ্গে আবার কথা শুরু হয়েছে অথচ এতদিনে ও একবারও ওর স্বামী বা সংসার নিয়ে ভুল করেও কিছু আমাকে বলেনি। ও যেন সেই আগের মতোই ইন্ট্রোভার্ট আছে। নিজের যা ইচ্ছা সেটাই করে এমন স্বভাবের। এটা আমার মনে একটু সন্দেহের সৃষ্টি করে। বিয়ের পরে অন্য একটা পরিবারে গিয়েও ওর এতটুকু পরিবর্তন হয়নি। একদিন উৎসাহ নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
আচ্ছা এতদিন আমার কথা তোমার মনে পড়তো না?
হ্যা মনে পড়তো। কিন্তু কেন জিজ্ঞেস করছ?
মনে পড়তো তো আমার সঙ্গে যোগাযোগ করো নাই কেন। আচ্ছা আমাকে কী ভালোবাসো তুমি? আমার সহজ সরল একটা প্রশ্ন??
ও কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল আচ্ছা তোমাকে তো আমি অনেক আগে থেকেই রিজেক্ট করে আসছি। তারপরও এতদিন পর এসে এমন কথা বলছ, বলে একটু হেসে উঠল অদিতি। আর আমি তোমার সঙ্গে যোগাযোগ করি নাই তোমার ভালোর জন্য। আমি তোমাকে ভালো না বাসলেও আমি জানি তুমি আমার জন্য কতটা পাগল আমাকে কতটা পছন্দ করো। আমি কথা শুরু করলে তুমি আবার হয়তো সবকিছু বাদ দিয়ে আমার পেছনে পড়ে থাকতে। আর আমি সেটা কখনোই চাইনি। এজন্যই তোমার সঙ্গে যোগাযোগ করি নাই। তবে হ্যা তোমার মতো বন্ধু তোমার মতো পাশের থাকার মতো মানুষ আমি আর পাইনি।
তুমি চলে গিয়েও কী তোমাকে ভুলতে পেরেছি। বাড়ি থেকে এই পযর্ন্ত অনেক গুলো মেয়ে দেখেছে কিন্তু প্রত্যেকবারই না করে দিয়েছি। কেন জানি মনে হতো না তোমার জায়গা অন্য কাউকে দিতে পারব না।
সত্যি বলছ??
হ্যা মিথ্যা কেন বলব। আচ্ছা তুমি এখন চাকরি করো। না বাড়িতেই থাক।
হ্যা আমিও ছোটখাট একটা চাকরি করি। তাছাড়া বসিয়ে বসিয়ে কে খাওয়াবে বলো।
কথাটা শুনে মনের মধ্যে প্রশ্ন আসলো যতদূর শুনেছিলাম ওর স্বামী ভালো চাকরি করত। সেইরকম কারো বউ এইরকম প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করবে। বিষয়টি কেমন না?
ক্রমাগত আমি যেন আবার ওর প্রতি আসক্ত হয়ে যাচ্ছিলাম এবং ও আমার প্রতি। অফিসে কাজের সময় বাদ দিয়ে আমরা প্রায় সবসময়ই টেক্সট করতাম না হয় ফোনে কথা বলতাম। ওর এইরকম কর্মকাণ্ডে আমার মনে হতো আচ্ছা বিয়ে হয়ে যাওয়া কোনো মেয়ে অন্য ছেলেকে এতোটা সময় কীভাবে দেয়। তবে কী ওর ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। না ওরা দুজন দুজনের মতো। ও নিষেধ করেছিল সেজন্য ওকে আর কিছু জিজ্ঞেস করতাম না। হয়তো এমন প্রশ্নের সম্মূখিন ও হতে চাই না। একদিন হঠাৎ ও আমাকে বলছে আমি আজ ঢাকায় আসছি। সন্ধ্যার সময় দেখা করবা আজকে।
একটু অবাক হলাম। আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য ঢাকা আসছ তুমি??
না তুমি এখনো এতটা স্পেশাল কেউ হয়ে যাও নাই ভাই। আমি আপুর বাসায় যাচ্ছি। ভাবলাম তোমার সঙ্গে দেখা করি। সন্ধ্যায় সময় হবে তোমার।
আগে প্রায়ই আমাকে রাগানোর জন্য ও আমাকে ভাই বলতো। এখনো মনে আছে দেখছি ওর। আমি বললাম ঠিক আছে সন্ধ্যায় দেখা হচ্ছে তাহলে। জায়গা টা ওই বলে দিল। একটা কফি শপ ছিল ওটা। সময়ের আগেই পৌছে গেলাম অবশ্য আমি। গিয়ে বেশ অনেকক্ষণ বসে আছি।
গিয়ে একটা টেবিলে বসলাম এবং একনজরে তাকিয়ে থাকলাম কফিশপের এন্ট্রি গেট টার দিকে। বেশ কিছুক্ষণ পর একটা মেয়ে প্রবেশ করল। তার সঙ্গে যেন আমার সম্পর্ক অনেক আগের। মেয়েটাকে দেখে বুঝতে বাকি রইল না ও অদিতি। ঢুকেই ব্যাগ থেকে ফোন বের করে ফোন দিল আমাকে। আমার ফোন বেজে উঠল। ফোনটা না ধরে এগিয়ে গেলাম ওর দিকে। গিয়ে ওর সামনে দাঁড়াতেই বলল এই কেমন আছ??
ওর কন্ঠস্বর টা এখনো আগের মতোই আছে। আমি বললাম ঠিক আছে চলো ওখানে গিয়ে বসে কথা বলি। দুজন গিয়ে বসলাম টেবিল টাই।।
চলবে......
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


.png)


Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.