ঐতিহ্যবাহী বলুহ মেলায় বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়া। পর্ব ০২
আসসালামু আলাইকুম।
প্রিয় বন্ধুগণ, কেমন আছেন সবাই? আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও অনেক ভালো আছি। আজকে আরো একটি নতুন ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়ে গেলাম। আশা করি সবার শেষ পর্যন্ত আমার পাশে থাকবেন।
চলুন শুরু করা যাক দ্বিতীয় পর্ব,
যে ব্যক্তির নাম অনুসারে বছরের পর বছর এই ঐতিহ্যবাহী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই পীর বলুহ দেওয়ানের সম্পর্কে। পীর বলুহ দেওয়ান সম্পর্কে এলাকায় ব্যাপক জনশ্রুতি ও চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে। এলাকার বয়স্ক মুরব্বিরা জানান, উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের হাজরাখানা গ্রামের বুক চিরে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের কপোতক্ষ নদ বয়ে গিয়েছে। এই কপোতাক্ষ নদের পশ্চিম তীরে উঁচু ঢিবিতে অবস্থিত এই অঞ্চলের পীর বলুহ দেওয়ানের রওজা শরীফ। বয়স্করা আরো জানান পীর বলুহ দেওয়ান এর বয়স বা জন্ম সাল কেউই জানে না। তার জন্ম ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ থানার বড় ধোপাদি গ্রামে। চরম দারিদ্রতার সংসারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। তার পিতার নাম ছুটি বিশ্বাস। সংসারে অভাব ও দারিদ্রতার কারণে খুব ছোটবেলায় তিনি হাজরাখানা গ্রামে মামার বাড়িতে চলে আসেন।
তার মামারা ও অনেক গরিব ছিল। তাই তিনি মামার বাড়িতে থেকে অন্যের ক্ষেত খামারে কাজ করতেন। বলুহ যেই বাড়িতে কাজ করতেন সেই বাড়ির মালিক তাকে একদিন বেদন বিলে গরু চরাতে নিয়ে যেতে বলেন। বলুহ তার মালিকের কথা অনুযায়ী বেদন বিলে গরু চরাতে নিয়ে যান।বলুহ গাছের নিচে বিশ্রাম নিচ্ছিল আর তার গরুগুলো অন্যের জমিতে যেয়ে ফসল খেয়ে নষ্ট করছিল। জমির মালিক এই দৃশ্য দেখে গরুগুলোকে খোয়াড়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হয়। বলুহ তখন গরুগুলোকে বক বানিয়ে গাছের উপরে বসিয়ে রাখে। একদিন তাকে খেজুরের গুড় জ্বালাতে বললে তিনি জ্বলন্ত চুলায় খড়ি না দিয়ে নিজের একটি পা ঢুকিয়ে দেন। একদিন তাকে সরিষা মাড়াই করতে বললে সে সরিষার গাদায় আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয় দেয়। তাকে বকাঝকা করলে তিনি পুনরায় ছাই বাতাসে উড়িয়ে সরিষা বের করে দেন। এরকম অসংখ্য অলৌকিক কিংবদন্তি রয়েছে তাকে ঘিরে। যে কারণে তিনি পীর উপাধি পান। তার মৃত্যুর পর হাজরাখানা গ্রামে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে যুগ যুগ ধরে তার রওজাকে ঘিরে এই এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। যার নামকরণ করা হয় বলুহ মেলা।
আমরা তিন বন্ধু এক মোটরসাইকেলে গল্প করতে করতে বলুহ মেলায় পৌঁছে গেলাম।
চলবে.....
ইনশাআল্লাহ আবার দেখা হবে তৃতীয় পড়বে।
প্রিয় বন্ধুগণ, আজকে পর্যন্তই। আবার দেখা হবে নতুন কোন ব্লগ নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.