হার নামানা গল্প পর্ব-২
হার নামানা গল্পের এবারের পর্বে নিয়ে এসেছি রোমেলু লুকাকুর কাহিনি। আশা করি সবার ভালই লাগবে। তো শুরু করা যাক।
যখন লুকাকুর বয়স ৬ বছর ছিলো তখন সে স্কুলের টিফিন টাইমে বাসায় আসতো। প্রতিদিন একই রকমের খাবার পেত সে। পাউরুটি আর দুধ। এছাড়া আর কিছু পেতো না। কারন ওর থেকে বেশি কিছু পাওয়ার সামর্থ যে লুকাকুদের ছিলো না। একদিন লুকাকু টিফিন টাইমে বাসায় আসলো । এসেই সে রান্না ঘর এ ঢুকে গেলো। লুকাকু দেখতে পেলেন তার মা ফ্রিজের সামনে দুধ হাতে নিয়ে দারিয়ে আছে। এই দৃশ্য টা লুকাকুর খুবই পরিচিত ছিলো। যেটা পরিচিত ছিলনা সেটা হলো মা দুধে যেনো কি মিশাচ্ছিলেন। খুব ভালো মত মিশিয়ে তিনি লুকাকু কে খাবার দিলেন। মুখে সেই আগের হাসি। যেনো কিছুই হয়নি। সব কিছু আগের মতই স্বাভাবিক রয়েছে। কিন্তু লুকাকু বুঝতে পেরেছিলেন। আর কিছু নয় দুধে পানি মিশিয়ে ছিলেন মা। পুরো সপ্তাহ চালানোর মত টাকা ছিল না। তারা শুধু গরিব ই ছিলেন না। মাটিতে মিশে যাচ্ছিলেন তারা।
লুকাকুর বাবা ছিলেন একজন পেশাদার ফুটবলার। তিনি তার জিবনের খেলার শেষ প্রান্তে ছিলেন। খেলাও শেষ টাকাও শেষ। তাদের প্রথম ঢাক্কা টা সে কেবল টিভিতে। এর পর ইলেক্ট্রিসিটি। এমনো সময় গিয়ে ছিলো লুকাকুরা ২-৩ সপ্তাহ অন্ধকারে কাটিয়েছিলো। অন্ধ কারে ডুবে যাচ্ছিলো। রাতে বাড়িতে ফিরে লুকাকু দেখতো এ যেনো কোন অন্ধকার জংগল। বাড়িতে ফিরে লুকাকু মায়ের কাছে স্নান করার জন্য গরম পানি চাইতো। তখন মা কেটলি তে করে পানি গরম করে দিতেন। লুকাকু সে গরম পানি ছোট্ট একটি কাপ দিয়ে মাথায় ঢালতেন।
এমনো অনেক সময় গিয়েছে লুকাকুর মা বাকিতে বেকারি থেকে পাউরুটি আনতো। বেকারির লোক জন লুকাকু আর তাই ভাইকে চিনতো। সোমবার বাকি নিলে শুক্র বার তা শোধ করতে হতো। জানেন তো খুব কস্টে যাচ্ছিলো দিন গুলো। একেবারে যেনো শেষ হয়েই গেছিলো সব। কিছুই কি করার ছিলো না? যেদিন লুকাকু মাকে দুধে পানি মেশাতে দেখে ছিলেন সেদিন ই বুঝে ছিলেন সব শেষ। লুকাকু মাকে কিছুই বলে নি। কারন সে জানতো বেচারিকে আর কত চাপে ফেলবে। সেদিন ওগুলো খেয়েই সে স্কুল এ চলে যায়। সেদিন লুকাকুর মনে অনেক কিছু চলতে ছিলো। সে ৬ বছরের বাচ্চা ছিলো তাও অনেক ভাবনা তার মনে। তার মনে হচ্ছিলো তার ঘুমটা কেউ ভাঙ্গিয়ে দিছে। এতদিন সে স্বপ্ন এর মাঝে ছিলো। সে তার মা কে এভাবে কস্টের মাঝে দেখতে চাচ্ছিল না। তার খুব কস্ট হচ্ছিলো তার মার জন্য। অন্ধকার রুমের ভেতর লুকাকু তার মা আর তাই ভাই প্রার্থনা করত। তারা বিশ্বাস করতো এই দিন বেশি দিন থাকবে না। আলো আসবেই।
সে তার প্রতিজ্ঞা নিজের মধ্যেই রেখে ছিলেন। কখনো কারো সাথে শেয়ার করে নি। লুকাকু মাঝে মধ্যে স্কুল থেকে ফিরে এসে দেখতো মা কাদতেছেন। লুকাকুর তা ভালো লাগত না। একদিন সে বলেই বসল তার মা কে " মা, সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে দেখে নিও। আমি আন্দের লেখটে খেলব। কিন্তু তখন লুকাকুর বয়স মাত্র ৬ । সে তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করলো কত বছর বয়সে পেশাদার ফুটবল খেলা যায়। বাবা বলল ১৬ বছর থেকে। তখন থেকে লুকাকু প্রস্তুত হতে ছিলেন। লুকাকু তার প্রতিটি খেলা কে ফাইনাল মনে করতো। স্কুল এর মাঠে যখন খেলতো তখন ও সে ভাবতো সে ফাইনাল খেলছে। সে ১১ বছর বয়সে একটি ক্লাব এর হয়ে খেলতে নামেন। একদিন সে খেলতে নামার সময় অন্য এক খেলোয়ার এর বাবা তাকে আটকে জিজ্ঞেস করে এই পুচকে ছেলে তুমি কোথায় থেকে আসছো। কোথায় জন্ম। তখন লুকাকু মনে মনে বলে আমার জন্ম বেলজিয়াম এ। ব্যাগ থেকে আইডি বার করে ওই লোকটির হাতে ধরিয়ে দেয় লুকাকু। একে একে সবাই লুকাকুর আইডি দেখলো।
লুকাকু বেলজিয়াম এর ইতিহাসের সেরা ফুটবলার হতে চেয়ে ছিলো। এবং আজ তা সে পেরেছেও। এর পিছনে আছে কঠোর পরিশ্রম। এই সফলতা একদিন এ আসে নি। অনেক সময় লেগেছে। লুকাকু হার মানে নি। সেই ৬ বছর বয়স থেকেই সে হার মানে নি। চালিয়ে গেছি এক বিশাল জীবন যুদ্ধ। আজ সে সত্যি বেলজিয়াম এর সেরা ফুটবলার।
ধন্যবাদ সবাইকে পোস্ট টি পরার জন্য।
লুকাকু সত্যিই অসাধারন একজন খেলোয়ার,
hmm
Football is the leading sports when it comes to audience ;)
yeah.. man..
Congratulations @razu788! You have completed the following achievement on the Steem blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
Award for the number of comments
Click on the badge to view your Board of Honor.
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Do not miss the last post from @steemitboard: