SEC-S17W3: "National Festival"
আসসালামু আলাইকুম
আমি @nasir04
একজন বাংলাদেশি🇧🇩 স্টিমিয়ান
কেমন আছেন সবাই? আশা করি মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, মহান আল্লাহর মেহেরবানী ও আপনাদের দোয়ায় আমিও অনেক ভালো আছি। আজ আমি হাজির হয়েছি স্টিম ফর বাংলাদেশ কমিউনিটিতে চলমান স্টিমিট এনগেজমেন্ট চ্যালেঞ্জ সিজন ১৭ এর ৩য় সপ্তাহের "জাতীয় উৎসব" প্রতিযোগিতায় অংশ নেবার জন্য।প্রতিযোগিতার শুরুতেই আমি কমিউনিটির সকল অ্যাডমিন মহাদয় ও মডারেটরদের অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি, এত সুন্দর একটা বিষয়ের ওপর আমাদের জন্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য।
আমাদের পৃথিবীতে অবস্থিত প্রতিটি দেশেই কিছু জাতীয় দিবস রয়েছে।যেগুলো তাদের দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা ইতিহাসের সাথে জড়িত।আর এসব জাতীয় দিবসকে প্রতিটি দেশের মানুষেরাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহন করে।দিবসটি সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে দিনটিকে উৎসবমুখর ও স্মরণীয় একটি দিনে পরিনত করে দেশবাসী।
অনান্য দেশের মতো আমার দেশেও অনেকগুলো জাতীয় উৎসব রয়েছে।যেগুলো উৎযাপনে পুরো দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে।তবে, আমি যে জাতীয় উৎসবটিকে আজ উপস্থাপন করতে চলেছি সেটি হলো "পহেলা বৈশাখ"। পহেলা বৈশাখ হলো বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন।এই দিনটিকে উৎযাপন করার জন্য ধনী, গরীব,কৃষক, চাকরিজীবী থেকে শুরু করে নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষ একজোটে কাধে কাধ মিলিয়ে এগিয়ে আসে।
পহেলা বৈশাখের সূচনাঃ
মূঘল সম্রাট আকবরের আমলে প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা নেওয়ার সুবিধার্তে বাংলা মাসের জন্ম হয়।আর প্রতিবছর বাংলা বছরের শেষ মাস অর্থাৎ চৈত্র মাসের শেষ দশদিনের মধ্যে প্রজাদেরকে তাদের কর বা খাজনা বাধ্যতামূলকভাবে পরিশোধ করতে হতো।এরপর নতুন বছরের প্রথম মাস "বৈশাখ" এর ১তারিখে প্রতিটি এলাকার জমিদাররা তাদের প্রজাদেরকে জমিদার বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে মিষ্টিমুখ করানোসহ একটি উৎসবের আয়েজন করতো।আর কালক্রমে সেটাই এখন আমরা পহেলা বৈশাখ হিসেবে পালন করি।
পহেলা বৈশাখ উৎযাপনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই।তবে গ্রামের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষেরা বিভিন্ন রীতি মেনে এ দিনটিকে উৎযাপন করে যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে এসেছে।যেমন হিন্দুদের বাড়িতে চৈত্র মাসের শেষ দিনের রাতে অবশিষ্ট ভাতগুলোতে বাড়ির মহিলারা পানি দিয়ে তাতে কয়েকটা আম পাতা চুবিয়ে রাখে পরের দিন সকাল বেলা সেই ভাতের মধ্য থেকে আম পাতাগুলো তুলে সেটি দিয়ে পাত্রের মধ্যে থাকা পানি পুরো বাড়িতে ছড়িয়ে দেয়।যদিও মুসলিম পরিবারগুলোতে এরূপ কোনো পরিচর্যা হয় না।
তাছাড়া হিন্দুরা শিবের গাজন উৎযাপন করে। যেখানে গ্রামের একটি শীবতলা থেকে অন্য একটি শিবতলা পর্যন্ত মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।শোভাযাত্রায় একজন শিব ও আরেকজন শীবপর স্ত্রী সেজে নৃত্য করতে থাকে এবং বাকিরা সেটি উপভোগ করতে করতে মঙ্গল শোভাযাত্রা সম্পূর্ন করে।এখানে মূলত কাল্পনিকভাবে শিব ও তার স্ত্রীর বিবাহ দেওয়া হয়।
এছাড়া ঢাকার রমনা বটতলায় বিশাল মেলার আয়োজন করা হয় যেখানে সর্বস্থরের মানুষ যোগদান করে।তাছাড়া বিশাল এক মঙ্গল শোভাযাত্রারও আয়োজন করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিচালনায়।সেখানে বিভিন্ন পশু পাখির বড় বড় মূর্তি বানানো হয় এবং সেগুলোকে নিয়ে সবাই আনন্দের সাথে মঙ্গল শেষ করা হয়।
পহেলা বৈশাখের উৎসবে যোগ দেবার জন্য ছেলেরা পাঞ্জাবি ও পায়জামা পরিধান করে, মেয়েরা শাড়ি পরিধান করে আর ছোট ।এসব পোষাক বাঙালিদের ঐতিহ্যের সাথে অতঃপতভাবে সংযুক্ত।এসব পোষাক আমাদের বাঙালিদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করে রেখেছে বহু বছর।
পহেলা বৈশাখ উৎযাপনে সবাই পান্তা ভাত ও ইলিশ মাছ খেয়ে তাকে।যা শত বছরের এক বাঙালি ঐতিহ্য। এদিন বিভিন্ন মেলাতেও খাবারের দোকান বসে আর সেগুলোতে এই পান্তা-ইলিশ বিক্রি করা হয়।যদি এটি প্রাচীন কাল থেকেই বেশ দামী একটি খাবার।তাই গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই দিনটি পান্তা ভাত ও কাঁচা মরিচ খায়। এটাও তাদের মতো হত দরিদ্রদের জন্য পহেলা বৈশাখের একটি ঐতিহ্য বলা যায় যা শত বছর ধরে অসহায় দরিদ্র পরিবারগুলো পালন করে আসছে।
পহেলা বৈশাখ উৎযাপন নিয়ে আমার বেশ স্মরণীয় একটি স্মৃতি রয়েছে যা আমার স্কুল জীবনের সময়ে উৎযাপন করেছিলাম। সময়টি ছিলো ১৪ এপ্রিল ২০১৮,বাংলা নববর্ষের দিন। প্রতিবছরের ন্যায় সেবছরও আমাদের স্কুলের পক্ষ থেকে পহেলা বৈশাখ উৎযাপন করার উপলক্ষে পিকনিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।পিকনিক বাবদ আমাদের সকলের কাছ থেকে ১০০ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়েছিলো।
সেদিন সকাল বেলা ঘুম থেকে ফ্রেস হয়ে তাড়াতাড়ি আমি আমাদের স্কুলে পৌচ্ছে যাই।যেহেতু আমি স্কুলের একজন সক্রিয় স্টুডেন্ট ও সেচ্ছাসেবক ছিলাম তাই আমাদেরকে আগে গিয়ে রান্না বান্নার কাজ, হল রুম পরিষ্কার করে সেটি সুন্দরভাবে সাজানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জায়গায় বেঞ্চ ও চেয়ার সুসজ্জিত করার দায়িত্ব ছিলো আমাদেরই।
রানার সময় আমি দেখেছিলাম কোনো বাবুর্চিকে ডাকা হয় নি। রান্নার এ গুরু দায়িত্বটা আমাদের গুরুরাই অর্থাৎ আমাদের স্যারেরা সম্পাদন করেছিলেন।তাছাড়া রান্নার সরঞ্জাম যেমন পেয়াজ কুচি, মরিচ কুচি, চাল ধোয়া,মাংশ কাটা থেকে শুরু করে সেগুলো পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও স্যার ও ম্যাডামরা আমাদের সাহায্য করেছিলো।সেদিন স্যারদের সাথে অনেকটা বন্ধুর মতো ভাব হয়ে উঠেছিলো।এমনকি আমাদের বাংলা বিষয়ের রবীন্দ্রনাথ স্যার তো একবার বলেই উঠলো যে "আজ কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর সম্পর্কে আমরা জড়িত নই,আজকের দিনটাতে আমরা সকলেই একে অপরের বন্ধু"। স্যারের এই কথাটি আমার হৃদয়ে এখনো গেথে আছে।
রান্নার কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর আমরা সকলে নিজেদের বাড়িতে ফিরে আসি,এরপর তাড়াতাড়ি গোসল সেরে পাঞ্জাবি ও পায়জামা পড়ে আবার স্কুলে ছুটে যাই।আমি সেদিন একটি লাল পাঞ্জাবি পড়েছিলাম যেটা আমার প্রিয় বাবু রাজকুমার বিশ্বাস স্যারের সাথে মিলে গিয়েছিলো।স্কুলে পৌচ্ছে প্রথমেই সকলকে খাবার খাওয়ানো হয়। এরপর শুরু হয়েছিলো আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্টানটি আমাদের সকল স্টুডেন্টদের কাছে একটি স্মরণীয় ও উপভোগ্য স্মৃতি। কারন সেদিন বিভিন্ন আমন্ত্রিত শিল্পী ও স্টুডেন্টের পাশাপাশি আমাদের সকল স্যারেরা একটি করে গান পরিবেশন করেছিলেন। যার মধ্যে আমরা সবথেকে বেশি উপভোগ করেছিলাম আমাদের ওমর আলী স্যারের গাওয়া " চিঠি লিখেছে বউ আমার ভাঙ্গা ভাঙ্গা হাতে" গানটি শুনে।
আমি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য @jyoti-thelight @wilmer1988 @ripon0630 @msarif ভাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আশা করছি আপনারাও আপনাদের দেশের জাতীয় উৎসব সম্পর্কিত কোনো একটি দারুন পোস্ট আমাদের উপহার দিবেন।প্রতিযোগিতার পোষ্টটির জন্য এখানে ক্লিক করুন।
•ধন্যবাদান্তে,,
•@nasir04
@nasir04
Absolutely, dear bro, you are right, you go to national festivals in every country and every country has its own way of celebrating them, like national festivals are celebrated in your country and you celebrate them in your own way. Clothes and dishes are chosen according to this festival, as you said that the Baisakhi festival in your country is celebrated with great enthusiasm, so it is true that it is a traditional festival. It is very nice to know that you have told us about the one that brings happiness and adds color to the rest of the festivals. Good post.
@mona01
I am really amazed to read your comments about my post. Thank you very much for giving such nice feedback on my post.
•Best regards,,
•@nasir04
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.
বাংলাদেশের অনেক গুলো জাতীয় উৎসবের মধ্যে পহেলা বৈশাখ অন্যতম একটি । এটি সকল ধর্মের মানুষ এটী পালন করে থাকে এবং সরকারী ভাবে এটি পালন করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে আদীবাসিরা এই উৎসব তাদের ধর্মীয় উৎসব হিসাবে পালন করে থাকে। স্যারদের সাথে এমন বন্ধুত্ব সম্পর্ক খুব ভাল যা আপনার স্মৃতি হয়ে আছে এখনো। আপনার জন্য শুভকামনা।
আপনার মূল্যবান সময় ও মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই💕
স্কুল শিক্ষকদের সাথে বরাবরই বেশ ভালো ও বন্ধুসুলভ সম্পর্ক ছিলো।মূল্যবান মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছা প্রিয় ভাই।
অনেক সুন্দর একটি পোস্ট লেখার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই একটি উৎসব যা সকলেই উৎযাপন করে আসছে। পহেলা বৈশাখ যেখানে নিত্য নতুন আবহাওয়ায় ভরে ওঠে সোনালী পরিবেশ। গাছপালা নতুন সাজে সজ্জিত হয়। এছাড়াও নববর্ষের সূচনা সম্পর্কে আপনার ধারনা বেশ সুন্দর। মোঘল সম্রাট আকবরের যুগ থেকে এই উৎসবের সূচনা ঘটে। ভালো থাকবেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
সম্রাট আকবর মূলত তার খাজনা আদায়ের পর জনগনকে আনন্দ উল্লাসের জন্যেই এই উৎসবের আয়োজন করতেন।মূল্যবান সময় ও সুন্দর মতামতের জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ।
X promotion link :
https://twitter.com/nasirHo10818282/status/1782987693493985349?s=19
👋 Hey there, my friend @nasir04! It's amazing to see your enthusiasm for celebrating your national festival, Pohela Boishakh. Your vivid descriptions of the festivities and your favorite memories really bring the spirit of the occasion to life! All the best in the contest, success for you! 👍
Dear @artist1111 sir,,
Thanks for spending your valuable time on my post and giving your inspiring feedback.
Hi @nasir04 ! Your description of the Pohela Boishakh festival and your childhood memories is very vivid and detailed. I particularly liked how you shared the preparations for the festival at school, including the students' active role in organizing the event. Small details like the shared meal at school and cultural performances add a lot of color to your story. It really feels like you're transported back to that special day. Your memories of songs performed by your teachers are particularly touching and show the lasting impact of those moments on you. Best luck!
Our country celebrates the day in a grand manner, and still by participating in these festivities, I feel like I have regained that childhood.
Thanks for your valuable feedback.
Every country has one national festival or the other to celebrate that will bring people from all walks of life to attend, so your country is not an exception. In your country which is Bangladesh the national festival is known as Pahela Boishakh". And this Pahela Baisakh is the first day of the Bengali New Year. It is exciting to start a a new year with celebrations and good will. It will make the people to remain in love and harmony. Because you have already set the atmosphere for good tidings. I wish you the best in this competition.
Dear @tripple-e,,,
Thank you from the bottom of my heart for your valuable and inspiring feedback.
My pleasure ♥️