Movie Review || Dipu number Two - দিপু নাম্বার টু ||
বাংলাদেশি কিশোর চলচ্চিত্রের মধ্যে অন্যতম একটি চলচ্চিত্রের নাম 'দিপু নাম্বার ২'। 'দিপু নাম্বার ২' মূলত
মুহাম্মদ জাফর ইকবালের রচিত একটি উপন্যাস। ১৯৮৪ সালে কিশোর বাংলা সংবাদপত্রে প্রথম এই উপন্যাসটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। 'দিপু নাম্বার টু' উপন্যাস কে কেন্দ্র করে দীপু নাম্বার টু চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয় । বাংলাদেশের বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার মোরশেদুল ইসলাম ১৯৯৬ সালে দীপু নাম্বার টু চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন এবং এটি সম্পূর্ণ সরকারি অনুদানে নির্মিত হয়।
অভিনয় শিল্পী:
- অরুণ সাহা(দিপু)
- সুভাষিশ (তারেক)
- গোলাম মোস্তফা
- মাসুদ আলী খান
- আবুল খায়ের( শিক্ষক)
- বুলবুল আহমেদ (দিপুর বাবা)
- ববিতা (দিপুর মা)
কিহিনী :
দিপু ক্লাস এইটে নতুন একটি স্কুলে ভর্তি হয়। স্কুলে প্রথম দিন যায় স্যার প্রথমে দিপুকে লেকচার দিতে পারে। স্যার বলে যে ছাত্র নতুন ভর্তি হয় তাকে প্রথমে পাঁচ মিনিট করে লেকচার দেয়। দিপু লেকচার দিতে অস্বীকৃতি জানায় বলে পারিনা। স্যার বলে না পারলে পাঁচ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। পরে দিপু বলে ঠিক আছে চেষ্টা করি। দিপু লেকচার শুরু করে। সপ্তম শ্রেণীতে বগুড়া জিলা স্কুলে, ষষ্ঠ শ্রেণীতে চিটাগং কলেজিয়েট স্কুলে, পঞ্চম শ্রেণীতে বান্দরবান হাই স্কুলে। স্যার বলেন তুই কি প্রত্যেক বছর স্কুল পাল্টাস নাকি। দিপু বলে আমার বাবা প্রতিবছর নতুন জায়গায় যায় তাই আমাকে স্কুল বদলাতে হয়। দিপু 5 মিনিটের লেকচার শেষ করে। স্যার জিজ্ঞেস করে তার বাড়িতে কে কে আছে। দিপু বলে বাবা আছে আর কেউ নেই মা মারা গেছে। স্যার দিপুর নাম জিজ্ঞেস করে। দিপু বলে আমিনুল আলম। এটা ছাড়া আর কোন নাম আছে কি তোর। বাসায় আমাকে বাবা দিপু নামে ডাকে। স্যার বলে একলা আসে তো আরেকজন দিপু আছে তাহলে তো দুইটা দিব হয়ে গেল আজ থেকে তোর নাম দিপু নাম্বার টু।
দিপুর বাবা এবং দিপু
দিপুর সহপাঠী আছে তার নাম তারেক। সেই ছেলেটা ভালো না বোখাটে টাইপের, সিগারেট খায়। স্কুলের দৌড় প্র্যাকটিস করার সময় দিপুকে পায়ে লাঠি দিয়ে ফেলে দিয়েছিল তারেক। তারকের সাথে দিপুর দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। দিপুকে দেখে নেবে বলে হুমকি দেয় তারেক। দীপন দৌড়ানোর সময পায়ে ব্যথা পেয়েছে। দিপুর বাবা দিপুর পায়ে মালিশ করে দিচ্ছে আর দীপু বলছে তারেক তাকে মারার জন্য হুমকি দিচ্ছে।দিপুর বাবা বলল আমি কি করতে পারি। পরের দিন স্কুলে একটা ফুটবল টিম আছে সেটার ক্যাপ্টেন বানানোর জন্য বলে দিপু। তারেক বলেছে সে অধিনায়ক হবে, কারণ সে সবার থেকে বড়। একথায় সবাই প্রতিবাদ জানায় সবাই বলে বড় হলেই তো ক্যাপ্টেন হওয়া যাবে না যে ভালো খেলা বোঝে ভালো খেলে সেই অধিনায়ক হবে। এনিয়ে দিপুর সাথে তারেকের দ্বন্দ্ব আরো বেড়ে যায়। দিপু রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল, তারেক এবং আরো দুইজন মিলে দিপুকে মারধোর করে। স্যার ঐ রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ দিপুকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে তারপর দিপুকে ওদের বাসায় পৌঁছে দেয়। পরেরদিন দিপুকে সব বন্ধুরা দেখতে আসে। দিপু যেদিন স্কুলে আসে সেদিন তারেক দিপুকে বলে যে তার ভুল হয়ে গেছে। তারপরও তারেকের উপর থেকে দিপুর রাগ কমেনি বরং তারেককে মারবে বলে দিপু বলে। স্কুলের ফুটবল প্রাক্টিস শেষে দিপু তারিখ এবং নান্টু পানির ট্যাংকের উপরে উঠে। নান্ট আর নিচে নামতে পারে না কান্নাকাটি করতে থাকে। তারেক নিচে নেমে যায়, একটা দড়ি নিয়ে আসে কিছুক্ষণ পরে। দিপুকে বলে সে নান্টুকে পিঠে বেঁধে দেওয়ার জন্য। পরে তারিখের পিঠে নান্টুকে ভালোভাবে বেঁধে দেয় তারেক সিঁড়ি বেয়ে আস্তে আস্তে নেমে আসে এবং খুব ক্লান্ত হয়ে যায়। পরে তারেক নিচে নেমে নান্টুকে একটা ঘুসি মারে।
আজকের এই ঘটনার পর তারেকের উপর থেকে দিপুর রাগ কমে যায়। তারপর সবাই যার যার বাসায় চলে যায়। পরদিন স্কুলে তারেক অনুপস্থিত থাকে। ছুটি শেষে দিপু নান্টুকে জিজ্ঞেস করে তারেক স্কুলে আসেনি নান্টু বলে না। দিপুর বাবা দিপুকে বলে আজকে তোকে একটা কথা বলব। দিপুর বাবা বলে তুই জানতি তোর মা মারা গেছে, সেটা ঠিক না তোর মা এখনো বেঁচে আছে সে আমেরিকাতে থাকে । দিপুর মা-বাবার মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর দিপুর মা আমেরিকায় চলে যায়। দিপুকে বাবার কাছে রেখে যায় ।তোর মা কয়েক দিনের জন্য দেশে এসেছে। তোর সাথে দেখা করতে চায়। মায়ের কথা শুনে কাঁদতে শুরু করে। তোর মা আগামীকাল রাতে আবার অ্যামেরিকা চলে যাবে। আবার কখনো আসবে কিনা জানিনা। যাবি তোর মার সাথে দেখা করতে।
source
দিপু তার মায়ের সাথে দেখা করার সময়
রাতে ট্রেনে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় দিপু। সকালে ট্রেন ঢাকায় পৌঁছে যায় তারপর একটা রিক্সা করে দিপু তার মায়ের বাসায় যায়। সেখানে দিপুর মায়ের সাথে দেখা হয়। মা ছোট দুই ভাই বোনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। তারপর দিপু এবং দিপুর মা বাইরে ঘুরতে বের হয়, রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করে। অনেক ঘোরাঘুরি করার পর বিকেলে স্টেশন পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসেন দিপুকে।পরের দিন দিপু স্কুলে যায় তারেক কয়েকদিন যাবত স্কুলে আসেনা,দিপু তারেকের খোঁজ করতে থাকে।তারেকের বাড়িতে দিপু যায়।তারেক থাকে বস্তিতে, তারেকের মা অসুস্থ,তারেকের বাবা কাঠ মিস্ত্রি কাজ করে, তারা অনেক গরিব। তারেক এবং দিপুর মধ্যে পারিবারিক বিষয় অনেক কথা হয়।তারপর দুজনের মধ্যে ভাল একটা বন্ধুত্ব তৈরি হয়। তারেক বিপুকে একটা জিনিস উপহার দেয়। সেটা হলো অনেক প্রাচীন আমলের একটা চিতা বাঘের মূর্তি। দিপু বাসায় নিয়ে চলে যায়। দীপুর বাবা এটা দেখে বলে, এটাতো অনেক মূল্যবান। দীপক জিজ্ঞেস করে এটা কোথায় পেয়েছ, বলে তারেক আমাকে দিয়েছে। পরেরদিন দুপুরে স্কুল ছুটি হয়ে যায়। তারেক দিপুকে পাহাড়ের মধ্যে নিয়ে যায়। পাহাড়ের ভিতর একটা গুহা আছে সেখানে দুজন যায়।তারেক বলে এখানে সাপের-মনি খুঁজতে আসে।একটা যদি পেয়ে যাই তাহলে বড়লোক হয়ে যাব, তারপর মায়ের চিকিৎসা করতে পারবো। পাহাড়ের গুহায় একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে এবং ছুরি হাতে নিয়ে দুজন প্রবেশ করে। গুহার ভিতরে খোঁড়াখুঁড়ি করার জন্য। তারপর সাবল এবং কোদাল দিয়ে তারা মাটি খুরতে থাকে। সন্ধ্যাবেলা সেদিন আবার তারা বাসায় চলে আস।
দিপুর বাবা তার বন্ধুকে সে চিতাবাঘের ভাস্কর্যটির দেখায়। সেই লোকটি দেবকে জিজ্ঞেস করে, এটা কোথায় পেয়েছে।দিপু বলে তার এক বন্ধু তাকে দিয়েছে কিন্তু কোথায় পেয়েছি সেটা সে বলবে না। লোকটি দিপুকে বলে এটা অনেক দামি জিনিস, এটা প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন। তারা এগুলো তারা অনেকদিন ধরে খুজতেছে। পরেরদিনই স্কুলের অন্য বন্ধুরা দিপুকে জিজ্ঞেস করে তারা প্রতিদিন কোথায় যায়। পাহাড়ে কি করিস আমাদেরকে বল। দিপু বলে বলা যাবে না, আগে তারেক কে জিজ্ঞেস করি। পরে তারেকের সাথে কথা বলে দিপু বলে ঠিক আছে বলব, তবে আজ রাত বারোটার সময় ডাকবাংলোর মোড়ে আসতে হবে।
Source
দিপুর বন্ধু তারেক এবং দিপু
রাত বারোটার সময় ওর সব বন্ধুরা আসে এবং সবাইকে পাহাড়ের কথা বলে তারপরও তারা সবাই রাতেই পাহাড়ের গুহার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সেখানে যেয়ে দেখে চোরাকারবারীরা পাহাড়ের গুহার ভিতরে ঢুকেছে। তারেক গুহার কাছে যেয়ে পরিস্থিতি দেখার জন্য। তারেককে চোরাকারবারীরা আটকে রাখে। একজন চোরাকারবারি গুহার উপরে পাহারা দিচ্ছিল। দিপু তাঁর বন্ধুদের নিয়ে ঠিক করে সেই লোকটিকে সবাই মিলে ধরে বন্দুক কেড়ে নেবে এবং গাছের সাথে বেঁধে রাখবে। পরে সবাই মিলে ধরে লোকটিকে গাছের সাথে বেঁধে ফেলে এবং বন্দুক কেড়ে নেয়। দিপু বন্দুক হাতে নিয়ে চোরাকারবারীদের উদ্দেশ্যে বলে তারেককে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। তারা বলেন বন্দুক পেলে তারেকে ছেড়ে দিব। দিপু তাদেরকে কিছু টাকা দেওয়ার জন্য বলে। চোরাকারবারীরা কিছু টাকা দেওয়ার জন্য রাজি হয়। তারেককে তারা ছেড়ে দেয় তারেক উপরে উঠে আসতে ধরে এবং উপর থেকে চোরাকারবারীদের উপর পাথর ফেলে দেওয়া হয়। দিপুর বন্ধুদের মধ্যে থেকে একজনকে পুলিশকে খবর দিতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ আসে চোরাকারবারীদের ধরে নিয়ে যায়। প্রাচীন সভ্যতার অনেক ভাস্কর্য সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়। সরকার কিশোরদের সাহসিকতার জন্য 25 হাজার টাকা পুরস্কার দেয়। সবাই মিলে সেই টাকাটা তারেককে দেয়। যেহেতু তারেকের মা অসুস্থ তাই সবাই টাকাটা তারেককে দিয়ে দেয়। তারেকের মা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে। ডিসেম্বর 8 তারিখ দিপুর আজকে এখানে শেষ দিন, কাল অন্য জায়গায় চলে যাবে। কারণ তার বাবা অন্য জায়গায় বদলী হয়ে গেছে। তাই দিপুর মনটা অনেক খারাপ। প্রত্যেক বছর নতুন নতুন জায়গায় যেয়ে স্কুলে ভর্তি হতে দিপুর মোটেও ভালো লাগে না। তবে ক্লাস এইট এর বছরটা ছিল দিপুর জন্য অনেক স্মরণীয়।
বাংলাদেশের কিশোর চলচ্চিত্র এর মধ্যে দিপু নাম্বার টু চলচ্চিত্রটি আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে। এই চলচ্চিত্রে অনেক ঘটনা আমাদের অনেকেরই বাস্তব জীবনের সাথে মিল রয়েছে।
- My rating - 9/10
- Imdb rating - 8.9/10
Thank you
You have been upvoted by @rex-sumon A Country Representative, we are voting with the Steemit Community Curator @steemcurator07 account to support the newcomers coming into steemit.
Follow @steemitblog for the latest update. You can also check out this link which provides the name of the existing community according to specialized subject
There are also various contest is going on in steemit, You just have to enter in this link and then you will find all the contest link, I hope you will also get some interest,
For general information about what is happening on Steem follow @steemitblog.