ঐতিহ্যবাহী নদী |"সানিয়াজান"| নদী এবং এ নদীর বর্তমান অবস্থা।

in Steem For Traditionlast year (edited)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

বৃহস্পতিবার
তারিখ:২৩-মার্চ-২০২৩

আসসালামু আলাইকুম।
প্রিয়, স্টিম ব্যবহারকারী সকল ভাই বোন ও বন্ধুগণকে জানাই পবিত্র মাহে রমজানের ভালবাসা এবং আন্তরিক শুভেচ্ছা। আপনারা সকলে কেমন আছেন?আশা করি বসন্তের শেষে ফুর ফুরে মন নিয়ে সকলে ভালোই আছেন।আজকে আমি আমাদের বাড়ির পাশের ঐতিহ্যবাহী নদী, “সানিয়াজান” নদী সম্পর্কে লিখবো।আশা করি আপনারা আমার লেখা পছন্দ কীবেন।

উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী নদী

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এ দেশকে বলা হয় নদীর দেশ। নদীগুলোই বাংলাদেশের জীবনকে বাঁচিয়ে রেখেছে। বাংলাদেশের নদ-নদীর সংখ্যা ৭০০টির মতো। এ নদীগুলোর মধ্যে প্রধান প্রধান নদী হচ্ছে– পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা, কর্ণফুলী,প্রভৃতি। তাদের মধ্যে, লালমনিরহাটের জেলার ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান ও রত্নাই নদী।

তাদের মধ্যে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ মহকুমার কাংড়াতলীর মোড় হয়ে পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ী ইউনিয়নের পানবাড়ী এলাকার মধ্য দিয়ে প্রবেশ করেছে সানিয়াজান নদী। কুচলিবাড়ী ইউনিয়ন থেকে বাউরা ইউনিয়নের জমগ্রাম এলাকার পর্যন্ত বুকজুড়ে বয়ে গেছে এ নদী।

ঐতিহ্যবাহী সানিয়াজান নদীটির বেশিরভাগ অঞ্চল বাউরা এলাকা থেকে একটু অদূররে একটি এলাকার বুক চিরে বয়ে গেছে। তাই সেই স্থানটির নাম রাখা হয় সানিয়াজান। মূলত সানিয়াজান নদীর কারনে ঐ এলাকার নাম রাখা হয়। পরবর্তীতে ঐ এলাকার ইউনিয়নটিও নাম দেওয়া হয় ১১ নং সানিয়াজান ইউনিয়ন। সেই থেকেই সানিয়াজান নামটি স্বীকৃত। এই এলাকাটি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার অংশ এবং সানিয়াজান নাদীটির সিংহ ভাগ এলাকাই হাতীবান্ধা উপজেলার। একসময় এই নদীদিয়ে ছোটো ছোটো স্টিমার ও লঞ্চ আসত পন্য আনা নেওয়া করার জন্য।তাই সে সময় বাউরা অঞ্চলটিকে বন্দর বালা হত। সেই সময় রাস্তা ঘাটের ডেমন ব্যবস্থা ছিলো না। তাই নদী পথেই ব্যবসা হত। অনেক বাণিজ্যিক আসত, এই এলাকায় বাণিজ্য করতে৷ তবে বর্ষার পরে আর নদীকে তেমন চোখে পরে না।

নদীর মাঝখানের দৃশ্য

বর্ষা মৌসুমের পর পরই এ নদীগুলোতে তেমন পানিপ্রবাহ থাকে না। শুকিয়ে যাওয়া এসব নদীতে স্থানীয় কৃষকরা চাষ করছেন বোরো ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন জাতেরর ফসল।

এই বোরো ধান ও ভুট্টা থেকে এ লাকার লোকজন ব্যাপক লাভবাব হয়। এ এলাকায় কিছু জেলে রয়েছে তারা নদীতে বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে মাছ ধরেন। তবে আজকে সানিয়াজান নদীটি প্রায় মৃত। এক কালের ঐতিহাসিক এই নাদীটি আজ ভরাট হয়ে গেছে৷ এখন আর এ এলাকায় আসে মন হয় না৷ আমরা নদীর এলাকয় আছি তবে, নাদীর ছোটো ছোটো অংশ গুলো রয়েছে যে গুলতে পানি থাকে গভির হওয়ার কারনে। সেই সব খালে জেলেরা প্রতিদিন সন্যায় ফাদ জাল বাসয় রাখত এবং পরে দিন সকাল বেলায় সেই গুলো তুলত। একসময় প্রচুর মাছ পাওয়া গেলেও এখন বিরূপ আবহাওয়ার কারণে মাছ তেমন পাওয়া যায় না।

কিন্তু, এখনও কিছু জেলে এই নদী থেকে মাছ ধরে তাদের সংসার চালায়।
নদীটি আজ মৃত প্রায়। বর্ষা কালে পানিতে থই থই করলেও বর্ষা শেষে এই নদীটি তার রূপ হারিয়ে ফেলে। তবে অন্য নদীর মতো এই নদীটিও বর্ষার সময় তার আসল রুপ দেখা। অগভিরতার কারনে অল্পতেই এ নদী ভরে যায় এবং আশে পাশের এলাকায় বন্যার সৃষ্টি করে।

নদীতে এক জেলের ফাদ জাল বসানোর দৃশ্য

বর্ষা মৌসুম কেটে গেলে নদীর এলাক পুরো পরে থাকে। স্থানীয় লোকজন এই জমি ব্যবহার করে বিভিন্ন ফসল আবাদ করেন। সেই ফসল থেকে এলাকার লোকজন অনেক লাভবান হয়। এছাড়াও, এনদীর পাশ দিয়ে গেলে দেখতে পাবেন, শুধু ভুট্টা আর ভুট্টা। উত্তরে জনজীবনের অমূলক পরিবর্তন এনে দিয়েছে ভুট্টা। এই ভুট্টার কারনেই উত্তরে জনপদে আজও বেঁচে আছে। যেগেতে ভুট্টা বেলে দোয়াশ বা বেলে মাটিতে ভলো হয়। তাই নাদীর পরে থাকা চরে লোকজন ভু্ট্টা চাষ করে৷ বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হলে কালের বিবর্তনে বজ বিশিরভাগ নদীই মৃত প্রায়। আমাদের এসকল নদীগুলো রক্ষায় এগিয়ে আসা উচিৎ।

মৃত প্রায় নদীর অবশিষ্ট অংশদ

4i88GgaV8qiFU89taP2MgKXzwntUGAvkoQiKU7VxyD37q94i8e38qvF9HBknYTWLbKs3wg1cbtfZvU44CUYbBqLEEX6YDgQznQURMvBExn7FCAPjAUKLwJ1kpe.png

আমার পরিচয়
আমার নাম মো: নাইম ইসলাম।আমার স্টিম ইউজার নাম @naeem0 আমি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার সফিরহাট এলাকায় থাকি। আমি বর্তমানে ক্লাস ১০ এ পরি। আমি ২৪ সালে SSC পরীক্ষা দেবো পড়া-শুনার পাশাপাশি আমি স্টিম প্লাটফর্ম এ কাজ করি এবং আমার পরিবারের দেখা শোনা করি। আমি ছোটো থেকে আমার দাদির কাছে থাকি আমার বাবা-মা দুজনেই ঢাকায় থাকে। আমি ছবি আঁকা ও অনলাইনে গেম খেলতে পছন্দ করি। এ ছাড়াও আমার শখ হলো কবুতর পোষা।সকলে ভালো এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ।


4i88GgaV8qiFU89taP2MgKXzwntUGAvkoQiKU7VxyD37q94i8e38qvF9HBknYTWLbKs3wg1cbtfZvU44CUYbBqLEEX6YDgQznQURMvBExn7FCAPjAUKLwJ1kpe.png

You can also vote for @bangla.witness witnesses

3zpz8WQe4SNGWd7TzozjPgq3rggennavDx3XPY35pEAVnpvDGTmz6yM4BdeUwpQ8vMxtR3sQse9kG46R2Lk4NBaGfzPmL5tiA85DdFd7TDvbMGaNMAY2RBgSWfNp5kM1Qjr3515gWKvjxzADBcu4.png
Vote for @bangla.witness

Sort:  
 last year 

সানিয়াজান নদী নিয়ে অনেক সুন্দর হয়েছে পোস্টি।সানিয়াজান নদীর বেশিরভাগ অঞ্চল বাউরা এলাকার বুক চিরে বয়ে গেছে। এজন্য এই স্থানটির নাম রাখা হয়েছে সানিয়াজান।নদীর নামকরণ হিসেবে এর নাম এলাকার নামে রেখেছে।সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন।ধন্যবাদ।

 last year 

ধন্যবাদ

Loading...
 last year 

অসাধারণ পোস্ট। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ এদেশে নদীর ভূমিকা অপরিসীম। তবে ময়লা আর্বজনায় এসব এখন দিন দিন ভরে যাচ্ছে। কলকারখানার ময়লা এবং বিষাক্ত পানি, যা নদীতে মিশে নদীর পানি নষ্ট করছে এবং নদীতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। আপনি অসাধারণ পোস্ট করছেন। নৌকার ছবি আমার কাছে অনেক ভালো লাগছে, আপনার ফটোগ্রাফিও দারুণ হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ

 last year 

নৌকা দিয়ে নদী পারাপার হওয়া এখন আর তেমন দেখতে পাওয়া যায় না। লালমনিরহাটের জেলার ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান ও রত্নাই কিন্তু এইগুলাও একটাও আমি দেখিনাই ভাই। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থান করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 last year 

ধন্যবাদ

 last year 

বর্তমানে এসব ঐতিহ্যবাহী নদী গুলো যেন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন কারণে। প্রাকৃতিক হোক আর মানুষের কারণেই হোক বিলুপ্তির পথে সেগুলো। এই নদীটি নিয়ে খুব সুন্দর লিখেছেন আপনি ভাই আসলেই পোস্টে খুব অসাধারণ হয়েছে আপনার।খুব সুন্দর লিখেছেন ছবিগুলো তো আরো ভালো হয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ

 last year 

আমাদের দেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশে আনাচে-কানাচে নদী বয়ে গেছে। সানিয়াজান নদীর বেশিরভাগ অঞ্চল বাউরা এলাকার বুক চিরে বয়ে গেছে। এজন্য এই স্থানটির নাম রাখা হয়েছে সানিয়াজান।নদীর নামকরণ হিসেবে এর নাম এলাকার নামে রেখেছে। আগেকার সময়ে দেখা যেত রাস্তাঘাট,কালবার্ট ইত্যাদি যানবাহন ব্যবস্থা ভাল না থাকায় এই নদী যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ছিল। নৌকায় থাকা মাঝির ছবি আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছে । আপনি অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই। ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।

 last year 

ধন্যবাদ।

 last year 

সানিয়াজান নদী সম্পর্কে অনেক সুন্দর লেখছেন ভাই, আমাদের দেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশে আনাচে-কানাচে নদী বয়ে গেছে। সানিয়াজান নদীর বেশিরভাগ অঞ্চল বাউরা এলাকার বুক চিরে বয়ে গেছে। এজন্য এই স্থানটির নাম রাখা হয়েছে সানিয়াজান।নদীর নামকরণ হিসেবে এর নাম এলাকার নামে রেখেছে। আগেকার সময়ে দেখা যেত রাস্তাঘাট,কালবার্ট ইত্যাদি যানবাহন ব্যবস্থা ভাল না থাকায় এই নদী যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ছিল।আপনার পোস্ট পরে খুব ভালো লাগলো ভাই, তবে এই গ্রামের মানুষ জমি আবাদ করে অনেক লাভবান হয়,আবার যখন নদীতে পানি দিয়ে ভরে যায় তখন কৃষক দের অনেক কষ্ট হয়, আপনার পোস্ট পরে আমি অনেক কিছু যানতে পারলাম ভাই, আপনার ফটোগ্রাফি অনেক সুন্দর হয়েছে, আপনি সানিয়াজান নদী সম্পর্কে অনেক সুন্দর সুন্দর বিষয় আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন, যারা নদী এলাকায় জমি চাষ করে তাদের মনে একটা ভয় থাকে,কেননা কখনো দেখা যায় পানি দিয়ে নদী ভরে যায় আবার কখনো দেখা যায় পানির কারনে তারা জমি আবাদ করতে না পারে।তবে আপনি অনেক সুন্দর লেখছেন ভাই, এইরকম ছোট ছোট নদী গুলোতে অনেক মাছ থাকে,যারা জেলে তারা শুধু মাছ ধরে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে।আপনি অনেক সুন্দর লেখছেন ভাই আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটা পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মতামতের জন্য।

 last year (edited)

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ এদেশে নদীর ভূমিকা রয়েছে অপরিসীম। তবে ময়লা আর্বজনায় নদী এখন দিন দিন ভরে যাচ্ছে। বর্তমানে নদী গুলো যেন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। কলকারখানার ময়লা এবং বিষাক্ত আর্বজনায়র করণে দূষিত হচ্ছে নদীর বিশুদ্ধ পানি। সানিয়াজান নদীর বেশির ভাগ অঞ্চল বাউরা এলাকার বুক চিরে বয়ে চলছে । এজন্য এই স্থানটির নাম রাখা হয়েছে সানিয়াজান নদী। এগুলো ছাড়া নদীর আরেক টি জগত রয়েছে যা হচ্ছে নৌকা। নদীর বুকে নৌকা দেখতে খুব ভালো লাগে। নৌকায় চড়ে ঘুরতে আমার বেশ ভালো লাগে। নদীর বুকে নৌকার ফটোগ্রাফি গুলো বেশ সুন্দর হয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি উপস্থাপনা পোস্ট করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58539.27
ETH 2627.11
USDT 1.00
SBD 2.40