ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি বাটনা নোড়া

in Steem For Tradition10 months ago (edited)

আসসালামুআলাইকুম,
আমি @afsanaety,
আশা করি সবাই আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি।"স্টিম ফর ট্রেডিশন" কমিউনিটির সকল সদস্যদের এবং সকল মডরেটরদের জানাই ভালোবাসা ও আন্তরিক শুভেচ্ছা।আজকে নতুন একটি বিষয় আলোচনা করবো "ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি বাটনা নোড়া" নিয়ে।তবে চলুন কথা আর না বাড়িয়ে আলোচনা শুরু করা যাক।

20230912_163927.jpg

যুগ যুগ ধরে চলে আসছে মাটির তৈরি তৈজসপত্র।আগের যুগের মানুষ মাটির তৈরি তৈজসপত্র সকল কাজে ব্যবহার করতো।দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ ছিল মাটির জিনিস।ঘর সাজানোর সকল কিছু থেকে শুরু করে রান্নাঘরের সকল জিনিস মাটির তৈরি।

20230912_164039.jpg

উত্তর অঞ্চলের এমন মানুষ পাওয়া যাবে না যে মাটির তৈরি বাটনাকে চিনবেনা।মাটির তৈরি বাটনা গৃহিনীদের নিত্য দিনের সঙ্গী।বাটনা অনেকে আবার পাতিলের ঢাকনা হিসেবে ব্যবহার করে।বাটনার সাথে একটি কাঠের তৈরি নোড়া পাওয়া যায়।আমরা এ নোড়াকে আবার অনেকে অন্য নামেও চিনি।

20230912_163305.jpg

বাটনা মাটির তৈরি আর এ মাটির তৈরি তৈজসপত্র বানিয়ে থাকেন কুমার।কাদামাটিকে মোথে সেটাকে আকার দিয়ে নকশা দিয়ে,রোদে শুকিয়ে তারপর আগুনে পুড়িয়ে শক্ত করা হয়।তারপর তৈরি হয় এ সুন্দর মাটির তৈরি বাটনা।

20230912_163025.jpg

বাটনাকে গ্রাম অঞ্চলের মানুষ সারোয়া বলে থাকে।মাটির তৈরি এ বাটনাকে বা যে কোনো ধরনের মাটির তৈরি তৈজসপত্রকে মৃৎশিল্প বলা হয়।বাটনা সাধারণত গোল আকৃতির হয়ে থাকে।বাটনার নকশা বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।সে অনুযায়ী ধার দেয়া হয় বাটনা গুলোকে।তবে ধার চলে গেলে অনেকে ধার দিয়ে নেয় পুনোরায় বা কেউ নতুন কিনে।

20230912_164108.jpg

নোড়া তৈরি হয় বাঁশের মূড়া থেকে।যেটাকে দা দিয়ে নোড়া তৈরির জন্য নির্দিষ্ট আকার করা হয়।অনেক ধরনের অনেক নকশার নোড়া পাওয়া যায়।সুবিধা মতো হাত দিয়ে ধরার জন্য এ নোড়ার আকার বাঁকানো হয়ে থাকে,এছাড়া বাঁশের মূড়া বাঁকা।তাই বেশি বাঁকা করতে হয়না নোড়াকে।

20230912_163154.jpg

বাটনাকে ঢাকনা হিসেবে ব্যবহার করা গেলেও।যেকোনো কিছু মিহি করতে নোড়া অবশ্যই লাগে তাই এ কথাও বলা যেতে পারে,যে বাটনা ছাড়া যেমন নোড়া অচল,ঠিক তেমনি নোড়া ছাড়া বাটনা অচল।একটি ছাড়া আর একটির ব্যবহার সম্ভাবনা।

20230912_163225.jpg

বাটনা নোড়া দিয়ে সব ধরনের মসলা,পিঁয়াজ,রসুন,আদা সব কিছুই মিহি করে বাটা যায়।এছাড়াও বাঙালীর পছন্দের প্রিয় খাবার ভর্তা।এ বাটনাতেই নোড়া দিয়ে মিহি করে তৈরি করা হয় যে কোনো ধরনের ভর্তা।অনেক অঞ্চলের মানুষ বাটনা নোড়া চিনে না।

20230912_164058.jpg

বাটনা এবং নোড়া বিভিন্ন সাইজের হয়ে থাকে।বড়, মাঝারি এবং ছোট আকারের।আমাদের বাসায় দুই সাইজের আছে মাঝারি এবং ছোট সাইজের।ঠিক একই ভাবে নোড়ার সাইজও তিন ধরনের হয়ে থাকে।যার সে সাইজের প্রয়োজন সে সেটা কিনে থাকে।গৃহিনীদের দৈনন্দিন জীবনে বাটনা নোড়ার ব্যবহার ছাড়া চলেই না।আমাদের উত্তর অঞ্চলের প্রতিটা ঘরে ঘরে বাটনা নোড়া আছে বলে আমি মনে করি।গ্রামে কিংবা শহরে এর ব্যবহার দুই জায়গাতেই।বাজারে কিংবা ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদের কাছে এ মাটির তৈরি বাটনা নোড়া পাওয়া যায়।বাটনা নোড়া নিয়ে আলোচনা আজ এ পর্যন্তই শেষ করছি।

YDBNEXHnHC4i6mFXwdjFWEyvFUuXfTk67Vem29fPPg1TuJR95LT9QniASa4c1dUXBWE.png

লিখায় কোনো ভুল-ভ্রান্তি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি।পোস্টটি পড়ে কেমন লাগলো কমেন্টে জানাবেন এবং আপনার মতামত জানাবেন। সকলেই আল্লাহর রহমতে ভালো থাকবেন আশা করি।

YDBNEXHnHC4i6mFXwdjFWEyvFUuXfTk67Vem29fPPg1TuJR95LT9QniASa4c1dUXBWE.png

সময় নিয়ে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Black & White Minimalist Business Logo.png


You can also vote for @bangla.witness witnesses

3zpz8WQe4SNGWd7TzozjPgq3rggennavDx3XPY35pEAVnpvDGTmz6yM4BdeUwpQ8vMxtR3sQse9kG46R2Lk4NBaGfzPmL5tiA85DdFd7TDvbMGaNMAY2RBgSWfNp5kM1Qjr3515gWKvjxzADBcu4.png

Sort:  
 10 months ago 

ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি নোড়া ও বাটনা নিয়ে আপনি দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। বসতবাড়িতে মূলত মসলা বাটার জন্য মাটির তৈরি বটনা ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ভর্তাও করা হয়। আপনি মাটির বাটনা ও নোড়ার দারুন কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। আপনি ঠিকই বলেছেন যে নোড়া ছাড়া বাটনা অচল। এরা দুজনেই একে অপরের পরিপূরক।এগুলো শুধু গ্রামাঞ্চলেই নয় বরং শহরের বাড়িতেও দেখা যায়। ধন্যবাদ আপনার ঐতিহ্যমূলক পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

ধন্যবাদ

 10 months ago 

মাটির তৈরি এই পাত্র গুলো কুমারেরা প্রথমে তৈরি করে। এরপর এগুলো আগুনে পুড়িয়ে বেশ শক্ত করে তৈরি করে। এরপর এগুলো এনারা বাজারে বিক্রি করেন। এগুলো আমরা বাজার থেকে কিনে নিয়ে এসে বাড়িতে রান্না ঘরে ব্যবহার করি। এই পাত্র যেকোনো ধরনের ভর্তা করার জন্য বেশ ভালো কাজে আসে। আলু ভর্তা করার জন্য সবথেকে এটি বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কেননা আমরা বেশিরভাগ সময় আলু ভর্তা খেয়ে থাকি এছাড়াও অন্যান্য ভর্তা করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটিতে দুটি জিনিস থাকে একটি হল মাটির তৈরি পাত্র এবং আরেকটি হলো ছোট দন্ড এগুলো নাম আমি সঠিক জানিনা। আমাদের বাড়িতে এগুলো আমরা ব্যবহার করি না। আমরা বড় বা মাঝারি একটু বড় সাইজের মাটির মধ্যে যেকোনো ভর্তা করে থাকি। তবে এগুলোতে ভর্তা করে খেলে নাকি স্বাদ বেশি ভালো লাগে। আপনি বেশ চমৎকার তুলেছেন ছবিগুলো এবং আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে অনেক কিছু আমি জানতে পারলাম। এগুলোর ব্যবহার আমি আগে জানতাম না আপনার কাছে যে তথ্যগুলো পেলাম তার মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনি চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

এতো সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ

 10 months ago 

ঐতিহ্যবাহী বাটনা বা নোড়া নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। বাটনা ও নোড়া এটি অনেক আগ থেকে প্রচলন হয়ে আসতেছে। বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে এই বাটনা ও নোড়ার ব্যবহার বেশি দেখা যায়। আমাদের বাসায় ও এখনও এই বাটনা ও নোড়া আছে।

@md-sajalislam.

20230511_105644__01.jpg

 10 months ago 

ধন্যবাদ

 10 months ago 

ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি বাটনা নিয়ে সুন্দর উপস্থাপন করেছেন আপু। আমাদের মা বোনদের একমাত্র ভরসা হলো এই বাটনা ।আমি যখন চাকরির সুবাদে প্রথম সৈয়দপুরে আসি তখন আমার রান্নার জন্য মসলা বাটার কোনো কিছুই ছিল না । আমাদের টাঙ্গাইলে পাটা পাওয়া যায় মসলা বাটার জন্য। তাই আমি সৈয়দপুরের দোকানে দোকানে গিয়ে পাটা খুজতে শুরু করি। কিন্তু সৈয়দপুরের পাটা পাওয়া যায় না। আর পাওয়া গেলেও সেগুলো ভালো হয় না। কারণ সৈয়দপুরের মানুষের ভরসা হচ্ছে বাটনা নোড়া।তাই প্রথমে আমি একটা বাটনা কিনে নিলাম , তারপর দেখি এই বাটনাতে বাটতে গেলে নোড়ার প্রয়োজন। তারপর আমি একটি নোড়া কিনলাম, সেটা হচ্ছে বাঁশের নোড়া। এখন আমার বাসায় এই বাঁশের তৈরি নোড়া এবং বাটনার সাহায্যে সমস্ত মসলা বেটে থাকে । আমার বাসার সবাই প্রশংসা করে এই উত্তরাঞ্চলের বাটনা এবং নোড়া নিয়ে। এটার ব্যবহার এবং সুবিধা পেয়ে তারা সবাই উপকৃত। প্রথম আমি যখন বাসায় এসে দেখলাম সবাই এই বাটনা এবং নোড়া ব্যবহার করে তখন আমি একটু অবাকই হলাম। কারণ আমাদের অঞ্চলে এই বাটনা এবং নোড়া পাওয়া যায় না। আমাদের অঞ্চলে এই বাটনা ও নোড়া দেখলে সবাই হাসাহাসি করবে এবং এটা চিনবেও না। এর ব্যবহারবিধি কেউ বুঝবে না। প্রথমে এই বাটনা দিয়ে আমার বাসায় মসলা করতে পারতো না । কিন্তু এখন আমার বাসায় খুব সহজে বাটনা নোড়া দিয়ে সুন্দর ভাবে মসলা করা হয়। আপনি অনেক সুন্দর সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন। ফটোগ্রাফি দারুন হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

আপনাকেও ধন্যবাদ

বাটনা নোড়া এইগুলা আবার কি? এইগুলা একবার ঢাকনা হিসেবে ব্যবহার করছেন, আবার কোন কিছু পিষে মিহি করার কাজে ব্যবহার করছেন। বাটনা নোড়া নিয়ে আসলে কিভাবে কি হলো সব আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।বাটনা নোড়া এর আগে একদিন দেখছিলাম কিন্তু কিছুই বুঝতে পারিনি ,এর ব্যবহার কিভাবে করে তাও আমি জানিনা। আপনার পোস্টের মাধ্যমে একটু একটু বুঝতে পারছি তাও তালগোল পাকিয়ে গেছে। নতুন একটা জিনিস আপনার পোস্টের মাধ্যমে দেখতে পারলাম ও জানতে পারলাম। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 10 months ago 

ধন্যবাদ

 10 months ago 

ঐতিহ্যবাহী মাটি ও বাঁশোর তৈরি বাটনা বা নোড়া আমাদের দেশে বহুলপ্রচলিত। বাটনা বা নোড়া সাধারণত রান্নার কাজে বিশেষ ভুমিকা পালন করে। রান্নার করার ক্ষেত্রে যে মসলা জাতীয় দ্রব্য পিষে গুড়ো করা হয়। বাটনা বা নোড়া নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন আপু।

 10 months ago 

ধন্যবাদ

 10 months ago 
DescriptionInformation
plagiarism-free
#steemexclusive
Ai Content - free

We expected you to be friendly and active in the Steem For Tradition Community. We appreciate your effort. Thank you for sharing your beautiful content with us ❤️.

 10 months ago 

আমাদের এখানে সাধারন সাংকি ও নোড়া নামে পরিচিত। তবে একেক জায়গায় একেক নাম হয়ে থাকে। এই সব মাটির জিনিস না হলে আমরা রান্না বা অনন্য জিনিস তৈরি করতে পারি না। এজন্য এটা আমাদের গ্রামীণ জীবনে খুবেই গুরুত্বপূর্ণ। আর আপনার পোস্টে অনেক সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 10 months ago 

ধন্যবাদ

 10 months ago 

ঐতিহ্যবাহী বাটনা ও নোড়া নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন আপু। আমাদের এলাকায় এই বাটনাকে সারোয়া বলা হয়। আই বাটনা বা সারোয়ায় বিভিন্ন ধরনের ভর্তা করা হয়। তাছাড়াও এগুলোতে মেহেদী বাটা, পেয়াজ, মরিচ, রসুন ইত্যাদি বাটা হয়। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই এগুলো দেখা যায়। আমাদের বাড়িতেও আছে।

 10 months ago 

ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 66494.63
ETH 3508.10
USDT 1.00
SBD 2.66