কালী পূজায় ঘোরাঘুরি -পর্ব ৪
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Photo by @winkles
Photo by @winkles
আজকে আপনাদের সাথে কালী পূজার আরো কিছু ছবি শেয়ার করে নেবো। আগের তিনটি পর্বে মাঝারি থেকে ছোট মিলিয়ে বেশ কিছু প্যান্ডেলের ছবি শেয়ার করেছিলাম, এইবারের পর্ব থেকে কিছু সেরা সেরা স্থানের কালী পূজার ছবি দেখাবো। আগের পর্বে শেষ যেটা দেখেছিলাম সেটা হলো দেশবন্ধু সংঘ ক্লাব এর পূজা। এরপর সেখান থেকে সব থেকে ভালো পূজা যেখানে শুরু হয়েছিল সেটাই গিয়েছিলাম। আর এইটা ছিল নবপল্লী সর্বজনীন শ্যামা পূজা। এই নবপল্লী এর পূজা প্যান্ডেল দেখার জন্য যেন মনে হচ্ছিলো সারা জায়গার মানুষজন এক জায়গায় এসে হাজির হয়েছে।
Photo by @winkles
Photo by @winkles
Photo by @winkles
এই নবপল্লীর এইবার থিম তৈরি করেছিল কেদারনাথ এর, যেটা দেখার জন্য সবাই পাগল ছিল। আগের পর্বে একটা কথা বলেছিলাম যে অন্যান্য জায়গায় লোকজন একটু কম কেন হয়েছিল, তার সব থেকে বড়ো কারণ ছিল এই নবপল্লীর কেদারনাথ দেখার জন্য। তাছাড়া এই নবপল্লীর পুজো প্যান্ডেল প্রতিবছরই দুর্দান্ত করে থাকে আর অসম্ভব ভিড় হয়ে থাকে। তবে এইরকম যে ভয়াবহ লাইন হবে তা আন্দাজ আমি করতে পারিনি, মানে এতটা লাইন যে আমি লাইন শেষ কোথায় সেটাই খুঁজে পাচ্ছিলাম না, বীভৎস লাইন ছিল। আমি সাধারণত প্রতিবারের মতো ভেবেছিলাম যে নবপল্লীর পুজো প্যান্ডেল দেখার জন্য কমপক্ষে ২-৩ টা স্তরে লাইন থাকবে, কারণ প্রতিবারই তাই করে থাকে।
Photo by @winkles
Photo by @winkles
প্রতিবারই এতো লোকজন হয়ে থাকে যে সামলাতে গেলে হিমশিম খেয়ে যায় যার জন্য এই পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু এইবার সম্পূর্ণ ছিল উল্টো, বড়ো বড়ো ক্লাব এর প্যান্ডেলগুলোতেও এইবার সেই ছাড় দেইনি। আমি আগেভাগে লাইনে দাঁড়ানোর আগেই গেটের একটা-দুটো ছবি তুলে নিয়েছিলাম, নাহলে আর সেটাও উপায় থাকতো না তোলার। আর এই ক্লাব এর প্যান্ডেলটিও মেইন রোডের থেকে অনেক দূরে, ফলে এই ভিড় ঠেলে যাওয়াটাও ভীষণ কষ্টসাধ্য ছিল, আর আমিতো তারপর ছিলাম ওইদিন কলকাতায় ঘুরে আরো ক্লান্ত। সব মিলিয়ে একটু কষ্ট হয়েছিল দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে।
Photo by @winkles
Photo by @winkles
Photo by @winkles
গেটের মুখ থেকে বেরিয়ে সামনের দিকে গিয়ে যে লাইনে দাঁড়াবো, সে আমি আর লাইনের শেষ মাথা খুঁজে পাচ্ছি না, মানে এতো বড়ো লাইন আমি এই প্রথম দেখলাম কালী পূজায়। আপনারা লাইনটা আসলে চোখে না দেখলে এইভাবে বলায় অতটাও ধারণা করতে পারবেন না, আনুমানিক আমি যদি ধরি তা প্রায় শুধু মাত্র মেইন রোডের উপরে ৭০০ জনের পরে লাইন ছিল, আর তারপর তো ভিতরে আরো লাইন, ফলে সব মিলিয়ে প্রায় ৩০০০ এর উপরে লোকজন হয়েছিল, আর এইগুলো ক্লাব এর সদস্যরাও ভিডিও করে যে লোকজন কেমন হচ্ছে । মেইন রোডে একপ্রকার মারামারির পর্যায়ে চলে গেছিলো, কারণ বাইরের থেকে কিছু ছেলেপিলে এসে লাইন ভেঙে সবার মাঝখানে গিয়ে গিয়ে ঢুকছে,যদিও পরে পুলিশের লোকজন মারধর দিয়ে বের করে দিয়েছিলো।
Photo by @winkles
Photo by @winkles
আর ছেলেপিলেদের সাহসও বটে, এক তো অন্যায় করছে তার উপর পুলিশের সাথে তর্ক করছে। শুধু মাত্র মেইন রোড টপকাতে রাত ১১ টা থেকে সাড়ে ১২ টা বেজেছিল। এরপরে ভিতরে একটু লাইন হালকা ছিল ফলে ১ টার মধ্যে প্যান্ডেলের ধারে কাছে চলে গিয়েছিলাম । এই কেদারনাথ এর প্যান্ডেলটি দেখার পরে আসলে আমার মনে হয় কারো কষ্ট করে আসাটা বিফলে যাইনি, একদম অবিকল মূল কেদারনাথ এর মতোই সাজিয়েছে। আর এর ভিতরে প্রবেশ করার পরে দাঁড়াতেই দিচ্ছে না, একটু দাঁড়িয়ে ছবি তুলবো সেটাও সময় দেয় না, চলতে চলতে ছবি তোলা আর কি। এতো ঘন্টা কষ্ট করে দাঁড়িয়ে ভিতরে গেলাম আর ২ সেকেন্ডে বের করে দিলো, এই হলো বড়ো বড়ো জায়গার পূজা দেখার ফেরা।
Photo by @winkles
Photo by @winkles
বাইরের এক্সিট গেটটাও করেছে একটা গুফার মতো সাজিয়ে। যাইহোক বেশি একটা ছবি তুলতে পারিনি এই কেদারনাথ এর, চলতে চলতে যে কয়টা তোলা গেছে সেই কয়টা তুলেছি। এরপর এইটা দেখার পরে আসলে আর কোনোটাই দেখার এনার্জি ছিল না, মনে হচ্ছিলো বাড়ি চলে যাই, কিন্তু সেখান থেকে সামনে আরেকটা দেখলাম কাছাকাছি ভাটরাপল্লি নামে একজায়গায় পূজা হচ্ছিলো, আর ওটাও বেশ বড়ো করেই করেছে। কিন্তু সমস্যা হলো, ভিতরে এমন জায়গা দিয়ে ঢুকেছি যে চলে গেছি পিছনের এক্সিট গেটের দিকে। এখানে আসলে আর অতটা পথ ঘুরে গিয়ে দেখার ইচ্ছা আর হচ্ছিলো না, পা দুটো ব্যাথার চোটে আর হাঁটার উপায় ছিল না।
Photo by @winkles
Photo by @winkles
তবে একটা সুযোগ পেয়েছিলাম পিছন দিক দিয়ে গিয়ে দেখি তৃতীয় জেন্ডারের লোকজন কিছু ঢুকছে, আর ওদের কিছু বলেও না, এই সুযোগে আমিও পিছন পিছন প্যান্ডেলে ঢুকলাম আর মায়ের ছবিটা তুলে চলে আসলাম এই সাইডে। আসলে পুকুরের এক সাইডে, ফলে খানিকটা ঘুরে যেতে হয়। যাইহোক এখানে বাইরে রাস্তার এক পাশে অর্থাৎ এই ভাটরাপল্লির মধ্যেই করা আর কি, আরো কিছু আকর্ষণীয় বিষয় তারা করে রেখেছিলো, যেমন বিশ্বকাপ ফুটবলের একটা থিম তৈরি করেছে আর যার মধ্যে দেখতে পাচ্ছেন মায়ের মূর্তি স্থাপন করেছে। আর চারিপাশ দিয়ে ফুটবলারদের ছবি, ফ্ল্যাগ দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছে। এই ছিল ওইদিনের শেষ দেখা, আর দেখা সম্ভব হয়নি ওইদিন, তাই এই পর্বটা এখানেই শেষ করলাম। পরের পর্বে আরো আকর্ষণীয় কিছু দেখাবো।
All photos what3words location: https://w3w.co/yell.storybook.wishing
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
ক্যামেরা | স্যামসুং গ্যালাক্সি M33 5G |
---|---|
ক্যাটাগরি | ফোটোগ্রাফি |
লোকেশন | বারাসাত, পশ্চিমবঙ্গ |
তারিখ | ২৫.১০.২০২২ |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
দাদা আজকে আপনার কালীপুজোর চতুর্থ পর্বের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি। সত্যি অসাধারণ ফটোগ্রাফি করেছেন। দেখতে পেয়ে খুব ভালো লাগলো। বিশেষ করে নবপল্লী কেদারনাথের ফটোগ্রাফি দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। অন্য জায়গাতে লোক হয়নি সেটা আজকে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম। সব লোকজন এখানে কেদারনাথের থিম দেখার জন্য বের হয়ে। খুবি সুন্দরভাবে তৈরি করেছে, যার কারণে এ সব দেখার জন্য ভিড় করেছে। সত্যি দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। খুবই ভালো লেগেছে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
এত লম্বা লাইনের কথা শুনেই তো গলা শুকিয়ে গেছে দাদা। এই লম্বা লাইন দেখলে আমি মনে হয় সেখানেই মাথা ঘুরে পড়ে যেতাম। আপনি তবুও এই লাইন দেখে বেঁচে আছেন। আমি হলে তো হালকা করে মরে যেতাম🤪🤪। নবপল্লী সর্বজনীন শ্যামা পূজা দারুন হয়েছে। এবারের পুজোর এত বিশাল আয়োজন দেখে সত্যি ভালো লাগলো দাদা। আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো দেখে পুজোর বিষয় গুলো সুন্দর ভাবে জানতে পারলাম। অনেক সুন্দর ভাবে সাজানো। সব মিলিয়ে বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছেন দাদা। অনেকে তো আবার মারামারিও করে ফেলেছে। পুলিশ যেহেতু আছে তাহলে তো চিন্তাই নেই। যাইহোক দাদা আপনার অনেক ধৈর্য সেটা আবারও অপমান করলেন। না হলে এই ভিড়ের মাঝে এতক্ষণ সময় দাঁড়িয়ে থেকে পুজো মন্ডপ পরিদর্শন করতেন না। আমাদেরকে একটু ধৈর্য ধার দিয়েন দাদা।😇
২ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরে যদি পাঁচ মিনিট দাড়িয়ে দেখতে না দেয় তাহলে কেমন রাগটা লাগে। যদিও এখন ওয়েদার একটু ভালো তা না হলে তো গরমে লোকজন অসুস্থ হয়ে পড়ে যেত। যাক ঠিকই বলেছেন এত কষ্ট করে ঢোকাটা সার্থক হয়েছে ভেতরের ছবি দেখে তাই মনে হচ্ছে। এত সুন্দর ডেকোরেশন করার জন্য এত লোকজন হয়। উপরের ডেকোরেশন খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে। তাছাড়া গেটের লাইটিংও খুব সুন্দর করেছে। তৃতীয় জেন্ডারদের সাথে সুযোগটা নিয়ে নিলেন দাদা। তা না হলে তো দেখতে পারতেন না। ভাটরাপল্লির এই মন্ডপটি যারা তৈরি করেছে তারা মনে হয় ফুটবল প্রেমিক।একেবারে বিশ্বকাপ ফুটবলের কাপই তৈরি করে ফেলেছে। খুব সুন্দর লাগছে দেখতে। যাক আপনার এনার্জি আছে বলতে হবে ।২-৩ ঘন্টা দাঁড়িয়ে একটি দেখার পর আবারও আরও একটি দেখতে গিয়েছেন।
আপনাদের ওপাশের পুজো গুলো দেখে মনে হয় যদি আমাদের এখানেও যদি এমন হত,অথবা পুজোয় যদি বর্ডার উন্মুক্ত থাকত তাইলে গিয়ে দেখে চোখ কে ধন্য করা যেত।কি অসাধারণ ভাবে একদম হুবহু কেদার নাথ কে ফুটিয়ে তুলেছে।দেখে বোঝার যো নেই যে এটি আসল কেদার নাথ নয়।বিশ্বকাপের থিম টিও বেশ ভাল ছিল।আর চলন্ত অবস্থায় তুললেও আপনার ফটোগুলো দারুন হয়েছে।ধন্যবাদ দাদা শেয়ার করে মাতৃদর্শন এর সুযোগ দেওয়ার জন্য।
একেবারে মাথানষ্ট ব্যাপার দাদা। এতো লোক হয়েছে তাহলে বুঝতেই হবে ঐ পূজোটা আশপাশের মধ্যে সবচেয়ে সেরা ছিল। আর আপনার কথা শুনে মনে হলো সারারাত ঠাকুর দেখেই কাটিয়েছেন। এবং ফিফা ওর্য়াল্ড কাপ এর থিমটা বেশ চমৎকার এবং ইউনিক লেগেছে আমার কাছে। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
কেদারনাথ এর থিমে যে দারুণ ভিড় হয়েছে সেটা রূপাই দাদার পোষ্ট পড়ে জেনেছিলাম দাদা।তবে থিমটি দেখে মনে হচ্ছে স্বর্গের কৈলাশ পর্বত।দাদা ,কলকাতায় গিয়ে ক্লান্ত থাকার পর ও ভিড় ঠেলে পূজা দেখতে যাওয়া খুবই এনার্জি আছে আপনার দেখছি!
৩০০০ এর উপরে লোকজন,দাদা আপনি আবার মারামারির মধ্যে গিয়ে পড়েন নি তো?পুলিশকে কেউ মানতে চায় না এখন।ভাগ্যিস আপনি
তৃতীয় জেন্ডারের লোকজনের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন।নাহলে এত সুন্দর একটি প্রতিমা দেখা হতো না।সামনেই তো বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা আসছে,ধন্যবাদ দাদা।
এই বদমাশ ছেলে পেলে গুলোর দল আসলে প্রতিটা জায়গাতেই থাকে।এদের কাজ ই হচ্ছে জায়গায় জায়গায় গিয়ে গোলমাল পাকানো।তবে মোটামুটি দেখতে পেরেছেন এতো মানুষ এর ভিতর দিয়ে তাও কিন্তু মন্দ নয়।আমি হলে ভয়েও যেতাম না,বাপরে এতো মানুষ!
দাদা আপনাদের ওদিকের প্যান্ডেলে আর মায়ের মূর্তি দেখে সেখানে যাওযার ইচ্ছে আমারও প্রচুর হচ্ছে ৷ আসলে থিম গুলো এতো সুন্দর করে সাজানো যে চোখ ফেরা যাচ্ছে নাহ ৷ নবপল্লীর থিম গুলোও চমৎকার চমৎকার ৷ ধন্যবাদ দাদা আপনাকে দারুণ কিছু কালী পূজায় ঘোরাঘুরি করে তা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ৷ আমরাও আপনার মাধ্যমে দারুণ কিছু প্যান্ডেলের সৌন্দর্য এবং কালি মায়ের মূর্তি দর্শন করতে পারলাম ৷ ধন্যবাদ আপনাকে
এই পুজোটা মনে হয় আপনাদের বারাসতে সবচেয়ে ভালো হয়েছে। এটা বেশ অনেকের মুখেই শুনলাম। আর ব্যাক্তিগত ভাবেও আমার খুব ভালো লেগেছে এই পুজোটা। দেখতে দেখতে সময় কেটে গেলো। আপনার পোস্টগুলো দেখে অন্ততঃ পুরোনো স্মৃতি তাজা হয়ে গেলো।
নবপল্লীর এবারের থিমটা কিন্তু অসাধারণ সুন্দর বলতেই হচ্ছে। কেদারনাথের বিষয়টি আগে জানতাম, কিন্তু এখানে এতো অপরুপ করে সাজাবে কল্পনাই করা যায় না। এতো সুন্দর করে সাজানো আর বেশ গোছানো আলোকসজ্জা। ৩০০০ এর উপর লোক সামলোনো বেশ কঠিন। এতোটাই ভিড় ঠেলে আমাদের দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন দাদা, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আর বখাটে ছেলের দল ভালোই শাস্তি পেয়েছে। অনেক কষ্ট করেছেন দাদা ছবিগুলো তুলতে। আপনার এনার্জি আছে বলতেই হচ্ছে। সবমিলিয়ে খুব ভালো উপভোগ করলাম।
দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀