মুলো দিয়ে রুই মাছের রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। এই রেসিপিটা গতকাল করেছিলাম। এই রেসিপিটা হলো মুলো দিয়ে রুই মাছ রান্না। এই রেসিপিটা শুধুই মুলো দিয়ে করার কথা ভেবেছিলাম প্রথমে, তারপর ভাবলাম শুধু মুলো রুই মাছের সাথে ভালো লাগবে না মনে হয় তাই সাথে আলু আর বেগুন দিয়ে দিয়েছিলাম। মুলো আমি খেলেও পছন্দটা বেশি একটা করিনা আর তাই কেনাও হয় না এই মুলো। সারা বছর ধরে একবার কি দুইবার মনে হয় মুলো খাই তাও আবার অনেক সময় ভাজা করে খাই। আর এইজন্য আমি শুধু মুলো দিয়ে তেমন একটা সাহস করে উঠতে পারিনি তরকারি করতে। আজকাল বাজারে মুলোর সাইজও সেইরকম খানদানি লেভেলের ওঠে, দেখলেই মনে হয় কিনে নিয়ে বাঁধিয়ে রাখি হা হা। সাদা মুলো বা লাল মুলো যাইহোক না কেন আমার কাছে স্বাদটাই একইরকম লাগে। আর এখন বাজারে এই যেসব বড়ো বড়ো সাইজ এর মুলো ওঠে সব হাইব্রিট জাতের মুলো, যেমন লম্বা তেমন মোটা । তবে অনেকের আবার দেখেছি মুলো দিয়ে ডাল করে খেতে, আমাদের বাড়িতেও খায় কিন্তু আমার ভালো লাগেনা বলে এর স্বাদটাও কোনোদিন টেস্ট করিনি। সত্যি বলতে মুলো বাজার থেকে কিনে আনলেই আগে আমার খুব রাগ হতো, কিন্তু মাঝেমধ্যে ভাজা করে একটুআদ্দুক করে খেতে খেতে এখন একটু ভালো লাগে। যাইহোক, এই মুলো আজকে রান্না করলাম কারণ অনেকদিন কিনে এনে ফেলানো ছিল ফ্রিজে, তাই করে দিলাম কিন্তু খাওয়ার সময় মুলো বেশি খাইনি আমি, যা খাওয়ার বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা খেয়েছে। তবে রুই মাছটা বেশ স্বাদের লেগেছিলো খাওয়ার সময়। এখন এই রেসিপিটির মূল প্রস্তুতির দিকে চলে যাবো।


❂প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:❂

❣উপকরণ
পরিমাণ❣
রুই মাছ
৯ পিচ
গোল আলু
৫ টি
লাল মুলো
৪ টি
বেগুন
১ টি
পেঁয়াজ
১ টি
রসুন
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
পরিমাণমতো
লঙ্কার গুঁড়ো
১/২ চামচ
গোটা জিরা
পরিমাণমতো
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৫ চামচ
হলুদ
৫ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১ চামচ


গোল আলু, লাল মুলো, বেগুন, পেঁয়াজ, রসুন


কাঁচা লঙ্কা, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


დএখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


☀প্রস্তুত প্রণালী:☀


➤রুই মাছটিকে কাটিয়ে এনে রাখা ছিল, আমি রান্নার আগে একবার জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম। এরপর মূলগুলোর খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে নিয়ে ধুয়ে রেখেছিলাম।

➤গোল আলুগুলোর খোসা ভালোভাবে ছালিয়ে রেখেছিলাম। কেটে পিচ করে নেওয়ার পরে জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে রেখেছিলাম।

➤বেগুনটিকে কেটে পিচ করে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে রেখেছিলাম। এরপর পেঁয়াজ এর খোসা ছালিয়ে কেটে নিয়েছিলাম এবং সেই সাথে রসুনের কোয়াগুলো আলাদা করে খোসা ছালিয়ে রেখেছিলাম। কাঁচা লঙ্কাগুলোকে কেটে নেওয়ার পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

➤রুই মাছের পিচগুলোতে ২ চামচ লবন আর হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর মাছের পিচগুলোতে ভালো করে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।

➤একটি প্যানে তেল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তেলটা গরম হলে মাছের পিচগুলো অল্প করে দিয়ে দিয়ে সব ভালোভাবে ভেজে তুলে রেখেছিলাম।

➤মাছ ভাজার সাথে সাথে অন্য আরেকটি কড়াই চুলায় বসিয়ে অল্প তেল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে তাতে আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর লাল করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤আলু ভাজার পরে আরেকটু তেল দিয়ে মুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤মুলো ভাজা হয়ে গেলে কড়াইতে আরেকটু তেল দিয়ে তাতে বেগুনের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালো করে ভেজে নেওয়ার পরে তুলে নিয়েছিলাম।

➤সব ভাজা হয়ে গেলে কড়াইতে পরিমাণমতো তেল দিয়ে তাতে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে পেঁয়াজ-রসুন দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤গোটা জিরার সাথে পেঁয়াজ-রসুন দেওয়ার পরে ভালো করে ভেজে নিয়েছিলাম। এরপর তাতে ভেজে রাখা আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤আলু দেওয়ার পরে তাতে বেগুনের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে ভেজে রাখা মুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤মুলো দেওয়া হয়ে গেলে তাতে কাঁচা লঙ্কা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে স্বাদ মতো লবন, হলুদ এবং লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤মশলাগুলো সব ভাজা উপাদানের সাথে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম। এরপর তাতে পরিমাণমতো জল দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤জল দেওয়ার পরে তরকারি ভালোভাবে ফুটিয়ে নিয়েছিলাম। এরপর আলুগুলো সেদ্ধ হয়ে গেলে কিছু আলু তুলে নিয়ে ভালোভাবে গলিয়ে নিয়েছিলাম।

➤আলু গলানোর পরে তরকারিতে ভেজে রাখা রুই মাছের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এর কিছুক্ষন পরে তরকারিতে গলানো আলু দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তরকারির সাথে নেড়েচেড়ে দিয়ে আরো কিছুক্ষন দেরি করেছিলাম তরকারিটা ভালোমতো হয়ে আসার জন্য।

➤তরকারির ঝোল গাঢ় হয়ে আসলে আর ঝোল কমে আসলে আমি চুলা অফ করে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়ে তরকারিটা পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

মুলো এমন একটি সবজি যেটা প্রায় মানুষের কাছেই অপছন্দের। দাদা আপনি প্রথমে শুধু মুলো দিয়ে তরকারি রান্না করতে চেয়েছিলেন যেটা স্বাদে কিছুটা হলেও কম হত তারপর আলু বেগুন দিয়েছেন অনেক ভালো হয়েছে । মুলো আমার কাছে মোটামুটি ভালো লাগে আপনার মত আমিও মাঝে মাঝে খেয়ে থাকি বর্তমানে মুলো দিয়ে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করা হয় সেটা তেমন একটা ভালো লাগে না আমার কাছে ।তবুও বছরের শীতকালের সবজি একটু স্বাদ নেওয়ার জন্য খেতে তো হবেই। যাই হোক আজকে দারুন একটা রেসিপি তৈরি করেছিলেন যেটা আমার খুবই পছন্দ হয়েছে গরম গরম খেতে অনেক মজা হয়েছিল বুঝি।

 2 years ago 

গতরাতে নিজের সবজি বাগান থেকে মূলে তুলেছি। খুবই ভালো লাগলো আপনার এত সুন্দর মূল্য আর মাছের রেসিপি দেখে। নয় পিস রুই মাছ ৫ পিস গোল আলু আর অন্যান্য উপাদান সমগ্রের সাথে সুন্দর ভাবে রান্নার কার্যক্রম করেছেন দেখে আমি তো অবাক। তবে রেসিপি দেখে বুঝতে পারলাম খুবই লোভনীয় ছিল।

 2 years ago 

মুলো দিয়ে রুই মাছের রেসিপির কালারটা খুব সুন্দর হয়েছে দাদা। রুই মাছ ভাজিটাও খুব সুন্দর হয়েছে। আলুও ভেজে রান্না করেছেন, সেজন্য মনে হচ্ছে রান্নার স্বাদ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। এককথায় আপনার রেসিপিটা দুর্দান্ত হয়েছে দাদা। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, এতো সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

দাদা ভাল আছেন আশাকরি। আপনার মত দাদা আমিও মূলা রান্নার চাইতে ভাজা খেতে পছন্দ করি। আপনি আজ মূলা,বেগুন ও আলু দিয়ে রুই মাছ রান্না করলেন।রেসিপিটি বেশ লোভনীয় লাগছে। বেগুন, আলু দিয়ে রুই, কাতল মাছ এমনিতেই ভাল লাগে। তবে মাছ ভাজা ভাজা করেছেন তাই মূলাও খারাপ লাগার কথা নয়। মাছ ভাজার পাশে মূলা দিলে খেতে বেশ ভালোই লাগে। মজার এই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা।ভাল থাকবেন।

 2 years ago 

আজকাল বাজারে মুলোর সাইজও সেইরকম খানদানি লেভেলের ওঠে, দেখলেই মনে হয় কিনে নিয়ে বাঁধিয়ে রাখি হা হা।

মুলোও আজকাল খানদানি হয়ে যাচ্ছে দাদা😅। সত্যি দাদা আজকাল বাজারে বড় বড় মুলো দেখতে পাওয়া যায়। সাদা ধবধবে মুলোগুলো দেখলেই খেতে মন চায়। যদিও খুব কমই খাওয়া হয় না। তবে মুলো দিয়ে যে ডাল রান্না করা যায় তা আজকে প্রথম জানতে পারলাম দাদা। রুই মাছ কিংবা কাতলা মাছের সাথে মুলো রান্না করলে খেতে অনেক ভালো লাগে। আর সাথে যদি আলু এবং বেগুন দেওয়া হয় তাহলে খেতে বেশি ভালো লাগে। শুধু মুলো রান্না করলে কেমন জানি মনে হয়। সাথে বেগুন দিলে তরকারিটা বেশ ভালো হয়। মুলো ভাজা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। অনেকেই আছে মুলো খেতে খুব একটা পছন্দ করেনা। তবে শীতের সময় যে কোন সবজি খেতে ভালো লাগে। কারণ শীতের সময় সবজিগুলোর স্বাদ অন্যরকম হয়। মুলো, বেগুন ও আলু দিয়ে রুই মাছের রেসিপি দারুন হয়েছে দাদা। মনে হচ্ছে খেতে ভালোই হয়েছিল।

 2 years ago 

মূলা কিন্তু আমার ও পছন্দ নয়। তবে বিভিন্ন প্রকার সবজি দিয়ে তরকারি খাওয়ার মজাটাই কিন্তু আলাদা। আপনি তো দেখছি দাদা বেগুন, আলু মূলা আর রুইমাছ দিয়ে বেশ মজাদার একটি রেসিপি আমাদের কে উপহার দিলেন। তরকারি দেখেই তো মনে হচ্ছে যে, খুব স্বাদের হয়েছে।

 2 years ago 

সত্যি কথা বলতে গেলে সাদা মুলো বা লাল মুলো যাই হোক না কেন আমি মুলো এর তরকারি সাধারণত খুব একটা পছন্দ করি না ।মুলো ভাজা খেতে আমার বেশি ভালো লাগে। আমাদের বাড়িতে যদি মুলোর তরকারি কোন মাছ দিয়ে রান্না করা হয় তাহলে আমি শুধু মাছ আর তরকারির ঝোল দিয়ে খাই, মুলো সাধারণত আমিও তেমন একটা খাই না।

 2 years ago (edited)

খানদানি মুলো খেলে দাদা খানদানি খানদানি একটা ভাব আসবে😜।বৌদি হলে বৌদিকে বলবো ঝাগড়া বেশি বেশি বাজার থেকে মুলো কিনে আনতে আর রান্না করতে,তাহলে চাইলে ও মুলোর ভয়ে ঝগড়া করবেন না😉😉 হা হা।যাই হোক আগে আমারও মুলো দেখলে বেশ বিরক্ত লাগতো,তবে এখন খেতে ভালো লাগে, বিশেষ করে চিংড়ি দিয়ে।তবে বাজারের এত বড় বড় মুলা কখনও খাওয়া হয়নি,ঐগুলা দেখলেই মনে হয় বাম্পার ফলন হয়েছে মুলোর।দাদা মুলো, আলু, বেগুন দিয়ে রুই মাছের রেসিপি বেশ দারুন হয়েছে। প্রতিটি ধাপ আপনি খুব সুন্দর করে দেখিয়েছেন। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

মুলো দেখে হাফিজ ভাইয়ের কথা মনে পড়ে গেল হা হা হা। আপনি মুলো পছন্দ করেন না কিন্তু আমার কাছে তো মুলো ভাজি করে খেতে অনেক মজা লাগে।যাই হোক মজাদার রুই মাছের রেসিপি তৈরি করে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। দেখতে অনেক লোভনীয় লাগছে দাদা বিশেষ করে আলাদা পাত্রে পরিবেশন করার পরে বড় রুই মাছের ছবি টা বেশি আকৃষ্ট করেছে।

 2 years ago 

দাদা আজকে আপনার পোষ্টে মুলার বিষয়ে আপনার অনুভূতি পড়ে হাঁসি পেল। আপনি ঠিকই বলেছেন বর্তমানে বাজারে সাদা এক প্রকার হাইব্রিট মুলা আসে। দেখতে যেমন মোটা আবার লম্বা। তবে দাদা ঐমুলা গুলো খেতে মজা না। আমি খাওয়া তো দুরের কথা এগুলোর দামও জিঙ্গেস করি না। তবে আপনি রেসিপিতে যে লাল মুলাটা দিয়েছেন,সেটা খেয়েছি। এটা ছোট থাকতে খেতে ভালই লাগে। আজকে আপনার তিন প্রকার সবজি দিয়ে রুই মাছের রেসিপিটা ধারুন হয়েছে। ধন্যবাদ দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 59500.17
ETH 2654.95
USDT 1.00
SBD 2.41