হিন্দি মুভি রিভিউ: "সূর্যবংশম"

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আমি আপনাদের সাথে একটা হিন্দি মুভি রিভিউ শেয়ার করবো। মুভিটি একটি পারিবারিক কেন্দ্রিক। বেশিরভাগটাই গ্রাম্য পরিবেশের একটা সম্ভ্রান্ত পরিবারের কাহিনী কে কেন্দ্র করে মুভিটি করা। এই মুভিটির নাম হলো "সূর্যবংশম"। এই মুভিটি অনেক পুরানো একটা মুভি এবং আকর্ষণীয় একটা মুভি। আশা করি এই মুভি রিভিউটি আপনাদের ভালো লাগবে।

ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে


☫কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:☫

মুভির নাম
সূর্যবংশম
পরিচালকের নাম
ই.ভি.ভি. সত্যনারায়ানা
লেখকের নাম
বিক্রমান
অভিনয়
অমিতাভ বচ্চন, সৌন্দর্য, রচনা ব্যানার্জি, জয়াসুধা, অনুপম খের, মুকেশ ঋষি ইত্যাদি
মূল ভাষা
হিন্দি
মুক্তির তারিখ
২১ মে ১৯৯৯ সাল ( ইন্ডিয়া )
সময়
২ ঘন্টা ৪৯ মিনিট
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া
বাজেট
₹৭ কোটি


✔মূল কাহিনী:


ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে

মুভির শুরুতে দেখা যায় অমিতাভ বচ্চন তার বাবার জন্য মন্দিরে পুজো দিতে যায়। এখানে অমিতাভ বচ্চন ডাবল পার্ট করেছে, ছেলের অভিনয়+বাবার অভিনয়। তাদের পরিবার একটা বিশাল সম্ভ্ৰান্ত পরিবার। পুজো দিয়ে বাড়িতে ফেরার পরে অমিতাভ বচ্চন তার মা কে ডেকে প্রসাদ দিতে বলে তার বাবা কে। কিন্তু তার প্রসাদ তার বাবা গ্রহণ করে না, কারণ তার বাবা তাকে পছন্দ করতো না। এখানে তাকে পছন্দ না করার পিছনে একটা কারণ আছে সেটি হলো অমিতাভ এর ছোটবেলা থেকে পড়াশুনাতে কোনো মন ছিল না, সে পরীক্ষায় বার বার ফেল করতো আর বাড়িতে এসে মিথ্যা কথা বলতো। এই নিয়ে বাবা ছেলের মধ্যে একটা রেষারেষি হয়, তবে তার বাবা অমিতাভ কে পছন্দ না করলেও সে তার বাবা কে ভক্তি শ্রদ্ধা করতো সবসময়। অমিতাভ ছিল তাদের ভাইদের মধ্যে ছোট, নিজের বাড়িতেই চাকরের মতো কাজ করতো । যাইহোক এর পরে গ্রামের থেকে একটা লোক এসে অমিতাভ এর বাবার কাছে নালিশ করে যে কেওড়া ঠাকুর অর্থাৎ মুকেশ ঋষি তার মেয়ের সাথে খারাপ আচরণ করেছে এবং অশ্লীন ভাষা প্রয়োগ করেছে। আর সেই কেওড়া ঠাকুর তার মেয়েকে পুলিশের কাছে মিথ্যা জালে জড়িয়ে দেয় টাকা দিয়ে। এরপর এই ঘটনা শোনার পরে অমিতাভ এর বাবা ভানু প্রতাপ থানায় গিয়ে পুলিশ অফিসার কে তার আইনের পাঠ ঠিকমতো পড়িয়ে মেয়েটিকে ছাড়িয়ে আনে। এরপর গ্রামে পঞ্চায়েত ডেকে কেওড়া ঠাকুরের বিচার বসায় এবং অবশেষে তাকে জেলে পাঠিয়ে দেয়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে গিয়ে ভানু প্রতাপ এর উপরে রাগারাগি করে এবং প্রতিজ্ঞা করে যে সূর্যবংশ এর সূর্য নিভিয়ে দেবো। এরপর অমিতাভ এর বাড়িতে শহর থেকে কিছু লোক অর্থাৎ সৌন্দর্য ও তার পরিবার বেড়াতে আসে কিন্তু মেয়েটি অমিতাভ কে চিনতো না ফলে তাকে বাড়ির কাজের লোক ভেবে বিভিন্ন ধরণের কাজকর্ম করাতে লাগে। মূলত সৌন্দর্য এর ভাইয়ের বিয়ে অমিতাভ এর বোনের সাথে ঠিক হয়েছিল।


ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে

অমিতাভ আর অনুপম কে দিয়ে তাদের জামা কাপড় লন্ড্রিতে পাঠায় এবং অনুপম ফাজলামো করে সৌন্দর্য এর আঙ্কেল এর জামার এক টুকরো ছিড়ে এনে দেয় আর পুরো জামাটা একটা ভিখারিকে পড়িয়ে দেয়। এরপরে সেই ভিখারির গায়ে জামাটা দেখে তার আঙ্কেল চমকে যায়, এখানে বেশ মজার একটা ঘটনা। এরপর সৌন্দর্য এর বাবা মা চলে আসে এবং আসতেই যখন সৌন্দর্য অমিতাভ কে গাড়ির থেকে ব্যাগ নিয়ে আসতে বলে তখন তার বাবা দেখে ফেলে এবং চিনতে পারে যে সে কে। তার বাবা যখন বললো যে সে ঠাকুর ভানু প্রতাপ এর ছেলে তখন এই কথা শুনে একপ্রকার শক খেয়ে গেলো সৌন্দর্য। এরপরেই সব ঘটনা বোঝার চেষ্টা করে এবং একদিন খেতে অনুপম খের কাজ করার সময় তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে যে অমিতাভ এর সাথে তার বাবার সম্পর্ক খারাপ হলো কিভাবে। তখন সে তার ছোটবেলা থেকে সব ঘটনা তাকে বলে দেয় এবং তখন থেকে অমিতাভ এর প্রতি সৌন্দর্য এর শ্রদ্ধা আরো বেড়ে যায়। এখানে মূলত অমিতাভ রচনা ব্যানার্জি কে ভালোবাসতো। আর রচনা ব্যানার্জি থাকতো তাদের বাড়িতে। এখন যখন তার বিয়ে অমিতাভ এর সাথে ঠিক করেছিল তখন অমিতাভ তো রাজি ছিল কিন্তু রচনা ব্যানার্জি রাজি হয়নি, কারণ অমিতাভ পড়াশুনা জানে না তাই। এরপর বাড়িতে গিয়ে অমিতাভ তার বাবার সাথে গিয়ে মিথ্যা কথা বলে যে সে রচনা ব্যানার্জি কে বিয়ে করতে পারবে না আর এখানেই তাদের বাবা ছেলের মধ্যে দূরত্ব আরো বেড়ে যায়। যাইহোক এরপর অমিতাভ এর বোনের বিয়েতে রচনা ব্যানার্জি আর তার ননদ আসে এবং অমিতাভ এর সাথে দেখা হলে তাকে তার ননদের সামনে বাড়ির চাকর বলে অসম্মান করে কিন্তু সেখানে সৌন্দর্য উপস্থিত থাকায় তার এই বিষয়গুলো খারাপ লাগে। ফলে তখন সে তার বান্ধবীকে ডেকে তাদের সামনে তার সম্পর্কে মহান কিছু কথা বলে সম্মানটাকে আরো বাড়িয়ে দেয় আর রচনা ব্যানার্জিকে পাল্টা কথার মাধ্যমে অপমান করে দেয়।


ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে

বিয়ের সব ঝামেলা মিটে গেলে সৌন্দর্য অমিতাভ কে ডেকে নিয়ে গিয়ে সরাসরি প্রস্তাব দেয় যে আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই। কিন্তু অমিতাভ রাজি হতে চায় না, তারপর বিভিন্ন পূর্বের কথা মনে করিয়ে দিতে লাগে এবং তাকে বলে দেয় রচনা ব্যানার্জি আপনার সাথে যেটা করেছে সেটা আমার সাথে যেন আবার করেন না। কারণ আমি আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি, এই কথা বলে অমিতাভ কে বলে আমি কালকে এই ঝর্ণার পাশে আপনার জন্য অপেক্ষা করবো। অমিতাভ এর পরে অনেক চিন্তাভাবনা করার পরে সেখানে সৌন্দর্য এর পাশে যায় এবং তাদের দুইজনের মনের মিলন হয়ে যায়। এরপর তারা তাদের বাড়ি চলে যায় এবং যাওয়ার পথে তাদের গ্রামের ভরতপুর স্টেশনে গ্রামের সেই মুকেশ এর গাড়ি দেখতে পায় এবং সৌন্দর্য এর দাদার পছন্দ হয় আর তার বাবা কে বলে আমি এইরকমই একটা গাড়ি কিনতে চেয়েছিলাম। এরপর এই কথা সেই ঠাকুর জানতে পারলে প্ল্যান তৈরি করে সেই ২০ লক্ষ টাকার গাড়ি তাদের বাড়িতে দিয়ে আসে আর বাড়িতে এসে তার ছেলের সাথে সৌন্দর্য এর বিয়ের কথা পাকাপাকি করে। এখানে সৌন্দর্য এর মা বিয়ে দেওয়ার জন্য এক কোথায় রাজি হয়ে যায় কিন্তু সৌন্দর্য জানতে পারলে তার মায়ের মুখের উপরে সাফ কথা জানিয়ে দেয় যে সে অমিতাভ কে ছাড়া কাউকেই বিয়ে করবে না। এরপর সৌন্দর্য অমিতাভ কে চিঠি লিখে পাঠিয়ে দেয় আর তাকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করে আনতে বলে। এরপর অমিতাভ তার বাইক টা নিয়ে তীব্র গতিতে গিয়ে সব গুন্ডাপান্ডা কে পিটিয়ে বীরপুত্রের মতো তাকে নিয়ে এসে মন্দিরে বিয়ে করে ফেলে। এরপর তাকে বিয়ে করার পরে বাড়ি গেলে অমিতাভের বাবা ভীষণ রেগে যায় এবং তাকে বন্দুক দিয়ে গুলিও পর্যন্ত করতে চলে যায়। এরপর সৌন্দর্য বন্দুকের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে শেষমেশ আর গুলি করতে পারে না। অমিতাভের বাবা ভানু প্রতাপ তখন জায়গা জমির ভাগ তাকে দিয়ে দেয় আর তাকে নিজের ছেলে বলতে অস্বীকার করে। এরপর অমিতাভ সেই জায়গার ভাগ আর নিলো না এবং অনুপম এর বাড়িতে গিয়ে তারা দিন কাটাতে লাগে।


ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে

অমিতাভ একটা কাজ পাওয়ার পরে খুশিতে একপ্রকার আত্মহারা হয়ে সৌন্দর্য অর্থাৎ বর্তমানে তার স্ত্রীকে সেই খবরটি দিতে আসে। এইসময় সৌন্দর্য এর বাবা আসে তাদের সাথে দেখা করতে এবং এসে তাদের দুইজনের মধ্যে ভালোবাসা দেখে অনেক খুশি হয়। এরপর তার বাবা কোনোকিছু খেতে চাইলে দ্রুত রান্নাঘরে গিয়ে দুধ ভাত মাখিয়ে দিয়ে দেয়, যেহেতু তাদের ঘরে সেই মুহূর্তে তেমন কোনোকিছু ছিল না খাবার দেওয়ার তাই অমিতাভ দোকান থেকে দুধ আর চিনি এনে দিলে তাই দিয়ে একপ্রকার মিঠা ভাতের মতো তৈরি করে দেয়। এরপর সেইটা খেয়ে তার বাবার অনেক ভালো লাগে আর তার মায়ের জন্য কিছু নিয়ে যায়। তার মা এটাকে তুচ্ছ করে দেখে কিন্তু রাতের বেলা ঠিক লুকিয়ে লুকিয়ে সেই ভাত খেয়ে নেয়। রচনা ব্যানার্জির গাড়ি ভরতপুর গ্রামে খারাপ হয়ে যায় আর হঠাৎ করে তার নজর সৌন্দর্য এর উপর গিয়ে পড়ে সে যখন জলের কলসি নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলো। এরপর তাকে আটকিয়ে খারাপ খারাপ কিছু কথা শুনিয়ে দেয়, একপ্রকার যারা এইসব খোঁচা মেরে কথা শুনিয়ে শান্তি পায় আর কি। এরপর তার কোনো কোথায় কোনো গুরুত্ব না দিয়ে সেখান থেকে চলে যায় কিন্তু অমিতাভ এইসব দেখে অনেক কষ্ট পায় আর বাড়িতে গিয়ে সৌন্দর্য কে কালেক্টর হওয়ার কথা বলে। এরপর সেই মতে কালেক্টর হওয়ার জন্য পড়াশুনা শুরু করে দেয়। কিন্তু একদিন মন্দির থেকে ফেরার পথে দেখতে পায় অমিতাভ বাসের ছাদে ভারী ভারী বস্তা নিয়ে উঠতে আর এটি দেখে তার অনেক খারাপ লাগে কারণ সে বাড়িতে তাকে অন্য কথা বলেছিলো। যাইহোক এরপর তার আঙ্কেল এর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে নিজস্ব একটা বাস কিনে নেয় এবং সেই বাসের নাম দিয়েছিলো ভানু প্রতাপ অর্থাৎ অমিতাভ এর বাবার নামে। এরপর সেই বাস চালিয়ে ধীরে ধীরে অনেক টাকার মালিক হয়ে যায় অমিতাভ। প্রথম প্রথম তার বাসে লোক হতো না, তবে ধীরে ধীরে অন্য বাস ছেড়ে তার বাসে প্রচুর লোক আসতে থাকে। আর এর মাঝে মাঝে সৌন্দর্য অমিতাভ কে ধীরে ধীরে পড়াশুনা শিখিয়ে শিক্ষিত করেও তোলে।


ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে

অমিতাভ অনেক টাকা পয়সার মালিক হয়ে গেলে অনেক বড়ো বাংল মতো বাড়ি কিনে ফেলে এবং কোম্পানির মালিকও হয়ে যায়। এরপর তার বাবার মতো সাধারণ মানুষের সেবাও করতে লাগে। এরপর কালেক্টরের পড়াশুনা করার জন্য অমিতাভ সৌন্দর্য কে স্টেশন এ ছেড়ে দিয়ে আসে। এরপর কয়েক বছর এইভাবে কেটে যায় এবং অবশেষে কালেক্টর হয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। এরপর তার স্বশুর গ্রামের ক্ষেতের জল এর সমস্যা নিয়ে তার কাছে যায় এবং সেখানে সে কালেক্টর হওয়া সত্বেও তার শ্বশুরকে প্রণাম করে যথাযথ সম্মান করে এবং তাদের যে আর্জি ছিল সেটা দ্রুত সমাধান করার কথা দিয়েছিলো। এদিকে কেওড়া ঠাকুরের বাসের লাল বাতি জলে গেছে অমিতাভ এর বাস সার্ভিস চালু হওয়ার পরের থেকে। এদিকে রচনা ব্যানার্জির স্বামীর বিজনেস এ লোকসান হয়ে যায় এবং অমিতাভ এর কাছে আসে যেন তার একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেয় কারণ অনেকদিন যাবৎ বেকার অবস্থায় পড়ে আছে। এদিকে অমিতাভ এর ছেলে যে স্কুলে পড়তো সেখানে তার দাদু ভানুপ্রতাপ দাঁড়িয়ে ছিল এবং কি একটা কাজে ব্যস্ত ছিল। তখন স্কুল ছুটি হওয়ার পরে হঠাৎ করে দেখা হয়ে যায় কিন্তু চিনতে পারে না, তবে সেই সময় তার ম্যানেজার তাকে বলে দেয় যে এ আপনার অমিতাভ এর ছেলে। তখন তার প্রতি মনে টান পড়ে আর তার কাছে গিয়ে পরিচয় লুকিয়ে বন্ধুত্বের মতো খেলা করে সময় কাটাতে লাগে। এরপরে সারাদিন দাদু-নাতি খেলাধুলা করার পরে বাড়িতে গেলে তার বাবার সাথে নতুন বন্ধুর কথা বলে এবং তার বাবার চেহারার সাথে মিল আছে বললে তখন তার বাবা চিনতে পারে। এরপর অমিতাভ তার বাবার নামে গরিবদের জন্য একটা হাসপাতাল তৈরি করে এবং সেটার উদ্ভবনের জন্য তার বাবা কে আসতে বলেছিলো কিন্তু প্রথম দিকের ঘটনার কারণে কেউ যাওয়ার সাহস পাচ্ছিলো না ইচ্ছা থাকা সত্বেও। তবে শেষে সবাই যার যার মতো লুকিয়ে সেই উদ্ভাবনের অনুষ্ঠানে চলে গিয়েছিলো।


ছবি: ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশর্ট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে

উদ্ভাবনের অনুষ্ঠানে চলে যাওয়ার পরে তাদের মা দেখে ফেলেছিলো আর এই বিষয় নিয়ে বাড়িতে আসার পরে কথার ঘুরে পেঁচের মাধ্যমে একপ্রকার ধরে ফেলেছিলো। তারপর অস্বীকার করতে লাগলে তার শরীরের বস্ত্র সেখানে ভিড়ের মধ্যে পড়ে গেছিলো আর সেটি দেখালে আর কিছু বলতে পারে না অর্থাৎ ধরা খেয়ে গেছিলো। এরপর অমিতাভ এর ছেলে বাড়ির থেকে ক্ষির নিয়ে তার দাদুর সাথে দেখা করতে যায়। এরপরে দেখা করে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার মাঝখানে একজনকে পড়ে থাকতে দেখে আর নেমে গিয়ে সাহায্য করে। কিন্তু এর মধ্যে কেওড়া ঠাকুর গাড়ির মধ্যে রাখা ক্ষীরের মধ্যে বিষ মিশিয়ে দেয়। বাড়িতে যাওয়ার পরে সেই ক্ষির খায় এবং খেয়ে নাক মুখ দিয়ে রক্ত উঠতে লাগে। আর এদিকে এই নিয়ে কেওড়া ঠাকুর মিথ্যা ঘটনা লোটায় যে সে তার বাবা কে বিষ খাইয়েছে। এরপর তার হসপিটালে চিকিৎসা করতে দিতে চায় না কেউ কিন্তু তার বাবা বিষয়টা বুঝতে পেরেছিলো যে বিষ কে খাইয়েছে। কিন্তু গ্রামের লোকজন প্রথম দিকে ভুল বুঝে ফেলেছিলো। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায়তার তার বাবা ভানুপ্রতাপ শিং উঠে এসে সবার ষড়যন্ত্রের হাত থেকে তাকে রক্ষা করে। এরপর বিষয়গুলো সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়। এরপর সবার সাথে মিলমিশ হয়ে যায় আর একটা সুন্দর নতুন সুখী পরিবার এর সৃষ্টি হয়।


✔শিক্ষা:

এই মুভিতে কয়েকটি বিষয়ে শিক্ষামূলক ভাবমূর্তি ফুটে উঠেছে। প্রথমত এখানে অমিতাভ পড়াশুনা জানতো না বলে রচনা ব্যানার্জি এক কোথায় পশুর সাথে তুলনা করেছিল। কিন্তু নিয়তির পরিহাসে একসময় তাকে সেই অমিতাভ এর কাছে মাথা নিচু করে তার স্বামীর জন্য চাকরির ভিক্ষা চাইতে আসতে হলো। এক সময় যে অহংকার নিয়ে চলছিল সেইটা ভেঙে চুরমার হলো। দ্বিতীয়ত এখানে অমিতাভ একটা কথা বলেছিলো বাবা মা কোনো কিছুর ভালোর জন্য যদি মারে, গালি দেয় তাহলে সেটা অপরাধ হয় না বরং এক সময় সেটি আশীর্বাদ হিসেবে সন্তানের উপকারই হয়। মূলত এখানেও অমিতাভ কে বাড়ির থেকে বের করে দিয়েছিলো বলেই আজ নিজের পায়ে খাড়া হতে পেরেছিলো। মানে পুরো বিষয়টা এখানে সেইভাবেই ফুটিয়ে তুলেছে।


✔ব্যক্তিগত মতামত:

এই মুভিটি একটা সুখী পারিবারিক মুভি হিসেবে খুবই সুন্দর। আমার কাছে বরাবরই ভালো লাগে। আমি এই মুভিটি আগেও অনেকবার দেখেছিলাম এবং এখনো মাঝে মাঝে দেখতে মন চায়। জাস্ট অসাধারণ একটা মুভি। আজকাল এই ধরনের মুভি দেখা যায় না। আর অমিতাভ বচ্চন এর মুভি মানে সুপার হিট মুভি। সময় করে আপনারাও দেখবেন মুভিটি, বেশ ভালো লাগার মতো একটা মুভি।


✔ব্যক্তিগত রেটিং:
১০/১০


মুভির লিংক

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 3 years ago 

দাদা আমি এই মুভিটি দেখেছি , আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে , যদিও আমি এমন মুভি বেশি একটা দেখিনা , তবে একটু করে দেখার পর ভালো লাগলো আর পুরোটা মুভি দেখে নিলাম , অসাধারণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চন। আপনি ও দাদা অনেক সুন্দর ভাবে রিভিউটি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন , অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

আমার এইসব পুরানো মুভিগুলো দেখতে অনেক ভালো লাগে। আমি প্রায় দেখি এইসব মুভিগুলো। মুভিটি অনেক আকর্ষণীয় আছে আর রোমান্টিকও আছে। এই মুভিটা যেন আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। ডাবল চরিত্রে কিভাবে অভিনয় করা যায় সেটা তার অভিনয়ের ভাবমূর্তিতে প্রকাশ পায়।

 3 years ago 

অমিতাভ বচ্চনের মুভি মানে ফাটাফাটি হতে বাধ্য।তাছাড়া অহংকার দ্বারা কখনো ভালো কিছু অর্জিত হয় না।কথায় আছে" অহংকার পতনের মূল"।খুব সুন্দরভাবে রিভিউ দিয়েছেন দাদা।কোথা ও কোনো কিছু বাদ নেই।ধন্যবাদ দাদা।

 3 years ago 

আসলেই অমিতাভ এর মুভির কোনো জবাব হয় না, একদম পারফেক্ট অভিনয় যেটাকে বলে। অহংকার করে সাময়িক সময়ের জন্য শান্তিতে থাকা যায় কিন্তু একসময় গিয়ে সবার চোখে নিচে নেমে যেতে হয়।

 3 years ago 

দাদা খুবই সুন্দর একটি মুভি রিভিউ করেছেন। এই মুভিটি আমি অনেকবার দেখেছি। মুভিটি আমার খুবই ভালো লেগেছে। এই মুভির চরিত্রগুলো খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার রিভিউটা খুবই সুন্দর হয়েছে। কোথাও বাদ পড়েনি। অহংকার মানুষকে ধ্বংস করে দেয়।আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইলো।

 3 years ago 

এই মুভিটি আমিও অনেকবার দেখেছি, এখনো মাঝেমধ্যে দেখি। যতবার দেখা হয় ততবারই দেখতে ভালো লাগে। আর অমিতাভ এর মুভির মধ্যে একটা অন্যরকম আকর্ষণ থাকে। আর হ্যা অহংকার মানুষের জীবনে একটা বড়ো বিপদজনক সমস্যা, এটা যার মধ্যে একবার জন্ম নেবে সে শেষ।

 3 years ago 

দাদা এই মুভিটি আমি বেশ কয়েকবার দেখেছি। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে অমিতাভ বচ্চনের দ্বৈত চরিত্রে অভিনয়। সবশেষে সুন্দর একটি রিভিউ লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ

 3 years ago 

হ্যা বাপ-বেটার অভিনয়ে দৃশ্যগুলো দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। এদের মুভিগুলো দেখলে বোঝা যায় অভিনয় এর মাধ্যমে বিষয়গুলো কিভাবে তুলে ধরা যায়।

 3 years ago 
  • দাদা অসাধারণ একটা মুভি আমাদের মাঝে রিভিউ করেছেন, এই মুভিটি আমি প্রায়ই দেখি ইন্ডিয়ান চ্যানেল সনি ম্যাক্সে প্রায় এই মুভিটি দেয়। যখনই দেয় তখনই আমি মুভি দেখি, অমিতাবাচ্চন এর একটা অসাধারণ মুভি এটি, এই মুভিতে আমিতাবাচ্চন এবং তার বাবার মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হবার কারণে সম্পর্ক ছুটে যায় এবং পরে অমিতাবাচ্চানের ছেলের কারণে এটি আবার জোড়া লেগে যায়। অসাধারণ একটা মুভি ছিল আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর একটি মুভি আমাদের মাঝে রিভিউ করার জন্য।
 3 years ago 

হ্যা টিভি তে এইসব পুরানো মুভিগুলো প্রায় দিয়ে থাকে। আমার টিভি দেখার তেমন সময় হয় না, ইউটুবে মাঝেমধ্যে একটু দেখে নেই। অমিতাভ এর মুভিগুলোর মধ্যে এই মুভিটি আমার কাছে সেরা লেগেছে। কারণ দুই চরিত্রে মুভিটি এতো সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে সেটা বলার মতো না, অভিনয়ে কোনো খামতি নেই।

 3 years ago 

এখানে অমিতাভ একটা কথা বলেছিলো বাবা মা কোনো কিছুর ভালোর জন্য যদি মারে, গালি দেয় তাহলে সেটা অপরাধ হয় না বরং এক সময় সেটি আশীর্বাদ হিসেবে সন্তানের উপকারই হয়।

দাদা অমিতাভ বচ্চনের এই উক্তিটা আমার অনেক ভালো লেগেছে ।সত্যি বাবা মা আমাদের নদী শাসন করে মারে সেটা কখনোই আমাদের জন্য অমঙ্গল হয় যায় না ।সেটা আমাদের জন্য আমাদের ভবিষ্যতের জন্য অবশ্যই ভালো হয়ে যায় ,তাদের আমাদের জন্য আশীর্বাদ এর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ জীবনে আমাদের অহংকার করা উচিত না আমাদের জানা উচিত অহংকার একদিন পতন হবেই অন্যকে কখনো তার শিক্ষা নিয়ে কথা বলা উচিত না এই মুভির মাধ্যমে আমরা ছেলে দেখেছি রচনা ব্যানার্জি অহংকার একদিন মাটির সাথে মিশে দিয়েছেন অর্থাৎ তিনি অমিতাভ বচ্চন কে অবজ্ঞা করতেন কিন্তু একদিন তার কাছে তার স্বামীর জন্য চাকরি ভিক্ষা করতে হয় এটি সত্যিই অসাধারণ একটি শিক্ষা। আপনি এত সুন্দর ভাবে কি মুভি রিভিউ দিয়েছেন যা সত্যি অত্যন্ত প্রশংসনীয় ।আমিও মুভি রিভিউ দেই তবে আপনার মতো এতো ভালো করে দিতে পারি না ।আপনি কত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে গুছিয়ে সবকিছু বর্ণনা করেন যা থেকে আমি শিখেছি এবং ভবিষ্যতে এভাবে যেন আমি রিভিউ দিতে পারি । মুভিতে অনেক পুরাতন তাই আমার দেখা হয় নাই তবে আপনার মুভি রিভিউ পড়ে মুভিটি সম্পর্কে পুরো একটি ধারণা পেলাম যা আমাকে মুভি দেখার থেকেও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

 3 years ago 

হ্যা বাবা মায়ের ঝাড়ি অনেক সময় আমাদের জীবনের উন্নতিতে সাহায্য করে আশীর্বাদ স্বরূপ। কিন্তু এইটা অনেকে বোঝে না, বিশেষ করে আজকালকার সময়ে। অহংকার যে মানুষের জীবনকে একসময় ভয়ানক পরিস্থিতে ফেলতে পারে সেটা এই অভিনয়ের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। আপনিও একসময় দেখবেন চেষ্টা করতে করতে এইরকম রিভিউ দিতে সক্ষম হবেন।

 3 years ago 

অবশ্যই দাদা ।

 3 years ago (edited)

অমিতাভ বচ্চনের ছবিগুলো খুব শিক্ষনীয় হয়।এই ছবিটি দেখা হয়নি তবে আশা করি এটাও ভালো হবে ।তবে আজকেই দেখবো ।লিংকি পেলে সুবিধা হতো ।ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর মুভি রিভিও শেয়ার করার জন্য ।

 3 years ago 

অমিতাভ এর মুভির নেই কোনো তুলনা। তার মুভির মধ্যে অনেক বিষয় ফুটে ওঠে , একজন শ্রেষ্ঠ অভিনেতা যাকে বলে। অনেক কিছু শেখারও আছে। এই ছবিটি দেখবেন অনেক সুন্দর একটা মুভি। লিংক দেখুন দেওয়া আছে, ওখানে ক্লিক করুন পেয়ে যাবেন।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ।

 3 years ago 

রিভিউটি পড়া শুরু করতে আমার প্রথমে একটা জায়গায় চোখ আটকে গেলো। হচ্ছে এই ছবিটি আমার জন্মের আগের। এটা খুব মজা লাগলো।
তবে এই ছবিটি আমি অনেক আগে একবার দেখেছিলাম। আসলে সত্যি কথা বলতে আমি আপনার মুভি রিভিউ এর জন্য অপেক্ষা করি। কারণ আপনি এই পুরোনো মুভির রিভিউ গুলো দেন আমার সবসময় খুব ভালো লাগে। আর এই সিনেমাটি তো আমি দেখেছি তো আমি জানি কতটা সুন্দর।

 3 years ago 

রিভিউটি পড়া শুরু করতে আমার প্রথমে একটা জায়গায় চোখ আটকে গেলো। হচ্ছে এই ছবিটি আমার জন্মের আগের। এটা খুব মজা লাগলো।

😁.অমিতাভ এর মুভিগুলোর সত্যি কোনো জবাব নেই। অমিতাভ এর মুভির জনপ্রিয়তা এখনো আছে। আর তখনকার দিনের প্রত্যেকটা মুভির মধ্যে একটা অন্যরকম আকর্ষণ থাকে যেটা বার বার দেখার জন্য মনকে আকৃষ্ট করে। অনবদ্য একটা মুভি।

 3 years ago 

দাদা আপনার পোস্টে সূর্যবংশম সিনেমার রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে সিনেমাটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। আর অমিতাভ বচ্চনের মুভি মানে ফাটাফাটি একটি সিনেমা। খুবই পারফেক্ট একজন অভিনেতা। দাদা অবশ্যই এ সিনেমাটি আমি দেখব। দাদা আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

হ্যা এই মুভিটা অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করে নিয়েছে জনতার মনে। দেখবেন এই মুভিটা সময় করে, অনেক ভাল লাগবে আপনার কাছেও।

 3 years ago 

"দিল মেরা তু দিবানা হে
পাগল তো মেনে মানা হে"।

এই ছবির এই গানটা আমি মনে মনে সবসময় আওড়াই। আর এই মুভিটার শিক্ষা দারুন।
এখানে অশিক্ষিত অমিতাভ বচ্চন একদিন অনেক বড় হয়। যাক সব কথার এককথা এটি ভীষণ প্রিয় একটি মুভি ☺️
আপনার পুরো উপস্থাপনা বেশ ভালো লেগেছে দাদা ♥️

 3 years ago 

আমারো এই গানটা অনেক ভালো লাগে। আমি প্রায় শুনি এই গানটা। অমিতাভ বচ্চন এর মুভি মানে সুপারডুপার মুভি। অমিতাভ এর এই মুভিটা মন কাড়া একটা মুভি।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57544.69
ETH 3114.34
USDT 1.00
SBD 2.42