ধনিয়া পাতার মুচমুচে পকোড়া

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকের রেসিপিটা হলো ধনিয়া পাতার মুচমুচে পকোড়া। গতকাল সন্ধ্যায় এই পকোড়া করেছিলাম, ধনিয়া পাতার পকোড়া খেতে বেশ সুস্বাদু লাগে। ধনিয়া পাতার বীজ যেমন গুঁড়ো করে মশলা হিসেবে তরিতরকারিতে দিয়ে খেতে ভালো হয়, তেমনি পাতাও খেতে অনেক ভালো লাগে। ধনিয়া পাতা বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়, যেমন ধনিয়া পাতা শুকিয়ে কিন্তু অনেক সময় ভাজাভুজির মধ্যে দিয়ে থাকে আর এটাতে ভাজাভুজি খেতেও বেশ ভালো লাগে, একটা ধনিয়া পাতার গন্ধ গন্ধ থাকে। তবে কাঁচা পাতা যেকোনো ভর্তার সাথেও খাওয়া যায়। আমি আগে মোটেও খেতাম না এই ধনিয়া পাতা, কারণ এর গন্ধ আমি মোটেও নিতে পারতাম না। তবে আস্তে আস্তে খেতে খেতে এখন একটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে, এখন আর খাওয়ার সময় কিছু মনে হয় না। তাছাড়া ধনিয়া পাতা আমাদের বাড়িতে তেমন একটা কেনাও হয় না, ওই মাঝে মধ্যে পকোড়া বা অন্য কিছু করে খাওয়ার ইচ্ছা হলে তখন কিনে আনা হয়।

তবে ধনিয়া পাতা সবথেকে কাঁচা খাওয়াই উপকার, কারণ ধনিয়া পাতায় অনেক ঔষধি গুনাগুন রয়েছে। ধনিয়া পাতায় প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল আছে এবং এছাড়াও রাইবোফ্লাভিন নামক একধরণের ভিটামিন থাকে যেটা আমাদের শরীরে এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর এই পাতাগুলো নিঃসন্দেহে খাওয়া যায় কারণ এতে সাইড ইফেক্ট নেই বললেই চলে, আর তাছাড়া এতে কোলেস্টরেলও নেই। এই পাতা অনেক আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হলেও যদি এই পাতা বাড়িতেই সবসময় খাওয়ার অভ্যাস করা যায় তাহলে আর ঔষধের প্রয়োজন হয় না, এতেই ঔষধের কাজ হয়ে যায় শরীরে। যাইহোক এই ধনিয়া পাতার পকোড়া বিভিন্ন ভাবে করা যায় যেমন পাতাগুলো কুচিকুচি করেও করা যায়, তবে সেক্ষেত্রে পকোড়াগুলো ছোট ছোট হয়ে যায় আবার ছোট ছোট বলের মতোও করলে করা যায়। তবে আমি কুচিকুচি না করে গোটাই রেখে দিয়েছিলাম, গোটা পকোড়া বানিয়ে খেতে আমার কাছে বেশি মজা লাগে। তবে আমি গোড়ার দিকে বেশি একটা কেটে ফেলে দেইনি, ডাঁটার অংশও ছিল, আর একদম গোড়ার দিকে যতটুকু ফেলানোর দরকার ছিল ততটুকুই কেটে ফেলে দিয়েছিলাম। যাইহোক এখন এই পকোড়া রেসিপিটির মূল পর্বের দিকে চলে যাবো।


❆প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:❆

❦উপকরণ
পরিমাণ❦
ধনিয়া পাতা
১ তাড়ি
চাউলের গুঁড়া
১/১.৫ কাপ
বেসন
১/১.৫ কাপ
ময়দা
১/১.৫ কাপ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৪/৫ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
লঙ্কার গুঁড়ো
৪/৫ চামচ
জিরা গুঁড়ো
৫ চামচ


ধনিয়া পাতা, চাউলের গুঁড়া, বেসন, ময়দা


সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


✦এখন পকোড়া যেভাবে তৈরি করলাম---


☫প্রস্তুত প্রণালী:☫


➤ধনিয়া পাতাগুলোর থেকে প্রথমে খারাপ পাতাগুলো বেছে বাদ দিয়েছিলাম এবং গোড়ার দিকে কেটে ফেলে জলে ভিজিয়ে রেখেছিলাম খানিক্ষন। এরপর একটু নেড়েচেড়ে ধুয়ে তুলে নিয়েছিলাম।

➤এরপর একটি বড়ো পাত্র নিয়ে তাতে বেসন দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে তাতে ময়দা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর চাউলের গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤চাউলের গুঁড়ো দেওয়ার পরে তাতে জিরা গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। জিরা গুঁড়ো দেওয়ার পরে তাতে লবন দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤লবন দেওয়ার পরে তাতে হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤সবকিছু পাত্রে দেওয়া হয়ে গেলে জল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং হাত দিয়ে ভালোভাবে সবকিছু মাখিয়ে ব্যাটার করে নিয়েছিলাম। এক্ষেত্রে ব্যাটার বেশি ঘন বা পাতলা না করে মাঝামাঝি করেছিলাম।

➤একটি কড়াইতে পরিমাণমতো তেল দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিয়েছিলাম এবং তেলটা গরম করে নিয়েছিলাম। এরপর ধনিয়া পাতা ডাঁটা সহ ১ থেকে ৩ টি করে ব্যাটারে দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤ব্যাটারে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়েছিলাম এবং কড়াইয়ে গরম তেলে ছেড়ে দিয়েছিলাম।

➤এইভাবে সবগুলো ধনিয়া পাতা অল্প অল্প করে দিয়ে ভালোভাবে মুচমুচে ভাজা মতো করে নিয়েছিলাম। এরপর সব শেষে মুচমুচে ধনিয়া পাতার পকোড়াগুলো একটি পাত্রে সাজিয়ে নিয়েছিলাম পরিবেশনের জন্য।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

ধনিয়া পাতার মুচমুচে পাকোড়া তৈরি করে আমাদেরকে একটু দাওয়াত দিলেই হতো দাদা 🤭।শীতকালে যে কোন রেসিপিতে ধনিয়া পাতা দিয়ে খেতে ভালো লাগে। তবে ধনিয়া পাতার এত গুণগুণ সম্পর্কে জানা ছিল না। অনেকেই ধনিয়া পাতা খেতে পারে না। তবে আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। যে কোন ভর্তার সাথে ধনিয়া পাতা দিলে বেশ ভালো লাগে খেতে। এছাড়া তরকারিতে ধনিয়া পাতা দিলেও আলাদা রকমের ফ্লেভার আসে। অনেকে তো ধনিয়া পাতার ভর্তাও করে ফেলে। ধনিয়ার ছোট ছোট বীজগুলো শুকিয়ে গুঁড়ো করে বিভিন্ন তরকারিতে দিলে খেতে ভালই লাগে। কিছুদিন আগে আমিও ধনিয়া পাতার পাকোড়া তৈরি করেছিলাম। খেতে বেশ ভালো লেগেছিল। ছোট ছোট করে কেটে পাকোড়া তৈরি করলে এক রকমের হয় আর বড় বড় করে বানালে দেখতে যেমন ভাল লাগে তেমনি খেতেও বেশ ভালো লাগে। শীতকালে ধনিয়া পাতার পাকোড়া খাওয়ার মজাই আলাদা। খুবই মজার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।

Congratulations, your comment has been successfully curated by @lavanyalakshman at 7%.

 2 years ago 

ধনিয়া পাতার মুচমুচে পাকোড়া দেখে জিভে জল চলে আসলো, কারণ এই শীতের মধ্যে মুচমুচে পাকোড়া রেসিপি খেতে খুবই ভালো লাগে। আজকে আপনার ধনিয়াপাতার পকোড়া রেসিপি দেখে আমি শিখে নিলাম। পরবর্তীতে তৈরি করব। আসলে ধনিয়পাতার রান্না করে তরকারির সাথে অনেক খেয়েছি,কিন্তু কখনো পকোড়া তৈরি করা হয়নি। তাই এই রেসিপিটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আপনার রেসিপি পরিবেশন খুবই ভালো লেগেছে দাদা। এত মজাদার রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

মাঝে মাঝে ভাবী আপনারা এত সুন্দর সুন্দর আইডিয়া পান কোথায়? কোন বই দেখে নাকি ইউটিউব দেখে। তবে ধনিয়া পাতায় অনেক ঔষধি গুনাগুন রয়েছে। ধনিয়া পাতায় প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল আছে এবং এছাড়াও রাইবোফ্লাভিন নামক একধরণের ভিটামিন থাকে যেটা আমাদের শরীরে এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । আপনার মত আমিও ধনেপাতা কাঁচা খেতে পারিনা। তবে আপনার থেকে আজকে খুব সুন্দর একটি রেসিপি শিখলাম। ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

ধনিয়া পাতার মুচমুচে পাকোড়া দেখতে খুব ইয়াম্মি লাগছে দাদা। সবজির পাকোড়া অনেক খেয়েছি,তবে ধনিয়া পাতার পাকোড়া কখনো খাওয়া হয়নি। কিন্তু আপনার রেসিপিটা দেখে মনে হচ্ছে, আমিও এই রেসিপিটা বাসায় তৈরি করে খেতে পারবো। আসলে বিকেল কিংবা সন্ধ্যার নাস্তায় পাকোড়া খেতে খুব ভালো লাগে আমার কাছে। অনেক ধন্যবাদ দাদা এতো মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আমি আগে একেবারে ধনেপাতা খেতাম না ,কিন্তু এখন খাই। বিভিন্ন তরকারি কিংবা এই শীতে ডালে দিয়ে খেতে বেশ ভালো লাগে। ধনেপাতায় অনেক উপকারী গুনাগুন বিদ্যমান। তবে এখনো পাকোড়া করে খাওয়া হয়নি। একবার বানাতে হবে।প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর করে দেখিয়েছেন। আমার কাছে ধনেপাতার ভর্তা বেশ ভালো লাগে। ধন্যবাদ

 2 years ago 

আসলেই দাদা ধনিয়া পাতা বিভিন্ন ভাবে খাওয়ায যায় ৷ তবে ধনিয়া পাতা ভর্তার সাথে খেতে আমার খুবই ভালো লাগে ৷ যাই হোক আজ আপনি চমৎকার এবং মজাদার ধনিয়া পাতার একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন ৷ আসলে আমি গতকালকেই ধনিয়া পাতার মুচমুচে পকোড়া খেলাম ৷ অনেক ভালো লাগে মুচমুচে পকোড়া ৷ আজ দেখছি আপনি দারুণ ভাবে ধনিয়া পাতার পকোড়া তৈরি করেছেন ৷ দেখে ভালোই লাগলো ৷ ধন্যবাদ আপনাকে মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য ৷

 2 years ago 

এভাবে ধনিয়াপাতার পাকোড়া আমাদের এখানে করা হয়না।তবে যেকোনো ঝাল পাকোড়া বানানোর সময় অনেক বেশি করে ধনিয়াপাতা দেওয়া হয়।যা খেতেও বেশ ভালো লাগে।

 2 years ago 

জি দাদা একদম ঠিক বলেছেন আপনি, ধনিয়া পাতা কাঁচা খাওয়ায় বেশি উপকার।কারণ এতে ভিটামিন প্রচুর।ধনিয়া পাতার ব্যবহার সর্বত্র রান্নার ক্ষেত্রে।এর পাতা,তারপর বীজের গুড়া।যেকোনো তরকারির স্বাদ বাড়িয়ে দেয় এই পাতা।ধনিয়া পাতার পাকোড়া দেখে মনে হচ্ছে খেতে অনেক ভালো হয়েছিল।একদিন এভাবে বাসায় ট্রাই করে দেখবো।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

দাদা ধনিয়া পাতা আমার খুব পছন্দ। তবে পাকোড়া করে কখনও খাওয়া হয়নি। ধনিয়া পাতার গুনের কথা শুনলাম।জেনে বেশ ভাল লাগলো। তবে কাঁচা খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় জেনে ভাল লাগলো। লোভনীয় হয়েছে আপনার বানানো ধনিয়া পাতার পাকোড়া। ইচ্ছে হচ্ছে তুলেই একটা খেয়ে নেই।😅 একদিন আপনার রেসিপি ফলো করে বানাবো। যদিও দেখে এখনই খেতে ইচ্ছে হচ্ছে। মুচমুচে ধনিয়া পাতার পাকোড়া। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা। অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

ধনিয়া পাতা দিয়ে এত সুন্দর মচমচে পকোড়া অর্থাৎ বড়া তৈরি করার আমি কখনোই লক্ষ্য করি নাই। যা আজকে আপনার পোস্টে লক্ষ্য করলাম। ধনিয়া পাতা চাউলের গুড়া বা ময়দা সরিষার তেলের সংমিশ্রণ দারুন কিছু পকোরা তৈরি করে দেখিয়েছেন। যা ছিল অতি লোভনীয়।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 63099.62
ETH 2555.59
USDT 1.00
SBD 2.83