সিলভার কার্প মাছের দারুন সুস্বাদু রেসিপি
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আমি আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি সিলভার কার্প মাছের তরকারি রান্না করেছি। সিলভার কার্প মাছ আমাদের বাঙালিদের কিন্তু একটা প্রিয় মাছের মধ্যেও পড়ে বিশেষ করে যারা গ্রামঞ্চলের দিকে থাকে। কারণ গ্রামঞ্চলের প্রত্যেকের পুকুরে প্রায় সিলভার কার্প মাছ চাষ করা হয়, এটা অনেকে বিক্রি করার জন্যও করে আবার নিজেরা খাওয়ার জন্যও করে। আমাদের গ্রামের দিকে একটা বাড়ি আছে এবং সেখানকার পুকুরেও এই সিলভার কার্প মাছ আছে। এই মাছ অনেক সুস্বাদু হয়, আমি একবার গিয়ে খেয়েছিলাম। টাটকা মাছ তুলে খাওয়ার মজাই আলাদা, এই সিলভার কার্প মাছটিও বাজার থেকে জ্যান্ত অবস্থায় কিনেছিলাম। বেশ মজাদার হয়েছিল এই মাছটা খেতে। তবে এই মাছের থাকে ভীষণ কাঁটা, খাওয়ার সময় বাছতে লাগে বিরক্ত, এক প্রকার বলা যায় ইলিশ মাছের কাঁটার থেকেও কম কিছু না। এই মাছটা টেস্টি হওয়া সত্বেও তেমন খাওয়া হয় না বেশি কারণ দামও আছে বাজারে এই মাছের। আর এই মাছটি দিয়ে আমি আরো একটা পদ তৈরি করে টেস্ট করে দেখেছিলাম, খেতে আমার কাছে বিশেষ করে দারুন লেগেছিলো। যেমন ইলিশ মাছের ভর্তা করে ঠিক সেইরকম করে আমি এই মাছেরও কাঁটা ছাড়িয়ে ছাড়িয়ে ভর্তা মতো করেছিলাম, তবে বেশি মশলা দেইনি, নরমালি ঘরোয়া কিছু মশলা দিয়ে করেছিলাম টেস্ট করার জন্য। আমার কাছে বেশ ভালোই লেগেছিলো খাওয়ার সময়। যাইহোক আর এই মাছটা বেগুন দিয়ে তৈরি করেছিলাম। বেগুন নিয়ে আর কি বলি সবাই অভিজ্ঞ আছে এর স্বাদের বিষয়ে, এই বেগুন দিলে তরকারির স্বাদ বেড়ে যেতে বাধ্য। তরকারিতে বেগুন থাকলে আমার সেদিন খাওয়ার রুচিটাও আরো বেড়ে যায়। যাইহোক এখন এই রেসিপিটার উপকরণের দিকে চলে যাবো।
❂প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:❂
☛এখন রেসিপিটা যেভাবে তৈরি করলাম---
❆প্রস্তুত প্রণালী:❆
➤সিলভার কার্প মাছটিকে প্রথমে ভালো সাইজ মতো করে কেটে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম। এরপর বেগুনটিকে একটু মাঝারি সাইজ এর মতো করে কেটে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম।
➤আলুগুলোর খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে পিচ করে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম। এরপর পেঁয়াজ এর খোসা ছাড়ানোর পরে কেটে নিয়েছিলাম। কাঁচা লঙ্কাগুলোও কেটে নেওয়ার পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।
➤কেটে রাখা সিলভার কার্প মাছের পিচগুলোতে ২ চামচ লবন আর ২ চামচ হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর হাত দিয়ে গায়ে ভালো করে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।
➤মাছের পিচগুলো ভালো করে ভাজা করে নিয়েছিলাম। এরপর বেগুনের মাঝারি পিচগুলোকে ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।
➤কেটে রাখা আলুর ছোট ছোট পিচগুলো ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম। এরপর কেটে রাখা পেঁয়াজ এর অংশ ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।
➤কড়াইতে তেল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তেল গরম হওয়ার পরে তাতে জিরা পরিমাণমতো দিয়ে দিয়েছিলাম। জিরা একটু ভাজা মতো হয়ে আসলে তাতে ভেজে রাখা আলুর পিচগুলো সব দিয়ে দিয়েছিলাম।
➤আলুর পিচ দেওয়ার পরে তাতে ভেজে রাখা বেগুনের পিচগুলোও দিয়ে দিয়েছিলাম এবং সাথে পেঁয়াজ ভাজাটাও দিয়ে দিয়েছিলাম।
➤পেঁয়াজ এর ভাজা অংশ দেওয়ার পরে তাতে ২ চামচ লবন, ২ চামচ হলুদ এবং কেটে রাখা কাঁচা লঙ্কাগুলোও দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব উপাদানগুলো একসাথে মশলার সাথে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম।
➤মিক্স করার পরে তাতে পরিমাণমতো জল ঢেলে দিয়েছিলাম এবং তরকারিটা ভালোভাবে কিছুক্ষন ফুল আঁচে ফুটিয়ে নিয়েছিলাম সিদ্ধ হয়ে আসার জন্য।
➤তরকারি সিদ্ধ হয়ে আসলে আমি জ্বাল কমিয়ে কিছু আলুর পিচ তুলে নিয়েছিলাম এবং চেপে চেপে ভালোভাবে গলিয়ে নিয়েছিলাম।
➤গোলানো হয়ে গেলে তরকারিতে ভেজে রাখা মাছের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং খুব অল্প সময়ে 'লো' জ্বাল দেওয়ার পরে গোলানো আলুর অংশটা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারি পুরোপুরি হয়ে আসা পর্যন্ত ৬-৭ মিনিট ফুল আঁচে দিয়ে রেখেছিলাম।
➤খানিক্ষন দেরি করার পরে আমার তৈরি হয়ে গেছিলো বেগুন দিয়ে সিলভার কার্পের একটা সুস্বাদু রেসিপি। তরকারির দম বসে যাওয়ার পরে দারুন একটা লুক এসেছিলো এবং পরে আমি তাতে জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা পরিবেশন করার জন্য একটি প্লেটে তুলে নিয়েছিলাম।
রেসিপি বাই, @winkles
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
একদম ঠিক বলেছেন দাদা সিলভার কার্প মাছ আমাদের সকলের অনেক প্রিয়। গ্রামের দিকে বেশিরভাগ পুকুরেই এই মাছ চাষ করা হয়। বিশেষ করে বাড়িতে খাওয়ার জন্য এই মাছ বেশি চাষ করা হয়। গ্রামের পুকুরে চাষ করা এই মাছগুলো খেতে খুবই ভালো লাগে। তাজা তাজা সিলভার কার্প মাছ দিয়ে যেকোনো রেসিপি তৈরি করলেই খেতে অনেক ভালো লাগে। আর বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় আলু বেগুন দিয়ে এই মাছ রান্না করলে খেতে দারুন লাগে। তবে আমিও আপনার মত এই মাছের ভর্তা খেয়েছিলাম দাদা। আমার কাছে দারুন লেগেছিল। দাদা আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আপনার রন্ধন প্রণালী উপস্থাপন করেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আপনি ঠিকই বলেছেন দাদা সিলভার কার্প মাছ খেতে খুবই মজাদার লাগে। বিশেষ করে টাটকা মাছ গুলো আরো বেশি মজাদার হয়। আর এই সিলভার কার্প মাছ পুকুরে চাষ বেশি হয়। নিজেরা খাওয়ার জন্য ও বিক্রির জন্য সিলভার কার্প মাছ চাষ করা প্রায় দেখতে পাওয়া যায়।তবে সিলভার কার্প বড় মাছ গুলো খেতে আমার কাছে বেশী মজাদার লাগে। এ মাছ ভাজি খেতে অনেক সুস্বাদু হয়। আপনার রেসিপি উপস্থাপন এবং পরিবেশন আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে দাদা। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ঠিক বলেছেন দাদা গ্রামের পুকুরে যেন সিলভার কার্প একটি কমন মাছ। এই মাছ প্রতিটি পুকুরেই থাকতেই হবে। আর পুকুর থেকে যদি ধরে রান্না করে খাওয়া যায় তাহলে তো কথাই নেই। আমার শ্বশুরবাড়িতে গেলে এরকম মাছগুলো পুকুর থেকে তুলে খাওয়া হয় । তখন খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে। বাজার থেকে তাজা মাছ কিনে আনলেও গ্রামের পুকুরের ওই মাছের স্বাদ পাওয়া যায় না। আপনার সিলভার কার্প মাছের ভর্তার কথা শুনে মনে হচ্ছে যে আসলেই খেতে খুব ভালো লাগার কথা। এরপরে দাদা একদিন এই ভর্তার রেসিপি শেয়ার করবেন। আপনার আলু বেগুন দিয়ে সিলভার কার্প মাছ রান্নাটিও দেখে মনে হচ্ছে যে খুব সুস্বাদু হয়েছিল। বিশেষ করে আলু এবং বেগুন আলাদা করে ভাজার কারনে মাছের স্বাদ আরো বহু গুনে বেড়ে গিয়েছে। ধন্যবাদ দাদা সুস্বাদু সিলভার কার্প মাছের রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
এই সিলভার কার্প মাছ আগে খাওয়া হতোনা এদিকে।এখন বেশ ভালোই খাওয়া হয়।এভাবে রান্না করলে একটু ঝাল ঝাল লাগে, ভালোই লাগে।
দাদা আমিও মাঝে মাঝে যখন গ্রামাঞ্চলে যাই, তখন লক্ষ্য করি প্রত্যেকটা পুকুরেই সিলভার কার্প মাছ ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। সিলভার কার্প মাছ যেমনি সুস্বাদু ঠিক তেমনি দ্রুত বর্ধনশীল। তাই মাছ চাষিরা ভালো মুনাফা লাভের আশায় সিলভার কার্প মাছ চাষ করে। দাদা এই কথাটি একদম সঠিক বলেছেন যে সিলভার কার্প মাছের মধ্যে ইলিশ মাছের মত ঘন কাটা। আর গ্রামাঞ্চলে এই মাছের চাহিদাও অনেক বেশি আর খেতেও বেশ সুস্বাদু। সেই কারণে আমি এই মাছটিকে মজা করে দেশী ইলিশ বলি। যাইহোক সিলভার কার্প মাছ দিয়ে বেগুন ও আলুর রেসিপি আপনার মত আমিও খুব পছন্দ করি। এখানে নিঃসন্দেহে বেগুনের টেস্ট অনেক বেড়ে যায়। আপনার রেসিপিটি দেখেও মনে হচ্ছে খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল।
ধন্যবাদ আপনাকে।
দাদা এই বর্ষায় কিন্তু সিলভার মাছ এর পেটের মধ্যে ডিম পাওয়া যাচ্ছে যা খেতে আমার খুবই পছন্দ। বাজার থেকে এই মাছ কিনার সময় একটু পেট মোটা দেখে কেনার চেষ্টা করুন তাহলে অধিক পরিমাণ ডিম পাবেন। সিলভার কাপ মাছের ডিম খেতে বেশ ভালো লাগবে। আজকের রেসিপিটা খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন, যা বেশ লোভনীয় ছিল।
জি দাদা ঠিকই বলেছেন গ্রামে প্রায় প্রতিটা পুকুর খালে বিলে এ ধরনের মাছের দেখা মেলে। আমাদের পুকুরে ও সিলভার কাপ মাছের চাষ করা হয়। ঈদের মধ্যে বাড়ি গিয়েছিলাম তখনও মাছ ধরা হয়েছিল এক একটা সিলভার কাপ মাছ প্রায় আড়াই থেকে তিন কেজি ওজন হয়েছিল। আর বড় মাছ খেতে তো মজাটা অন্যরকমই হয়ে থাকে। আপনি সুস্বাদু এবং লোভনীয় রেসিপি প্রস্তুত করে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন সিলভার কাপ মাছের। রেসিপির কালার দেখেই বোঝা যাচ্ছে খেতে খুব মজা হয়েছিল। আর রন্ধন প্রণালীর কথা কি বলব শুরু থেকেই দেখে আসছি খুবই চমৎকার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দারুন উপস্থাপনা সহ তুলে ধরেছেন।
আমাদের এই দিকে সিলভার কাপ মাছের দাম মোটামুটি কমই। ভার্সিটিতে যখন পড়তাম তখন মাঝেমধ্যে খেতাম ডাইনিং এ যখন দিত। টাটকা মাছ খাওয়ার মজাই আলাদা সেটা যে মাছই হোক। বেগুন সুন্দর ভাজি করে তরকারিতে দিয়েছেন দেখছি। এভাবে তরকারিতে বেগুন ভাজি করে দিতে আমি কখনো দেখিনি অবশ্য। সব মিলিয়ে বেশ ভালোই লাগলো।
ভীষণ সুস্বাদু রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দাদা। সিলভার কার্প মাছ আমাদের বাসায় প্রায় সময় আনা হয়। বিভিন্ন ধরনের রেসিপি খাওয়া হয় এই মাছ দিয়ে। আমার কাছে বেশ ভালই লাগে খেতে। বেগুন দিয়ে এই মাছটি ভালই লাগে খেতে। আপনার রেসিপির কালার দেখে বেশ লোভনীয় লাগছে। সুস্বাদু একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দাদা।
এই যে বড় মাছ দেখলাম, অনেকদিন যাবত এই মাছ খাওয়া হয় না। আপনার রান্না দেখে তো খেতে ইচ্ছে করছে। খুব তৃপ্তি করে রান্না করেছেন। খেতেও ভারী মজা হয়েছে বুঝাই যাচ্ছে।