ওয়েব সিরিজ রিভিউ: রুদ্রবীনার অভিশাপ- স্বরলিপির কুট টান ( সিজন ২- প্রথম পর্ব )
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির দ্বিতীয় সিজনের প্রথম পর্ব রিভিউ দেব। আজকের পর্বের নাম হলো "স্বরলিপির কুট টান"। আগের পর্বে লাস্ট দেখেছিলাম যে বিক্রম আর শ্রুতি দুটি চাকতি খুঁজে পেয়েছিলো আর তাদের বাহাদুর মামার বহু বছরের গোপনীয় কথাগুলো জানতে পেরেছিলো। আজকের কাহিনীতে কি ঘটে সেটা দেখা যাক।
✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠
☀মূল কাহিনী:☀
একটি পুরানো কবর স্থানে তো কিছু বিষয় তাদের কাছে ক্লিয়ার হয়েছিল এবং চাকতি দুটিতে যে রাগ সঞ্জীবনীর কিছু রহস্য লুকিয়ে আছে সেটাও কেদার নামক লোকটা বাহাদুরকে বলে গিয়েছিলো। এখন তারা সবাই বাড়িতে চলে আসে আর বিক্রম, শ্রুতি তাদের বাড়ির বাকি সদস্যদের এই সত্যিটা অবগত করায়। এই কথা শোনার পরে সবাই তো মানে একপ্রকার চমকে ওঠে, কারণ দীর্ঘদিন ধরে তাদের বাড়িতে আছে অথচ কেউ কিছুই জানতো না। যাইহোক বাহাদুর লোকটা তার ছেলে এবং মেয়ের মৃত্যুতে খুব শোকাহত হয়ে আছে আর এই চক্রান্তের সাথে কাউকে ছাড়বে না বলে রাগের মাথায় বলে দেয় আর দিতিপ্রিয়া এবং তার বাবাকে খুব শীঘ্রই সেখান থেকে চলে যেতে বলে কারণ তারা কতটা বিপদজনক হতে পারে তা বাড়ির দুইজনকে মেরে প্রমান করে দিলো। এর মধ্যে হেমন্ত নামক লোকটা আবার তাদের বাড়িতে চলে আসে এবং তাদের সাথে দেখা করে। হেমন্ত লোকটা আসলে দিতিপ্রিয়া এবং বিক্রমের বাবার বন্ধু ছিল, আর তাদের সাথে একসময় বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল বলে তাকে এখন বাড়ির কেউ সহ্য করেন, শুধু ঘৃণার চোখে তাদের কাছে পরিচিত সে।
হেমন্ত মূলত দিতিপ্রিয়ার বাবার সাথে কথা বলতে আসে কিন্তু দিতিপ্রিয়ার বাবা নলীত তার সাথে কোনো বিষয়ে কথা বলতে চায় না। আর বিক্রমের মায়ের সাথে যে হেমন্তর একটা বিয়ের আগে সম্পর্ক ছিল সেটা মূলত বাড়ির সবাই জানতো আর সেই জায়গা থেকেই তার উপর এতো রাগ। কারণ কিছু টাকার লোভে বিক্রমের মাকে তখন ছেড়ে দিয়েছিলো আর এই বিষয়টাও বিক্রম পরে জেনে ফেলে কিন্তু হেমন্ত তার মাকে আটকে রেখেছে সেইটা শুধু বিক্রম জানে। বিক্রম আর শ্রুতি সেখানে চলে আসে আর হেমন্ত এর কাছে সেই চাকতিটা চায় যেটা তাদের অন্নপ্রাশনের সময় দিয়েছিলো। আর হেমন্ত চাকতিটা রুদ্রভৈরব এর কথামতো গাড়িতে করে নিয়েই এসেছিলো, কারণ তাকে বলে দিয়েছিলো যে রাগ সঞ্জীবনী পেতে গেলে তোমার চাকতিটাও তাদের জরুরি। এরপর বিক্রম তার সাথে বাইরে গিয়ে চাকতিটা নিয়ে আসে আর তানসিনের তানপুরার সেই বাক্সে সবগুলো চাকতি একটার পরে একটা সাজিয়ে ফেলে আর প্রত্যেকটা থেকে স্বরলিপি মেলানোর চেষ্টা করে শ্রুতি আর বিক্রম। এর মধ্যে রুদ্রভৈরব ফোন করে বিক্রমকে আর দ্রুত করতে বলে নাহলে তার মাকে মেরে ফেলবে বলে।
এরপর দেখা যায় যে নাদ এর মা তার কথা মতো বিক্রমের মাকে সেখান থেকে বের করার একটা ফন্দি আঁটে কারণ তখন মন্দিরে কেউ ছিল না আর পাহারাদাররাও বাইরে কেউ কোথায় ছিল না। সবকিছু ভালোভাবে দেখে বিক্রমের মাকে রুম থেকে বের করে আনে এবং জঙ্গলের একটি রাস্তা ধরে বের করে দিচ্ছিলো আর গৌরাঙ্গ বলে সেই লোকটা একটা ট্যাক্সি নিয়ে ঝোপের আড়ালে দেরি করতে লাগে কিন্তু গাড়ির কাছে পৌঁছানো মাত্রই রুদ্রভৈরব তাকে ধরে ফেলে। এরপর আবার বিক্রমের মাকে পাহারাদাররা ধরে নিয়ে বন্দি করে দেয়। আর গৌরাঙ্গ লোকটিকে আনন্দগড় পাঠিয়ে দেয় আর নাদের উপরে দৃষ্টি রাখতে পারে। কিন্তু এখানে এই ভুলের জন্য নাদের মাকে স্বাস্তি পেতে হয় , শারীরিক অত্যাচার করতো এই রুদ্রভৈরব নাদের মায়ের সাথে। শুধু তার ছেলে নাদের কথা ভেবে তার মা মুখ বুঝে সব সহ্য করে নিতো। আর বিক্রমের মাকেও থ্রেড দেয় যে এইরকম ভুল করলে বিক্রম মারা পড়ে যাবে। বিক্রম এদিকে সারা রাত ধরে স্বরলিপির বই ঘেটে সবকিছু মেলানোর চেষ্টা করতে লাগে।
বিক্রম তার কাছের সমস্ত বই ঘেটে স্বরলিপিগুলো একদমই মেলাতে পারে না এবং ভেঙে পড়ে তার মায়ের কথা চিন্তা করে, কারণ সে যদি দ্রুত স্বরলিপিগুলো মিলিয়ে রাগ সঞ্জীবনী উদ্ধার না করে তাহলে তার মায়ের কিছু হয়ে যেতে পারে। এরপর শ্রুতি সেখানে এসে তার ভাবমূর্তি দেখে বুঝতে পারে যে কিছু একটা হয়েছে যেটা তার কাছ থেকে বারবার এভোইড করছে। এরপর শ্রুতি যখন প্রশ্ন তোলে যে তার মায়ের কিছু হয়েছে কিনা, তখন বিক্রম আর না লুকিয়ে শ্রুতিকে সব বলে দেয় আর তার মাকে বেঁধে রেখেছে তার ছবিও দেখায় শ্রুতিকে। এরপর শ্রুতি বিক্রমকে বলে যে আমার দাদুর পুরানো বাড়িতে অনেক বই থাকতে পারে এবং আমরা সেখানে গিয়ে দেখতে পারি। এরপর বিক্রমও রাজি হয়ে যায় এবং পুরানো হাভেলিতে চলে যায়। সেখানে তারা প্রথমে কিছু বই ঘাটতে থাকে কিন্তু খুঁজে পায় না। এরপর তার দাদু মানে কেদারনাথের রুমে তালা খুলে ঢুকে পড়ে আর তারা দেখতে দেখতে সামনে একটা কাপড় দিয়ে ঢাকা অবস্থায় বিনা দেখতে পায় যেটা রুদ্রবিনা। তবে শ্রুতি জানায় যে তার দাদুর রুদ্রবিনা বাজানোর কোনো স্টুডেন্ট ছিল না। এরপর শ্রুতি বহু পুরানো একটা পেন পায় যেটাতে মুটকি খুলে দেখে তাতেও একই বিনার মতো চিহ্ন, আর যতজনকে মেরেছে তাদের গলাতেও এই চিহ্নটা ছিল।
☀ব্যক্তিগত মতামত:☀
এই পর্বে এসে বিক্রম সমস্ত চাকতিগুলো পেয়ে যায় এবং সবগুলো তার নির্দিষ্ট স্থানে বসিয়ে দেয়। কিন্তু এখন চাকতিগুলো সব ঠিকমতো তানসিনের তানপুরাতে লাগালেও তার স্বরলিপি না মিললে কাজ হবে না, আর সেইটাই বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। সমস্ত বই খুঁজেও মানে মিলাতে পারছে না, কারণ সেইরকম কোনো হিন্টস দেওয়া নেই তাতে। একপ্রকার বলা যায় যে বিক্রম রাগ সঞ্জীবনীর দোর গোড়ায় চলে এসেছে, শুধু তালাচাবিটা খুঁজে খোলার পালা। এখন বিক্রম শ্রুতির দাদুর পুরানো হাভেলিতে তার দাদুর অনেক বই আছে সেগুলো দেখে কিছু করতে পারে কিনা, মানে কেনো হিন্টস সে পায় কিনা স্বরলিপিগুলো মেলানোর।
☀ব্যক্তিগত রেটিং:☀
৯.১/১০
☀ট্রেইলার লিঙ্ক:☀
ওয়েব সিরিজ গুলো দেখতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। কিন্তু সময়ের জন্য এখন দেখা হয় না। তবে এই ওয়েব সিরিজের ট্রেইলার দেখেছিলাম। আপনার মাধ্যমে কাহিনীটা পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। বিক্রম দেখছি সারারাত ধরে স্বরলিপির বই ঘেটে সবকিছু মেলানোর চেষ্টা করল, কিন্তু তারপরেও কিছুই করতে পারল না। রুদ্রবিনার কথাটা শুনে আমার খুবই ভয় লাগলো। পরবর্তী পর্বে কি হয়েছে তা অবশ্যই দেখার চেষ্টা করব। এমনকি এই ওয়েব সিরিজটি দেখার চেষ্টা করব।
এই সিরিজটা খুব সম্ভবত আমি ৬ মাস আগে দেখেই শেষ করে ফেলেছিলাম। সিরিজ সম্পর্কে তোমার দেওয়া বর্ণনা গুলো একদমই গল্পের সাথে মিলে যায়। লেখাটা পড়ার সময় মনে হচ্ছিল আমি সিরিজটা আরো একবার দেখছি। যাই হোক এই সিরিজ সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত মতামত ৮ এর উপরে।
দাদা আমি তো ভেবেছিলাম সমস্ত চাকতিগুলো পেয়ে গেলেই বিক্রম রাগ সঞ্জীবনী অর্জন করে ফেলবে। এখন তো আবার নতুন আরেকটি সমস্যা এসে দাড়ালো। এখন তানসিনের তানপুরাতে লাগালেও তার স্বরলিপি মিলছে না। সে গুলো আবার খুজে বের করতে হবে। শ্রুতির দাদুর পুরানো হাভেলিতে তার দাদুর কোন বইতে যদি কোন হিন্টস পেয়ে যায় তাহলে তো ভাল। কিন্তুু না পেলে আবার কি হয়, সেটাই দেখার বাকি। দেখি কি আসে পরের পর্বে। ধন্যবাদ দাদা।
রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির এবারের পর্বটি পড়ে ভালো লাগলো। বিক্রম অনেক কষ্ট করে অনেক প্রচেষ্টার পর সবগুলো চাকতি খুঁজে পেয়েছে। এবার শুধু মেলানোর পালা। বলা যায় বিক্রম অনেকটা রাগ সঞ্জীবনীর দোর গোড়ায় চলে এসেছে। হয়তো এর মাঝেও অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। যেহেতু তারা শ্রুতির দাদুর পুরানো হাভেলিতে গিয়েছে আশা করছি সেখান থেকে পুরনো অনেক বই সংগ্রহ করতে পারবে এবং নতুন কোন সূত্র সামনে চলে আসবে। আসলে গল্পের রহস্য ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। হয়তো তারা অনেকটাই সফলতার পথে এগিয়ে এসেছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। ওয়েব সিরিজটির এবারের পর্ব পড়ে অনেক ভালো লাগলো। দাদা আপনি খুবই সুন্দর ভাবে এই পর্বের রিভিউ তুলে ধরেছেন।
রুদ্রবীনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটি যতই পড়ছি ততই পড়ার আকর্ষণ বোধ করছি। যাক এই পর্বে বিক্রম তার সমস্ত চাকতি গুলো খুজে পেয়েছে। যার মধ্যে অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। চাকতিগুলো মিলাতে পারলেই সকল রহস্য বের হয়ে যাবে।বিক্রম রাগ সঞ্জীবনীর দোর গোড়ায় চলে এসেছে এখন শুদ্ধ তালার চাবি খুঁজে পেলেই সকল রহস্য বেরিয়ে পড়বে আশা করি পরবর্তী পর্বে সেটা বের হয়ে যাবে।
এই পর্বে এসে আমার কাছে মনে হয়েছে রাগ সঞ্জীবনীর খুব কাছে রয়েছে বিক্রম।
অন্যদিকে নাদের মা বিক্রমের মাকে ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করে নিজেও বেশ কষ্টের মধ্যে পরে গেছে। শ্রুতি কিন্তু ভীষণ সহযোগিতা করে চলেছে বিক্রমকে। ঐ পুরনো বাড়িতে বীণাসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু পাওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে। দেখা যাক সামনের পর্বে কি ঘটে।
দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀