কুইচ্চা মাছের দারুন সুস্বাদু রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে আমার সবচেয়ে প্রিয় এবং মজাদার একটি মাছের রেসিপি তৈরি করেছি আর সেটি হলো কুইচ্চা মাছ। এই মাছের বিভিন্ন অদ্ভুত অদ্ভুত আরো নাম আছে যা যার যার অঞ্চলভেদে জেনে থাকে। আমরা এটাকে নরমালি গ্রামের ভাষায় কুঁচে মাছ বলতাম। আমাদের এখানে বাজারে আবার কুঁচে বললে বুঝতে পারে না কিন্তু কুইচ্চা বললে আবার ঠিক বুঝতে পারে। এই মাছগুলো অনেক সুস্বাদু মাছ, দেশি মাছগুলো দারুন স্বাদের লাগে খাওয়ার সময়। এই কুইচ্চা মাছ আমার অনেক পছন্দের মাছ, এই মাছ খেলে আর মাংসের কথা মনে হয় না। আর এই মাছ খেলে শরীরে রক্ত হয় ভালো, আমি এই মাছ বাজারে পেলে না কিনে থাকতে পারিনা, খুব চাহিদা এই মাছের, দ্রুত বিক্রি হয়ে যায় এই মাছগুলো তাই পাওয়া সমস্যা হয়ে যায়। বাজারে অনেকদিন বাদে এই মাছ পেয়েছি গতকাল তাই দুটি কিনে নিয়ে এসেছিলাম। এই মাছটা আমার মা আবার পছন্দ করে না সাপের মতো দেখতে বলে, তাও জোর করে করে খাওয়াই হা হা। এই কুইচ্চা মাছের অনেকে উপরের যে ছাল মতো অংশ থাকে সেটি ফেলে দেয় কিন্তু ওইটাই আমার কাছে ভালো লাগে, আর ছাল ফেলে দিলে এর টেস্টটাই থাকে না আসলে। যাইহোক এই সুস্বাদু মাছের রেসিপিটার মূল উপকরণের দিকে চলে যাবো।


☬প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☬

დউপকরণ
পরিমাণდ
কুইচ্চা মাছ
২ টি
গোল আলু
৭ টি
পেঁয়াজ
১ টি
রসুন
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
ইচ্ছা মতো
শুকনো লঙ্কা
১ টি
গোটা জিরা
২ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৫ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১ চামচ


গোল আলু, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা লঙ্কা


সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


✔এখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


✠প্রস্তুত প্রণালী:✠


❖কুইচ্চা মাছ দুটি বাজার থেকে কাটিয়ে নিয়ে এসেছিলাম এবং বাড়িতে এনে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে রেখেছিলাম। এরপর আলুগুলোর খোসা ভালো করে ছালিয়ে নিয়েছিলাম এবং কেটে নেওয়ার পরে ধুয়ে রেখেছিলাম।

❖পেঁয়াজ এর খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে রেখেছিলাম এবং সেই সাথে রসুনের কোয়া থেকে খোসা ছালিয়ে রেখেছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো সব কেটে ধুয়ে রেখেছিলাম।

❖ধুয়ে রাখা কুইচ্চা মাছে লবন আর হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর হাত দিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

❖প্যানে তেল দিয়ে গরম করে নেওয়ার পরে তাতে কুইচ্চা মাছের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালোভাবে ভেজে নেওয়ার পরে তুলে রেখেছিলাম।

❖কড়াইতে অল্প তেল দিয়ে আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আলুগুলো ভালোভাবে ভাজা হয়ে গেলে তুলে রেখেছিলাম।

❖আলু ভাজার পরে কড়াইতে সরিষার তেল দিয়ে তাতে গোটা জিরা আর শুকনো লঙ্কা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে কেটে রাখা পেঁয়াজ-রসুন দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖জিরার সাথে পেঁয়াজ-রসুন হালকা ভেজে নেওয়ার পরে তাতে ভেজে রাখা আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖আলু দেওয়ার পরে তাতে কাঁচা লঙ্কা এবং স্বাদ মতো লবন, হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব মশলার সাথে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

❖মশলা মিক্স করার পরে তাতে পরিমাণমতো জল ঢেলে দিয়েছিলাম। এরপর জল খানিক্ষন ধরে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিয়েছিলাম এবং আলুগুলো সেদ্ধ করে নিয়েছিলাম।

❖আলুগুলো সেদ্ধ হওয়ার পরে তার থেকে কিছু আলুর পিচ তুলে নিয়েছিলাম এবং ভালোভাবে গলিয়ে নিয়েছিলাম আলুগুলো।

❖আলু গলিয়ে নেওয়ার পরে তরকারিতে ভেজে রাখা কুইচ্চা মাছের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর খানিক্ষন ফুটিয়ে নেওয়ার পরে তাতে গলিয়ে রাখা আলু দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে অল্প একটু জিরা গুঁড়ো দিয়ে তরকারিটা ভালোভাবে সম্পন্ন হয়ে আসা পর্যন্ত কিছুক্ষন আরো জ্বাল দিয়ে রেখেছিলাম।

❖তরকারিতে একটু ঝোল ঝোল রাখবো তাই তরকারিটা ঘন হয়ে আসলেই জ্বাল নিভিয়ে দিয়েছিলাম এবং তাতে আরেকটু জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

কুইচ্চা মাছের দারুন সুস্বাদু রেসিপি দেখি অনেক সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আসলে এই কুইচ্চা মাছের রেসিপি আমি কখনও এভাবে তৈরি করিনি। তবে একবার আমি কুচিচ্চা মাছের রেসিপি খেয়ে ছিলাম। আমার বড় ভাই একটি কুচিচ্চা মাছ নদী থেকে ধরে ছিল। সেটি অনেক বড় ছিল। আর খেতে বাইম মাছের মতো সুস্বাদু লাগে। আপনার এই রেসিপিটি দেখে সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেল। আসলে আপনার রেসিপি দেখে অনেক সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আমাদের সাথে এত মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। এই রেসিপি পরিবেশেন দেখে শিখতেও পারলাম।

 2 years ago 

আমিও আপনার মায়েরই মতো এই মাছটা একদমই পছন্দ করিনা। বিশেষ করে মাছের নামটা নিতেই কিরকম ভয় লেগে উঠলো। তবে আমাদের এদিকে বাজারে বিক্রি করে না। শুধুমাত্র কোন খাল বিলে ধরতে পাওয়া যায়। তাও খুব একটা কাউকে খেতে দেখি না। কারো কারো যদি পছন্দ হয় তাহলে খায়। তবে আমি শুনেছি চামড়া ছিলে রান্না করা হয়। আপনার কাছে তো দেখছি চামড়া সহ ভালো লাগে। যাইহোক রেসিপিটি নিশ্চয়ই আপনার জন্য মজাদার ছিল।

 2 years ago 

কুইচ্চা মাছ কে আমাদের এলাকায় কুচিয়া মাছ বলে।এই কুচিয়া মাছ হজম শক্তি বাড়ায়, পাইলস রোগের মহা ঔষধ, বেদনানাশক, উচ্চ রক্তচাপ কমায়, শ্বাসকষ্ট দূরিকরণে সহায়তা করে। কুচিয়া মাছ খেলে শরীরের রক্তসল্পতা দূর হয়। অনেক উপকারী মাছ জানা সত্বেও আমি কখনো খাইনি তার কারন হলো এই মাছ দেখতে একেবারে সাপের মতো লাগে যা দেখলেই অনেক ভয় লাগে তাই কখনো খাওয়া হয়নি।
আমি দেখেছি কুইচ্চা মাছের চামড়া ছুলে মাংসের মতো করে রান্না করে, তখন দেখতে বেশ লোভনীয় লাগে।দাদা আপনার আজকের রেসিপি টি রান্নার পদ্ধতি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে দেখতে লোভনীয় লাগছে,খেতেও নিশ্চয়ই অনেক সুস্বাদু হয়েছিলো।অনেক সুন্দর করে প্রতিটি ধাপ উপস্থাপন করেছেন এবং সুন্দর লোভনীয় রেসিপি টি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই দাদা।

 2 years ago 

আমাদের বাসার এখানে ছোট খাট একটি পানির ডোবা ছিলো,সেখানে প্রায় কুইচ্চা দেখা যেত,একেবারে সাপের মত দেখতে।আমি শুনেছি এই মাছ নাকি কি রোগের জন্য ভালো, কিন্তু আমার কখনও খাওয়া হয়নি।দেখতেই তো কেমন ভয় লাগে।ইশ দাদা একটা আস্ত মাছের ছবি দিতেন তাহলে ভালো হতো,দেখতে পারতাম। যাই হোক কোন মাছই বাদ দিবে না রেসিপি তৈরি করে খাওয়ার জন্য😉😉।ভালো লাগলো।ধন্যবাদ

 2 years ago 

কুইচ্চা মাছ আমাদের এখানে বাজারে খুব একটা বিক্রি হয় না। তবে গ্রামের নদী কিংবা পুকুরে জাল ফেললে এই মাছ দেখতে পাওয়া যায়। আসলে কখনো এই মাছ খাওয়া হয়নি। খেতে কেমন সেটাও বলতে পারব না। তবে দেখতে অনেকটা বাইম মাছের মত মনে হয়। আবার মাঝে মাঝে এই মাছ দেখে অনেকটা ভয় লাগে। মাসিমা দেখি একদম আমার আম্মুর মত কথা বলে। আমার আম্মু বাইম মাছ খেতে চায় না। বলে যে সাপের মতো দেখতে লাগে। আর টাকি মাছের মাথাও নাকি সাপের মতো দেখতে লাগে। তাই খায় না😅। আমার দাদু বলতেন এই কুইচ্চা মাছ খাওয়া নাকি ভীষণ উপকারি। এই মাছ খেলে নাকি শরীরের ব্যথা কমে যায়। তবে কখনো খেয়ে দেখা হয়নি। আপনার তৈরি করা এই রেসিপি দেখে মন চাচ্ছে খেতে। একবার কুইচ্চা মাছ খেয়ে দেখতে হবে। দারুন একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন দাদা।

 2 years ago 

কুইচ্চা মাছ আমার খুবই প্রিয় তবে সচরাচর এটি খেতে পারি না। কারণ বাজারে তেমন একটা বিক্রি হয় না। তবে মাঝে মাঝে গ্রামে কিছু লোককে ধরতে দেখি তাদের থেকে নেওয়া হয় আরকি। তবে দাদা আলু দিয়ে কখনো খাইনি এমনিতে মসলা দিয়ে রান্না করে রুটি অথবা পরোটা দিয়ে খেয়েছিলাম। ধন্যবাদ দাদা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

 2 years ago 

আমিও আপনার মায়েরই মতো এই মাছটা একদমই পছন্দ করিনা। বিশেষ করে মাছের নামটা নিতেই কিরকম ভয় লেগে উঠলো। তবে আমাদের এদিকে বাজারে বিক্রি করে না। শুধুমাত্র কোন খাল বিলে ধরতে পাওয়া যায়। তাও খুব একটা কাউকে খেতে দেখি না। কারো কারো যদি পছন্দ হয় তাহলে খায়। তবে আমি শুনেছি চামড়া ছিলে রান্না করা হয়। আপনার কাছে তো দেখছি চামড়া সহ ভালো লাগে। যাইহোক রেসিপিটি নিশ্চয়ই আপনার জন্য মজাদার ছিল।

 2 years ago 

দাদা ভাল আছেন আশাকরি। আজকের রেসিপিটি খুব লোভনীয় রেসিপি কারন আমারও খুব প্রিয়। তবে এই মাছকে আমাদের অঞ্চলে বাইন মাছ বলে। আমার খুব পছন্দ হলেও কাটা ছাড়া মাছ দেখলে অর্থাৎ মাছটি তাজা দেখলে আমার খেতে ইচ্ছে করেনা।কেমন যেন গা শিউরে ওঠে। কিন্তু এই মাছ অনেক টেস্ট। আমার ও আমার আব্বুর খুব প্রিয় এই মাছ ভুনা।আপনি আজ আলু দিয়ে রান্না করলেন খুব স্বাদ হয়েছিল খেতে বেশ বুঝতে পারছি।আমাদের এখানে কুমিল্লার মানুষজন মাছের চামড়া ফেলে দিয়ে রান্না করে।চামড়া ফেললে দেখতে আর খেতেও ভাল লাগেনা। আমরা চামড়া ফেলি না।মজার মাছের রেসিপিটি ধাপে ধাপে শেয়ার দেয়ার জন্য অনেক অভিনন্দন দাদা আপনাকে।

 2 years ago 

ভাই আসলে ঠিক বলেছেন আমাদের এলাকায়ও এ মাছের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আমি এক সময় অনেক বেশি পছন্দ করতাম। আগে বন্ধুবান্ধব সবাই মিলে একসাথে পার্টি করতাম কুইচ্চা মাছ দিয়ে। অতীতে কিছু স্মৃতি মনে করে দিলেন ভাই। জিভে জল চলে এসেছে আপনার রেসিপিটা দেখে। খেতেও খুব ইচ্ছে করতেছে। আমাদের এলাকায় কুইচ্চা মাছ বলা হয়ে থাকে। আমাদের খালে বিলে অনেক বেশি পাওয়া যায় এ মাছ। এজন্য মাঝে মাঝে বন্ধুরা একসাথে হলে এই মাছের পার্টি করি।

 2 years ago 

দাদা প্রথমে আপনার কুইচ্চা মাছের নাম শুনে ভাবছিলাম যে এটি আবার কি মাছ। পরে দেখে মনে হলো যে বাইম মাছ। আমাদের এদিকে এই মাছকে বাইম মাছ বলে। আমাদের এদিকেও অনেকেই এই মাছের চামড়া ফেলে দিয়ে খায়। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় যে এই মাছের চামড়াতেই বেশি মজা। এই মাছ আলু দিয়ে ভুনা ভুনা করলেও খেতে খুবই ভালো লাগে। আবার আপনার মত এরকম একটু ঝোল ঝোল রাখলেও খেতে ভালো লাগে। আমার হাসবেন্ড এই মাছ পছন্দ করে না দেখে তেমন একটা খাওয়া হয় না। অনেকদিন পর এই মাছ দেখে খেতে ইচ্ছা করছে। তাছাড়া আপনার রেসিপি বলে কথা দেখলে লোভ সামলানো মুশকিল হয়ে যায়।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.18
JST 0.034
BTC 89358.33
ETH 3187.70
USDT 1.00
SBD 2.82