কচুরমুখী দিয়ে পাবদা মাছের সুস্বাদু রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে সকালের দিকে আমি কচুরমুখী দিয়ে পাবদা মাছের রেসিপি তৈরি করেছিলাম। আমাদের এদিকে এই কিছুদিন গরম দিচ্ছে যে শীতকাল না গরমকালে আছি সেটাই বুঝতে পারছি না। গায়ে কোনোকিছু দিয়ে বেরোলেই শরীর জ্বালাপোড়া করে। শীতকালে এই গরম গরম লাগলে আমার লাগে বিরক্ত, কারণ বাইরে যেতে গেলে গরম কোনো কাপড় পরবো কি পরবো না এটাই ভেবে মরি হা হা । আগেরদিন বাজারে গিয়েছি সিম্পিল একটা টি -শার্ট পড়ে, বাজার করে আসতে আসতে গা ঘেমে জল বেরিয়ে যাওয়ার মতো যে গরম পড়েছিল, রাত ৭ টার দিকে তাই ২০ ডিগ্রির মতো তাপমাত্রা ছিল। তবে আজকে রাত ১২ টার পরে কেমন যেন আবার হঠাৎ করে একটু ঠান্ডা ঠান্ডা পড়া শুরু করেছে, কিন্তু এই ঠান্ডায় কম্বল গায় দেওয়ার মতো না, আমি কাঁথা গায় দিয়েই থাকি বেশিরভাগ সময়। যাইহোক, আজকে ঠান্ডা বেশি ছিল না আর ঘুমটাও অনেক সকাল সকাল ভেঙে গিয়েছিলো তাই সকাল সকাল রান্নাটা করে ফেললাম। পাবদা মাছ অনেকদিন বাদে খেলাম আর খেতে বেশ স্বাদও লেগেছিলো। পাবদা মাছ এমনিতে সরিষা দিয়ে খেতে সেরা। তবে এই মাছটা টেস্টি ফলে, যেকোনো তরকারির সাথে মোটামুটি ভালো লাগে। আমি প্রায় এই মাছ হয় কচুরমুখী না হলে সরিষা দিয়ে করি কারণ এই দুইভাবে আমার কাছে ভালো লাগে। যাইহোক এখন আমি এই রেসিপিটার মূল উপকরণের দিকে চলে যাবো।


❂প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:❂

❣উপকরণ
পরিমাণ❣
পাবদা মাছ
৩০০ গ্রাম
কচুরমুখী
৫০০ গ্রাম
রসুন
২ টি
কাঁচা লঙ্কা
১২ টি
লঙ্কার গুঁড়ো
১/২ চামচ
গোটা জিরা
পরিমাণমতো
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৪ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১ চামচ


কচুরমুখী, রসুন, কাঁচা লঙ্কা


সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


❦এখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


ꕥপ্রস্তুত প্রণালী:ꕥ


➤পাবদা মাছগুলো বাজার থেকে কাটিয়ে নিয়ে আনা ছিল এবং আমি একবার ধুয়ে রেখে দিয়েছিলাম। এরপর কচুরমুখীগুলোর খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম।

➤রসুন দুটির কোয়া ছাড়িয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে খোসাগুলো ছালিয়ে ধুয়ে রেখেছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো কেটে নিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

➤পাবদা মাছগুলোতে ২ চামচ করে লবন আর হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে গায়ে ভালো করে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।

➤একটি প্যানে তেল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তেলটা গরম হয়ে আসলে তাতে পাবদা মাছগুলোর পিচ ছেড়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤মাছ ভাজার সাথে সাথে অন্য কড়াইতে একটু তেল দিয়ে কচুরমুখীগুলো দিয়ে ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤কচুরমুখী ভাজা হয়ে গেলে কড়াইতে তেল দিয়ে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম এবং সেই সাথে রসুন দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভাজা মতো করে নিয়েছিলাম।

➤ভাজা হয়ে গেলে তাতে ভাজা কচুরমুখী দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে কাঁচা লঙ্কা দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤কাঁচা লঙ্কা দেওয়ার পরে তাতে স্বাদ মতো লবন, হলুদ আর লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব একসাথে মিক্স করে নেওয়ার পরে তাতে জল দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤তরকারিটা বেশ খানিক্ষন ধরে ফুটিয়ে নিয়েছিলাম এবং কচুরমুখীগুলো ভালো করে সেদ্ধ করে নিয়েছিলাম। এরপর তরকারিতে ভেজে রাখা পাবদা মাছগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤তরকারির থেকে কিছু সেদ্ধ কচুরমুখী তুলে নিয়েছিলাম এবং হাতা দিয়ে ভালোভাবে গলিয়ে সফ্ট করে নিয়েছিলাম।

➤গলানো কচুরমুখী তরকারিতে আবার পুনরায় দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তরকারির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দেওয়ার পরে তরকারি হয়ে আসার জন্য দেরি করেছিলাম।

➤তরকারির ঝোলটা ঘন হয়ে আসলে আমি নামিয়ে নিয়েছিলাম, যেহেতু একটু ঝোল ঝোল রাখবো তাই আর বেশি ঝোল মারেনি। জ্বাল নিভিয়ে দেওয়ার পরে তরকারিতে জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম এবং পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

কচুমুখী দিয়ে পাবদা মাছের মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন। আসলে পাবদা মাছের রেসিপি আমার খুবই প্রিয়। আমি কিছুদিন আগেই পাবদা মাছের রেসিপি তৈরি করেছিলাম।পিঁয়াজ দিয়ে পাবদা মাছের ভুনা রেসিপি আমার খুবি ভালো লেগে।তবে কচু মুখি দিয়ে এভাবে কখনো তৈরি করা হয়নি তাই পাদার রেসিপির উপস্থাপন দেখে শিখে নিলাম পরবর্তীতে তৈরি করবো ইনশাআল্লাহ। আমাদের সাথে মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

প্রথমে বলি দাদা পাবদা মাছ খেতে কিন্তু খুবই সুস্বাদু লাগে। এই মাছ অন্য মাছের থেকেও ভিন্ন ধরনের স্বাদ রয়েছে। আর এই মাসের মধ্যে কচু দিয়ে রান্না করলে এর স্বাদ একটু বেশি বেড়ে যায়।পাবদা মাছ কচু দিয়ে খাওয়া হলেও সরিষা দিয়ে কখনোই মাছ খাওয়া হয়নি। আপনি খুব সুন্দর ভাবে কচুর মুখি দিয়ে পাবদা মাছ রান্না করেছেন। সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

আমাদের এদিকে ভালোই ঠান্ডা পড়ছে। আর আপনাদের এদিকে ঠান্ডা অনেক কমে গেছে। যাইহোক কচুর মুখী খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। তবে পাবদা মাছ দিয়ে কখনো খাওয়া হয়নি। আপনার রেসিপি দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে । পাবদা মাছ দিয়ে আমি একদিন রান্না করে খেয়ে দেখব। ধন্যবাদ আপনাকে সুস্বাদু একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

বাংলাদেশে তো এখনো পুরো ঠান্ডা। সকালবেলায় দশটার দিকে বাহিরে গিয়েছিলাম একেবারে ঠান্ডায় বরফ হয়ে গেছি। ঠান্ডায় বাহিরে যাওয়া যাচ্ছে না। আর আপনাদের ওখানে গরম পড়েছে ভাবতে অবাক লাগছে। আমাদের এখানে মার্চ মাসের আগে তেমন গরম পড়ে না। তবে যাই হোক শীতকাল বেশ উপভোগ করছি। গরম একেবারেই ভালো লাগেনা। খুবই বিরক্ত লাগে। পাবদা মাছ আমার ভীষণ প্রিয়। পাবদা মাছ যেভাবেই রান্না করা হোক না কেন খেতে ভালো লাগে। তবে সরিষা দিয়ে কখনো খাওয়া হয়নি। বাঙালি রান্না মানেই সরিষার ঝাঁজ। সরিষা দিয়ে একদিন খেয়ে দেখতে হবে। কচুরমুখী দিয়ে পাবদা মাছের এই ঝোল ঝোল তরকারি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। কচুরমুখীর আঠা আঠা ভাব তরকারিটা আরো বেশি মজার করে। আর ভাত দিয়ে মাখিয়ে খেতে দারুন লাগে। দারুন ছিল দাদা আজকের রেসিপি।

 2 years ago 

আসলেই আমি ভাবি এটা যে কোন সিজন চলে তাই ভুলে যাই গরম জামা পড়ে গেলে গরম লাগে আবার গরম জামা ছাড়া গেলে শীত লাগে।আজকাল ভেজালের ভীরে শীতকাল কেও ভেজালে ধরেছে😜😜 আর না হয় গার্লফ্রেন্ড ছ্যাকা দিয়েছে 🤣।যাই হোক পাপদা মাছটা টমেটো দিয়ে ভুনা করলে খেতে বেশ ভালো লাগে।তবে কচুর মুখী দিয়ে খাওয়া হয়নি।প্রতিটি ধাপ আপনি খুব সুন্দর করে দেখিয়েছেন। ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

আমাদের এখানে এতো ঠান্ডায় জমে যাওয়ার মতো অবস্থা। অনেক দিন পাবদা মাছ খাওয়া হয় না। আপনার কচুর মুখি দিয়ে পাবদা রেসিপি দেখে তো খেতে ইচ্ছা করছে। খেতেও অনেক সুস্বাদু হয়েছে নিশ্চয়ই। অনেক ধন্যবাদ দাদা সুন্দর রেসিপি টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

একদম ঠিক কথা শীতের সময় গরম লাগলে খুব বিরক্তি লাগে। আমার ক্ষেত্রে যেটা হয় গরম মনে করে নরমাল জামা কাপড় পড়ে বের হই কিন্তু সন্ধ্যা হলেই গায়ে শীত ধরে যায়। যাই হোক দাদা আপনি আজও খুব সুন্দর একটি রান্নার রেসিপি শেয়ার করেছেন। মাছ আপনার খুব পছন্দের এটা বুঝা যায়। পাবদা মাছ আমার ভাল লাগে তবে পেঁয়াজ দিয়ে ভুনা করে। কচুর মুখী দিয়ে রান্না করে খাওয়া হয়নি। পাবদা মাছের সাইজগুলো বেশ বড় মনে হচ্ছে। কচুর মুখী আমার খুব ভাল লাগে বিশেষ করে ইলিশ মাছ দিয়ে ঝোল করে খেতে। আপনার রান্নার প্রণালী খুব ভাল লেগেছে। পরিবেশন দেখে খুব খেতে ইচ্ছে করছে। ধন্যবাদ দাদা ।

 2 years ago 

ভাই প্রথমে বলবো আপনার ওই দিকের গরম টা পাঠিয়ে দিন ৷ সামান্য টি-শার্ট পরেই ঘেমে গেছেন শুনে তো অবাক হলাম ৷ যা হোক পাবদা মাছ কচুরমুখী দিয়ে বেশ সুন্দর করে রান্না করেছেন ৷ প্রতিটি ধাপ দেখে মন ভরে গেলো ৷
অনেক ধন্যবাদ দাদা এতো সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য ৷

 2 years ago 

গরম সত্যিই অনেক কমে গেছে বলতে গেলে আর কম্বল গায়ে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না। আমিও কয়েকদিন ধরে কাঁথা গায়ে দিয়েই থাকছি।
যাই হোক আপনার আজকের শেয়ার করা রেসিপিটি অনেক সুন্দর হয়েছে। খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপনও করেছেন। যদিও এই পাবদা মাছ আমি খুব একটা ভালো খাই না তবে কচুরমুখী আমার খুব ফেভারিট।

 2 years ago 

দাদা আমাদের ঢাকায় ও এমন অবস্থা,শীত নাকি গরম বুঝিনা। আপাতত ফ্যান ছেড়ে দেই।সকালে একটু ঠান্ডা অনুভব হয়।
দাদা পাব্দা মাছ আর কচু মুখি দুটোই আমার ভাল লাগে। তবে দুটো একসাথে রান্না করে কখনও খাওয়া হয়নি।আর কচুমুখিও কখনও আমি ভেজে রান্না করিনি।ভেজে নেয়াতে টেস্ট বহুগুন বেড়ে যায়, এটা বলাই যায়।আপনার রেসিপি বেশ লোভনীয় লাগছে।রান্নার ধাপগুলো খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। এজন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা।মজার ও সুস্বাদু এই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 58363.73
ETH 2484.43
USDT 1.00
SBD 2.39