ওয়েব সিরিজ রিভিউ: রুদ্রবীনার অভিশাপ- আনন্দগড়-এর আখ্যান ( সিজন ২- তৃতীয় পর্ব )
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির দ্বিতীয় সিজনের তৃতীয় পর্ব রিভিউ দেব। আজকের তৃতীয় পর্বের নাম হলো "আনন্দগড়-এর আখ্যান"। গত পর্বে দেখেছিলাম আরেক নাদের বিষয়ে অর্থাৎ কেদার নামক লোকটা কিভাবে বাহাদুরের বোনকে মারতে চেয়েছিলো সেই বিষয়ে। আজকের পর্বে কি ঘটে সেইটা দেখবো।
✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠
☬মূল কাহিনী:☬
বিক্রম আর শ্রুতি যেদিন নাদের পিছনে গিয়েছিলো ওই চাকতিগুলো উদ্ধার করার জন্য তখন না পেয়ে তারা দুইজন পরে একটি লেকের পাড়ে যায় এবং বাহাদুর লোকটার বোন আর কেদার ওই লোকটাকে নিয়ে আলোচনা করতে লাগে। কারণ আসলেই বাহাদুরের বোনকে একইভাবে মেরেছিলো যেটাকে নরমালি ব্রেন হেমারেজ বলে সবার সামনে চলে আসে। এখানে মৃত্যুর রহস্যগুলো সেইভাবে সাজিয়েছিল যাতে কোনো মার্ডার বলে সামনে না আসে কোনোকিছু। আর কেদার লোকটাও সংগীতে পারদর্শী ছিল আর ধীরে ধীরে গ্রামের সবার কাছে একজন ভালো গুরু হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছিল, ফলে সে যে বাহাদুরের বোনকে মারতে পারে এইটা কেউ কখনো বিশ্বাস করতে পারেনি আর এখনো তার নামে ভালো ধারণা সবার মধ্যে রয়েছে কিন্তু আসল কাহিনী তো বাহাদুরই জানতো। যাইহোক এখন চাকতিগুলোও হাতছাড়া হয়ে গেছে আর সাংকেতিক চিহ্নগুলো এখন তাদের পক্ষে বোঝাও একটা মুশকিল হয়ে গেছে। বিক্রম শ্রুতিকেও একা একা কোথাও যেতে মানা করে কারণ তার উপরেও হামলা হতে পারে। এরপর তারা দুইজন শ্রুতির মাকে নিয়ে থানায় চলে যায় আর ৫০ বছরের কেস ফাইলগুলো বের করতে বলে কিন্তু সেখানেও আসলে মমতাজের খুনের বিষয়ে ওই ব্রেন হেমারেজ এর বিষয়েই উল্লেখ ছিল।
তারা সবাই থানায় গিয়ে আসলে তেমন কিছু পায়নি যে উদ্দেশ্যে গিয়েছিলো। তবে নাদের বিষয়ে ওই পুলিশ অফিসারটি খোঁজ লাগায় এবং আইডেন্টি চেক করে তার পরিচয় খুঁজে বের করেছে বলে তাদের জানায় আর তাকে ধরার ব্যবস্থাও তারাও করছে বলে জানায়। এরপর দেখা যায় নাদ সেই চাকতিগুলো নিয়ে রুদ্রভৈরব এর কাছে চলে যায়, আসলে রুদ্রভৈরবই বলেছিলো তাকে চাকতিগুলো নিয়ে আসার জন্য। নাদ তাকে সেগুলো দেওয়ার পরে সে বলে আমাকে মুক্তি দিন এইসব কাজের থেকে কিন্তু রুদ্রভৈরব তার কোনো কথা শোনে না আর দিতিপ্রিয়াকে মেরে ফেলতে বলে। এরপর নাদ প্রতিবাদী হয়ে ওঠে আর তার মুখের উপর না বলে চলে যায়। রুদ্রভৈরব এর আসলে সন্দেহ ছিল যে বিক্রম ওরা পারবে না তার থেকে নিজেরাই কিছু খুঁজে বের করতে হবে। কিন্তু সবকিছুর মুলে একটা জিনিসই লাগবে সেটা হলো স্বরলিপি, ফলে সেইটা না পেলে কিছু করতে পারবে না। আর এদিকে নাদের দিয়ে আর কোনো কিছু হবে না সেটাও বুঝতে পারে।
নাদকে রুদ্রভৈরব যদিও পরে নির্দেশ দেয় যে ওই পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলতে, কারণ ওই পরিবারের মেয়ে মানুষেরা রুদ্রবিনা স্পর্শ করেছে তাই তাদের কারো বেঁচে থাকার অধিকার নেই। এই নিয়ে নাদের সাথে ঝগড়া হয় আর নাদ বলে তারা বাইরে গান গাইছে, রুদ্রবিনা স্পর্শ করেছে তাতে কি হয়েছে টা কি। সে নিজেকে বারবার এইসব কাজের থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে চায় কিন্তু তার মায়ের জন্য পারে না শেষপর্যন্ত। কারণ নাদ যদি কোনো ভুল করে তার স্বাস্তি তার মাকে দিয়ে থাকে রুদ্রভৈরব। সেইদিনের ঘটনায় তার মাকে চাবুক মেরে অনেক ক্ষতবিক্ষত করে দেয় যেটা নাদ দেখে আরো ক্ষেপে যায় তাই এইসব দৃশ্য দেখেও চুপ থাকতে হয়। আর নাদ বাইরে আনন্দগড় গিয়ে একটা বিষয় বুঝেছে যে তাদের এখানে নিচু জাত বলে আর ভুল বুঝিয়ে রাখা হয়েছে, বিশেষ করে মহিলাদের যে তারা বাইরে কোথাও গান গাইতে পারবে না, কোনো বিনা স্পর্শ করতে পারবে না। এদিকে বিক্রম তানসিনের তানপুরার বাক্সে যে লেখাগুলো ছিল সেটা দিয়ে আবারো স্বরলিপি মেলাতে বসে কিন্তু বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। আসলে সাংকেতিক চিহ্নগুলো এমনভাবে দেওয়া যে বোঝা খুব মুশকিল তাদের জন্য ।
একদিন বিক্রম একটা বৃদ্ধ লোকের কোমরে রুদ্রবিনার চিহ্ন দেখেছিলো আর সেইটা হঠাৎ তার মনে পড়ে যায় আর সেই বৃদ্ধ লোকটির খোঁজে তারা তার বাড়ির উদ্দেশ্যে যায়। আসলে ওই বৃদ্ধ লোকটাও ছিল রুদ্রপুরের শিব মন্দিরের কর্মচারী আর সেটা তখনকার সেই কেদার লোকটার সময়। ফলে রুদ্রপুরের অনেক কিছু সম্পর্কে ওই বৃদ্ধ লোকটার জানা ছিল আর হয়তো সেই জন্যই বিক্রমের মনে হয়েছিল যে ওই বৃদ্ধ লোকটির কাছ থেকেও অনেক কিছু ইনফরমেশন পাওয়া যাবে রুদ্রপুর সম্পর্কে। আর এইজন্যই তারা দুইজন গ্রামে গিয়ে তাদের বাড়ি যায় আর বৃদ্ধর সেই নাতির সাথে দেখা হয়। এরপর তার দাদুর কথা জিজ্ঞাসা করতেই সেখান থেকে দৌড়িয়ে ঘরে চলে যায় আর তারপর তারা দুইজন গিয়ে দেখে সেই বৃদ্ধ লোকটি অনেক আগেই মারা গিয়েছে আর তার মৃত্যুর বিষয়ে বৃদ্ধর নাতিটি তাদের খুলে বলতে লাগে।
☬ব্যক্তিগত মতামত:☬
এখানে লাস্টে যে বৃদ্ধের কথাটা বলা হয়েছে সে আসলে একদম প্রথম এর দিকে একদিন বলেছিলাম যে জঙ্গলের মধ্যে বৃদ্ধ তার নাতিকে খুঁজতে গিয়ে নাদের সামনে হয়েছিল। আর তখন নাদ লোকটা বৃদ্ধ লোকটার কাছে অনেক কিছু বিষয় জেনে নিয়েছিল নাতির গলায় ছুরি ধরে আর সবকিছু শোনার পরে বৃদ্ধ লোকটিকে মেরে ফেলেছিলো। এই বৃদ্ধটা হলো সেই বৃদ্ধ লোকটা যার কাছে রুদ্রপুরের অনেক কিছু বিষয় সম্পর্কে জানা ছিল। আর এই বিক্রমের পুরো পরিবারটা হচ্ছে মদন্তীর বংশধর তাই এখন এদের টার্গেট হচ্ছে দিতিপ্রিয়া আর তারপর শ্রুতি। এদের দুইজনের উপর নজর এখন রুদ্রভৈরব এর। তবে নাদ আর এইসব করবে কিনা সেটাই তার এখন ভাবাচ্ছে তাই ওর স্থানে এখন নতুন কাউকে লাগানোর ফন্দি আঁটছে।
☬ব্যক্তিগত রেটিং:☬
৯.৪/১০
☬ট্রেইলার লিঙ্ক:☬
দাদা আজকে গল্পের পর্বটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আসলেই রহস্যময় যেন আরো দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বৃদ্ধটি আজকে ভালোভাবে বুঝতে পারলাম আসলে এই বৃদ্ধটি ছিলো সেই লোক,যে জঙ্গলে ভিতরে তার নাতিকে খুঁজতে গিয়ে।আর নাদদের হাতে ধরা পড়েছিল। তার কাছ থেকে অনেক তথ্য জানার পরে তাকে মেরে ফেলা ছিল। আসলে আগামী পর্বে আরও রহস্যের উদ্ঘাটন হবে। সেই অপেক্ষায় রইলাম। আজকের পর্বটি পড়ে আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে।
রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির দ্বিতীয় সিজনের তৃতীয় পর্বের রিভিউটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। রহস্য যেন দিন দিন আরো বেশি গভীর হয়ে যাচ্ছে। এক পর্ব দেখার পরে অন্য পর্ব না দেখলে ভালো লাগে না, এত রহস্য লুকিয়ে থাকে এই গল্পগুলোতে। আমি এই সিরিজটি রিসেন্ট দেখা শুরু করেছি এই জন্য গল্পটা বুঝতে একটু সুবিধা হচ্ছে। রুদ্রভৈরবের নজর যখন দিতিপ্রিয়া ও শ্রুতির উপর দেখা যাক কি হয় । নাদ এখন কি করবে সেটাও দেখা যাবে পরবর্তীতে। আগামী পর্বে কি ঘটে দেখা যাক সে অপেক্ষায় রইলাম।
নাদ আসলে পরিস্থিতির চাপে পরে সব করছে তবে সত্যিই সে আর খুন করবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়। তবে রুদ্রভৈরব লোকটা কতটা ভয়ংকর হতে পারে এটাও দেখার বিষয়। এদিকে বিক্রম তো বেশিদূর এগোতে পারছেনা।
ঘটনাগুলো ক্রমশ গোলমেলে লাগছে আমার, কি যে হয় বোঝা যাচ্ছে না।
দেখা যাক সামনে কি হয়।
দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀
"আনন্দগড়-এর আখ্যান" এবারের পর্বটির মাধ্যমে আরো অনেক তথ্য সামনে চলে আসলো। আসলে টিভি সিরিজ বা ওয়েব সিরিজের এক একটি পর্ব যেন এক একটি রহস্যের বেড়াজাল। নতুন নতুন তথ্য সামনে চলে আসে। বৃদ্ধ লোকটি তার নাতনিকে খুঁজতে জঙ্গলে গিয়েছিল এবং সেখানে বৃদ্ধ লোকটির কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য জেনে তাকে খুন করা হয়। বৃদ্ধ লোকটা যেহেতু অনেক কিছু জানতো তাইতো তাকে খুন করা হয়েছে। বিক্রমের পরিবার বিপদে আছে। সেই সাথে দিতিপ্রিয়া ও শ্রুতির অনেক বিপদ আছে বোঝাই যাচ্ছে। দেখা যাক শেষ পর্যায়ে কি হয়। রুদ্রভৈরব সত্যিই অনেক ভয়ঙ্কর লোক। দেখা যাক আরো কি কি করতে পারে। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
জী দাদা একদম প্রথম পর্বের প্রথম দৃশ্যেই বৃ্দ্ধের কথা গুলো পড়েছিলাম। জঙ্গলের মধ্যে বৃদ্ধ তার নাতিকে খুঁজতে গিয়ে নাদের সামনে পড়েছিল। এখন আমার মনে হচ্ছে নাদ আর রুদ্রভৈরবের হয়ে কাজ করবে না। সে পরিবর্তন হয়ে যাবে। তো পরের পর্বে নাদের জাগায় রুদ্রভৈরব কাকে কাজে লাগায়,আর সে কি করে সেটাই দেখার বিষয়। ধন্যবাদ দাদা।