আলু, বেগুন এবং সজিনা ডাঁটা দিয়ে শোল মাছের টেস্টি রেসিপি
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি শোল মাছের তরকারি রান্না করেছি। শোল মাছ মেলাদিন বাদে খেলাম আর খেতেও দারুন লেগেছিলো। মেলাদিন পরে কোনো মাছের স্বাদ যেন বেড়ে যায় আর নতুন নতুন মনে হয় স্বাদের দিক থেকে। এই সব মাছগুলোর মাথা সাপের মতো দেখতে লাগে বলে ইংলিশে স্নেক নামটাও আছে। আর সবজি হিসেবে আমি বেগুন, আলু এবং সজিনা দিয়ে রান্না করেছি। সজিনা এখন সিজনের সবজি না, কিন্তু এইগুলো বারো মাসেই পাওয়া যায় আর অসময়ের সবজি কিন্তু খাওয়ার দিক থেকে একটা অন্যরকম মজা আছে। সজিনার এই লম্বা লম্বা ফলে যেটাকে সবজি হিসেবে আমরা খাই তার থেকে বেশি পুষ্টি আর উপকারিতা হলো এর পাতায়। একপ্রকার এই সজিনার পাতাগুলোকে যদি মহৌষধ বলে থাকি তাহলে ভুল হবে না, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ভীষণভাবে স্ট্রং করে তুলতে পারে। তবে এই সজিনা ডাঁটার ক্ষেত্রে কচি আর বীজ হয়ে যাওয়া সজিনার মধ্যে টেস্ট আলাদা হয়ে থাকে কারণ কচিগুলো যখন সিজনে পাওয়া যায় তখন ওটাও খেতে দারুন লাগে কারণ ডাঁটা বেশি চাবানোর প্রয়োজন হয় না ফলে সব খাওয়া যায়। কিন্তু বেশি বড়ো হয়ে যাওয়া ডাঁটা চাবিয়ে খাওয়ার মধ্যেও একটা আলাদা রকম প্রশান্তি কাজ করে থাকে, আমার কাছে ভীষণ ভাল লাগে। আর এই বেশি বড়ো বীজযুক্ত ডাঁটা খাওয়ার আরেকটা সুবিধা আছে যে ডাঁটা দিয়ে তরকারি রান্নার পাশাপাশি এর যে বীজগুলো থাকে সেগুলো বের করে নিয়ে ভাজা মতো করে খেতে আরো বেশি টেস্ট লাগে। যাইহোক এখন আমি এই রেসিপিটির মূল পর্বের দিকে চলে যাবো।
☀প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☀
❦এখন রেসিপিটি যেভাবে তৈরি করলাম---
❆প্রস্তুত প্রণালী:❆
❖শোল মাছটিকে প্রথমে ভালো করে কেটে নিতে হবে এবং জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর আমি সজিনার ডাঁটাগুলোর ছাল ছালিয়ে নিয়ে কেটে খন্ড খন্ড করে নিয়েছিলাম এবং জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।
❖বেগুন দুটি কেটে নেওয়ার পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম। এরপর আলুগুলোর খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে নিয়েছিলাম আর জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।
❖পেঁয়াজ দুটির খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কুচি করে নিয়েছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো সব কেটে নেওয়ার পরে ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।
❖কেটে রাখা শোল মাছের পিচগুলোতে ২ চামচ করে লবন আর হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম এবং ঝাঁকিয়ে গায়ে ভালো করে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।
❖শোল মাছের পিচগুলো সব ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম। এরপর বেগুনের পিচগুলো সব ভালো করে ভেজে নিয়েছিলাম।
❖আলুর পিচগুলো লাল মতো করে ভেজে নিয়েছিলাম। এরপর পেঁয়াজ কুচি জল দিয়ে ধুয়ে নেওয়ার পরে ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।
❖কড়াইতে সরিষার তেল দেওয়ার পরে জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম পরিমাণমতো। জিরা ভাজা মতো হয়ে গেলে তাতে ভেজে রাখা আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।
❖আলু দেওয়ার পরে তাতে ভাজা বেগুনের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে কেটে রাখা কাঁচা লঙ্কা আর ৩ চামচ করে লবন, হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম।
❖সব উপাদান মিক্স করে নিয়েছিলাম এবং তাতে পরিমাণমতো জল ঢেলে দিয়েছিলাম।
❖জল দেওয়ার পরে তরকারি খানিক্ষন ধরে ফুটিয়ে নিয়েছিলাম। আলু সিদ্ধ হয়ে
আসলে তাতে ভেজে রাখা শোল মাছের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।
❖সিদ্ধ করা আলুর কিছু পিচ তুলে নেওয়ার পরে ভালো করে গলিয়ে নিয়েছিলাম।
❖গোলানো শেষ হয়ে গেলে তরকারিতে কেটে রাখা সজিনার ডাঁটাগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে তাতে ভেজে রাখা পেঁয়াজ কুচি দিয়ে দিয়েছিলাম।
❖পেঁয়াজ কুচি নেড়ে তরকারির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার পরে তাতে গলিয়ে রাখা আলুর অংশ দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তরকারি পুরোপুরি হয়ে আসা পর্যন্ত আরো খানিক্ষন দেরি করেছিলাম।
❖দেরি করার পরে আমার ৩ রকম সবজি দিয়ে শোল মাছের দারুন সুস্বাদু একটা তরকারি তৈরি হয়ে গেছিলো এবং আমি পরে তাতে জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। অসম্ভব টেস্ট লেগেছিলো অনেকদিন পর শোল মাছ আর সজিনা ডাঁটা দিয়ে খেয়ে। যাইহোক এরপর আমি পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তরকারি তুলে নিয়েছিলাম।
রেসিপি বাই, @winkles
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
আলু বেগুন এবং সাজনে ডাঁটা দিয়ে শোল মাছের রেসিপি দেখে অনেক সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আপনি ঠিকই বলেছেন দাদা সাজনে ডাঁটা খুবই উপকারী। বিশেষ করে সাজনে ডাঁটা দিয়ে যখন ডাল রান্না করা হয় তখন চিবিয়ে এই ডাঁটা খেতে খুব ভালো লাগে। আপনি আরেকটি কথা বলেছেন সাজনা গাছের পাতা ওষুধ হিসেবে কাজ করে। সত্যিই এটি আমার নিজের চোখে দেখা। আমাদের বাড়ির পাশে একজন ওষুধ বানায় সাজনা পাতা দিয়ে। সত্যিই আপনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলেছেন। আর আপনার কথা আমার আরো বেশি ভালো লেগেছে, অনেকদিন পর কোন মাছ খেলে সেটি আরো যেন বেশি মজাদার লাগে। তাই আপনার কাছে অনেক বেশি মজাদার লেগেছে। আমাদের সাথে মজাদার রেসিপি সুন্দরভাবে পরিবেশন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
আলু, বেগুন এবং সজিনা ডাঁটা দিয়ে শোল মাছের টেস্টি রেসিপিটি দেখতে দারুণ হয়েছে। বেশ সুন্দরভাবে আপনার পোস্টটি উপস্থাপন করেছেন। অনেক সাজিয়ে গুছিয়ে প্রতিটি ধাপ আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। দেখে মনে হচ্ছে বেশ সুস্বাদু হবে।
মেলাদিন এই শব্দটি আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় সবাইকে বলতে শুনি। আপনার লেখায় শব্দটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আর সজনে ডাটার এতো উপকারীতা আমি আগে জানতাম না। শুনে ভালো লাগলো। আর আপনার পোস্ট এর মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারলাম। রন্ধন প্রক্রিয়া ছিলো অনন্য। শুভকামনা রইল ভাইয়া।
সজনে ডাটা খুব পছন্দ আমার ।কিন্তু মাছ দিয়ে কখনও খাওয়া হয়নি । আপনার রেসিপি দেখে খুব খেতে ইচ্ছে হচ্ছে । মাছ দিয়ে এত মজার সবজি দিয়ে এত চমৎকার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দাদা ।আপনার জন্য শুভকামনা রইল ।
অনেকদিন পরে যদি পছন্দের কোনো মাছ খাওয়া হয় তাহলে খেতে বেশি ভালো লাগে দাদা। তবে যাই বলুন না কেন শোল মাছ খেতে আমার বেশ দারুন লাগে। বিশেষ করে আলু ও বেগুন দিয়ে শোল মাছের রেসিপি খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আলু বেগুনের সাথে আবার সজিনা ডাঁটা দিয়েছেন তাহলে তো নিশ্চয়ই খেতে আরও বেশি ভালো হয়েছে। সজিনা ডাঁটা খেতে আমি ভীষণ পছন্দ করি। যখন সজিনা ডাঁটা গুলো পুরোপুরিভাবে পরিপক্ক হয় তখন খেতে বেশি ভালো লাগে। সজনে পাতা অনেক উপকারী। বিভিন্ন ওষুধি গুণ রয়েছে এর মাঝে। তবে যাই হোক দাদা আপনার শেয়ার করা রেসিপিগুলো সব সময় দারুন হয়। দেখলেই খেতে ইচ্ছা করে দাদা। বরাবরের মতো আজকেও আপনি রন্ধনশিল্পের নিপুনতা সকলের মাঝে প্রদর্শন করেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।
আহা শোল মাছ একেবারে মনে হয় যেন স্বাদের গড়াগড়ি লেগে গেছে পুরো সবজি জুড়ে। বেগুন আলু সাথে শোল মাছ কিন্তু সজনে ডাটা দিয়ে রান্না করলে কতটা স্বাদ লাগে সেই সম্পর্কে কোন ধারণাই ছিল না। তবে আজ ধারণা হলো আপনার এই রান্না দেখে। আস্ত একটা শোল মাছ তিন ধরনের সবজির মিশ্রণে স্বাদে ভরপুর করে তুলেছে। এক প্লেট চুরি করে নিয়ে আসবো কিন্তু দাদা।আমি খেতে না পারলে যে আপনার পেট ব্যথা করবে 😁।আর আমি কিন্তু উপকারী জিনিস একটু বেশি খাওয়ার চেষ্টা করি। যেহেতু সজনে ডাটার উপকারিতা জানলাম একসময় এভাবে রান্না করে খাওয়া দরকার আমি মনে করি।💘💘 দারুণ হয়েছে দাদা।💘💘
সজনে ডাটাটা কখনো খাওয়া হয়নি।তবে বেগুন,আলু দিয়ে এই মাছ আহা স্বাদ যেনো আমিই টের পাচ্ছি!
আলু বেগুন এবং সজিনা ডাটা দিয়ে আপনি অনেক মজাদার একটি শোল মাছ রান্নার রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। শোল মাছের কথা বললেই ছোটবেলার একটা স্মৃতি মনে পড়ে যায় সব সময়। একবার পুকুর থেকে শোল মাছ ধরতে গিয়ে হাতে কাটা মেরেছিল যার কারণে আমার প্রায় সাত দিন জ্বর এসেছিল। মজাদার এই শোল মাছ রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
অও,অসময়ে সজনে ডাটা আমার তো দেখেই খেতে মন চাইছে।দাদা খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার আজ পরিবেশন করেছেন।তাছাড়া এই সব মাছগুলোর মাথা সাপের মতো দেখতে লাগে বলে ইংলিশে স্নেক বলে এটা নতুন জানলাম।যাইহোক রেসিপিটি খুবই সুন্দর হয়েছে।আচ্ছা দাদা,সজনে পাতা এমনি কেমন গন্ধ কিন্তু খাওয়ার সময় গন্ধ বা তেতো লাগে না!
আমি কখনো সজনে পাতা খায়নি।ধন্যবাদ দাদা।
সজিনা ডাঁটা খাওয়ার কথা শুনে সজিনা ডাঁটা খেতে ইচ্ছা করছে দাদা। অনেকদিন হয়ে গেল সজিনা ডাঁটা খাওয়া হয় না। আর আপনি এত সুন্দরভাবে শোল মাছ দিয়ে এই মজার রেসিপি তৈরি করেছেন দেখে খেতে ইচ্ছা করছে। শোল মাছ অনেকদিন হয়ে গেল খাওয়া হয় না। আলু, বেগুন ও সজিনা ডাঁটা দিয়ে শোল মাছের এই রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। মন চাচ্ছে এক প্লেট গরম ভাত নিয়ে বসে পরি এই মজার রেসিপি খাওয়ার জন্য। দুঃখ একটাই শুধু দেখতেই হবে খেতে পারব না। কবে যে আপনার মত করে রান্না করতে পারব এটা ভাবতে ভাবতেই দিন কেটে যাচ্ছে দাদা। তবে যাই বলুন না কেন দাদা আপনার শেয়ার করা রেসিপি গুলো আমার কাছে দারুন লাগে। যেগুলো দেখে দেখে আমিও এই রেসিপিগুলো শিখে নেই। লোভনীয় এই রেসিপি তৈরি করে সকলের মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো দাদা। ♥️♥️