বানীপুর লোক উৎসবে একদিন

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

কিছুদিন আগে একটা উৎসবের মেলায় গিয়েছিলাম। এই উৎসবটির নাম হলো বানীপুর লোক উৎসব। এই উৎসবটি অনেক বড়ো করে হয়ে থাকে আর বিশাল বড়ো মাঠ জুড়ে হয়ে থাকে। আপনারা আমার কয়েকটি ছবিতে ভালো করে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন মাঠটি কত বড়ো, আমি সঠিক বলতে পারবো না, তবে আনুমানিক ৪-৫ বিঘার উপরে হবে জায়গাটি। প্রায় ১ মাস যাবত এই উৎসবটি হয়ে থাকে। এটি এখানে হাবড়ার ঠিক মাঝামাঝি স্থানে হয়ে থাকে, কিছুটা আবার অশোকনগরের মধ্যেও পড়ে। আমার আসলে এটাতে যাওয়ারও তেমন একটা ইচ্ছা ছিল না, কারণ ধারে কাছে হলে তাও যাওয়া যায় যখন তখন কিন্তু দূরে হলে আজ যাবো, কাল যাবো এই করে আর ইচ্ছা করে না।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

আর আমি এই বছর যতগুলো উৎসব বা মেলা এটেন্ড করেছি সবগুলো একদম যেদিন শেষ হবে সেদিনই গিয়েছি। এই বানীপুর লোক উৎসব মেলাটাও গত ৫ তারিখ একদম শেষ দিন ছিল। আমার বোনের জন্যই যাওয়া হলো আর কি। ওইদিন বোন স্কুল থেকে এসে কথার থেকে শুনে এসে যাওয়ার জন্য একদম ধুম তুলে দিলো যে না গিয়ে আর হলো না। আর মেলাটা অশোকনগর থেকে অনেকটা ভিতরে কিছুটা গ্রাম্য জায়াগায় হয়েছে। বহু বছর ধরে এই মেলাটা সেখানে চলে আসছে, কিন্তু আমি জীবনে এই প্রথম গিয়েছি। প্রথম গিয়েছি কথাটা একটু হাস্যকর লাগছে শুনতে কিন্তু এটাই সত্যি, আমার আসলে তেমন ঘোরাঘুরি করতে ভালো লাগে না, এইজন্য তেমন কোথাও যাওয়া হয় না।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

এই উৎসবটি ৬৭ বছর ধরে চলে আসছে। অনেক কিছু আয়োজন করে এই উৎসবে যেটা গিয়ে বুঝেছিলাম। এ তো অনেক জায়গায় নিয়ে করেছে তাই এর এক ভাগে পুরোটা অংশ জুড়ে শুধু খাবারের দোকান অর্থাৎ ফাস্টফুড , ভাজাভুজি এইসব। আমিতো প্রথম গিয়ে কথা দিয়ে ঢুকবো সেটাই বুঝতে পারছিলাম না, কারণ পিছন দিক দিয়ে ঢুকেছিলাম আর পরে মেলার ভিতরে যাওয়ার পথ পাচ্ছিলাম না। পরে গার্ডদের কাছে শুনে আবার ঘুরে গিয়ে সামনের গেট দিয়ে ঢুকতে হলো। প্রচুর মানুষের ভিড়, আমি যেহেতু সন্ধ্যার মুহূর্তে গিয়েছিলাম তাই ভিড় একটু তুলনামূলক কম ছিল কিন্তু এখানে যত রাত হয় তত লোকজনের ভিড় বাড়ে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

এখানে আসলে কবি গান, নাটক, যাত্রা এইসব হয়ে থাকে রাতের দিকের থেকে। কিন্তু ইয়ং ব্যক্তিরা তো আর এইসব শুনবে না, সবাই যায় ঘোরাঘুরি করতে তাছাড়া কিছু না। অনেক বড়ো বড়ো নাগরদোলা এসেছিলো কয়েকটি, বোন উঠতে চাচ্ছিলো কিন্তু নাগরদোলায় আমার ভয় করে খুব, অতো উঁচুর থেকে ছাড়লে আমার আর মনে হয় না আমি আছি হা হা। তবে মেলায় বা উৎসবে একটা খাবার আমি শুধু দেখেই যাই কিন্তু আর খাওয়া হয় না আর সেটা হলো বাটার কুলফি। রাজস্থানি বাটার কুলফি দেখে ভাবলাম একটু খেয়ে দেখি কেমন লাগে, এ কিছুটা আইসক্রিম এর মতো লাগে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

যাইহোক কুলফি খাওয়ার পরে মেলার মধ্যে কিছুক্ষন ঘুরলাম আর এটা ওটা দেখলাম। অনেক কিছু উঠেছিল, দেখতেও বেশ ভালো লাগছিলো। এই মেলার আবার রোডের উল্টো পাশে আরো একটি মাঠ আছে সেখানেও বিভিন্ন ধরণের জিনিস উঠেছে। আসলে উঠিনি কি সেইটাই ভাবার বিষয়, ফ্রিজ, টেলিভিশন, জিম এর সরঞ্জাম সবকিছুই উঠেছে সেল করার জন্য। এখানে গ্রাম গঞ্জের থেকে অনেক মহিলারা এসেছে এবং তাদের নিজস্ব হাতের তৈরি বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করছে। জায়গায় বসে ঝুড়ি ইত্যাদি বিভিন্ন পদের জিনিস তৈরি করে বিক্রি করছে। এখানে আপনি যেরকমটা বানিয়ে দিতে বলবেন এরা ঠিক সেইভাবেই তৈরি করে দেবে কিন্তু দাম নেবে খুব। আসলে বেশি দাম নেওয়াটাও মানায়, কারণ হাতে দ্রুত তৈরি করে দেওয়াটাও কম পরিশ্রমের কাজ না।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

আমি কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে সেখানে তাদের হাতের কাজগুলো দেখছিলাম, কত দ্রুত একটা কাজ সম্পন্ন করতে পারে তারা না দেখলে বোঝা যাবে না। বিভিন্ন ক্যাটাগরির ল্যাম্পও উঠেছে, দেখতেও বেশ সুন্দর লাগে এইগুলো মেলার ভিতরে দেখতে। রাস্তার পাশ দিয়ে আবার প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রও বসিয়েছে, সেখানে বিভিন্ন ডাক্তাররা এসে বসে আছে রুগী দেখার জন্য বা আবার যদি কেউ মেলার ভিতরে অসুস্থ হয়ে পড়ে তার জন্য স্পেশাল ব্যবস্থা করা। এক সাইডে কিছু ডাক্তার এবং রুগীর কিছু মূর্তি তৈরি করেও রেখেছে। মানে একপ্রকার বলা যায় সবকিছুতেই একদম পারফেক্ট একটা উৎসব ছিল। এই বছর আমার দেখা সবথেকে বড়ো মেলা বা উৎসব এটাই ছিল। ঘন্টা দুইয়েক এর মতো ঘুরলাম এবং অনেক ভালো লেগেছিলো গিয়ে।


All photos location

শুভেচ্ছান্তে, @winkles

ক্যামেরাস্যামসুং গ্যালাক্সি M33 5G
লোকেশনঅশোকনগর
তারিখ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 last year 

বানীপুর লোক উৎসব এর ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো। অসাধারণ ফটোগ্রাফি করেছেন দাদা। সত্যিই একমাস ব্যাপী এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। আর এইখানে অনেক বড় জায়গা নিয়ে গঠিত। আপনি আনুমানিক ৪/৫ বিঘা বলেছেন, তবে ফটোগ্রাফি দেখে আমার আরও বড় মনে হয়েছে। এর চাইতে বড় হবে। সত্যি দাদা এত সুন্দর একটি উৎসবে এসে ফটোগ্রাফি করে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি আমার খুবই ভালো লেগেছে, আর ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে উৎসবটি অনেক জাঁকজমক ভাবে পালন করা হয়।

 last year 

বানীপুর মেলা বেশ দারুণ লেগেছে ৷ আসলেই মেলায় প্রয়োজনীয় প্রায় সব কিছু পাওয়া যায় ৷ মেলায় নেই বলে কিছু নেই ৷ বোনের সাথে ভালোই উপভোগ করেছেন মেলায় শেষের দিন গিয়ে ৷ ঘোরাঘুরি পাশাপাশি ফটোগ্রাফি গুলো দারুণ হয়েছে ৷ আমার আবার কিন্তু ঘোরাঘুরি করতে ভালোই লাগে ৷ যাই হোক এবারই প্রথম বানীপুর লোক উৎসবে গিয়েছেন এবং ভালো কিছু সময় অতিবাহিত করেছেন জেনে ভালো লাগলো ৷ ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য ৷

 last year 

দাদা ভাল আছেন, আশা নয় বিশ্বাস করি। আপনি বানীপুর লোক উৎসব মেলায় গিয়েছিলেন। বেশকিছু তথ্য আপনি শেয়ার করেছেন সাথে ফটোগ্রাফি ও। দারুন লেগেছে দাদা।এই মেলা ১ মাস ব্যাপী হয়ে থাকে। আর বিশাল মাঠ জুড়ে হয়। নানা ধরনের জিনিস এখানে দেখা গেল। আপনি কুলফি খেয়েছেন।৬৭ বছর ধরে এই উৎসব হয়ে আসছে।আপনি নাগরদোলা ভয় পান তাই বোনকে উঠতে দিলেন না। আর আমি এখনও উঠি আমার খুব ভাল লাগে। মেলায় বিভিন্ন ধরনের খাবার ও ছিল। আপনার ফটোগ্রাফিতে অনেক কিছু দেখতে পেলাম। অনেক ধন্যবাদ দাদা শেয়ার করার জন্য। অনেক অভিনন্দন আপনার জন্য।

 last year 

কি বলেন দাদা ৬৭ বছর ধরে মেলাটা চলে এসেছে আর আপনি কিনা এইবার প্রথম গেলেন। তাও আবার আপনার বোনের জন্য। মেলায় ঘোরাঘুরি করতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। আপনি তো দেখছি ঘোরাঘুরি করতে পছন্দ করেন না। তাছাড়া মেলাটা দেখছি বিশাল বড়। প্রায় বিভিন্ন ধরনের দোকান বসেছে। শেষের হাতের কাজগুলো অসাধারণ লেগেছে। নাগরদোলায় আমার নিজেরও ভীষণ ভয় লাগে। মনে হয় যে একদম রিস্ক আছে। সব মিলিয়ে দারুন একটা বিষয় শেয়ার করলেন।

 last year 

বানীপুর লোক উৎসবে একদিন ঘরতে গিয়ে দাদা আপনি চমৎকার মুহূর্ত কাটিয়েছেন। এমন জায়গা গুলোতে ঘুরতে গেলে ভীষণ ভালো লাগে। এই উৎসবটি ৬৭ বছর ধরে চলে আসছে জেনে ভালো লাগলো। চমৎকার চমৎকার ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। প্রাথমিক সাস্থ কেন্দ্র এর ফটোগ্রাফি দেখে অনেক বেশি ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে দাদা।

 last year 

এই উৎসবটি ৬৭ বছর ধরে চলছে অথচ আপনি এবার প্রথম গিয়েছেন জেনে সত্যি অবাক লাগছে দাদা। এত পুরনো একটি উৎসব যেহেতু তাইতো অনেক বড় আয়োজন করা হয়েছে। নাগরদোলা দেখলেই আমি অন্য দিক দিয়ে যাই। দেখলেই ভয় লাগে। উঠা তো দূরের কথা কখনো চিন্তাও করি না সেখানে উঠবো। আমার আবার এত সাহস নেই 🤪। হস্ত শিল্প গুলো দেখতে সত্যিই অনেক সুন্দর লাগে। আসলে এগুলো করতে অনেক সময় লাগে এবং পরিশ্রম হয়। তাই তো দামেও অনেক বেশি হয়। বোনের সাথে বানীপুর লোক উৎসবে গিয়েছেন এবং সেই মুহূর্তগুলো ফটোগ্রাফির মাধ্যমে তুলে ধরেছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।

 last year 

বোনের জোরাজুরিতে তাহলে এই লোক উৎসবে গিয়েছেন। আর যেহেতু শেষ দিন গিয়েছেন তাহলে তো বেশ ভিড়ের মধ্যেই পড়ে গিয়েছেন মনে হচ্ছে। তবে সর্বোপরি সবগুলো ফটোগ্রাফি দেখে মনে হচ্ছে উৎসবটা বেশ জাকজমকপূর্ণ ছিল। আর নাগরদোলার বিষয়টা আমার কাছেও একটু ভয় লাগে, কারণ উপর থেকে যখন নিচের দিকে নামে তখন বুক কেঁপে ওঠে। তাছাড়া হার্ট দূর্বল এমন ব্যক্তি নাগরদোলায় না ওঠাই সবচেয়ে ভালো। শেষের দিকে হাতের কাজ করা জিনিসপত্রগুলো ইনস্ট্যান্ট তৈরি করে দিচ্ছে এই জিনিসটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। কারণ বেশিরভাগ দেখা হয় এগুলো তৈরি করে নিয়ে আসে। কিন্তু যেভাবে বলা হবে সেভাবে বানিয়ে দেবে এ ব্যাপারটাই খুব ভালো লাগলো।

 last year 

দাদা নমস্কার আশা করি ভালো আছেন ৷
আপনি তো মেলায় ঘোরাঘুরি করার সাথে দারুন কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন ৷ আর সাথে বানীপুর লোক উৎসবের অনেক কিছু তুলে ধরেছেন ৷ ৪/৫ বিঘা জমির উপর মেলা তাহলে তো ইয়া বড় মেলা ৷ মেলার প্রতিটি আলোকচিত্র ছিল দারুন ৷ বিশেষ করে শেষ ছবি গুলো স্বাস্থ্য কেন্দ্র আর ল্যাম্প জালানো ৷ এছাড়াও আপনি মেলায় অনেক আনন্দ করেছেন ৷ তবে দাদা আমিও নাগর দোলায় চড়তে পারি না ৷ যা হোক আপনার পোষ্ট টি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ৷
অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা ৷

 last year 

বানিপুর লোক উৎসবে গিয়ে তো বেশ মজা করেছেন দেখছি দাদা। এত বড় উৎসব যেখানে আপনি একদম শেষের দিন গেলেন। আর আপনার ঘোরাঘুরি করতে তেমন ভালো লাগে না ব্যাপারটা শুনে একটু খারাপ লাগছে। কারণ ঘুরাঘুরি করলে মন এবং শরীর দুটোই তো ভালো থাকে। তাছাড়া আগে যখন মেলার ছবিগুলো দিয়েছিলেন সেগুলো দেখে তো অনেক বেশি উপভোগ করেছি। আর আপনারাই যদি ঘুরাঘুরি না করেন তাহলে আপনাদের দেয়া ছবিগুলো দেখতে পারব না উপভোগও করতে পারব না। কিন্তু আজকে এত বড় একটা উৎসব বা মেলার ফটোগ্রাফি গুলো দিয়েছেন দেখে অনেক ভালো লাগছে। ছোট বোনের জন্য হলেও তো গেলেন। সে জন্যই আমরা এত সুন্দর একটি উৎসব সম্পর্কে জানতে পারলাম। তবে সর্বোপরি আমার কাছে সবগুলোই খুব ভালো লেগেছে। শেষের দিকে ডাক্তার আর রোগীর মূর্তিগুলো কিন্তু বেশ আকর্ষণীয়।

 last year 

মেলায় ঘোরাঘুরির সুন্দর কিছু মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন দাদা তার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার কাছে বেতের বা বাঁশের এই ঝুড়িগুলো খুবই ভালো লাগছে দেখতে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 62907.89
ETH 3379.73
USDT 1.00
SBD 2.50