জেনারেল রাইটিং||অপ্রত্যাশিত কোন কিছু সত্যিই ভীষণ কষ্টদায়ক
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
অপ্রত্যাশিত কোন কিছু সত্যিই ভীষণ কষ্টদায়ক
বেশ কিছুদিন আগে থেকেই আমার ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল মূলত ডক্টরের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া ছিল। কিছু সমস্যার কারণে ডক্টর দেখাতে যেতে চেয়েছিলাম। কিছু সমস্যার কারণে এবার মেয়েকে নিয়ে আমি একাই ঢাকায় যেতে চেয়েছিলাম মেয়ের বাবা বাসায় ছিল না। যাই হোক যদিও এর আগে কোনদিন একা আমার ঢাকায় যাওয়া হয়ে ওঠেনি ।তাই এই বিষয়টা আমার আম্মাকে জানাতেই সে যেতে না করল। কারণ আমি এর আগে কখনোই একা ঢাকায় যাইনি ।সে কারণে আম্মা সাহস পাচ্ছিল না আমাকে একা ছাড়তে।কিন্তু আমি বলছি এবার আমাকে যেতেই হবে।
আমি যেহেতু একাই ঢাকায় যাবার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাই আম্মাও আমার সঙ্গে যেতে চাইল। আমার দুই বোন ঢাকায় থাকে তারপরেও আম্মা বাসা থেকে খুব একটা ঢাকায় যেতে চায় না। তার পরেও আমাকে একা ছাড়বে না সেই কারণে সেও যেতে চাইলো। আমার ভাই বাসায় একা রয়ে গেল। আসলে মায়ের মন তো যার কারণে সে আমাকে একা ছাড়তে চাইছে না। পৃথিবীতে সন্তানের প্রতি বাবা মা ছাড়া এরকম টান আর কারো আছে বলে আমার মনে হয় না ।যাইহোক যথাসময়েই আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
কোন রকম সমস্যা ছাড়াই আমরা ভালোভাবেই বোনের বাসায় পৌঁছে গেলাম। তারপর নির্ধারিত সময়ে আমি আমার ডক্টর কে দেখালাম ।তারপর আমরা দুজন মিলে চিন্তা করলাম আম্মা এবার ঢাকায় এসেছে ,অনেকদিন হয় আমার চেকআপ করা হয় না এক বছর হবে ।তাই আমরা বললাম আম্মাকেও চেকআপ করিয়ে নিয়ে যাই ।এই চিন্তা থেকেই আম্মাকে ডক্টরের কাছে নিয়ে যেতে চাইলাম। কিন্তু আম্মা কিছুতেই যেতে রাজি নয়। তার কোন সমস্যা নেই বলছে যার কারণে সে যেতে চাইছে না ।তার পরেও আমরা বাধ্য করলাম নিয়ে যেতে।
ডক্টর আম্মাকে বিভিন্ন ধরনের টেস্ট করতে দিলেন ।মোটামুটি সব রকমের টেস্ট করা হলো। আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল রিপোর্ট দেখিয়ে পরের দিন আমরা ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিব ।কিন্তু যখন রিপোর্ট দেখাতে গেলাম তখন যেন আমাদের সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল। রিপোর্ট খুব একটা ভালো এলো না ।আমার শরীরে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা গেল। তার প্রেশার অনেক বেশি,কোলেস্টরলের সমস্যা, ভিটামিন ডি একেবারেই কম, থাইরয়েডের সমস্যা মারাত্মক, এছাড়াও পিত্তথলিতে বেশ কয়েকটি পাথর হয়েছে। এ কথা শুনে আমরা দুজন যেন আকাশ থেকে পড়লাম ।ডঃ আমাদের দুজনের মুখের অবস্থা দেখে আমাদের সান্ত্বনা দিতে লাগলেন। আর বললেন এটা তেমন কোনো অপারেশন নয়।
তারপর তিনি অন্য ডাক্তারের কাছে রেফার করলেন ।তারপর আমাদের আর পরদিন ফরিদপুর আসা হলো না। অন্য ডাক্তার কে দেখানো হলো। তিনি বেশ কিছু সমস্যা থাকার কারণে এখন অপারেশন করতে চাইলেন না ।কিছু দিন পর আবার যেতে বলেছেন ।তখন আবার সকল টেস্টের রিপোর্ট ভালো আসলে হয়তো তখন অপারেশন করবেন। যাই হোক বেশ নিশ্চিন্তে আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম ।কিন্তু ফরিদপুরে এলাম ভারাক্রান্ত মন নিয়ে। মায়ের মনটাও দেখলাম বেশ খারাপ ,একটু চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন। আমরা যেটা চিন্তা করি সেটা হয় না ।গিয়েছিলাম আমার সমস্যা দেখাতে, হয়ে গেল আম্মার সমস্যা। সুস্থ ভাবে গেলেন আর অনেকগুলো রোগের ধারণা নিয়ে বাড়িতে ফিরলেন। আমরা চিন্তা করি এক, হয় আর এক। এটাই জীবন ।এটাই মেনে নিতে হবে। যাই হোক আল্লাহ যেন সবকিছু ভালো করেন এই প্রত্যাশাই করছি।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা আফরোজ সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপু আপনার আম্মাকে যদি ডাক্তার দেখানো না হতো তাহলে তো এই অসুস্থতার কথা জানতেই পারতেন না। আপনার আম্মার অসুস্থতার খবর শুনে খুবই খারাপ লাগছে। তিনি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে যান এই দোয়াই করছি আপু।
মাঝে মধ্যে ডাক্তার দেখিয়ে টেস্ট করানো ভালো। ভাগ্যিস আন্টিকে জোর করে ডাক্তার দেখিয়েছিলেন। তাহলে তো সমস্যাগুলো ধরা পড়ত না। হয়তো এগুলো বিরাট আকারে ধারণ করতো এক সময়। দোয়া করি আপনার আম্মুর জন্য যাতে সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যায় দ্রুত।
একদিক দিয়ে অবশ্য ভালো হয়েছে এখন ঢাকায় না আসলে তো এই চেকআপ গুলো করানো হতো না। সমস্যা আরো বড় হয়ে যেত। আম্মাতো সহজে ডাক্তারের কাছে যেতে চায় না। এজন্য আসলে মানুষের রেগুলার চেকআপে থাকতে হয়। খবরটা শোনার পরে কি রকম লেগেছে বলে বোঝাতে পারবো না। অপারেশন না করা পর্যন্ত টেনশন যাবে না।
আপু আপনার মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে সত্যি অনেক খারাপ লাগছে। হয়তো ফরিদপুরে থাকলে তিনি ডাক্তারই দেখাতেন না। সমস্যাগুলো ভেতরে ভেতরে অনেক বেড়ে যেত। ঢাকায় যাওয়ার পর ডাক্তার দেখিয়ে বেশ ভালো হয়েছে আপু। এখন অন্তত দ্রুতই পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।
হঠাৎ এমন অসুস্থতার খবর পেলে সত্যি মনটা একেবারে ভেঙে যায়। এমন অবস্থায় মানসিক অবস্থা খুব একটা ভালো থাকে না। ব্যাপার টা বেশ খারাপ লাগল শুনে। আশাকরি দ্রুতই এর সমাধান হয়ে যাবে। আপনার জন্য শুভকামনা আপু।