গল্প|| অসম ভালোবাসা
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
গল্প|| অসম ভালোবাসা
মফস্বল শহরের একটি গল্প নিয়ে আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। যেখানে মধ্যবিত্ত পরিবারের একটি ছেলে যার নাম আবির। আবির লেখাপড়ায় মোটামুটি ছিল। সে যখন ছোট ছিল তখন তার বাবা মারা যায় ।তার বড় দুই বোন রয়েছে ।বোনদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে ।তাদের মোটামুটি সংসার ছিল। সে কোন রকম টেনেটুনে বি এ পাশ করেছিল ।পড়ালেখায় খুব একটা ভালো ছিল না ।যাইহোক সংসারে ছিল আবির আর তার মা। এভাবেই তাদের সংসার চলছিল।
আবিরদের বাসার সামনেই তার মামার বাসা। তার মামা মোটামুটি বেশ ধনী লোক ছিলেন ।চার তলা বাড়ির মালিক ।তার বাড়িতে একটি কাজের মেয়ে ছিল। সেই মেয়েটার সঙ্গে আবিরের মাঝেমধ্যে দেখা হতো। মেয়েটা যখন নিচে আসতো তখন আবিরের সঙ্গে তার দেখা হতো কথা হতো। এভাবে ধীরে ধীরে আবিরের মেয়েটার প্রতি দুর্বলতা কাজ করতে শুরু করলো। বিষয়টি কেউই জানতো না ।এভাবে সময় যেতে যেতে একটা পর্যায়ে আবির মেয়েটিকে ভালবেসে ফেলেছিল পরিবারের কারো কথা চিন্তা না করেই।
একদিন হঠাৎ আবিরের মা বিষয়টি জানতে পারে। সে তার ভাইয়ের কাছে কথাটা বলে। সবাই মিলে বেশ রাগারাগি করে এবং ভীষণ রেগে যায়। আবিরের মামা মান সম্মান রক্ষার খাতিরে কাজের মেয়েটিকে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়। যাতে আবিরের সঙ্গে মেয়েটির সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। কিন্তু আবিরের ভালোবাসা ছিল সত্যি। যার কারণে সে লুকিয়ে লুকিয়ে মেয়েটার বাড়িতে চলে যায় এবং সেখান থেকে তার সঙ্গে দেখা করে ।একটা পর্যায়ে গোপনে তাকে বিয়েও করে।ভালোবাসা ধনী -, জাত- পাত মানে না।
এদিকে আবিরের ঘটনা জানার পর তার মামা বাড়ির লোকজন তো ভীষণ রেগে যায় ।তাদের বাসার কাজের মেয়ে ভাগ্নের বউ এটা তারা কিছুতেই মানতে পারে না ।এদিকে আবিরের মা ও রেগে আগুন ।সে আবিরকে বলে দেয় ওই মেয়েকে কিছুতেই সে বাড়িতে ওঠাবে না। আবিরের বোন রাও আবিরের উপর ভীষণ রাগ করে ।তারাও কিছুতেই একটা কাজের মেয়েকে ভাইয়ের বউ হিসেবে মেনে নেবে না ।এভাবেই সময় যেতে থাকে ।আবির মেয়েটিকে বাড়িতে আনতে পারেনা ।এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে যায়।
আবির বিভিন্ন কাজের চেষ্টা করে কিন্তু সে কিছুই করে উঠতে পারে না ।যার কারণে সে মেয়েটিকে নিয়ে অন্য কোথাও যেতে পারে না ।মেয়ে টিও আবিরের পথ চেয়ে তার নিজের বাড়িতেই থেকে যায়। এভাবে সময় যেতে থাকে ।তারপরেও তাদের ভালোবাসা টিকে থাকে ।একদিন হঠাৎ আবিরের মা স্ট্রোক করে ।তাকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সে প্যারালাইজড হয়ে যায় ।তখন হয় অন্যরকম এক সমস্যা। যেহেতু মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে, বাড়িতে শুধু আবির একা থাকে তাই সবাই বেশ চিন্তায় পরে যায়।
(চলবে)
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা আফরোজ সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
কথায় আছে ভালোবাসা কখনো ধনী-গরীব মানে না। হতে পারে আবিরের মামার বাসার কাজের মেয়ে, কিন্তু আবির সত্যি তাকে ভালোবেসে ফেলেছে। সামান্য কিছুদিনের দুনিয়ায় কেন এত মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ চিন্তা কিসের এত মান সম্মান। যদি তারা দুজন আমি বিয়ে করে সুখী হয় এতেই মনের সুখ মেনে নিতে হবে। ভালো কোন স্থানে আবিরের বিয়ে হলে যে সুখী হবে এর তো কোন গ্যারান্টি নেই।
হ্যাঁ আপু আপনি ঠিকই বলেছেন ভালোবাসা ধনী-গরীব মানেনা ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
ছেলে যদি এরকম কাজ করে তাহলে তো পরিবারের সবার রাগ হওয়ারই কথা। ভালোবাসা তো ধনী-গরীব মানে না। কিন্তু আবির এখন কি করবে। তার মা যে অসুস্থ হয়ে গেল। এই সুযোগে তার বউকে বাড়িতে নিয়ে আসতে পারবে কিনা জানার অপেক্ষায় রইলাম। বেশ ভালো লাগলো আপু গল্পটি। পড়ে ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
আপু গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে বেশ ভালো লাগলো ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
অনেক সুন্দর একটা গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। এই গল্পের প্রথম পর্বটা আমার অনেক ভালো লেগেছে। আসলে ভালোবাসা কোনো কিছুই মানে না। ভালোবাসা হয় মনের গভীর থেকে। ধনী গরিব বা জাতপাত দেখে হয় না। কেউই ওই মেয়েটাকে আবিরের বউ হিসেবে মেনে নেয় নি দেখছি। এখনতো আবিরের মা অনেক অসুস্থ দেখা যাক তারা কি করে।
হ্যাঁ আপু আপনার মত আমিও একমত ভালোবাসা হয় মনের গভীর থেকে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আসলে ভালোবাসা কোনো কিছু মানে না। কখন কার কিভাবে কার সাথে ভালোবাসা হয়ে যায় এটা আমরা কখনো বুঝতে পারি না। আর ঠিক এরকমটা আবির এবং তার মামার বাসার সেই কাজের মেয়ের সাথে হয়েছে। আবির তো সেই মেয়েটাকে মন থেকেই ভালোবেসে ছিল। তাই কোনো কিছু না দেখে পরবর্তীতে সে তাকে বিয়ে করেছে। কিন্তু কেউ মেনে নেয়নি এখনো পর্যন্ত। তার মা প্যারালাইজড হয়ে যাওয়ার পর কি হবে এটা জানতে চাই। আশা করছি তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন পরবর্তী পর্ব।
হ্যাঁ ভাইয়া খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্ব শেয়ার করবো। আশা করছি পড়বেন। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আসলে ভালোবাসা কখন কিভাবে হৃদয়ের মাঝে চলে আসে। ভালোবাসা কখনো বয়স এবং সীমানা মানে না । আপনার গল্প পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ ভাইয়া ভালোবাসা কখনো ধনী-গরীব মানে না ।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আসলে কার সাথে কখন ভালোবাসা হয়ে যায় সেটা বলা যায় না। তাছাড়া কাজের মেয়ে তো মানুষ। গরীব বলে কি তাকে কেউ বিয়ে করবে না নাকি। আবির উচিত কাজ করেছে গোপনে মেয়েটিকে বিয়ে করে। যাইহোক আবিরের মা যেহেতু স্ট্রোক করে প্যারালাইজড হয়ে গিয়েছে, তাহলে মনে হচ্ছে আবির তার বউকে এখন বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবে। কারণ এখন তো তার মায়ের সেবা যত্ন করার এবং সংসারের কাজকর্ম করার লোকও লাগবে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।
হ্যাঁ ভাইয়া গরিবরাও মানুষ ।তবে সমাজ ব্যবস্থা এটা মেনে নিতে চায় না। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।