(ডার্ক থ্রিলার ) ব্লাডি নেমেসিস | লাবন্য এবং... - চতুর্থ পর্ব ( 10% For @shy-fox )

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

4.png

image source


ব্লাডি নেমেসিস - চতুর্থ পর্ব

তৃতীয় পর্বের লিঙ্ক source

*************


(আগের পর্বের পর)
...রাগে হিংসায় অপমানে ফেটে পরছে যেন সে.. দাঁতে দাঁত চেপে এক বিশ্রী বাঁকা হাসি মুখে এনে সে বলল, "আরে দাড়া দাড়া..... যেতে তো দেবোই। সবাইকেই যেতে হয় একদিন এই পৃথিবী ছেড়ে...তুই না হয় আগেই যাবি। একদম চিন্তা করিস না লাবণ্য, আমি নিজের হাতে তোকে পাঠাবো। কিন্তু যাওয়ার আগে সুদে আসলে আমার হিসেবটা মিলিয়ে দিয়ে যা",

অনিন্দ্য ক্ষুধার্ত মাংস লোলুপ নেকড়ের মত এক লাফে ঝাঁপিয়ে পরে লাবণ্যর ওপর। পৈশাচিক উন্মাদনায় অন্ধ হয়ে যায় যেন সে...উন্মাদের মত টেনে ছিঁড়ে ফেলে লাবণ্যর সালোয়ার কামিজ। নৃশংস ভাবে মেঝেতে ফেলে ধর্ষন করতে থাকে তাকে। লাবণ্য অনেক আটকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। কারন অনিন্দ্য কে বাঁধা দিলে.. অশ্রাব্য গালাগাল করে সে। এলোপাথাড়ি মুখে চড় থাপ্পড় মারে, ক্রমাগত আঘাত পাবার ফলে ক্রমশ সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলে সে।

প্রবল আক্রোশে ও উন্মাদনায় ভোগ করতে থাকে লাবণ্যকে। ক্রমাগত আঁচড়ে কামড়ে রক্তাক্ত করে দেয় তার দেহ। সীমাহীন নৃশংসতা অধিকার করে অনিন্দ্যর মন ও মস্তিষ্ক। পৈশাচিক উন্মাদনায় ক্ষুধার্ত নেকড়ের মত ছিঁড়ে খেতে থাকে তাকে। প্রায় কয়েক ঘন্টা ধরে চলা এই নারকীয় অত্যাচার শেষে থামে, অনিন্দ্য। তৃপ্ত মুখে উঠে দাঁড়ায় সে।

মেঝেতে রক্তাক্ত বিদ্ধস্ত যন্ত্রণা কাতর অবস্থায় পরে আছে লাবণ্য। তার উন্মুক্ত বিদ্ধস্ত যোনীদ্বার দিয়ে চুইয়ে পরা রক্ত ও বীর্যের মিশ্রণকে পা দিয়ে গড়িয়ে পরতে দেখে, বিশ্রী তাচ্ছিল্যের হাসি হাসে। তবে কাজ এখনো শেষ হয়নি। তার দেহ তৃপ্ত হলেও মনের রাগ মেটেনি। চুলের মুঠি ধরে টেনে হিঁচড়ে তোলে লাবণ্যকে। ঘাড় ধরে, সজোরে তার মাথা ঠুঁকতে থাকে ইটের দেওয়ালে দেওয়ালে। মাথা ফেটে কাঁচা রক্ত গড়াতে থাকে। ক্রমশ অর্ধমৃত লাবণ্য নিশ্চিত মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। লুটিয়ে পরে মাটিতে। এবার এতক্ষণে প্রকৃতস্থ হয় অনিন্দ্য।

সম্বিৎ ফেরে তার, সে উপলব্ধি করে যে সে সত্যি সত্যিই খুন করে ফেলেছে। এবার কি হবে? কি করবে সে? আজ না হোক কাল জানাজানি তো হবেই। আর জানাজানি হলে...? নাহঃ.. না... না.... না..না...না... জানাজানি হলে সে পুলিশের হাতে ধরা পরবে, তার জীবন, সম্পুর্ণ কেরিয়ার ছাড়খার হয়ে যাবে.... সে এটা কিছুতেই হতে দিতে পারে না। " না না না কিছু একটা ভাবতে হবে। ভাবতেই হবে।. যাতে জানাজানি হলেও আমার টিকির নাগাল কেউ না পায়" - স্বগতোক্তি করে অনিন্দ্য। লাবণ্যর নগ্ন রক্তাক্ত ক্ষত বিক্ষত দেহটার দিকে।


লাবণ্যর দেহ আর সেই এলাকার আশে পাশে অনিন্দ্যর উপস্থিতি প্রমাণ করে, এমন সকল দৃশ্যমান জিনিস গুলিকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়ার পর দ্রুত সেই স্থান ত্যাগ। পুলিশি তদন্ত শুরু হয় বটে, কিন্তু লাবন্যর ফ্যমিলি কোন এক অজ্ঞাত কারনে কেস উইথড্র করে যথারীতি ফাইল ক্লোজ হয়।

লাবণ্যর মৃত্যুর দিন তিনেক পর, একদিন রাতে অনিন্দ্য খাওয়া দাওয়া সেড়ে দোতালায় নিজের ঘরে শুতে যায়। তবে খাওয়ার পর একটা সিগারেট না খেলে তার ঠিক হয় না। তাই তৎক্ষনাৎ দরজা বন্ধ করে বিছানার তলা থেকে সিগারেটের প্যাকেট টা বের করে সে। দক্ষিনের বাগানের দিকের জানলা খুলে তার সামনে দাড়ায়। সিগারেট টা মুখে দিয়ে দেশলাই ধরাতেই বিশ্রী ধোঁওয়াটা নাকে লাগে তার, কোনরকমে সিগারেট টা ধরিয়ে, সুখটান দিতেই কোথাকার একরাশ চামড়া পোড়া দুর্গন্ধী বিষাক্ত কালো ধোঁওয়া মুখে উঠে আসে তার। ভয়ঙ্কর ভাবে কাশতে থাকে সে, মাথা ঘুরে যায় তার। তৎক্ষনাৎ সিগারেট টা মাটিতে ফেলে পা দিয়ে নিভিয়ে দেয় অনিন্দ্য। বিকট পুতিগন্ধময় ধোঁওয়া, মুখে টানার ফলে জীভ ঠেলে বমি আসে তার। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বাতাস থেকে চামড়া পোড়া গন্ধ মিলিয়ে গেলনা। বরং ক্রমশ সেই বিকট মাংস-চামড়া পোড়া গন্ধে ঘরের বাতাস ভরে উঠতে থাকে। গন্ধটা পরিস্কার চিনতে পারে অনিন্দ্য। লাবণ্য! হ্যাঁ লাবণ্যর লাশটা পোড়ানোর সময় এই গন্ধ পেয়েছিল সে, তাহলে...? তার মানে !!!!

বুকের ভেতরটা ছ্যাৎ করে ওঠে অনিন্দ্যর, শিড়দাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা হিমেল স্রোত বয়ে যায় তার। হঠাৎ সব কিছু তোল পাড় করে দমকা হাওয়া ওঠে বাইরে। আচমকা সেই হাওয়া, জানলা ঠেলে, তাকে ধাক্কা দিয়ে মেঝেতে ফেলে, ঘরে ঢোকে... কানের কাছে ক্রমাগত, লাবণ্যর সেই দিনকার অস্বাভাবিক বিভৎস চিতকার আর গোঁঙানির আওয়াজ শুনতে পায়, আবার পরক্ষণেই সেই গোঁঙানি, বীভৎস হাসির রুপ নিয়ে তাকে যেন গ্রাস করতে ধেয়ে আসে। অনিন্দ্য মাটিতে লুটিয়ে পরে জ্ঞান হারায়।
সেই শুরু। তারপর থেকে মাঝে মাঝেই, লাবন্যর অতৃপ্ত বিদেহী প্রেতাত্মা, এক ভয়াবহ অভিশাপ রুপে প্রতিনিয়ত অনিন্দ্যকে তার কৃতকর্মের স্মরণ করিয়ে দেয়। আর তার সাথে প্রতিবার একটু একটু করে দিয়ে যায় চুড়ান্ত অনুশোচনার এক অনুভব। লাবন্যর সেই অদৃশ্য প্রেতের, প্রতিটা আর্ত চিৎকার, গোঙ্গানি, কান্না, বীভৎস সেই হাসির শব্দ শুনতে শুনতে, সেই বিষাক্ত প্রেতযোনী র কষ্টও যেন নিজের দেহে অনুভব করে অনিন্দ্য।

আবার সম্বিৎ ফেরে অনিন্দ্যর। কিছুটা প্রকৃতস্থ হয় আজকের মত দুঃস্বপ্ন শেষ হয়েছে।লাবণ্য আজকের মত চলে গেছে। টেবিল থেকে জলের গ্লাস টা তুলে নিয়ে ঢক ঢক করে জল খায়। চোখ বন্ধ করে হাঁপাতে থাকে। সে বুঝতে পারে না, যে কবে সে লাবণ্য অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে! এই এত দিন ধরে সে এই একই ঘটনার সন্মুখীন, কিন্তু এখনো প্রতিবার সেই প্রথম দিনের মতই প্রচন্ড ভয়, কষ্টে,আতঙ্কে জঘন্য রকম বিপর্যস্ত হয়। নিষ্ঠুর নিয়তি তার নির্ভুল বিচারে, অতীতে করা অনিন্দ্যর জঘন্য অপরাধের দন্ড হিসেবে এভাবেই তিলে তিলে তাকে শেষ করছে যেন। সে কাউকে কিচ্ছু বলতে পারেনা, কিচ্ছু বোঝাতেও পারে না। কেন পারেনা সে নিজেও জানে না। কিন্তি এই সম্বন্ধে কিছু বলতে গেলেই, তার জিভ যেন কেউ ভেতর থেকে টেনে ধরে। সে জানে না, আর কতদিন বাকি, কবে শেষ হবে এই বীভৎস প্রায়শ্চিত্তের প্রক্রিয়া। দীর্ঘশ্বাস ফেলে অনিন্দ্য আবার ট্যাবটা নিয়ে, অর্ধসমাপ্ত আর্টিকেল টা আবার খুলে বসে।
( ক্রমশ )

moon-gb5e111fff_1920.jpg
image source

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58484.86
ETH 3100.06
USDT 1.00
SBD 2.40