ক্রিয়েটিভ রাইটিং :- সর্বদা সত্য মানুষকে মুক্তি দেয়।

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আলোচনা করবো একটি গল্প , আর এই গল্পের নাম সর্বদা সত্য মানুষকে মুক্তি দেয়। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...


Source

সৃষ্টি লগ্ন থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত বহু মানুষের যাওয়া-আসা। পৃথিবীতে কোন মানুষ চিরজীবন স্থায়ী নয়। আর এই অস্থায়ী জীবনে মানুষ যখন যা পারে তখন তাই করে যাচ্ছে। কেউ ভালো কাজে লিপ্ত, কেউ খারাপ কাজে লিপ্ত। কোন মানুষই কিন্তু কোন ভাবে বা কোন অবস্থাতে বসে নেই। পৃথিবীতে মানুষের বাঁচার জন্য তার প্রাপ্তির শেষ নেই। প্রাপ্তির সাথে সাথে মানুষের চাওয়া পাওয়া বেঁচে থাকে। আশা আছে বলে মানুষ এখন পর্যন্ত এত কিছু করে থাকে। মানুষের চাহিদা অনুযায়ী মানুষ কাজ করে থাকে। আবার অনেকেই আছে নিজের চাহিদা না থাকলেও তারা কাজ করে। মানুষের জীবন বিভিন্ন ধরনের। এক এক মানুষের জীবন গঠন এক এক মানুষের ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। পৃথিবীতে অনেক কিছু পাওয়ার আশা করা সত্ত্বেও অনেক কিছু মানুষ পায় না। আর এত কিছু পাওয়ার পেছনে মানুষের কিছু কথা থাকে। এসব কথার মধ্যে কখনো মানুষ সত্য কথা বলে আবার কখনো মানুষ মিথ্যা কথা বলে। মিথ্যা এবং সত্যের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ব্যবধান রয়েছে। সত্য মানুষকে মুক্তি দেয়ার মিথ্যা মানুষকে ধ্বংস করে।


মানুষে জীবনের তাগিতে অনেক কিছু করে। পৃথিবীতে যত মানুষ আছে তাদের পেশাও কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন ধরনের। আর প্রতিটা পেশার পেছনে রয়েছে জীবিকা নির্বাহ করা। জীবিকা নির্বাহ করার জন্য মানুষ কত না কিছু করে যাচ্ছে। সমাজের মানুষ থেমে থাকে না তেমন মানুষের পেটও বেঁধে রাখা যায় না। তাই মানুষের প্রতিনিয়ত কর্ম করতে বাধ্য হয়। এই কর্মের মধ্যে কেউ সৎ পথে কেউ আবার অবৈধ পথে। কেউ সত্য দিয়ে আবার কেউ মিথ্যা দিয়ে অর্থ উপার্জন করে থাকে। আরিফ সাহেবের সবচেয়ে বিশ্বস্ত কর্মচারী হল রতন আলী। যেহেতু আরিফ সাহেব একজন বড় ব্যবসায়ী। সারাদিন কাজে কামে তারে বাইরে থাকতে হয়। আর তাই তার বাড়ির এই বিশাল দায়িত্ব পড়ে রতন আলির উপর। রতন আলী সবসময় নিষ্ঠার সাথে কাজকর্ম করে থাকে। এভাবে তার বাড়িতে প্রায় ১০ বছর ধরে রতন আলী রয়েছে। কোনদিন তার কাছ থেকে কখনো আরিফ সাহেব প্রতারিত বা কোন কাজ থেকে সে এমন কিছু পায়নি যে রতনের অবিশ্বাস করবে। তাই যথারীতি তাকে খুবই বিশ্বাস করে থাকেন আরিফ সাহেব।


আরিফ সাহেব যেহেতু দেশের বাইরে থাকেন। আর তার পরিবার দেশেই থাকেন। এই পরিবারে বেশ কয়েকজন মানুষ বসবাস করে একত্রে। এর মধ্যে আরিফ সাহেবের কুটুম হানিফ সে তার দুলাভাইয়ের বাসায় থাকে। বুঝতে পারছেন দুলাভাইয়ের বাড়িতে থাকা মানে বোনের তো একটু বেশি ভালোবাসা আদর পেয়ে থাকে। যেহেতু তার এখানে কোন কাজ করতে হয় না, সে তো তার একটু মাখামাখি টা বেশি। আরিফ সাহেব তাকে বিশ্বাস করে না। সে বাড়িতে শুধু খায় আর বোনের জামাই টাকা নষ্ট করে। কিন্তু রতন তার নিষ্ঠার সাথে কাজ করে। অনেক কিছু কাজ হানিফকে না বলে রতনকে দিয়েই কাজ করে থাকে। আর এই বিষয়টি হানিফ কখনোই মেনে নিতে পারে না। আর আরিফ সাহেব তাকে দিয়ে কাজ করবে কিভাবে একবার তাকে কিছু টাকা দিয়ে একটা কাজ করার কথা বলেছিল সে টাকা গুলো নিজের কাজে ব্যয় করেছিল। আর সেই থেকে তাকে সে বিশ্বাস করেন এবং তার হাত দিয়ে কোন কাজও করতে চায় না আরিফ সাহেব। হানিফ এই বিষয়টি কখনো মেনে নিতে পারে না সে সব সময় রতনের ক্ষতি করতে চায়।


চলতি মাসের একটা সময় শেষের দিকে তিন দিনের জন্য আরিফ সাহেব দেশের বাইরে যান। তার বাইরে যাওয়ার এই মুখ্য সময়টা হানিফ কাজে লাগাই। একটা সোনার গহনা তার দুলাভাই তার বোনের জন্য নিয়ে এসেছিল। আর সেটা কোথায় রেখেছিল একমাত্র তার বোন এবং হানিফ জানে। সেটা সে চুরি করেছিল। এটা চুরি করে সে নিজের ঘরে রেখে দিয়েছিল। এরপরে সে মনে মনে ভাবছিল এভাবে তো রতনকে বাড়ি থেকে বের করা যাবে না। তাই সে সেটা নিয়ে রতনে ঘরে রেখে দিয়েছিল। আর এই বিষয়টি লক্ষ্য করেছিল হানিফ সাহেবের একটা ছোট মেয়ে। যে মেয়েটাকে রতন আলী খুবই ভালোবাসে। তিনদিন পরে যখন হানিফ বাড়িতে ফিরে আসলো তখন তার স্ত্রী তাকে বলল যে, আমার সোনার হার হারিয়ে গেছে। এই নিয়ে বাড়িতে বেশ তোলপাড়। তখন হানিফ বলল আমাদের বাড়িতে নেয়ার মতো রতনকে ছাড়া তো আমি কাউকে দেখি না। এ কথা শুনে হানিফ রেগে গেল। বললে রতন কখন এমন কাজ করতে পারে না। বাড়িতে সবারই মন খারাপ। একটা জিনিস হারিয়ে গেছে সেটা বড় কথা নয় কিন্তু বাড়ির ভেতরে যদি কোন ব্যক্তি সেটা নিয়ে থাকে সেটা হচ্ছে বড় ব্যাপার। এই নিয়ে বেশ কয়েকদিন চলে গেল কিন্তু এর কোন সমাধান হলো না।


হানিফ সাহেবের ছোট মেয়ে একদিন বলল আব্বু আমি যা বলব তাই করবেন? হানিফ সাহেবের কথা শুনে একটু অবাক হল বলে কি বলবা বলো আব্বু? তখন সে বললো প্রত্যেকজনের রুম সার্চ করতে হবে। এই কথা শোনা মাত্র হানিফ খুব উত্তেজিত বোধ করলো। সে ছোট মেয়ের সাথে বললো হা ছোট ভালো কথা বলেছে। আপনি সবার রুম সার্চ করেন তাহলে বুঝতে পারা যাবে কে এটা নিয়েছে। হানিফ বলে রতন ছাড়া এমন কাজ কেউ করতে পারে না। এরপরে আরিফ সাহেব সবার রুম সার্চ করতে একটা সময় যখন রতনের রুম সার্চ করে তখন হানিফ তো খুবই খুশি। এবার তো সে যেটা দেখেছে সেটা পেয়ে যাবে। কিন্তু তার রুম সমস্ত রুম সার্চ করে পড়ে সে পেল না, এটা হানিফকে হতাশা করল। এবার ছোট মেয়ে বলল সবার রুমতো সার্চ করলেন এবার ছোট মামার রুমটা সার্চ করুন। এরপরে তার রুম সার্চ করতে গিয়ে সেই সোনার হারটি পেয়ে গেল। এটা দেখে তো হানিফের চোখ কপালে উঠে গেল। সে ভাবতে লাগলো কিভাবে সম্ভব। সে কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিল না কিন্তু কিছু তো করার নাই সেটা তো তার ঘরেই পেয়েছে।


এরপরে আরিফ সাহেব হানিফকে বল এখন কি তোমার কিছু বলার আছে। তখন ছোট মেয়েটা বলল কারো কিছু বলা না থাকলে আমার কিছু বলার আছে। ছোট মেয়েটার সমস্ত ঘটনা খুলে বলল। এরপরে আরিফ সাহেব অনেকটা রেগে গেল তার শালা হানিফকে বাড়ি থেকে বের করে দিল। কোন মানুষ যদি সততা এবং সত্য বুকে নিয়ে চলে তাহলে অবশ্যই যে কোন বিপদ থেকে সৃষ্টিকর্তাকে বাঁচিয়ে দেয়। এখান থেকে আমরা একটা শিক্ষা নিতে পারি আমাদের জীবনে চলার পথে যদি আমরা সব সময় সৎপথে এবং সত্য নিয়ে চলি তাহলে অবশ্যই আমরা সফল হবে। আর কোন মিথ্যা প্রতারণা আমাদেরকে কখনোই কোনভাবেই ক্ষতি করতে পারবে না। তাই কথাই বলে সত্য মানুষকে সবসময় মুক্তি দান করে।
ভূল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।

আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

ডিভাইস poco M2
লোকেশন মেহেরপুর

👨‍🦰আমার নিজের পরিচয়👨‍🦰


1666192548913_1666192548801_1666192548599_1666192548416_1666192548270_1666192548091_1666192547839_1666192547665_1666192022150.jpg

আমি আবুল বাশার খাইরুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।


Logo.png

(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )


4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzLdXDsNijBKWNGJn5ogmozSiA7cyReMsKwomyC79dv8nHgZj3RKbXhPtULzHviAUBY9Vc8ousmvcnNywqK...hMHPzmtXdqcE25kuBukgtAciNVXSHonSRqmAmfHf9YgyuYwwZo1Nd9dUCogeVvSsKh3MRCxw1Khi2NyeZh4Rt4J9n7wTsZvJ1tiUMafwrMjZ5AQz2ERchsjjJv.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPxFqYAEtmnwbJrshP4Tdaov4BmxkXJqLhx2USjht6Vy2soth7e34k1TKBQ2RZ2vXNJBF8X9uKH9aLNKFV...xU6W1ggWaLoBhkXz82k34bfNqfnFypapZe2oHzEHELJzLj6msr2RorLQSivfSXJaPiBZmUdQYzewFKsaGxDCyC6yRhEDYu8mNwzeEnkjmmjmpLrQEyQZKZnCTp.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 6 months ago 

কথায় আছে সত্যের মৃত্যু নেই। সত্যের জয় অবশ্যই হয়,হয়তো অনেক সময় দেরীতে হয়। যাইহোক রতন আলী আরিফ সাহেবের অনুপস্থিতিতে ও সবসময় আরিফ সাহেবের বিশ্বাস রক্ষা করেছেন। আসলে আরিফ সাহেবের ভাগ্য খুব ভালো যে,রতন আলীর মতো এমন বিশ্বস্ত কর্মচারী পেয়েছেন। যে কিনা বিশ্বস্ততার সঙ্গে প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করে থাকে। যাইহোক আরিফ সাহেবের শ্যালক হানিফ, সোনার হার নিজেই রতন আলীর রুমে চুরি করে রেখেছিলেন, রতন আলীকে চোর সাজাতে। কিন্তু আরিফ সাহেবের ছোট মেয়ে ঘটনাটি দেখেছিল বলে,হানিফ নিজেই ফেঁসে যায় এবং আরিফ সাহেব হানিফকে বাসা থেকে বের করে দেয়। আসলে হানিফের মতো এমন জঘন্য মানুষকে বাসায় রাখা মোটেই উচিত নয়। এতে করে আবারও প্রমাণিত হলো, সত্যের জয় অবশ্যই হয়। যাইহোক এমন শিক্ষণীয় একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

হানিফ সাহেবের ছোট মেয়ে একদিন বলল আব্বু আমি যা বলব তাই করবেন? হানিফ সাহেবের কথা শুনে একটু অবাক হল বলে কি বলবা বলো আব্বু? তখন সে বললো প্রত্যেকজনের রুম সার্চ করতে হবে। এই কথা শোনা মাত্র হানিফ খুব উত্তেজিত বোধ করলো।

(তবে পোস্টের কয়েক জায়গায় আপনি আরিফ সাহেব না লিখে, ভুল করে হানিফ সাহেব লিখেছেন। আশা করি ঠিক করে নিবেন।)

 6 months ago (edited)

ভাই আপনি বেশ সুন্দর করে আমার ভুলগুলো ধরে দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। কিন্তু এখানে আমি কি বিষয় তুলে ধরেছি সে সম্পর্কে আপনি কোন মন্তব্য করলেন না।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57849.42
ETH 3122.29
USDT 1.00
SBD 2.43