জেনারেল রাইটিং :- শীতে খেজুরের রস খাওয়ার অনুভূতি।
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমার আলোচনার বিষয়টি হলো শীতে খেজুরের রস খাওয়ান অনুভূতি। আশা করি আজকের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনাটি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...
এখন শীতকাল আর এই শীতকালে সবথেকে আকর্ষণীয় জিনিস হলো খেজুরের রস। খেজুরের রসের সাথে খেজুরের গুড় পাটালি। আর এইগুলোর সাথে মিশ্রিত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুল। অর্থাৎ মানুষ এখন খেজুর রস দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করে খাবে আবার ফের গুড়দেও বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করে খাবে। বাঙালি সব সময় একটু খাদ্য প্রিয় অর্থাৎ তারা খেতে ভালোবাসে। শীতকালে আমন ধান ঘরে আসলে নবান্ন উৎসব ওঠে। ছোটকালে দেখেছি নারীরা সন্ধ্যা থেকে শেষ রাত পর্যন্ত তারা পিঠা বানাত এরপরে দিনের বেলা সেগুলোকে সুন্দরভাবে প্রস্তুত করত এবং আমাদেরকে সেগুলো খেতে দিত। আগে সেই দিনগুলো এখন আর নেই তারপরও মানুষের মধ্যে ক্ষার প্রবণতাটাই রয়ে গেছে। তখনকার মানুষ সারাদিন পরিশ্রম করে রাতের বেলা পিঠা তৈরি করতো। আসলে খেজুরের রস আসলে যেন মানুষের মধ্যে একটা অন্যরকম উন্মাদনা চলতো। শীতের এই দিনগুলোতে মানুষের মধ্যে যত জড়তা থাকুক না কেন খেজুরের রস দিয়ে পিঠা তৈরি খাওয়ার মানসিকতা সব সময় থাকে।
বর্তমান সময় শীত তো অনেক কম পড়ে কিন্তু কয়েক যুগ আগে শীতের পরিমাণ ছিল ভয়াবহ। হয়তো বা যারা এই বিষয়ে জানেন তারা জানেন আর যারা জানেন না তারা হয়তোবা অবাক হবেন এমন দিন গেছে দিনের পর দিন সপ্তাহের পর সপ্তাহ মাসের পর মাস সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। কঠিন শীতের জন্য মানুষ হুহু করে কাঁপতো। এই যে চলমান সময় মানুষ ধান বাড়িতে আনার পরে তার চিতা ছিল এই চিটাগুলো তারা আগুন দিয়ে জ্বালতো। যাহোক এত কষ্ট হলেও সেই সময়ে রস খাওয়ার একটা আলাদা অনুভূতি কাজ করতে মনের মধ্যে। আমরা বরাবরই অনেকগুলো ছেলে একত্রিত থাকতাম আর সেখানে লেখাপড়া করতাম। আমাদের একটা অভ্যাস ছিল যখন যার মনে যেটা হতো শুধু উত্থাপন করা দেরি করতে দেরি হতো না। একদিন রস খাওয়ার সবার ইচ্ছা হল তাই সবাই বেরিয়ে পড়লাম রস খাওয়ার জন্য। যেখানে আমরা থাকতাম সেখানে বড় একটা ঘর আছিল সেই ঘড়াটা নিয়েছিলাম। আসলে এতটাই শীত পড়ছিল এবং বাহিরে এত কুয়াশা ছিল এক হাত দূরের মানুষও দেখা যাচ্ছিল না এমন একটা অবস্থা। তারপরও কথায় আছে না যেমন কথা তেমন কাজ। যখন খেতেই হবে তখন ঠান্ডা দেখে লাভ আছে। তাই আমরা ৭-৮ টা ছেলে চলে গেলাম খেজুরের রস পাড়ার জন্য।
বর্তমান সময়ে লক্ষ্য করে দেখবেন অনেকে খেজুরের রসের যে ভার থাকে এই ভারগুলো সুন্দর করে ঢেকে রাখে না। কিন্তু সেই সময় পাটখড়ি অথবা চাটাই দিয়ে সুন্দর করে ঢেকে রাখত যাতে বাইরের কোন জীবাণু না পড়ে। আসলে বর্তমান সময়ে খেজুরের রস আমার খেতে ইচ্ছা করে না শুধুই একটাই কারণে এখন মানুষ খেজুরের রসের যে ভার থাকে এগুলো ঢেকে রাখে না যার কারণে বিভিন্ন ধরনের যেমন সাপ অথবা ইঁদুর অথবা চামচিকা বসে। আমি নিজের চোখে দেখেছি বাঁদর খেজুর গাছে বসে রস খাচ্ছিল আর এটা দেখার পরে আমার খাওয়ার ইচ্ছাটাই মরে গেছে। যাহোক আমরা সবাই খেজুরের রস বাড়তে গিয়েছিলাম এবং প্রায় এক বার রস নিয়ে আসছিলাম। রাত্রে সবাই দুই এক গ্লাস করে খাস খেয়েছিলাম তো আমাদের মধ্যে একজন মামা ছিল সে প্রায় চার থেকে পাঁচ গেলাস খেয়েছিল। আসলে রস খাওয়াটা তো মজার বিষয় নয় মজার বিষয় হল শীতকালে বাহিরে যাওয়া। অর্থাৎ প্রচন্ড শীত রস খাওয়ার পরে বাহিরে যে কেন যেতে হয় নিশ্চয় আপনারা বুঝতে পেরেছেন। কি বলবো মনে করেন বিছানা গরম না হতে আবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
খেজুরের রস গুলো খাওয়ার মধ্যে কিছু নিয়ম রয়েছে তার মধ্যে একটি হল আপনি যদি যেভাবে চা পান করে ঠিক সেভাবে যদি খেজুরের রস পান করেন তাহলে দেখবেন বেশটুকু স্বাদ লাগে। অনেকে আবার পানি খাওয়ার মত গিলে খায় সেগুলো কিন্তু তার আসল সাধ বুঝতে পারে না। প্রত্যেকটা মানুষের একটা বয়স থাকে আর এই বয়সে অনেক কিছুই ভালো লাগে। তখন প্রায় প্রায়ই আমরা খেজুরের রস খেতাম কিন্তু এখন ইচ্ছা করলেও একবারও মনটা বলেনা যে আমরা রস খাই। সময় মানুষকে বদলে দেয় প্রকৃতি মানুষকে শেখায়। পৃথিবীর সব থেকে বড় শিক্ষা হল প্রাকৃতিক শিক্ষা আর এই শিক্ষাটা আমাদের গ্রহণ করা উচিত। আজকে এই পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
👨🦰আমার নিজের পরিচয়👨🦰
আমি আবুল বাশার খায়রুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার দুইটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
OR
শীত বিষয়ক অসাধারন একটি পোস্ট শেয়ার করলেন। আগে ভয়ানক শীত পরতো একথা আপনি একদম ঠিক বলেছেন। এখন শীত তেমন পরে কই। তবে শীতের দিনে খেজুর রস খাওয়ার অনুভূতি একদম আলাদা ভাই। খেজুর রসের যে প্রক্রিয়া আপনি ব্যাখ্যা করলেন তা থেকে অনেক কিছু জানা গেল।
এন্টারটিকা মহাদেশে প্রচুর পরিমাণে বরফ গলে যাচ্ছে আর এর ফলে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে যার কারণে শীত কমে যাচ্ছে।
https://x.com/ABashar45/status/1871907359779598757?t=3VCU3P8NlWH_qbE2Ktm9vQ&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
যদিও কখনো খেজুর রস খাওয়া হয়নি, আজ আপনার পোষ্টটি পড়ে কেন যেন খেজুর রস খাওয়ার ইচ্ছে হচ্ছে। আপনি খুব সুন্দর করে খেজুর রস খাওয়ার অনুমতি দিলে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার অনুভূতি পড়ে বেশ ভালো লাগবে ভাইয়া। ধন্যবাদ পোস্টে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনি খেজুরের রস এখন পর্যন্ত খান নাই এটা জেনে বেশ খারাপ লাগলো। যদি সুযোগ থাকতো তাহলে আমি আপনাকে খাওয়াতাম।
শীতকালে রস খাওয়ার মাঝে অন্য রকম অনুভূতি কাজ করে।আপনি শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার অনুভূতি গুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। খুব ই ভালো লাগলো অনুভূতি গুলো। এটা ঠিক বলেছেন,খেজুরের রস আস্তে আস্তে চায়ের মতো পান করলে আসল স্বাদ পাওয়া যায়।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য করার জন্য।
শীতের সকালে খেজুরের রস খাওয়ার অনুভূতিটাই যেন অন্য রকমের। ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে খেজুরের রস খেতে খুবই ভালো লাগে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
খেজুরের রস বেশ ভালো লাগবে তবে গাছিদের তৈরির পদ্ধতিটা ভিন্ন এই কারণেই খাওয়া হয় না।