ক্রিয়েটিভ রাইটিং // ভৌতিক গল্প :- প্রতাপগড়ের বৌরানী :- ৩য় পর্ব।

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আলোচনা করবো একটি গল্প , আর এই গল্পের নাম ভৌতিক গল্প:- প্রতাপগড়ের বৌরানী :- ৩য় পর্ব। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...


Source


বিয়ের পরের কিছু আচার অনুষ্ঠান সারতে সারতে প্রায় রাত হয়ে গেল। তাই যে যার মতো ঘরে গেল শুতে। আমিও আমার কক্ষে এসে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলাম। সারাদিনের ক্লান্তিতে বিছানায় শুতেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে গেলাম। ঠিক কতক্ষণ এভাবে ঘুমিয়েছি মনে নেই। তবে ঘুমটা ভেঙে গেল বিকট একটি শব্দে। শব্দটি ক্রমাগত হয়েই চলছে। ঘরের মধ্যে ঘুটঘুটে অন্ধকারে আচ্ছন্ন, এভাবেই ধড়মড়িয়ে বিছানা থেকে উঠে পড়লাম। আমার স্পষ্ট মনে আছে ঘুমানোর আগে লাইট অন করে রেখেছিলাম। কিন্তুু এখন ঘরে এতটাই অন্ধকার যে নিজের হাত, পা গুলোও ঠিক মতো বোঝা যাচ্ছে না। আবার সেই ভয়ংকর শব্দটাও ক্রমাগত বেড়েই চলছে। মনে কেউ যেন খুব ভারী পায়ে হেঁটে চলছে, তবে হাঁটাটি স্বাভাবিক নয়। মনে হচ্ছে যেন অনেক কষ্টে পা টেনে টেনে হাঁটছে আগন্তুক। হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে আগন্তুক জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। মনে হচ্ছে এই গহীন অন্ধকার রাতে শিকারের সন্ধানে বেরিয়েছে।


আমি আগেই বলেছি আমি একটু ডাকাবুকো ধাচের মেয়ে৷ কোনো কিছুতে হুট করে ভয় পাওয়া মেয়ে নয় আমি৷ কিন্তুু আজকের এই গহীন অন্ধকার রাতে ভয়ংকর শব্দে কিছুটা হলেও ভয় পেয়েছি।আমার ভয়ের একটা কারণও আছে। সন্দেহ যদি ভুল না হয় তাহলে এই আগুন থেকে আমার দরজার কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। মনে হচ্ছে যেন দরজার কাছে দাঁড়িয়ে টেনে টেনে ঘ্রান নিচ্ছে। হঠাৎ মনে পড়ে গেল ভাগ্যিস ঘুমানোর আগে দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে এসেছিলাম। আগন্তুক যেই হোক না কেন, সে এখন আমার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দরজার সঙ্গে করছে। প্রাণপণ চেষ্টা করে চলেছে ভেতরে আসার জন্য। এমন নতুন একটি জায়গায় এমন অদ্ভুতুড়ে বিপদে পড়ব বুঝতে পারিনি, তবে আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় আমাকে বারবার সারা দিচ্ছে "আমি যেখানে আছি সেখান থেকে যেন একটুও না নরি"। তাই যেখানে বসেছিলাম সেখানেই পাথরের মত বসে রইলাম। ভেতর থেকেই বুঝতে পারছিলাম বাইরের প্রাণটি বা মানুষ যেটাই হোক না কেন সেটি প্রাণপণ ভিতরে আসার জন্য চেষ্টা করে চলছে। এমন সময় জেসিয়ে যে কাউকে ডাকবো সে সাহসটুকু হয়ে উঠছে না। বলা যেন শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসছে।


এত ভয়ের মাঝেও একবার ইচ্ছে হয়েছে দরজার ফোকর দিয়ে দেখে আসি বাইরে আসলে জিনিসটা কি। সেদিকে আদৌ মানুষ নাকি কোন জন্তুু। তবে বাইরে যেইটি দাঁড়িয়ে আছে তার এমন রক্ত জল করা হুংকারে হয়তো বোনের প্রাণীরাও ভয় পেয়েছি উড়ে উঠবে। এমন বেশ খানিকক্ষণ চলার পর সেটা আস্তে আস্তে চলে গেল। হাঁটার শব্দ এবার খেয়ে ক্ষিন। বোঝাই যাচ্ছে সে সিঁড়ি দিয়ে নামার চেষ্টা করছে। আস্তে আস্তে শব্দটি বেরিয়ে গেল। মনের মাঝে সাঙ্গা জেগে উঠল বাড়ির অন্যান্য মানুষ গুলো ঠিক আছে তো। এবার এই রাজপ্রাসাদে নেমে এলো মৃত্যুপুরীর নিংশব্দতা। মনের মধ্যে হাজারটা প্রশ্নের ঝড় তুললো, এতক্ষণ বাইরে যেটি ছিল সেটি আসলে কি? কেনই বা এসেছিল এখানে? আসলে কোন প্রাণী, কি অন্য কিছু? এই ভয়ে সারা রাত দুচোখের পাতায় এক করতে পারিনি। ভোরের দিকে চোখটা লেগে গিয়েছিল। বারবার মনে হচ্ছিল এ কোথায় এসে পড়লাম। মামা আমাকে দেখেশুনে কেন বিয়ে দিল না। এ যেন মনে হচ্ছে পাতালপুরীর মৃত্যু পুরীতে এসে পড়েছি। কাল রাতের ভয়াবহ কথা ভাবলেই শরীরের লোম খাড়া হয়ে উঠছে।চলবে.....


ভূল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।

আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

ডিভাইস poco M2
লোকেশন মেহেরপুর

👨‍🦰আমার নিজের পরিচয়👨‍🦰


1666192548913_1666192548801_1666192548599_1666192548416_1666192548270_1666192548091_1666192547839_1666192547665_1666192022150.jpg

আমি আবুল বাশার খাইরুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।


Logo.png

(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )


4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzLdXDsNijBKWNGJn5ogmozSiA7cyReMsKwomyC79dv8nHgZj3RKbXhPtULzHviAUBY9Vc8ousmvcnNywqK...hMHPzmtXdqcE25kuBukgtAciNVXSHonSRqmAmfHf9YgyuYwwZo1Nd9dUCogeVvSsKh3MRCxw1Khi2NyeZh4Rt4J9n7wTsZvJ1tiUMafwrMjZ5AQz2ERchsjjJv.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPxFqYAEtmnwbJrshP4Tdaov4BmxkXJqLhx2USjht6Vy2soth7e34k1TKBQ2RZ2vXNJBF8X9uKH9aLNKFV...xU6W1ggWaLoBhkXz82k34bfNqfnFypapZe2oHzEHELJzLj6msr2RorLQSivfSXJaPiBZmUdQYzewFKsaGxDCyC6yRhEDYu8mNwzeEnkjmmjmpLrQEyQZKZnCTp.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 10 months ago 
 10 months ago (edited)

প্রতাপগড়ের বৌরানী গল্পের তৃতীয় পর্ব পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমি এই গল্পের পূর্বের পর্ব গুলোর একটি পড়েছি আমার কাছে ভালো লেগেছে । আজকের পর্বটি অনেক দুর্দান্ত হয়েছে। রাতের ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরেছেন। আসলে রাতের বেলায় এমন ভয়াবহ শব্দ হলে সবাই ভয় হয়ে যাবে। মেয়েটিও খুব ভয় পেয়ে গিয়েছে। বাইরে ভয়াবহ শব্দ কিভাবে হলো? এটা কি কোন মানুষ বা, জন্তুর শব্দ সেই সম্পর্কে জানতে ইচ্ছে করছে। আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম, ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

 10 months ago (edited)

ভাই আমি প্রতাপগড়ের বৌরানীর তৃতীয় পর্ব আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি। আপনি এখানে দ্বিতীয় পর্বের কথা লিখেছেন। ভাই রাতের ভয়াবহতা সম্পর্কে আমি উপরে আলোচনা করেছি। ধন্যবাদ ভাই আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

আশা করি ভাই ভালো আছেন? তৃতীয় লেখার জায়গা দ্বিতীয় লেখা উঠে গেছে ভাই এর জন্য আন্তরিক দুঃখিত। ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন নিশ্চয়ই গল্পের পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই আমাদের মাঝে উপস্থাপন করবেন।

 10 months ago 

পরবর্তী যেকোনো একটি পর্বে অবশ্যই আমি আপনাদেরকে জানাবো আসলে সেটা জন্তু ছিল কিনা মানুষ ছিল। জানার জন্য চোখ রাখুন আমার লেখা ভৌতিক গল্পে। অনেক ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

প্রতাপগড়ের বৌরানী গল্পটার তৃতীয় পর্ব পড়ে ভালোও লেগেছে আবার অনেক বেশি ভয়ও লেগেছে। আসলেই তো সেই দরজার পেছনে কি ছিল? আর ওই প্রাসাদের অন্যান্য মানুষগুলো ঠিক আছে নাকি ঠিক নেই? যাইহোক আশা করছি এই গল্পের পরবর্তী পর্বে সবকিছু ক্লিয়ার হবে। সেই পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্ব টা দেখতে পাবো।

 10 months ago 

আসলে আপু এই গল্পের কেবল প্রথম দিকে চলছে তো।এখনো অনেক কিছু বাকি আছে, আস্তে আস্তে বুঝতে পারবেন সবকিছু। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

কি ভয়ংকর গল্প শোনালেন ভাইয়া। শুনেই তো তো হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। রাতের বেলায় পড়লে তো আরো বেশি ভয় পেতাম। আর ওই মেয়েটির তো অনেক সাহস বোঝা যাচ্ছে। এরকম ভয়ংকর শব্দ শুনে আবার বাইরে দেখার ইচ্ছা জেগেছে। অন্য কোন মানুষ হলে তো ভয়ে ফিট হয়ে যেত। যাই হোক গল্পটি বেশ ভালো লেগেছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম

 10 months ago 

আপনি ঠিক বলেছেন আপু এই মেয়েটির অনেক সাহস। এ সাহসিকতার প্রমাণ এখনো সামনে অনেক বাকি রয়েছে। এই গল্পে এখনো ভয়ঙ্কর কিছু রয়েছে যেগুলো আস্তে আস্তে আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। আপনি চমৎকার ভাবে মন্তব্য করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59508.12
ETH 2603.38
USDT 1.00
SBD 2.39