জীবনের গল্প
হ্যাল্লো বন্ধুরা
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি আপনারা সকলেই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় পরিবারসহ সুস্থ আছি, ভালো আছি। যাই হোক, আজ আপনাদের সাথে নতুন একটি পোষ্ট শেয়ার করতে চলে এসেছি। আমার আজকের পোষ্ট এ আমি আমার নিজের গত কয়েক দিনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চলেছি। পোস্ট টি আপনাদের কেমন লাগলো জানাবেন অবশ্যই... তো চলুন, আর বেশি কথা না বাড়িয়ে চলে যাই আজকের পোষ্ট টি তে.... ৷
ছবিটি ক্যানভা এপ দিয়ে তৈরি।
যদিও শুরুতেই বললাম যে ভালো আছি, তবে শীত এর পুরোটা সময়ই আসলে আমার ভীষণ অসুবিধার মাঝেই কাটে। আমার এমনিতেই ঠান্ডাটা একটু বেশিই। তার উপর মাইগ্রেন আর সাইনোসাইটিস দুটোরই সমস্যা রয়েছে। তাই বেশ ভোগান্তির সাথেই কাটে পুরো শীতকাল। অবশ্য সারাবছরই ভোগান্তি থাকে, গরমে বা বর্ষাতেও বেশি ভালো থাকি না, মাথা ব্যাথাটা ভালো থাকতে দেয় না আর কি! গত দুই দিন থেকেই তাই! সকাল থেকেই ভীষণ মাথা ব্যাথা। চোখ খুলতে পারি না মতোন মাথা ব্যাথা! তার আগের দুই দিন আসলে ভীষণ ব্যস্ততার সাথে কেটেছে তো, রেস্ট পাই নি তেমন। এমন ব্যস্ত কেটেছে যে কমিউনিটি তে একটুও তেমন কাজ করতে পারি নি আমি। তাই গতকাল পোস্ট করবো শিওর ছিলাম। কিন্তু মাথা ব্যাথা সে সুযোগ টাও দিলো না। এখন একটু ভালো লাগছে, তাই চলে এলাম কিছু টা কাজ করার জন্য। কী পোস্ট করবো ভাবতে ভাবতে ভাবলাম গত এই কদিনের ব্যস্ততা নিয়েই আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
আমার আগের পোস্ট এ আপনাদের বলেছি আমার বাবা- মা ঘুরতে গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকে ফিরে দেশে আমার দাদার বাসায় উঠেন বুধবার। আমার বাসায় আসেন ১২ তারিখ, বৃহস্পতিবার। শুক্রবার আবার আমার বাসায় আমার ছোট পিসি, ছোট পিসেমশাই, তাদের মেয়ে,মেয়ে জামাই সহ আরো কয়েকজনের দাওয়াত ছিলো আমার বাসায়। পিসি- পিসেমশাই থাকেন নাটোরে৷ পিসেমশাই এর চোখের ছানির অপারেশন করার উদ্দেশ্যে ঢাকায় মেয়ের বাসায় আসা। এমনিতে পিসেমশাই ভীষণ কাজ পাগল মানুষ, খুব একটা বেড়াতেও আসেন না! আমাদের বিয়ের পর কখনও আমাদের বাসায় আসা হয় নি তাদের। তাই এবার যখন ঢাকায় এসেছেনই, আমার বাসায় তাদের সকলকেই দাওয়াত করেছিলাম। বৃহস্পতিবার বাসাটা গোছগাছ করতেই চলে গেলো! সাথে শুক্রবার দুপুরর শীতকালে আবার গ্যাসের চাপ টাও বেশ কম থাকে! ওদিকে বরমশাই এর অফিস, বাজারও করা বাকি! আগে থেকে যতটুকু পারা যায় গোছগাছ করে নিয়েছিলাম বৃহস্পতিবার, যেন শুক্রবারের কাজগুলো সহজ হয়। সত্যি কথা বলতে আমাদের বিয়ের পর ঢাকার বাসায় তেমন আত্নীয় স্বজনদের আসা যাওয়া বেশ কম ই হয়েছে, যেহেতু বেশিরভাগ আত্নীয় পরিজনই ঢাকার বাহিরে থাকেন। ওত মানুষের রান্নাবান্নার আইডিয়াও কম আমার। মা থাকায় অনেকটা সুবিধা হয়েছে। নইলে আমার একা হাতে সামলানো মুশকিল হয়ে যেতো বৈ কি!
শুক্রবার খুব সকালে উঠেই মা-মেয়ে মিলে রান্নার যোগাড় শুরু করে দিলাম। মাঝে সকালের নাস্তা করা হলো। ১০ টার পর পর ই গ্যাসের চাপ কমে গেলো! ওদিকে আমার টেনশন গেলো বেড়ে! শেষমেশ অবশ্য মেহমানদের আসাতেও কিছুটা দেরি হয়েছিলো। তার মধ্যেই রান্না কমপ্লিট ও হয়ে গিয়েছিলো। সবাই এলে আমরা ভীষণ মজা করেছি একসাথে। খাওয়া দাওয়া তো আছেই, সাথে এতদিন পর সকলের সাথে দেখা হওয়ায় ভীষণ ভালো লাগছিলো। ওদিকে এখন তো ছোট দিনের বেলা! খুব দ্রুত সন্ধ্যা হয়ে আসে। সন্ধ্যায় পিসেমশাই এর আবার একটা টেস্ট করার বাকি ছিলো। তাই মমে হচ্ছিলো যেন সময় টা কত দ্রুত চলে গেলো! খাওয়া দাওয়া করে একটু রেস্ট নিতে না নিতেই চা-নাশতা করে বের হওয়ায় সময় হয়ে গেলো তাদের! এমনই ছিলো বিষয় টা! যেহেতু তাদের আসতে আসতেই দুপুর ২ টা পার হয়ে গিয়েছিলো আবার পাঁচটার পর পর ই সন্ধ্যা হয়ে যায়। যেহেতু টেস্ট ও করাতে হবে পিসেমশাই এর, তাই জোর ও করতে পারছিলাম না সেভাবে! ওদিকে তাড়াহুড়ায় সকলে মিলে একটা ছবিও তোলা হয় নি! তারা বের হয়ে গেলে পরে বাবার পরিচিত আরোও চারজন মেহমান আসে বাসায়। ওদের সাথে আলাপ পরিচয় গল্প চলে কিছুক্ষণ। এভাবেই চলে যায় শুক্রবার এর দিনটি! শনিবারে আবার বাবা -মা গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। শনিবারেও সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে হয়। যেহেতু এত সকালে ঘুম থেকে উঠার অভ্যসে নেই, পরপর সকাল সকাল উঠা, সাথে পরিশ্রম ছিলো, টেবশন ছিলো, শনিবার সকাল থেকেই মাথা ব্যাথা জেকে বসলো ভালো করেই! সে মাথা ব্যাথা শনিবার সারাদিন ভোগালো। আজকেও দুপুরে ১ টা পর্যন্ত ঘুমিয়েছি প্রায় এই মাথাব্যথার চোটে! পরে গোসল করার পর এই যে আজকে নিয়ে একটু ভালো লাগছে!
এই ব্যস্ততা এবং অসুস্থতার কারণে শুক্র-শনি কোনো পোস্ট বা কমিউনিটির কোনো কাজ ই করা হয় নি। অথচ আমি অবাক হয়ে দেখি এমন অনেক মেম্বার আছেন যারা সবকিছুর পরেও পোস্ট করা বা কাজ করা বাদ দেন না। দাদার কথা তো নাই বললাম! আমি নিজেও কিছুটা অলস প্রকৃতির মানুষ, এটাও স্বীকার করি। তবে আমি চাই নিজেকে তাদের মতোই করে তুলতে। তাই আজ থেকে আবারো চেষ্টা করবো যেনো জীবনে যত ব্যস্ততা কিংবা অসুস্থতা যাই আসুক না কেন, কমিউনিটিতে নিয়মিত থাকবো। নতুন বছর আসতে এখনো ১৫/১৬ দিন বাকি। এই কদিনে যদি এই অভ্যেস টা আয়ত্ত করে নিতে পারি, সেটাই হবে ২০২৪ এর নতুন একটি অর্জন!
যাই হোক, আর কথা বাড়াচ্ছি না। আমার জন্য দোয়ার দরখাস্ত রইলো আপনাদের কাছে। সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি।
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼
আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার এই মাইগ্রেন এর কথাটা শুনলে আমার নিজেরই খারাপ। ইস কী বাজে একটা ব্যাপার। এটা যাদের আছে যারা সব পাপের শাস্তি দুনিয়াতেই পেয়ে যায়।
ঢাকা শহরে যাদের স্পালাই গ্যাস তারা এই অনূভুতি বেশ ভালোভাবে জানে হা হা।
আমি বেশ টেনশন করছিলাম যে দাওয়াত দিয়ে পরে মান সম্মান থাকবে কি না! আদৌও রান্না যথাসময়ে শেষ হবে কি না! 🤦♀️
পোষ্টটিতে সাইফক্সকে বেনিফিশিয়ারী দেয়া হয়নি, এই বিষয়ে আরো একটু সতর্ক হওয়ার পরামর্শ রইল। ধন্যবাদ
কোনো ভাবে ভুল হয়ে গেছে ভাই! অবশ্যই এই বিষয় এ সতর্ক থাকবো। অসংখ্য ধন্যবাদ ।
মাইগ্রেন এর সমস্যা যাদের আছে কেবল তারাই বুঝে এর কস্ট। কোন কাজ করাই যায় না যখন মাইগ্রেন পেইন শুরু হয়। আর সাথে যদি হয় বমি তবে তো দু থেকে তিনদিন বিছানাতেই থাকতে হয়। মাইগ্রেন,গ্যাস সমস্যা এতো কিছুর পর অতিথীদের ভালভাবে অপ্যায়ন করতে পেরেছেনেই সেটাই বড় বিষয়। আর ঢাকা শহরে দুষিত বায়ু, পানির সমস্যা ,যানজট, গ্যাস সমস্যা নিয়ে জীবনযাপন করতে হবে। সাথে যুক্ত হবে বিভিন্ন অসুখ। তবুও কাজ করতে হবে। আশাকরি আগামী বছর বেশ ভালভাবে কাজ করতে পারবেন।