মেয়েদের বাহ্যিক সৌন্দর্য আসলেই কী কোন গুণের মধ্যে পরে?
হ্যাল্লো বন্ধুরা
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে ভালো আছি। আজ আবারও হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করছি পোষ্টটি আপনাদের কেমন লাগলো তা আপনার মূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, আজকে আপনাদের সাথে একটি জেনারেল রাইটিং পোষ্ট শেয়ার করবো। এই লেখাটি মূলত মেয়েদের জন্য লেখা। তবে অবশ্যই অবশ্যই সবারই মতামত কাম্য।
আমরা আসলে এমন একটা সমাজে বসবাস করি, যেখানে কন্যা সন্তানদের ছোট বেলা থেকেই মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয় যে - "মেয়েদের প্রথম এবং প্রধান গুণই তার সৌন্দর্য। তোমাকে যথেষ্ট সুন্দরী হতে হবে। তবেই তো ভালো ঘরে বিয়ে হবে। বিয়ের বাজারে ডিমান্ড থাকবে। কিংবা তুমি যত সুন্দরী হবে, অফিসেও তত তাড়াতাড়ি তোমার পথ সুগম হবে। সবাই তোমার কথা শুনবে। "
আমার লিখতে খুব খারাপ লাগলেও এটিই আমাদের সমাজের ৯০% কিংবা তারো বেশি সংখ্যক মানুষের চিন্তাভাবনা। যেখানে বিংশ শতাব্দীতে এসেও অনেক পরিবারে মেয়ে সন্তান হলে খুশী হয় না। আবার সেই সন্তান যদি ফর্সা না হয়ে কালো বা শ্যামবর্ণ হয়, তাহলে তো কথাই নাই। নতুন বাবু দেখতে এসেও অনেকেই মন্তব্য করে বসে, " এই মেয়ে বিয়ে দিতে গিয়ে টের পাবা" ইত্যাদি। এবং পরিবারের বা নিজের জন্য পাত্রী খুঁজতে গেলেও সবাই ফর্সা বা উজ্জ্বল শ্যামলা মেয়েই খুঁজে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, মেয়েদের বাহ্যিক সৌন্দর্য কী আসলেই কোন গুণের পর্যায়ে পরে??" এই বিষয়ে তো তো সেই মেয়েটির কোন হাত নেই। সৃষ্টিকর্তা যাকে যেমন বানিয়েছেন সেটির পেছনে আমাদের কারোরি হাত নেই। তাহলে আমরা মানুষের ক্ষেত্রেও কেন প্রথমে দর্শনধারি??আমরা কে একটি মেয়েকে শুধুমাত্র তার চেহারা দেখেই বিয়ের সম্বন্ধে রিজেক্ট করে দেয়ার?? আমরা কি একটা বার ও ভেবে দেখি যে এর ফলে সেই মেয়ের মানষিক স্বাস্থ্য এর উপর কতখানি প্রভাব ফেলে??
এত কথা লিখলাম কারণ খুব রিসেন্ট একটি ঘটনা মনকে খুব বিক্ষিপ্ত করে রেখেছে। আমাদের কলেজের একজন ব্যাচমেট আত্নহত্যা করেছে এই কারণে। আত্নহত্যা করার আগে এক পৃথিবী সমান অভিমান নিয়ে ফেসবুকে স্টোরি দিয়ে লিখে গেছে-" এই স্বার্থপর পৃথিবীতে শুধুমাত্র সুন্দরীরাই বেঁচে থাকুক। হয়তো আমার মতোন কালো কুৎসিত মেয়ের এই সুন্দর পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটাই ভুল।"
অথচ কী পরিমাণ গুণী আর মেধাবী ছিল মেয়েটি!!
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে
কী পরিমাণ মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে এক পৃথিবী সমান অভিমান নিয়ে এই পৃথিবী থেকে নিজেকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হয় একজন মেয়ে? এর দ্বায় কি শুধু সেই মেয়েটার একারই?? কার কাছে প্রশ্ন করলে উত্তর পাবো বলেন তো.....??
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼
আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।
যে আমাদের সমাজে মেয়েদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয় মেয়েদের প্রথম এবং প্রধান গুণ তার সৌন্দর্য আর আমাদের ছেলেদের মাথায় বিষ ঢুকিয়ে দেয়া হয় যে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে বাবা। প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। এটাই আমাদের জীবনটা কুরে কুরে খায় কারণ বেকারত্ব পুরুষের জন্য অভিশাপ। যার পরিবারে মেয়ে সন্তান সে আসলেই ভাগ্যবতী কিন্তু বর্তমান সময়ে আমরা মেয়ে হলে অখুশি হই। বাহিতিক সৌন্দর্য প্রথমে কাজে আসলেও পরে যদি মেয়ের গুন না থাকে তাহলে আর বাহ্যিক সৌন্দর্য দিয়ে কোন কাজে আসে না। বর্তমান সময়ে রুপ আর টাকা থাকলে মানুষের ভালবাসার অভাব নেই । বিয়ে করতে হলে অবশ্যই মেয়ের চরিত্রও দ্বীনদারীতাকে প্রধান্য দেওয়া উচিত পরে অনেক সমস্যা হয় কারণ রূপ দিয়ে কখনো সংসার টিকে না। মেয়ে যদি ভাল হয় ঘরটা সুখে শান্তিতে ভরে যায়। যাইহোক অনেক সুন্দর একটি বাস্তবমুখী আলোচনা করেছেন
আপনার চিন্তাভাবনা গুলো ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। ভালোবাসা জানবেন।
আপনার এই পোস্ট যখন করছিলাম তখন অনেক বেশি ভালো লাগছিল কিন্তু শেষের দিকে যেয়ে যে এতটা দুঃখ পাবো সেটা কখনো ভাবি নি। আমাদের সমাজটা হয়তোবা এমনই মেয়েদেরকে এরকম ভাবেই ছোটবেলা থেকেই বড় পরানো হয় যে তাকে সুন্দরী হতে হবে কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আসল সৌন্দর্য থাকে মানুষের মনে। যার মন যত সুন্দর সেই মানুষটা অপর মানুষকে তত সুন্দরভাবে। কিন্তু এরকম ভাবে আত্মহত্যা করাটা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। খুবই খারাপ লাগলো আত্মহত্যার এই কথাটা শুনে।
বোকামি তো অবশ্যই। তবে কেমন সিচুয়েশনে পরলে একটা মেয়ে এই কাজ করতে বাধ্য হয়। এমনকি ভাই পরিবারের কাছের মানুষ গুলোও আসলে একটা সময় পরে মনে হয় টায়ার্ড হয়ে বিরক্ত হয়ে যায়।
খুব বেদনাদায়ক ঘটনা পোষ্টের শেষ প্রন্তে পেলাম।পড়তে গিয়ে পুরা শরীরের লোম খেজুরের কাটার মতো দাড়িয়ে গেছে আমার।একটি কথা পড়ে কষ্ট পেলাম সব থেকে বেশি যে বেঁচে থাকুক সব সুন্দরীরা কতোটা অপমানিত আর অবহেলিত হলে এমন কথা মানুষ বলতে পারে সুইসাইড নোটে।আসলে সমাজের বেশির ভাগ মানুষ আগে দর্শনধারী তার পর গুন বিচারি কথায় বিশ্বাসী।সুন্দর আর সুন্দরীর পূজায় মগ্ন অনেকেই। আসলেই কারো কাছেই এর উত্তর জানা নাই।সবার মানসিকতা পরিবর্তন করতে না পারলে এমন কাঙ্খিত ঘটবার সমুখীন হতে হবে অনেক পরিবারকেই।ধন্যবাদ
ঠিক বলেছো বৌদি। মানুষের মানসিকতা পরিবর্তন না করতে পারলে এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে।
দিদি আমার তো মনে হয় না সমাজ বলে কিছু আছে। কোন সমাজের কথা বলছেন আপনি যে সমাজ এক বেলা না খেয়ে থাকলে খাবারের যোগান দিতে পারে না, সেই সমাজের কথা? যে সমাজ মানুষের ব্যক্তি স্বত্তায় আঘাত হানে, সেই সমাজের কথা? নাকি যে সমাজ নিজের দোষ দেখে অন্ধ হয়ে বসে থাকে, সেই সমাজের কথা। আমি জানি যারা সুন্দরের মোহে কুৎসিত কে ঘৃণা করে তারা আসলে সত্যিকারের অর্থে কাউ কে ভালোবাসে না। সুন্দরের মোহ কেটে গেলে উড়াল দেয় অন্য ডালে। আমি বলবো আপনার ব্যাচ ম্যাট সত্যিকারের অর্থে একজন বোকা মানুষ। জীবন কি এত স্বস্থা নাকি, যে অন্যের জন্য নিজেকে নিঃশ্বেষে করে দিতে হবে? না ই বা হলো এ জীবনের সঙ্গী কেউ তবুও তো আমি একজন মেধাবী। সে কেন এ কথা বুঝলো না?
আপনি খুব সুন্দর একটি কমেন্ট করেছেন মাকসুদা আপু। তবে কী, আমরা মানুষ তো, আশেপাশের মানুষের কথায় আমরা খুব সহজেই ইনফ্লুয়েন্স হয়ে যাই। আত্নহত্যা করা অবশ্যই বোকামি। তবে আত্নহত্যা করার মতোন সিদ্ধান্ত নিতে বা করতে কিন্তু অনেক সাহসও লাগে.... যখন একদম দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, আশার আর বিন্দুমাত্রও থাকে না, তখন আশেপাশের সব কিছু ইগ্নোর করে যারা বাঁচতে পারে, তারা একসময় অবশ্যই বড় কিছু হয় বলেই আমার বিশ্বাস।
দিদি সমাজ কখনো দোষী নয়।দোষ এই সমাজের মানুষ গুলোর।তারা নিজেদের মতো করে কিছু বিষয় মানুষের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়।তাইতো সবাই একই সুরে মিলে মিশে থাকে।সত্যি মেয়েটির জন্য খারাপই লাগলো।এমন ঘটনা অনেক ই ঘটে যা আমরা সব জানিও না।খুব মর্মাহত হলাম।
সেটাই তো সমস্যা আপু। আমাদের মাথায় ছোট বেলা থেকেই এমন অনেক জিনিস বলতে বলতে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। যেটা আদোতেও ঠিক নয়।