আগে যা ভাবিনি, এখন সেগুলোও করি..
হ্যাল্লো বন্ধুরা
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি আপনারা সকলেই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় পরিবারসহ সুস্থ আছি, ভালো আছি। আমার নিয়মিত ব্লগিং এর ধারাবাহিকতায় আজ আবারো আপনাদের সাথে নতুন একটি পোষ্ট শেয়ার করতে চলে এসেছি। তো চলুন, আর বেশি কথা না বাড়িয়ে চলে যাই আজকের পোষ্ট টি তে.... ৷
আজ আপনাদের সাথে আমার নিজের জীবনের থেকে একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট করতে হাজির হয়েছি। আপনাদের সাথে জীবনের ছোট খাটো বিষয় গুলো শেয়ার করতে বা নানা কাজের সাথে রিলেটেড নিজের চিন্তাভাবনা গুলো শেয়ার করতে বেশ ভালোই লাগে। আশা করি আপনাদেরও আজকের পোষ্ট টিও ভালো লাগবে।
মানুষের জীবন সর্বদা পরিবর্তনশীল। জীবনে সময়ের সাথে সাথে নানা দিকে নানা ভাবে পরিবর্তন আসেই। ছোটবেলায় এক রকম জীবন ধারা থাকে মানুষের, আরেকটু বড় হলে সে জীবন ধারা পরিবর্তন হয়ে নতুন জীবন ধারা তৈরি হয়ে যায়! আবারো সময়ের সাথে সাথে সেই জীবনধারাও পরিবর্তন হয়ে যায়! ছেলে -মেয়ে সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য এই বিষয় টি! একজন
স্কুল গোয়িং বাচ্চার জীবনধারার সাথে কলেজ গোয়িং ছেলে-মেয়ের জীবনধারা যেমন মিলে না! তেমনি ভার্সিটিতে পড়া অবস্থায় এক রকমের জীবন যাপন চলতে থাকে মানুষের। সেই মানুষ টাই যখন ভার্সিটি লাইফ থেকে বেকার লাইফ কাটায়, তখন তার জীবনধারায় ব্যপক পরিবর্তন আসে। চাকরিজীবন শুরু করলে তা পরিবর্তন হয়ে যায়। এরপর সেই মানুষ টা যখন বিয়ের পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে নতুন ভাবে পথচলা শুরু করে, নিজের সংসার শুরু করে- তখন জীবন ধারা আবারো পরিবর্তন হয়ে যায়!!
অন্যের কথা বাদ ই দিলাম, আমি আমার কথাই বলি। বিয়ের আগে বাসায় টুকটাক কাজে হেল্প করতাম বটে, তবে সেটাও আসলে নিয়মিত না। আবার মায়ের বাসার এমন অনেক কাজ ছিলো, যেগুলো ভুলেও ছুঁয়েও দেখতাম না!! তেমন ই একটা কাজ ছিলো ঘরের ঝুল পরিষ্কার করার কাজ, কিংবা তুলা রিলেডেট কোনো কাজ! কারণ আমার ডাস্ট এলার্জি আছে। সাথে মাইগ্রেনের সমস্যাও। ফলে বেশি ধুলোবালি বা মাইক্রো পার্টিকেল রিলেটেড কাজ গুলো থেকে ১০০ হাত দূরেই থাকতাম! কিন্তু এখন বিয়ের পর যখন নিজের বাসা হয়েছে, সেই বাসার ঘরের ফ্যান পরিষ্কার থেকে ঝুল পরিষ্কার তো নিজেকেই করতে হয়! বাসায় গেস্ট রুমের বালিশ দুটোই আসলে বেশ উঁচু ছিলো
আমি এবং আমার হাজবেন্ড দুজনই বেশ পাতলা বালিশ ব্যবহার করতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করি। আমাদের রুমের বালিশ গুলো সে অনুযায়ীই গ্রামের বাসা থেকে নিয়ে আসা। কিন্তু গেস্টরুমের বালিশ দুটো আর ঠিক করা হয় নি। অবশ্য আমাদের বাসায় খুব বেশি গেস্ট আসেও না। তাই তেমন অসুবিধেও হয় নি। রিসেন্টলি আমার এক ননদ আমাদের বাসায় উঠেছে। আমাদের বাসা থেকেই আপাতত ভার্সিটির ক্লাস করছে। তাই ওর জন্য ওর সুবিধের কথা চিন্তা করে নিজেই বালিশ টা নিয়ে বসে পরেছিলাম আজ। উদ্দেশ্য - কিছু পরিমাণ তুলা বের করে বালিশটাকে একটু পাতলা করা। আগেই বলেছি, ডাস্ট এলার্জির সমস্যা আছে আমার। তাই মুখে মাক্স ব্যবহার করে বালিশের অল্প একটু জায়গার সেলাই কেটে একটু একটু করে বেশ কিছু তুলা বের করার চেষ্টা করেছি সাবধানতার সাথেই যাতে করে যথাসম্ভব কম তুলার ডাস্ট উড়ে। তুলা বের করার পর আবার কাচা হাতে জায়গাটা সেলাই করে মুখবন্ধও করে দিলাম। যদিও সেলাইতেও আমি একদমই কাচা, মানে কখনো তো নিজের হাতে করা হয় নি আগে এমন কাজগুলো। তাই ই করতে করতে ভাবছিলাম, সময়ের পরিবর্তন এমন ই। একটা সময়ে যে কাজগুলো করতে হবে কখনো চিন্তাও করি নি, সেই কাজগুলো ই এখন নিজের হাতে করতে হয় নিজের প্রয়োজনেই!
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে
আজ আর আমি কথা বাড়াচ্ছি না। আমার জন্য দোয়ার দরখাস্ত রইলো আপনাদের কাছে। সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি।
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼
আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।
আপনার মতো আমার ও ডাস্ট এলার্জি।বিয়ের আগে টুকিটাকি কিছু করা হলেও ধুলা-বালির কাজ গুলো ভুলেও করতাম না দিদি।কিন্তু সময় আমাদের কে অনেক কিছুই শিখিয়ে দেয়।আর ছেলেমেয়ে হলে আরো অনেক কিছু করায় যা কখনো কল্পনাতে ও আনিনি।আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে আপনার মনের কথা গুলো জানা হলো। ধন্যবাদ জানাচ্ছি অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
একটা মেয়ের বিয়ের আগের জীবন আর বিয়ের পরের জীবনে অনেক পরিবর্তন চলে আসে সময়ের সাথে সাথে। এখন বুঝি।
সময়ের সাথে সাথে আমরা অনেক কিছুই শিখে যাই। অনেক কিছুই করতে হয়। আর সময় আমাদেরকে অনেক কিছু শেখায়। টুকিটাকি কাজগুলো নিজেরাই করার চেষ্টা করি। আমরা ভালো লাগলো আপনার অভিজ্ঞতার কথা জেনে।
আমিও করতে করতে সেটাই ভাবছিলাম যে সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুই প্রথম বারের মতোন করতে হয়। নিজের প্রয়োজনেই!
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সময়ের সাথে সাথে আমাদেরকে অনেক কিছুই শিখতে হয়।আর সময় ও আমাদের অনেক কিছুই শেখায়।আপনার ডাস্ট এলার্জি থাকা সত্ত্বেও যে আপনি আপনার নিজের কাজ নিজেই করেছেন এবং তার অভিজ্ঞতা এবং অনূভুতি শেয়ার করেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। আমাদের মাঝে এতো সুন্দর একটা কাজের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সেটাই ভাই। সময়ের পরিবর্তন এর সাথে সাথে নানা নতুন অভিজ্ঞতা যুক্ত হয় মানুষের জীবনে। এটাই নিয়ম সকলের জন্যই! আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
একদম ঠিক বলেছেন আপু বিয়ের আগের একটি মেয়ে আর বিয়ের পরের মেয়ের মধ্যে আকাশ পাতাল ফারাক। বিয়ের পরে মেয়েরা সবকিছু করতে শিখে যায়। আপনার মত আমিও সেদিন বালিশ ভেঙে নতুন করে বানাতে গিয়ে কি বিপদে পড়েছিলাম। এগুলো আম্মাকে সবসময় করতে দেখতাম। তাই ভেবে করতে গিয়েছিলাম। যাইহোক আপু আপনার পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো।
আমি তো ভয়ে ভয়ে অল্প একটু জায়গার সেলাই খুলে কাজ টা করেছি আপু। কারণ না পারি তেমন সেলাই এর কাজ, না করেছি বালিশের কাজ আগে! তবুও শেষতাক কাজটা ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে, পরের বার করার প্রয়োজন হলে কনফিডেন্স পাবো এই আর কি।
এভাবেই তো মানুষের জীবন বদলে যায়। পরিস্থিতি আসলে একটি বড় ব্যাপার। পরিস্থিতিতে পড়ে মানুষ অনেক কিছু শিখে যায় বোন। আপনিও তাই পরিস্থিতির আওতায় এসে অনেক কিছু নতুন কাজ শিখে গেছেন। তবে অনেক কাজ শিখে গেছেন বলে ভবিষ্যতে আপনার উপকার হবে। নিজের সব কাজ করে নেয়াই ভালো। আপনি খুব সুন্দর করে আপনার জীবনের পরিবর্তনের বিষয়গুলি তুলে ধরলেন।
তা অবশ্যই ঠিক যে কাজ শিখে রাখলে উপকার এই আসে কোনো না কোনো সময়ে!
আমার এক ভাই আমাকে বলেছিল মানুষের জীবনে তিনবার বেশ বড় পরিবর্তন আসে। প্রথম চাকরি পাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করার এবং তৃতীয় সন্তান হওয়ার পর। আপনার পোস্ট টা পড়ে মনে হচ্ছে ঠিকই বলেছিল। আমি নিজেও আগে যা ভাবিনি চাকরি পাওয়ার পর সেগুলো করা লাগছে। সবই নিয়তি আপু।
আপনার বড় ভাই আসলেই সঠিক কথা বলেছেন! আপনি চাকরির পরের গুলো বুঝতে পারছেন। আমি চাকরি, বিয়ে দুটোই বুঝছি! এখনো লম্বা পথ বাকি তবে পরিবর্তন এর 🙄!