মা মেয়ে বেক্কল নাটক রিভিউ
প্রিয় বন্ধুগন, সবাই কেমন আছেন? আজকে আপনাদের মাঝে একটি নাটক রিভিউ নিয়ে হাজির হলাম। আশা করছি নাটক রিভিউটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।
মা মেয়ে বেক্কল নাটকের রিভিউ। |
---|
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য |
---|
নাটকের নাম | মা মেয়ে বেক্কল |
---|---|
পরিচালক | আদি বাসী মিজান |
অভিনয় | শামিমা নাজনীন, মুন্সি প্রকৃতি, পাপন, ফায়জুল কবির রুথিসহ আরো অনেকে |
ভাষা | বাংলা |
মুক্তির তারিখ | ১০ মে ২০২৪ |
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
মা মেয়ে বেক্কল নাটক রিভিউ।
নাটকের নাম শুনে বুঝতেছেন নাটকটি কোন বিষয়কে কেন্দ্র করে। নাটকটি দেখে খুব ভালো লাগলো। আসলে নাটকের নামটি দেখেই নাটকটি দেখার কৌতূহল জন্মালো। ইউটিউব থেকে পুরো নাটকটি একবার দেখে নিলাম। নাটকের শুরুতে দেখলাম নায়িকা গাছের নিচে বসে আছে। নায়িকার আম্মু চিৎকার দিয়ে বারবার বলতেছে কল আসতেছে, কলটি রিসিভ করার জন্য। কিন্তু নায়িকা তাতে বারবার হাসতেছে, তখন নায়িকার আম্মু জিজ্ঞেস করল হাসার কারণ। তখন নায়িকা উত্তর দিল, কল করতে যেমন টাকা লাগে ঠিক তেমনি কল রিসিভ করে কথা বলতেও টাকা লাগে। তখন নায়িকার মা বলল ঠিক বলেছ। প্রতিবেশী একজন এসে যখন বললো কল না ধরার কারন কি তখন তারা দুজনই বলল টাকা না থাকা কল ধরতে পারছে না। তখন ঐ প্রতিবেশী বলল তোরা মা-মেয়ে দুজনই বেক্কল থাকবি।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
এক আত্মীয়ের বাসা থেকে কল আসলো তাদেরকে ঢাকা যাওয়ার জন্য। কিন্তু মা-মেয়ে বেক্কল জেনে ওই আত্মীয় একজন লোক পাঠাতে বলল। কিন্তু মা মেয়ে তাদেরকে চালাক প্রমাণ করার জন্য নিজেরাই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিল। পথে মধ্যে নায়িকার মামা বড়শি নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে ছিল। কিন্তু কোন মাছ পেল না তাই নায়িকার মামা ১০০ টাকার একটা নোট বড়শীর মধ্যে গেঁথে নদীতে ফেলল। যেন মাছ লোভে পড়ে বড়শিতে ধরে। আমার মতে এই অভিনয়টি ওভার হয়ে গেল। কারণ একটি নাটকে কিছুটা হলো বাস্তবতার সাথে মিল রাখা উচিত বলে আমি মনে করি।
পরে ঢাকার উদ্দেশ্যে তারা নৌকাতে উঠলো নদী পার হবে বলে। কিন্তু সেইখানে তাদের চাবিটি পড়ে যায় নদীতে। তখন নায়িকা হাত মেপে কতদূরে চাবিটি পড়লো তা মাপ দিলো এবং সেখানে নৌকার উপর একটি দাগ দিয়ে দিল। পরে নদী পার হয়ে ওই প্রান্তে গেলো। মাঝি যখন টাকা চাইলো তখন নায়িকার মা বলল নদী থেকে চাবিটি নিয়ে দিতে। তখন মাঝি পানিতে নামলো এবং ছাবি খুঁজতে লাগলো। ছাবি না পেয়ে মাঝি সহকারীকেও নামানো। পরে নায়িকার মাকে জিজ্ঞেস করল ছাবটি পড়লো কোথায়, তখন সে উত্তর দিল যখন নৌকাতে উঠলো ওইখানে চাবিটি পড়ে গেল। তখন মাঝির সাথে নায়িকা এবং নায়িকার মায়ের একটি তর্ক-বিতর্ক শুরু হলো। অবশেষে নায়িকা এবং নায়িকার মা মাঝিকে টাকা না দিয়েই চলে এলো।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
তবে এই বিষয়টাও একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেল। কারণ আমি আগেই বলেছি বাস্তবতার সাথে একটু সংযোগ রাখা উচিত। যদি আবার নাটকের নামের সাথে এ কাজগুলোর কিঞ্চিত পরিমাণ মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তারপরও আমি বলব এত বেক্কল মানুষ হয় না। যাইহোক পরবর্তীতে নায়িকা এবং নায়িকার মা ঢাকা শহরে এলো। তারা জীবনের প্রথম ঢাকা শহরে এলো। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে কিছুই চিনে না তারা।
পক্ষান্তরে নায়কও জীবনের প্রথম ঢাকা শহরে এলো। নায়ক তাদের এলাকা হেঁটে হেঁটে চুরি করত। পরে ঢাকায় এসে তার এক আত্মীয়র সাথে দেখা করে। তিনি ঢাকা শহরে রিক্সা ভাড়া দেয়। সেই সুবাদে নায়ক অনুরোধ করে তাকে একটি রিকশা দেওয়ার জন্য। কিন্তু গ্রামের চাচা তাকে রিক্সা দিতে রাজি না, কারণ সে গ্রামে চুরি করত। অনেক জোরাজোরির পর একটা রিক্সা দিল। এবং তাকে কিছু উপদেশ দিল। যেহেতু ঢাকা শহরের পথঘাট সে চিনে না তাই যাত্রীরা যেখানে যেতে চায় সেখানে যাওয়ার জন্য। যাত্রীদের কাছে প্রকাশ করা যাবে না সে যে ঢাকা শহরে নতুন এসেছে এবং রাস্তাঘাট চিনে না। এই বিষয়টি ঠিক আছে আমার মতে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
নায়িকা এবং নায়িকার মা যাবে ধানমন্ডিতে তাদের আত্মীয়ের বাসা। তো রিক্সা নিবে তারা, পরে রিক্সা নিয়ে নায়ক হাজির হলো তাদের সামনে। নায়িকা এখন নায়িকা মা ঐ রিক্সাতে উঠলো। এবং তারাও বুঝতে দিচ্ছে না তারা যে ঢাকা শহরে নতুন। তখন নায়িকার মা বলে উঠলো আমি ঢাকা শহরে অসংখ্যবার এসেছি। সে সুবাদে নায়ক তাদেরকে নিয়ে ধানমন্ডির দিকে রওনা হল। কিন্তু কেউই রোডঘাট চিনে না, আবার কাউকে জিজ্ঞাসা করতেছেও না। এভাবেই সন্ধ্যা হয়ে গেল।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
পরে একসময় বিষয়গুলো নায়িকার মা উপস্থাপন করলো সে চিনে না, তখন রিক্সাচালক বলে উঠলো আমিও রাস্তাঘাট চিনি না। আমি ঢাকা শহরে নতুন এসেছি আজকেই। তখন তারা সিদ্ধান্ত নিল কারো হেল্প নেবে। তারা একটু দূর যাওয়ার পর দেখল যে, দুজন লোক রাস্তা দাঁড়িয়ে কথা বলতেছে। তখন তাদেরকে জিজ্ঞেস করল ধানমন্ডির রাস্তা কোনটি। তখন তারা পাশের একটি গ্যারেজের ঠিকানা দিল, তখন রিক্সা নিয়ে তারা সেখানে পৌঁছলো। পৌঁছার পর তাদেরকে মারধর করে রিক্সা, গয়নাগাটি এবং ব্যাগ নিয়ে গেল। তখন তারা কান্নাকাটি করতে করতে সেখানেই নাটকের পরিসমাপ্ত হলো।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
আমার ব্যক্তিগত মতামত।
নাটকটির নামের সাথে কাজের মিল রেখেছে এদিকে থেকে ঠিক আছে। তবে এ নাটকে একটু বেশি অভাব প্রদর্শনী করে ফেলল। যেমন বড়শিতে টাকা দিয়ে নদীতে পেলা, নদীতে চাবি পড়ে যাওয়া এবং নদীর বিপরীত পাশে গিয়ে মাঝিকে দিয়ে চাবি খোঁজানো। সর্বশেষ ঢাকা শহরে গিয়ে নিজে শহর চিনে বলা। যাই হোক নাম যেহেতু মা মেয়ে বেক্কল, তো নাটকের সাথে মিল পাওয়া গেল। এই সুবাদে নাটকের সার্থকতা রয়েছে। ওভারঅল নাটকটি ভালো লেগেছে, নিচে নাটকটির লিংক দিয়ে দিলাম যদি আপনাদের সময় সুযোগ হয় তাহলে অবশ্যই দেখে নেবেন।
আমার ব্যক্তিগত মতামত অনুসারে নাটকের রেটিংঃ |
---|
৭.০/১০
সমাপ্ত
ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের মত এখানে বিদায় নিচ্ছি।আগামিতে অন্য কোন নাটকের রিভিউ নিয়ে আবারও হাজির হবো। ভালো থাকবেন সবাই। আর কষ্ট করে রিভিউটি যারা পড়ছেন তাদেরকে ধন্যবাদ।
সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।( ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
https://x.com/titaherul/status/1798655191392403652?t=1aeiz0MGzyPCwhsRp6HuiQ&s=19
মা-মেয়ে দুজন তো দেখছি প্রচুর পরিমাণের বেক্কল। এরকম মানুষ হয় নাকি। এত বেশি বেক্কল হলে তো তাদের সাথে এরকম হবেই। নায়ক ঢাকা শহরে নতুন এসেছিল তাই সেও কিছু চিনতো না, আর নায়ক এর পাশাপাশি নায়িকা এবং তার মা ও কিছু চিন্তা না। তিনজনেই মহাবিপদে পড়েছিল, আর অন্যদের কাছ থেকে সাহায্য চাইতে গিয়ে আরো বড় বিপদে পড়ে গিয়েছে। একসময় তারা সবকিছুই হারায়।
মা-মেয়ে চরম পর্যায়ের বেক্কল ছিল। তবে কিছু বিষয় চরম পর্যায়ের হাসির ছিল। আবার কিছু বিষয় ওভার অভিনয় হয়ে গেলো।
বেক্কল মানুষের সাথে তো এরকমটা বেশিরভাগ সময় হয়ে থাকে। আর তেমনি মা-মেয়ে দুজনের সাথে এরকমটা হয়েছে। আর নায়কের সাথে ও ঘটলো শেষ পর্যন্ত। তারা ঢাকা শহরের কিছুই চেনে না, অথচ এমন ভাবসাব করে ছিল যেন তারা সবকিছুই চিনে। আর শেষ পর্যন্ত তারা তাদের সবকিছুই হারিয়েছে। তাদের সবকিছু হারানোর বিষয়টা দেখে খুব খারাপ লেগেছে আমার কাছে। আসলে কাউকে এখন বিশ্বাস করা যায় না, কোন কিছু জিজ্ঞেস করলে আরো বেশি বিপদে পড়া লাগে।
সবকিছু মিলিয়ে নাটকটি সুন্দর ছিল। হাসির নাটক হিসেবে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। কিন্তু বাস্তবতার সাথে কোন মিল রাখেনি।
এই ব্যাক্কল নাটকটা কিন্তু অনেক ভালো লাগে আমার। আপনি খুব সুন্দর ভাবে নাটকটা রিভি করেছেন ভাইয়া। খুবই মজার নাটক ছিল এটা। অনেক সুন্দর সুন্দর নাটক যদি কাউকে রিভিউ করতে দেখি খুবই ভালো লাগে আমার। পরবর্তী সবচাইতে এমনি আনন্দদায়ক একটা নাটক নিয়ে উপস্থিত হবেন।
নাটকটি নিয়ে আমি আমার মতামত ব্যক্ত করেছি। এ নাটকটির সফলতা ব্যর্থতা নিয়েও আলোচনা করেছি। একটি নাটকের সার্থকতা তখনই ফুটে ওঠে যখন নামের সাথে কাজের মিল থাকে।
খুব সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি৷ আমি এই নাটকটি আগে কখনো দেখিনি৷ আপনার কাছ থেকে এই প্রথম এই নাটকটি দেখতে পেলাম এবং যেভাবে আপনি এই সুন্দর নাটক শেয়ার করেছেন তা বেশ অসাধারণ হয়েছে৷ খুব সুন্দরভাবে আপনি নাটকের সবগুলো ঘটনাকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। অবশ্যই সময় করে নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব৷
যদি সময় সুযোগ থাকে তাহলে নাটকটি দেখবেন, আশা করছি মজা পাবেন। নাটকটির নামের সাথে কাজের মিল পাওয়া যায়। বেক্কল নাটকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মা-মেয়ে চরম পর্যায়ের বেক্কলের পরিচয় দিয়েছে।