★একটি মেয়ের জীবনের কাহিনী★ পর্ব:৩

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।



image.png

Link

দ্বিতীয় পর্বের লিঙ্ক:Link


আজকে আমি আবার চলে এলাম আমার লেখা গল্প একটি মেয়ের জীবনের কাহিনীর তৃতীয় পর্ব নিয়ে । আসলে আমাদের জীবনে আশেপাশে যা কিছু ঘটে থাকে তার সবকিছুই আমরা যদি গল্প আকারে প্রকাশ করি তাহলে এ লেখার কোন শেষ থাকবে না লিখে যেতে হবে । এর ভেতর থেকে কিছু কিছু গল্প আছে যা আমাদের মনকে গভীর ভাবে নাড়া দিয়ে যায় । তারই ভেতর থেকে একটি সত্য ঘটনা আমি গল্প আকারে আপনাদের সামনে তুলে ধরছি ।


গত পর্বে আমি শেষ করেছিলাম যে তরীর মা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যায় তাকে প্রথমে সিএমএইচ হসপিটালে আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয় । সেখান থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে নিয়ে যাওয়া হয় । সি এম এইচ হসপিটালে সহসা সাধারণ মানুষজন ঢুকতে পারে না । যদি নিজের কোন কাছের রিলেটিভ ডাক্তার থাকে তখনই তারা যেতে পারে । তরীদের কাছের এক রিলেটিভ ডাক্তার থাকার কারণে খুব সহজেই তারা ঢুকতে পেরেছিল এবং সিটও পেয়ে গিয়েছিল । বেশ কিছুদিন তরীর মা হসপিটালে অনেক কষ্ট করে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়লো । তারপর চার পাঁচ দিন পরে তরীর মা একেবারে মৃত্যুর দেশে পাড়ি জমালো। তরীর মা আর সেখান থেকে ফিরে আসেনি । আসলে সব মানুষের জীবনে কখন কিভাবে মৃত্যু হানা দেয় তা কেও বলতে পারেনা ।


মাকে হারিয়ে তরী এবং তরীর বাবা দুজনই একেবারে ভেঙ্গে পরল । বিশেষ করে তরীর বাবা একজন অসুস্থ মানুষ কিছুদিন আগে তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল । তার হার্টের রিং পরানো হয়েছে তরীর বাবাকে সবসময়ই দেখে শুনে রাখতে হয়েছে যে তার কখন কি হয়ে যায় । তরীর মা সবসময়ই তরীর বাবাকে নিয়েই টেনশনে থাকত । এর ভিতরে তরীর মাই তাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেল । তরী ও তার মাকে হারিয়ে একেবারে দিশেহারা অবস্থা । সে কিভাবে তার ছেলেকে বড় করবে কিভাবে তার সবকিছু চলবে সে তো কিছুই পারেনা । এভাবে চলতে লাগল তরীদের দুঃখে ভরা জীবন । তরীর বাবা পয়সাওয়ালা হওয়াতে তার কাছের লোকজন বলতে তার ভাইবোন সবাইকে প্রচুর পরিমাণে সাহায্য করত । যার কারণে সবাই তরীদেরকে সমবেদনা জানানোর জন্য তার পাশেই ছিল । এবং তরীর মা মারা যাওয়ার বেশ কয়েকটা দিন কেউ না কেউ কেউ তাদের সাথে ছিল । কিন্তু কেউ তো আর তাদের সংসার ছেড়ে থাকতে পারে না । সবাইকে যার যার সংসারে ফিরে যেতে হয়েছে । তখন তরী আর তরীর বাবাকে একাই দুঃখ কষ্টটা বইতে হয়েছে । তরী মাকে হারিয়ে তখন আর তার নিজের বাসায় ফিরে যেতে পারেনি । তাকে একেবারে পার্মানেন্টলি ভাবে তার মায়ের বাসায় চলে আসতে হয়েছে ।


তার মা এবং বাবা দুজনে মিলে তার সংসারটাকে খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে দিয়েছিল । নতুন নতুন ফার্নিচার দিয়ে তরীর সারা বাড়িটা ভরপুর ছিল । এদিকে তরীর বাবার বাসাতেও কোথাও ফার্নিচারের ফাঁকা ছিল না যার কারণে তরী তার সব ফার্নিচারগুলো আত্মীয়-স্বজনের ভেতরে বিলিয়ে দিয়েছিল । এবং এসে তার বাবার বাসায় থাকতে শুরু করে । এরপর শুরু হলো বাসায় পার্মানেন্ট কাজের লোক রাখা একটার পর একটা লোক রাখতে থাকে বাসায় । বড় মহিলা মানুষ না থাকার কারণে কাজের লোকেরা সবসময় সুযোগ সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করে থাকে । যার কারনে সেট মতো কোনো মানুষই তারা পাচ্ছিল না । এদিকে তরীর বাবাও দিনকে দিন তরীর মাকে হারিয়ে আরো বেশি অসুস্থ হতে শুরু করে । তরী তার ছোট ছেলেকে নিয়ে কিভাবে তার বাবাকে দেখে রাখবে সেটাই তার চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ালো ।


তারপরও সবকিছু মোটামুটি ভালোই চলছিল । তরীর বাবাকে সর্বক্ষণিক দেখার জন্য একজন পার্মানেন্ট লোক দরকার আর যেটা তার স্ত্রী ছাড়া অন্য কেউ করা সম্ভব হচ্ছিল না । যার কারণে আত্মীয়-স্বজনরা তরীর বাবাকে দ্বিতীয় বিয়ে দেওয়ার কথা চিন্তা করে । তরীর বাবাও সম্মতি জানিয়ে দিল সে বিয়েতে রাজি । পুরুষ মানুষরা মনে হয় এরকমই স্ত্রী মারা যাওয়ার পরেই সে নিজের একাকীত্ব ঘুচানোর জন্য অন্য মানুষের সান্নিধ্য কামনা করে । কিন্তু তরী কিছুতেই তার মায়ের জায়গা অন্য কাউকে দিতে রাজি নয় । সে তার বাবার বিয়ে কিছুতেই দিতে চাইছিল না । সেটা নিয়ে তার বাবার সাথে মনোমালিন্য হতে শুরু করে সে তার বাবার সাথে খারাপ বিহেভ করতে শুরু করে । সে বলে দেয় যে বাবা যদি দ্বিতীয় বিয়ে করে তাহলে আমি আমার স্বামী সন্তানকে নিয়ে অন্য কোথাও চলে যাব । এদিকে তরীর বাবা মেয়েকে কষ্ট দিতে চায় না কিন্তু বিয়েতেও সে অমত করছিল না । সে তরীর চোখের আড়ালে আত্মীয়-স্বজনের সম্মতিতে মেয়ে দেখতেও চেয়েছিল ।

চলবে........

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ডিভাইস– samsung Galaxy s8 plus

ধন্যবাদ

@tauhida

আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি।

logo.gif

@tauhida

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58447.11
ETH 2624.03
USDT 1.00
SBD 2.45