★একটি মেয়ের জীবনের কাহিনী★ পর্ব:২

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।



image.png

Link

প্রথম পর্বের লিঙ্ক :Link


আজকে আমি আবার নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গিয়েছি । ৩-৪ দিন আগে আমি একটি গল্প লিখেছিলাম । এই কমিউনিটিতে আসার পরে এটি আমার প্রথম গল্প লেখা । গল্প বললে ভুল হবে আসলে এটি সত্য কাহিনী অবলম্বনে লেখা একটি গল্প । এখানে সবাই অনেক সুন্দর সুন্দর গল্প লেখে তার ভেতরে সত্য কাহিনী নিয়ে অনেকে অনেক কিছু লিখে সেগুলো পড়তে আমার কাছেই ভালো লাগে । সবারটা দেখে আমিও অনুপ্রাণিত হয়ে কিছু একটা লিখতে চলে এসেছি । আমাদের আশেপাশের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে আমরা যদি একটু খেয়াল করে দেখি বা বোঝার চেষ্টা করি তাহলেই সেটা একটি গল্প আকারে তুলে ধরা যায় । এমন একটি কাহিনী নিয়ে আজকে আবার আমি তার দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে চলে আসলাম ।


প্রথম পর্ব শেষ করেছিলাম যে তরী তার বাচ্চাটাকে আর পৃথিবীর মুখ দেখাতে পারিনি । তার আগেই বাচ্চাটা দুনিয়া থেকে চলে গিয়েছে । সন্তানের সন্তান হারানোর দুঃখে তরীর বাবা মা অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছিল । আস্তে আস্তে তারা সুস্থ হয়ে ওঠে এবং আবার সবাই সবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে । এভাবেই চলতে থাকে তাদের সংসার । দেখতে দেখতে মাঝখানে আরো বেশ খানিকটা সময় পার হয়ে যায় ।তরীকে আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে ট্রিটমেন্ট করানো হয় এবং তরী পুনরায় আবার প্রেগনেন্ট হয় । আবার বাচ্চা জন্ম দেওয়ার সময় হয় । বাচ্চা জন্ম দেওয়ার আগেই তরী হসপিটালে গিয়ে ভর্তি হয়ে যায় । তারপর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় । প্রথম বাচ্চাটা যেহেতু নষ্ট হয়ে গিয়েছে সেই কারণে তারা আর ডেট পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আগেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সিজার করার সিদ্ধান্ত নেয় । যথারীতি তরী একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেয় ।


এই সন্তান জন্মের পরই অনেক বেশি অসুস্থ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে । জন্ডিস, শ্বাসকষ্ট এবং মাতৃত্বজনিত আরো বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সে পৃথিবীতে আসে । দ্রুত ইনকিউবেটরে রাখার ব্যবস্থা করা হয় ভালো চিকিৎসার জন্য । তাকে অন্য ভালো হাসপাতালে রাখার ব্যবস্থা করা হয় । একদিকে তৈরি এবং একদিকে অন্য হসপিটালে তার বাচ্চা সুস্থ হতে থাকে । এক মাসের উপরে বাচ্চাটাকে হাসপাতালে থাকতে হয় । এদিকে তরী সুস্থ হয়ে আগেই বাড়ি চলে গিয়েছে । আর নিয়মিত গিয়ে গিয়ে তার বাচ্চাটাকে দেখে আসতে হয় এবং তাকে তার বুকের দুধ দিতে হয় । দুধ খাওয়াতো নলের মাধ্যমে ।ইনকিউবেটরের ভিতরেই ছিল বাইরে থেকে খাবারটা ভেতরে প্রবেশ করানো হতো । ওখানে থাকতে থাকতে বাচ্চাটা পুরোপুরি কুচকুচে কালো হয়ে গিয়েছিল । তার ওপরটা অনেকটাই পুড়ে গিয়েছিল এরকম একটা অবস্থা হয়েছিল ।


এরপর আরো বেশ কিছুদিন থাকার পরে কিছুটা সুস্থ হয় পরে সেখান থেকে বের করে নরমাল ওয়ার্ডে দেওয়া হয় এবং আস্তে আস্তে বাচ্চাটা সুস্থ হয়ে ওঠে । তারপর তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় । বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরে বিশাল ধুমধাম করে বাচ্চার অনুষ্ঠান করা হয় এবং বাচ্চাটাকে অনেক বেশি যত্নের সাথে তারা বড় করতে থাকে । সে অনেকটাই সুস্থ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে তরীর মাই বাচ্চাটাকে লালন পালন করে । তরী তখন উপর থেকে নিচে পুরোপুরি বাচ্চাটাকে নিয়ে শিফট হয় যতদিন না বাচ্চাটা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠে । বড় না হওয়া পর্যন্ত তরী তার মায়ের কাছেই থাকে । তার বাসায় থাকার যাবতীয় ব্যবস্থা সুন্দরভাবে করে দেওয়া হয় তার হাজবেন্ডও তার সাথেই থাকে । যদিও উপর থেকে নিচে তাদের কোন প্রবলেম হত না তারপরও সে তার মায়ের কাছে থাকে । তার মা সন্তানের যাবতীয় দেখভাল করতে থাকে । তরীর এমনিতেই বয়স কম আর সেরকম ভাবে বাচ্চা পালন করতে পারেনা এজন্য তরীর মা সব কিছু করছিল ।


দেখতে দেখতে ছেলেটা প্রায় বছর দেরেক বয়স হয় ।এর ভিতর মাঝে অনেকটা সময়ই চলে যায় । হঠাৎ করে একদিন তরীর মা অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে । আমি একদিন ফেসবুক ঘাটতে ঘাটতে দেখি যে তরীর মা সি এম এইচ হসপিটালে ভর্তি হয়েছে এবং একেবারে লাইভ সাপোর্টে চলে গিয়েছে । সেটা দেখে তো আমি একেবারে অবাক হয়ে গিয়েছি সুস্থ মানুষ হঠাৎ করে কি হলো । আমি সাথে সাথে ওদের এক রিলেটিভ এর কাছে ফোন দিয়ে জানতে পারি যে বেশ কিছুদিন ধরে উনি জ্বর নিয়ে ভুগছিলেন । তার ডায়াবেটিসহ আরো নানা ধরনের জটিলতা ছিল এই কারণে জ্বর বেশিদিন হয়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হসপিটালে ভর্তি করা হয় । ডাক্তাররা তাকে পরীক্ষা পরীক্ষা করে দেখে তার ডেঙ্গু হয়েছিল কদিন আগে এবং সময় মত ডাক্তারের কাছে না আনার কারণে এবং টেস্ট করে না দেখার কারণে সেটা চরম পর্যায়ে চলে গিয়েছে ।

চলবে............

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ফটোগ্রাফার@tauhida
ডিভাইসsamsung Galaxy s8 plus

ধন্যবাদ

@tauhida

আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি।

logo.gif

@tauhida

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

Sort:  
 last year 

ইস সবকিছু তো বেশ ভালোই চলছিল হঠাৎ করে তরীর মা অসুস্থ হয়ে মনে হচ্ছে সব কিছু অন্যরকম হয়ে গেল । আসলে সংসারে মায়ের কিছু হলে পুরো সংসারটাই এলোমেলো হয়ে যায়। গল্পটা বেশ ভালই লাগছে ।পরবর্তী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম ধন্যবাদ।।

 last year 

একদম ঠিক বলেছেন আপু বাবা-মা অসুস্থ হলে আসলেই পুরো সংসারটাই এলোমেলো হয়ে যায় ।

 last year 

একটা মেয়ের জীবনের কাহিনী গল্পটার প্রথম পর্ব আমার পড়া হয়েছিল। যদিও আজকের দ্বিতীয় পর্ব পড়ে কিছুটা ভালো লেগেছিল, তবে তরীর মায়ের কথা শুনে খুব খারাপ লেগেছে। তরীর মা তরীর ছেলেকে দেখাশোনা করেছে। শেষ পর্যন্ত তিনি নিজে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। ওনার এরকম পরিস্থিতির কথা শুনে সত্যি খুব খারাপ লেগেছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্ব শেয়ার করবেন আমাদের সবার মাঝে।

 last year 

একটা ফ্যামিলিতে আসলে এ ধরনের পরিস্থিতি ঘটলো সত্যি খুব খারাপ লাগে । ধন্যবাদ আপু আমার পোষ্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ।

 last year 

তরীর প্রথম সন্তানের মৃত্যুর কথা শুনে অনেক খারাপ লেগেছিল। তবে পরবর্তীতে সে আবার গর্ভবতী হয়ে একটা ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছিল এটা জেনে ভালো লেগেছে। কিন্তু তার অসুস্থতার কথা শুনে খুবই খারাপ লাগলো। যদিও সে সুস্থ হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীতে তার দাদু অসুস্থ হয়ে গিয়েছে। তরীর মা তরীর ছেলেকে লালনপালন করে আসছিলেন, কিন্তু তিনি অসুস্থ হয়ে গিয়েছে শেষ পর্যন্ত তাও গভীরভাবে। পরবর্তীতে কি হলো তা জানার অপেক্ষায় থাকলাম।

 last year 

ওর ছেলেটি প্রথম দিকে অসুস্থ ছিল পরে আস্তে আস্তে সুস্থ হয়েছে । কিন্তু ওর মা এতটাই অসুস্থ হয়ে গিয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66914.48
ETH 3341.32
USDT 1.00
SBD 2.72