★টমেটো ও আলু দিয়ে মাগুর মাছের রেসিপি★
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজ আমি আপনাদের সামনে আবার একটি মজাদার রেসিপি নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম। মজার মজার রেসিপি পোস্টগুলো নিয়ে হাজির হতে আমার কাছে খুব ভালো লাগে এজন্য আমি সবসময় চেষ্টা করি রেসিপি পোস্টগুলো বেশি করার। আজকে আমি আলু ও টমেটো দিয়ে মজাদার মাগুর মাছের রেসিপি তৈরি করেছি। খাবারটি খেতে খুবই মজাদার হয়েছিল। এভাবে করে যে কোন মাছ রান্না করলে খেতে খুব ভালো লাগে। আর আলু আমার সবচেয়ে পছন্দের একটি তরকারি এজন্য আমি চেষ্টা করি সব ধরনের মাছের ভিতরে আলু ব্যবহার করতে। আলু ছাড়া যেন আমার মাছের তরকারির পরিপূর্ণতা পায় না। মাগুর মাছ আর শিং মাছ আমার কাছে দুটো প্রায় একই রকমই দেখতে লাগে। আমি বেশিরভাগ সময় বুঝতে পারি না কোনটা কি মাছ। এই জন্য আমার হাজব্যান্ড বাজার থেকে মাছ এনে আমার কাছে দিয়েছে সে বলেছিল যে এটা মাগুর মাছ। কিন্তু আমার মনে ছিল না আমি ওভাবে ফ্রিজে রেখে দিয়েছি। পরের দিন যখন সকাল ভোরবেলা কাজের মেয়েটা আসে তখন আমি ঘুমায় ঘুমায় মাছগুলো বের করে ওকে কাটতে দিয়ে বলি যে এগুলো শিং মাছ ভালো করে কেটে পরিষ্কার করে রাখ। এটা বলে আমি আবার ঘুমিয়ে পড়ি। তখন ও মাছগুলো কেটে অনেক সময় ধরে মাছগুলো ঘষে ঘষে মাছের উপরের কালতা উঠানোর চেষ্টা করেছে উঠাতে পারেনি। বলে যে আমার হাত ব্যথা হয়ে গিয়েছে কিন্তু উঠাতে পারি না। পরে আমি জানলাম যে ওগুলো ছিল মাগুর মাছ শিং মাছ না। পরে মেয়েটা যখন জানতে পারে তখন বলে যে এজন্য তো ঘষতে ঘষতে লাল হয়ে গিয়েছে কিন্তু উপরের কালোটা কিছুতেই উঠেনি শুধু শুধু আমি কষ্ট করেছি। যাই হোক এখন আমি আমার রেসিপির মূল পর্বে চলে যাচ্ছি।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
টমেটো
আলু
পেঁয়াজ
মরিচ
পেঁয়াজ বাটা
আদা বাটা
রসুন বাটা
হলুদের গুঁড়া
মরিচের গুঁড়া
জিরার গুঁড়া
ধনিয়া পাতা
লবন
তেল
কার্যপ্রণালী
![]() | ![]() |
---|
![]() | ![]() |
---|
প্রথমে আলুগুলো কেটে ধুয়ে নিয়েছি এবং মাছগুলো কেটে পরিষ্কার করে নিয়েছি। তারপর চুলায় একটি করাই বসিয়ে তার ভেতরে তেল দিয়ে দিয়েছি এবং তেল গরম হয়ে গেলে তার ভিতরে আলুগুলো দিয়ে বাদামি করে ভেজে নিয়েছি।
![]() | ![]() |
---|
![]() | ![]() |
---|
এরপর আলুগুলো একটি বাটিতে তুলে রেখেছি। তারপর ওই তেলের ভিতরে কেটে রাখা পেঁয়াজ ও মরিচ দিয়ে দিয়েছি। পেঁয়াজ মরিচ দিয়ে বাদামি করে ভেজে নিয়ে তার ভিতরে পেঁয়াজ বাটা, আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদের গুঁড়া, মরিচের গুড়া ও লবণ দিয়ে দিয়েছি।
![]() | ![]() |
---|
![]() | ![]() |
---|
সবকিছু দিয়ে মশলাটাকে নেড়ে চেড়ে কিছু সময় কষিয়ে নিয়েছি। তারপর টমেটোগুলো দিয়ে দিয়েছি। টমেটোগুলো দিয়ে মসলার সাথে নেড়ে চেড়ে একটু সময় পরে হালকা একটু পানি দিয়ে তারপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিয়েছি টমেটো গুলো ভালোভাবে সিদ্ধ হওয়ার জন্য।
![]() | ![]() |
---|
![]() | ![]() |
---|
এরপর টমেটো গুলো সিদ্ধ হয়ে গেলে তার ভিতরে মাছগুলো দিয়ে দিয়েছি। মাছগুলো নেড়েচেড়ে মসলার সাথে কিছু সময় রান্না করে নিয়েছি। একটু পানি দিয়ে নেটেচেড়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিয়েছি মাছগুলো ভালো মতো কষানোর জন্য। এরপর মাছগুলো কষানো হয়ে গেলে পানিটা যখন একটু টেনে আসবে তার ভেতরে আলুগুলো দিয়ে দিয়েছি।
![]() | ![]() |
---|
![]() | ![]() |
---|
এরপর আলুগুলো দিয়ে আরো কিছু সময় মসলার সাথে রান্না করে নিয়ে তারপর মাছ রান্না জন্য বেশি করে পানি দিয়ে দিয়েছি। আমি সবসময় তরকারিতে একটু ঝোল রাখতে পছন্দ করি এ জন্য পানিটা একটু বেশি দেই তারপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিয়েছি। ঢাকনা খোলার পরে পানিটা যখন অনেকটাই কমে আসবে তখন তার ভিতরে ধনিয়ার পাতা ও জিরার গুঁড়ো দিয়ে আরো কিছু সময় জাল করে নিয়েছি।
![]() | ![]() |
---|
এরপর রান্নাটা হয়ে গিয়েছে চুলা বন্ধ করে দিয়েছি। এরপর একটা বাটিতে তুলে নিয়েছি গরম গরম পরিবেশন করার জন্য। খেতে খুবই মজাদার হয়েছিল আমার মাগুর মাছের তরকারিটি।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
আলু টমেটো এবং মাছ আমার খুবই প্রিয় একটি খাবার। আবার এই মাছ যদি সাধারণ মাছ না হয়ে যদি মাগুর মাছ হয় তাহলে তো খাস হাতটা একটু বেশি বেড়ে যায়। শীতে শত সবজির মধ্যে টমেটো মাছের সবজি রান্নাটি আমার খুবই ভালো লাগে। আপনি খুব সুন্দরভাবে রান্না গুলো করেছেন এবং ধাপে ধাপে আমাদেরকে দেখিয়েছেন খুব সুন্দর বিবরণও দিয়েছেন আপনাকে ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
টমেটো দিয়ে যেকোনো মাছই রান্না করলে খেতে ভালই লাগে আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু অনেক দিন হয়ে গেলো মাগুর মাছ খাওয়া হয়না। আমাদের এখানে মাগুর মাছটি কম পাওয়া যায়। টমেটো ও আলু দিয়ে মাগুর মাছের রেসিপি দেখে ভালো লাগলো। আপনার রেসিপি পোস্ট গুলো সব সময়ই দারুন হয়। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
মাগুর মাছ আমারও অনেক পছন্দ এই মাছটা অনেক বেশি পরিমাণে খেয়ে থাকি ভালই লাগে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য দেওয়ার জন্য।
আপনিও তাহলে আমার মত আলু পাগল 😜
আমিও আম্মুকে সবসময় বলি যে রেসিপি তৈরি করো তার মধ্যে অবশ্যই আরো দিবে। আম্মু সাধারণত মাগুর মাছ রান্না করলে মাগুর মাছগুলো হালকা তেলে ভেজে নেয় তবে আপনি কাঁচা মাগুর মাছ সরাসরি মসলার মধ্য দিয়ে একটু কষিয়ে নিয়েছেন। পরিবেশন করা রেসিপির ছবি দেখে তো বেশ লোভনীয় মনে হচ্ছে।
আলু পাগল মানে একদিনও আলু ছাড়া আমার চলে না। আলু যে কোন তরকারিতে দিতেই হবে ধন্যবাদ আপনাকে।
শিং মাছের উপরের অংশ ঘষলে কালো উঠে যায়। কিন্তু মাগুর মাছের ক্ষেত্রে সেটা উঠে না আপু। তাইতো অনেকক্ষণ চেষ্টা করার পরেও তুলতে পারেনি। তবে আলু দিয়ে যেকোনো মাছ রান্না করলে খেতে ভালো লাগে। শীতের সময় আলু টমেটো দিয়ে মাছ রান্না করলে ভীষণ মজার হয়। আসলে শিং মাছ আর মাগুর মাছ দেখতে প্রায় একই রকমের। কিন্তু শিং মাছ গুলো সাইজে একটু ছোট হয়।
হ্যাঁ আপু শিং মাছ যেমন সাদা হয়ে যায় মাগুর মাছ শত ঘষলেও কিছুই হয় না। আমি যে এটাকে শিং মাছ মনে করেই ঘষিয়ে ছিলাম কিন্তু কাজ হয়নি। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করে করার জন্য।
আলু তো বলা যায় প্রধান তরকারি ৷ কারন আলু বিহীন কোনো তরকারি জমে না যেটা আমার কাছেও মনে হয় ৷ যা হোক আপনি শিং আর মাগুর চিনতে পারেন না ৷ তবে আপনার রেসেপি তে মাছটি মাগুর ৷ মাগুর মাছ বেশ কালো ৷ আর তাই হাত ব্যাথা করেছে ৷
যা হোক আলু দিয়ে বেশ সুন্দর করে রেসিপি টি করেছেন ৷ নিশ্চয়ই অনেক সুস্বাদু হয়েছে ৷ ধন্যবাদ সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য ৷
একদম ঠিক বলেছেন আলু ছাড়া যেন তরকারি প্রাণ পায় না, একদম আমার মনের কথা বলেছেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ।
আসলেই আপু মজাদার একটি রেসিপি তৈরি করেছেন ৷ টমেটো ও আলু দিয়ে মাগুর মাছের রেসিপি খুবই সুন্দর হয়েছে ৷ তবে আপনার মতো আমিও কিন্তু আলু অনেক পছন্দ করি ৷ যদিও অনেক দিন হলো মাগুর মাছ খাওয়া হয় না ৷ তবে আপনার রেসিপি দেখতে বেশ লোভনীয় হয়েছে ৷ ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর এবং মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য ৷
আমার রেসিপিটি যেমন লোভনীয় লাগছে খেতেও কিন্তু ভালোই হয়েছিল। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
শীতের মৌসুমে রেসিপি তৈরির জন্য সেরা সবজি হল আলু এবং টমেটো। যেটা তরকারি স্বাদ অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। আপনি আজকে দারুন একটা রেসিপি করেছেন। অনেকদিন যাবত মাগুর মাছ খাওয়া হয় না আমার কাছে মাগুর মাছের স্বাদটা ভালই লাগে। তাছাড়া মাগুর মাছ নিয়ে যে ঘটনাটি ঘটেছে সত্যিই হাসলাম। অনেকে আছে এরকম মাছের নাম বা একই রকম দেখতে তারা বুঝতে পারে না এটা কি মাছ ।যাইহোক, কাজের মেয়েকে ভালোই কষ্ট করাইছেন দেখছি মাগুর মাছের চামড়া যে কালা সেটা উঠানো কোনভাবেই সম্ভব না।
ঠিকই বলেছেন ভাইয়া পরে আমার নিজের কাছেই খারাপ লেগেছে যে শীতের ভিতরে কত কষ্ট করল মেয়েটা। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
আসলে শীতকালীন রেসিপির মধ্যে আলু টমেটো এবং ধনিয়া পাতা না দিলে যেন রেসিপি এর পূর্ণতা পায় না।
মাগুর মাছের অনেক লোভনীয় একটি রেসিপি প্রস্তুত করেছেন রেসিপিটি দেখেই জিভে জল চলে আসলো খেতে নিশ্চয়ই খুব মজাদার হবে।।
একদম ঠিক বলেছেন অন্যান্য জিনিস যেমন তেমন ধনেপাতা না দিলে যেন পূর্ণতা পায়ই না। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম।
টমেটো ও আলু দিয়ে মাগুর মাছের রেসিপি টা দেখতে দারুন লাগছে আপু। আসলে যে কোন ধরনের রেসিপি মধ্যে টমেটো 🍅 দিলে অনেক ভালো লাগে। শীতের সময়ে টমেটো সবজি খেতে অনেক সুস্বাদু লাগে। অনেকেই এই মাগুর মাছ খেতে পছন্দ করে না। কিন্তু আমার কাছে মোটামুটি ভালো লাগে।
ঠিকই বলেছেন শীতের সময় টমেটোতে অন্যরকম একটি স্বাদ পাওয়া যায় জন্য সময় টমেটোতে পাওয়া যায় না। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।