"পৌষ সংক্রান্তিতে সন্ধ্যায় মায়ের হাতে পিঠা তৈরি"

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। গতকাল ছিল পৌষ সংক্রান্তি। বাঙালি সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ দিন।বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিন এই উৎসব পালন করা করা হয়।এই দিনে বাঙালিরা বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তার মধ্যে পিঠা খাওয়া ও ঘুড়ি উড়ানো অন্যতম। এই দিনে সবাইকে পিঠে পুলি ও মিষ্টিমুখ করানো হয় একে অপরকে।

নতুন ফসল তোলার উৎসব পালন করা হয় এই দিনে।এই সংক্রান্তিকে নতুন ফসলের মৌসুমের প্রথম দিন এবং শীতকালে শেষ দিন বলে মনে করা হয়।এই দিনে দক্ষিণ শেষে সূর্যের উত্তরায়ন পালিত হয় ঘরে ঘরে। গ্রামে আমাদের বাড়িতে এই দিনে পূজা ও পিঠা বানানোর ধুম পড়ে যায়। আমার মা, ঠাকুরমা ও কাকিমারা সকাল থেকে পিঠা বানানোর কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়তো। প্রায় সব বাড়ীতে পিঠা বানানোর তোর জোর শুরু হয়ে যেত। অনেকে আবার পৌষ সংক্রান্তির দুই দিন আগে থেকে চালের গুঁড়ো করা শুরু হয়ে যেত। সেসব এখন শহর অঞ্চলে দেখা যায় না। আগের মা, কাকিমা ,ঠাকুরমা ও দীদারা কত রকমের পিঠা তৈরি করতো। আমার ঠাকুরমা পৌষ সংক্রান্তির দুই দিন আগের থেকে পিঠা বানানো শুরু করতো। কারণ আমাদের বাড়ির সবাই পিঠা খেতে খুব পছন্দ করতো। তখন আমার বয়স বয়স ছিল ৮ বছর। আমার মা কে ও পিঠা বানানো শিখিয়ে ছিলো।

IMG_20220115_102414.jpg

IMG_20220115_102230.jpg

আমি খুব একটা পিঠা তৈরি করতে পারি না। শুধু খেতে পারি। তবে চেষ্টা করলে পারি কিন্তু খুব ভালো হয় না। তবে মা যখন আছে তাহলে আমি কেনো করবো। আর মায়ের হাতের পিঠার স্বাদ অন্যরকম। গ্রামে থাকতে প্রায়ই মা পিঠা তৈরি করতো। কিন্তু চলে আসার পর থেকে তেমন পিঠা আর খাওয়া হয় না। আর অনেক বছর হয়ে গেলো গ্রামে যেতে পারি না।

তাই কাল মা বললো আমি পিঠা তৈরি করবো। আর এই পৌষ সংক্রান্তিতে পিঠা তৈরি না করলে হয়। মা সকাল থেকে চালের গুঁড়ো তৈরি করলো। তারপর বিকাল থেকে পিঠা তৈরি করা শুরু করে দিলো। আমরা যে পিঠা গুলো বেশি পছন্দ করি সেই গুলো আগে তৈরি করলো।

IMG_20220115_101934.jpg

IMG_20220115_101644.jpg

IMG_20220114_203649.jpg
মা প্রায় রাত ৩ টা পর্যন্ত তৈরি করেছিলো। এই পিঠা গুলো আমার পছন্দ । আর অনেক কয়েক প্রকার পিঠার ছবি করতে পারি নি।তাই সে গুলো শেয়ার করতে পারিনি। আমি কাল শুধু মায়ের সহকারী হিসেবে কাজ করেছি এবং শুধু খেয়েছি।আর সেই অনেক বছর বাদে আবার সেই পুরনো দিনের স্বাদ। আমি আগে যেমন মায়ের পাশে বসে পিঠা খেতাম। তাই কাল সেই দিন গুলোর কথা খুব মনে পড়ছিল।তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে একটু শেয়ার করি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। কাল নতুন আর একটি বিষয় নিয়ে আসবো। কাল আমার জীবনের একটি স্পেশাল দিন। তাই আজ সন্ধ্যা থেকে একটু কাল সারাদিন ব্যস্ত থাকবো। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।

Sort:  

|পৌষ সংক্রান্তির দিনে মায়ের হাতে বানানো পিঠা 😍। তাও আবার নিজেদের পছন্দের পিঠাগুলো । দিদি আপনার মায়ের হাতে বানানো প্রত্যেকটি পিঠা আমার খুব পছন্দের । শীতের দিনে পিঠা শব্দ শুনলেই খেতে ইচ্ছা করে । তার মধ্যে এত সুন্দর ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন সত্যিই খুব লোভ হচ্ছে 😋।|

 3 years ago 

আপনাদের এই পৌষ সংক্রান্তি উৎসব টা আমার কাছে দারুণ লাগে। এই উৎসবে আপনারা ঘুড়ি উড়ান। আকাশে ঘুড়ি ছাড়া আর কিছু দেখাই যেন যায়না। এবং আমি ঘুড়ি উড়াতে খুবই ভালো পারি। এবং যে খাবার পিঠা পুলি দিয়েছেন দেখে তো নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছি না। অসাধারণ ছিল।

ওয়াও কি বলবো আপু পিঠা দেখে বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। সব রকম পিঠা চোখের সামনে দেখলেই খেতে ইচ্ছে করে। আসলে শীতকাল আসলেই চারিদিকে পিঠার শোরগোল পড়ে যায়। আমিও মায়ের বানানো পিঠাগুলো মায়ের পাশে বসেই খেতাম। আর মা আমাকে একা করে পিঠা ভেজে দিত। পুরনো স্মৃতিগুলো মনে পড়লেই অনেক আনন্দ লাগে। ধন্যবাদ আপু অতীতের স্মৃতিগুলো মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।

 3 years ago 

প্রথমেই আপনাকে পৌষ সংক্রান্তির শুভেচ্ছা জানাই। পৌষ পার্বণে বাঙালির ঘরে পিঠা হবেনা এটা ভাবাই যায় না। প্রত্যেকটা পিঠা খুব লোভনীয় লাগছে। তার সাথে পাটিসাপটা আর চিতই পিঠা আমার খুব পছন্দের, আমি পিঠা খেতে খুব ভালোবাসি। আমাদের বাড়িতেও কালকে এইসব পিঠা হয়েছিল শুধু মালপোয়া ছাড়া। হ্যাঁ দিদি আপনি একদম ঠিকই বলেছেন মায়ের হাতের পিঠা স্বাদ একদম অন্যরকম। অনেক ধন্যবাদ দিদি এত সুন্দর সুন্দর পিঠা তৈরি করে আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য। অনেক ভালোবাসা রইলো আর স্পেশাল দিনের অপেক্ষায় রইলাম।

 3 years ago 

দিদি বাড়িতে তো দেখছি অনেক রকমের পিঠা তৈরি হয়েছে 🥰🥰🥰। সত্যি বলতে এই পৌষ সংক্রান্তিতে বাড়িতে পিঠে তৈরি না হলে কেমন একটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে। আর মাসিমা পিঠা তৈরি করতে যে কতটা এক্সপার্ট সেগুলো পিঠার ছবি দেখলেই বোঝা যাচ্ছে 👌। আমি নিজেও একটু একটু চেষ্টা করেছি তবে এখনো পোস্ট করিনি। করবো খুব তাড়াতাড়ি।

 3 years ago 

শীতকালে চারপাশে পিঠা তৈরীর উৎসব শুরু হয়। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে শীতের মৌসুম শুরুর সাথে সাথে পিঠা তৈরীর মৌসুম শুরু হয়। যখন পিঠা তৈরীর মৌসুম শুরু হয় তখন চারপাশে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। ঘরে ঘরে শুরু হয় নতুন পিঠা তৈরীর উৎসব। দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক সুন্দর করে এই মজাদার সব পিঠাগুলো তৈরি করা হয়েছে। সত্যি কথা বলতে পিঠা গুলো দেখতে খুবই লোভনীয় লাগছে। পিঠা গুলো দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে।

 3 years ago 

qjrE4yyfw5pQYiuVvgYiUBP16WHGGN7UNn1BCdGdZ7Pqt5ejdN1pYbiJfffmPVftKx1q8cCb7trUUADfNgwYFsycRxJvEsXJExW1bpGp6x1qM8sd6JphbiMk.png

বৌদি পিঠার সমারোহ দেখে একটু ভালো লাগল যদি খেয়ে দেখতে পারতাম তাহলে অনেক বেশী ভালো লাগত,প্রথম এবং দ্বিতীয় ছবির পিঠা গুলো খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।আমাদের গ্রামে প্রথম পিঠার নাম পাটিসাপটা দ্বিতীয়টার না বরা পিঠা। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

qjrE4yyfw5pQYiuVvgYiUBP16WHGGN7UNn1BCdGdZ7Pqt5ejdN1pYbiJfffmPVftKx1q8cCb7trUUADfNgwYFsycRxJvEsXJExW1bpGp6x1qM8sd6JphbiMk.png

 3 years ago 

হ্যাঁ বৌদি আপনি ঠিকই বলেছেন, শীতের শুরু এবং শেষ ফিটার ধুম পড়ে যায়। আর আপনাদের পুজোয় পিঠা উৎসব সেটা অবশ্য আমি জানতাম না। আজকে আপনার থেকে জেনে নিলাম, কারণ আপনাদের তো অনেক ধরনের উৎসব হয়। তবে আপনার সোনালী অতীত মনে করিয়ে দিল আমার অতীতের কথা। হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন মা কাকিমা জেঠিমা ফুপি উনারা সবাই কত ধরনের পিঠা যে বানায় তা হিসাব ছাড়া। এখন অনেকটা কমে গেছে, তবুও মাঝে মাঝে গ্রামে দেখা যায় যে শীতের সময় পিঠার ধুম পড়ে যায়। সেজন্য সবাই কমবেশি পিঠা খেতে পছন্দ করে। আপনি আপনার আম্মু যখন আছে আপনার কোনো চিন্তা বা টেনশন নেই। আপনার আম্মু অনেক সুন্দর সুন্দর পিঠা বানিয়েছে এবং সেগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন এবং অনেক সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন। এত সুন্দর পিঠা রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ বৌদি।

শীতকালে এত পিঠা রেসিপি যদি সামনে নিয়ে আসেন তাহলে তো লোভ সামনে রাখা যায় না বৌদি। আমার সব পিঠাই খুবই পছন্দের কিন্তু তেলের পিঠা এটা আমার বেশি পছন্দের। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল যে এত মজার মজার কিছু পিঠা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।

 3 years ago 

আমার ঠাকুরমা পৌষ সংক্রান্তির দুই দিন আগের থেকে পিঠা বানানো শুরু করতো।

বাপরে বৌদি!এতো পিঠা বানানো হতো এটা তো বিশ্বাস করতেই পারছিনা।
মায়ের হাতের পিঠার তুলনাই হয়না।
বৌদি প্রতিটি পিঠা দেখে জাস্ট লোভ লেগে যাচ্ছে।কবে যে আপনার বাড়ি যাবো আর আপনি খাওয়াবেন সেই অপেক্ষায় আছি আমি।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58503.45
ETH 2594.59
USDT 1.00
SBD 2.45