চা খেতে গিয়ে গরম গরম রসগোল্লা খাওয়ার আনন্দsteemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন।সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি। আজ অনেকদিন পর আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। যতই ভাবি নিয়মিত থাকবো। কিন্তু হয়ে উঠছে না। বাবু স্কুলে যাওয়ার পর থেকেই যেন ব্যাস্ততা যেন বেড়েই চলেছে। শত ব্যস্ততার মাঝেও একটু আধটু ঘুরতে বেরোনো হয়। আসলে মাঝে মধ্যে ঘুরতে না গেলে জীবনটা এক ঘেয়েমি হয়ে যায়।তাই একটু সময় করে মাঝে মধ্যে ঘুরতে যাওয়া হয়। প্রায় মাস খানেক আগে আপনাদের দাদাকে বলছিলাম একটু গঙ্গার ঘাটে যাবে ঘুরতে। আসলে নদী, পাহাড়, সমুদ্র আমার খুবই ভালো লাগে। আর আমার নদীর কাছে বসে থাকতে বেশ ভালো লাগে। তাই মাঝে মধ্যে গঙ্গার ঘাটে ঘুরতে যাই।কিন্তু আপনার দাদার সময় হচ্ছিলো না। তবে একটু সময় বের করে গত সপ্তাহে বললো চলো তোমাকে গরম গরম রসগোল্লা খাইয়ে নিয়ে আছি আর তোমার পছন্দের জায়গা গঙ্গার ঘাটে ও ঘুড়িয়ে নিয়ে আছি।শুনে তো আমি খুবই আগ্রহী হয়ে উঠেছিলাম। কারণ গরম গরম রসগোল্লা যা আমি কোনদিন খাইনি আবার গঙ্গার ঘাটে যেতে পারবো। আসলে মিষ্টি খেতে আমি খুবই ভালবাসি। রসগোল্লার প্রতি আমার একটু দুর্বলতা আছে বরাবরই।

IMG_20230812_191335.jpg

IMG_20230812_191248.jpg

IMG_20230812_191310.jpg

আমি কয়েকবার বাড়ীতে রসগোল্লা তৈরী করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোন বার ঠিকভাবে হয়নি। এদিকে সবাইকে দেখি রসগোল্লা তৈরী করে ফেসবুক ও ইউটিউবে দেয়। এমনকি আমার বড় জা সে ও বিভিন্ন ধরনের রসগোল্লা তৈরী করতে পারে। শুধু আমি পারি না। বেশ কয়েকদিন ধরে অনেক দুধ ও নষ্ঠ করেছি। কিন্তু আমি রসগোল্লা তৈরী করতে পারিনি। তাই রাগ ছেড়েই দিয়েছি মিষ্টি বানানো। তাই আমার বহুদিন ধরে ভাবছিলাম রসগোল্লা তৈরী দেখবো। কিন্তু সেরকম কোন সুযোগ হচ্ছিলো না। তাই নিলয় একদিন বললো বৌদি আমার শ্বশুর বাড়ির কাছে মিষ্টি তৈরি করে সেখান থেকে তোমাকে গরম গরম রসগোল্লা খাওয়াবো আর তুমি তৈরি করা দেখতে ও পারবে। তাই আমরা বিকাল ৪ টার দিকে বেরিয়ে পড়লাম। সেই মিষ্টির দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখলো তারা ৯ টার পর মিষ্টি তৈরি করবে। তবে নিলয় আমাদের কথা বলাতে তারা রাত ৮ টার দিকে বানাতে চাইলো। ঠিক তখন আপনাদের দাদা চলো আগে একটু চা খেয়ে তারপর গঙ্গার ঘাটে যাবো আর সেখান থেকে ফেরার পথে আমরা রসগোল্লা তৈরী করা দেখে আসবো। আমি ও চা খাওয়ার কথা শুনে ভালো লাগলো। কারণ নিলয়ের শ্বশুর বাড়ির কাছে এর আগে বেশ কয়েক বার চা খেতে গিয়েছি। বেশ ভালো স্বাদের চা তৈরি করে।আর বিভিন্ন ধরনের চা পাওয়া যায় সেখানে।তবে আমার মালাই কেশর চা খুবই পছন্দের। ওই চা খাওয়ার লোভে অনেকবার যাওয়া হয়। আমরা চা এর দোকানে গিয়ে সবার জন্য চা অর্ডার করে দিলাম। চা আসতে একটু সময় লাগছে কিন্তু নিরিবিলি বসে থাকতে ইচ্ছা করে না। তাই ফোনটা বের করে ছবি তুলতে শুরু করে দিলাম।

IMG_20230812_191352.jpg

IMG_20230812_185431.jpg

আসলে আমাদের এখন এমন হয়েছে একটু সময় পেলেই ফোন চাপাচাপি শুরু করে দেই।এমনকি কোথাও ঘুরতে গিয়ে ও ফোন চালাই আর গল্প করি। মোট কথা আমরা ফোনটাকে বাদ দিয়ে আড্ডা দেওয়া ভুলে গেছি বললেই চলে। আমাদের এখন এমন হয়েছে ফোন ছাড়া অচল। আমরা এক বেলা না খেয়ে থাকতে পারবো।কিন্তু ফোন ছাড়া এক সেকেন্ড ও থাকতে পারি না। তবে এটা আমার নিজের ক্ষেত্রে ও এটাই হয়। যাইহোক অবশেষে আমাদের চা এসে গেলো।

IMG_20230812_190242.jpg

IMG_20230812_190136.jpg

IMG_20230812_190235.jpg

IMG_20230812_190905.jpg

আমরা চা খেয়ে বিল পেমেন্ট করে গঙ্গার ঘাটে গেলাম। গঙ্গার ঘাট নিয়ে অন্য একদিন আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। গঙ্গার ঘাট থেকে আমরা সাড়ে আটটার দিকে আমরা মিষ্টির দোকানে চলে এলাম সেখানে এসে দেখি রসগোল্লা তৈরী করা শুরু করেছে।

IMG_20230812_204808.jpg

দুধ থেকে ছানা কেটে ভালো করে ছানা পয়েম দিয়ে রাখা হয়েছে।

IMG_20230812_203322.jpg

IMG_20230812_203325.jpg

পয়েম করা ছানা থেকে ছোট ছোট বলের মতো তৈরি করছে।

IMG_20230812_203310.jpg

ছানা দিয়ে রসগোল্লা তৈরী করে রেখেছে। এবার চিনির রিসে দেওয়ার অপেক্ষা।

IMG_20230812_203632.jpg

চিনির রসে মিষ্টি গুলো দেওয়ার পর জ্বাল দিতে লাগলো।

IMG_20230812_204004.jpg

IMG_20230812_204026.jpg

IMG_20230812_210010.jpg

অবশেষে ২০ মিনিট পর তৈরী হয়ে গরম গরম রসগোল্লা। এবার খাওয়ার পালা।

IMG_20230812_210352.jpg

এবার দোকানদার সবাইকে দুটো করে রসগোল্লা খেতে দিলো। গরম রসগোল্লা খেতে বেশ ভালোই লাগছিলো। টিনটিন বাবু ও বেশ করে খেয়েছিলো। এরপর আমি বাড়ীতে সবার জন্য গরম গরম রসগোল্লা কিনে নিয়ে আসলাম। আমি রসগোল্লা নিয়ে আসলে সবাই বেশ মজা করে খেয়েছিলো।এবং অনেক খুশি হয়েছিলো। দিন শেষে পরিবারের সবার এই হাসি টুকু চাই।

Sort:  
 10 months ago 

জিভে পানি চলে আসলো একেবারে 🤤

আমার গরম রসগোল্লা খাওয়ার খুব শখ ছিল। একদিন হঠাৎ করেই একটা মিষ্টির দোকানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি মিষ্টি বানাচ্ছে। সেখান থেকে গরম রসগোল্লা খাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছিল। যদিও মিষ্টি জাতীয় জিনিস ঠান্ডা খাওয়াই বেশি মজা কিন্তু গরম রসগোল্লা খাওয়ার অভিজ্ঞতাটাও ভালো ছিল।

 10 months ago 

গরম গরম রসগোল্লা আমিও খেয়েছিলাম একদিন। কিন্তু গরম গরম রসগোল্লা থেকে ঠান্ডা রসগোল্লায় খেতে বেশি টেস্ট লাগে। আপনি গঙ্গার ঘাটে ঘুরতে যেয়ে মালাইকেশন চা এবং গরম গরম রসগোল্লা খাওয়ার খুব সুন্দর অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। ধন্যবাদ বৌদি।

 10 months ago 

মালাই কেশর চা এবং গরম গরম রসগোল্লা দুইটাই খুব লোভনীয় লাগছে। আমার এমন গরম গরম রসগোল্লা খাওয়া হয় নাই এখনো। টিনটিন বাবুও মজা করে খেয়েছে আর বাসায় নেওয়ায় পরিবারের বাকিরাও যে ভীষণ খুশি হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। আসলেই দিন শেষে পরিবারের আনন্দটুকুই চাই আমরা সবাই।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

একবারে গঙ্গার ঘাটে গিয়ে চা খাওয়া হয়ে গেল আবার গরম গরম রসগোল্লা তৈরি করা শিখে নিলেন সেই সাথে রসগোল্লার টেস্ট উপভোগ করলেন। আগে যেহেতু রসগোল্লা তৈরি করতে পারতেন না সেহেতু এখন ভালোমতোই পারবেন কেননা কিভাবে রসগোল্লা তৈরি করতে হয় সেটা তো কাজ থেকে দেখলেন। আপনাদের কাটানো সুন্দর সময় টুকু আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

কথায় আছে এক ঢিলে দুই পাখি, ঠিক তেমন টাই হল, চা খেতে গিয়ে সুন্দর লোভনীয় রসগোল্লা। রসগোল্লা তৈরীর কার্যক্রম বেশ ফটোগ্রাফি করেছেন পাশাপাশি আমাদের মাঝে বর্ণনা করে তুলে ধরেছেন, খুব ভালো লাগলো সুন্দর এই পোস্ট।

 10 months ago 

দিদি আপনি দেখছি চা খেতে যেয়ে রসগোল্লা তৈরি করার পদ্ধতি প্রনালি গুলো খুব সুন্দর ভাবে দেখলেন এবং সেখান থেকে ছবি সংগ্রহ করে আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। আবার সেখান থেকে গরম গরম রসগোল্লা খেলেন এবং সেখান থেকে রসগোল্লা কিনে বাসায় নিয়ে গেলেন। ধন্যবাদ দিদি এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

আমিও একবার বাড়িতে রসগোল্লা তৈরি করার চেষ্টা করেছিলাম। আমার রসগোল্লা গুলো ভালই তৈরি হয়েছিল কিন্তু একটু নরম হয়ে গিয়েছিল বেশি। আপনিও রসগোল্লা তৈরি করার চেষ্টা করেছেন এটা দেখে খুবই ভালো লাগলো। যদিও প্রথমবার ভালোভাবে সফলতা অর্জন করতে পারেননি কিন্তু পরের বার পেয়ে যাবেন এটা আমি আশা করি।

 10 months ago 

মিষ্টির মধ্যে কিছু কিছু মিষ্টি আমার খুবই প্রিয়। রসগোল্লা খেতেও খুব ভালো লাগে। যদি গরম গরম রসগোল্লা হয় তাহলে তো কথাই নেই। প্রায় দশ বছর আগে একবার গরম গরম রসগোল্লা খেয়েছিলাম। যখন আমার খালামনির বিয়ে ছিল তখন বাজার থেকেই এই মিষ্টি নিয়ে গিয়েছিল।তবে আমি তখন সেখানে বসেই খেয়েছিলাম। আর মালাই চা তো খাওয়া হয়নি তবে দাদার একটা পোস্টে মালাই চায়ের কথা পড়েছিলাম। আর সেদিন আপনিও গিয়েছেন সেটা জানতাম না। যাইহোক বৌদি দারুন উপভোগ করেছেন সময়গুলো। তবে একদম কাছ থেকে এভাবে রসগোল্লা তৈরি করার প্রসেসিং দেখেছেন সেটা শুনে ভালো লাগলো। আশা করি আমাদের মাঝে এবার একটা রেসিপি তৈরি করে শেয়ার করবেন ।

 10 months ago 

মালাই চা আমার খুব পছন্দ এবং গরম গরম রসগোল্লা খাওয়ার মজাই আলাদা। আমি কিছুদিন আগে গরম গরম রসগোল্লা খেয়েছিলাম। দারুণ লেগেছিল খেতে। বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করলেন এবং মজার মজার খাবার খেলেন বৌদি। আসলে মাঝে মধ্যে একটু ঘুরাঘুরি করলে মনটা ফ্রেশ লাগে। যাইহোক এতো সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ বৌদি।

 10 months ago 

ইস্ কি লোভনীয় খাবার রে বাবা! মালাই চা আর রসগোল্লা দেখেই তো চোখ পড়ে আছে ও ‍গুলোর মধ্যে। চোখ ফিরাবো কি করে দিদি? টিনটিন বাবু তো দেখছি বেশ মজা করেই খেল।তবে সত্যি বলতে পরিবারের আনন্দ দেখলে কিন্তু জীবনের সব কষ্ট গুলো দূর হয়ে যায়।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 68221.63
ETH 3277.70
USDT 1.00
SBD 2.66