বাঙালি রেসিপি " তালের ক্ষীর তৈরি এবং সেই ক্ষীর দিয়ে কলার পাতায় পিঠা তৈরি"
Hello
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। ভাদ্র মাস শেষ হয়ে আজ আশ্বিন মাসে পড়েছে শরৎকাল পড়েছে। হিন্দু দের বড়ো ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা আসতে চলেছে। আমি কিছুদিন আগে তালের পিঠা তৈরি করেছিলাম। সেটি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারিনি। আসলে আমার দিন কাটে সারাদিন ব্যাস্ততার মাঝে। সারাদিন আমার টিনটিন কে নিয়ে চলে যায়, তারপর আবার সংসার এ বিভিন্ন রকম কাজ থাকে।সংসার এর সব কিছু আমার একার হাতে। তারপর আমার শরীরটা খুব একটা ভালো না। আমি যখন পিঠা তৈরি করেছিলাম তখন কিছু ছবি তুলে ছিলাম কিন্তু বিভিন্ন কারণে তখন শেয়ার করতে পারিনি। তাই আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করি। এটি গ্রাম অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় খাবার। এই পিঠা আমার মা প্রায় তৈরি করতেন। আমি মায়ের কাছ থেকে শিখেছি। এটি খেতে খুবই সুস্বাদু। আশা করি,এই তালের পিঠা আপনাদের ও ভালো লাগবে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
উপকরণ:
১.তাল - ১টি
২. জল - ৭ কাপ
৩. নারকেল কোরা - ৩ কাপ
৪. চালের গুঁড়া - ২ কাপ
৫. কলা - ৪ টি
৬. চিনি - ৩ কাপ
৭. বড়ো কলার পাতা - ৩ টি
তাল
নারকেল কোরা
চিনি
চালের গুঁড়া
কলার পাতা
কলা
প্রস্তুত প্রণালী:
১. প্রথমে তালের ক্ষীর তৈরি করতে হবে। তার জন্য তাল টাকে জল দিতে ধুয়ে নিতে হবে। এবার তাল ফলোরে একটু আঘাত করে দুই ভাগ করে নিতে হবে।
আমি। এখানে একটা তাল নিয়েছি।আমি একটা তালের পিঠা তৈরি করবো তাই একটা নিয়েছি। আপনারা আপনাদের খুশিমতো তাল নিতে পারেন।
২. দেখবেন তালে তিন টি বা দুই টি আঁটি থাকে। আমার এই তালে তিন আঁটি হয়েছে। এবার আঠির খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে।
৩. এবার এক টা আঁটি আর এক টা আঁটির ওপর রেখে বাড়িয়ে বাড়িয়ে আঁটিগুলো নরম করে নিতে হবে। নরম আঁটির ভিতর পরিমান মতো জল দিয়ে একটা করে ভালো করে গুলে নিতে হবে।
৪. আঁটি গুলতে গুলতে গাঢ় বেটার এর মত হয়ে যাবে। তখন আঁটি গুলো ফেলে দিতে হবে।
এই আঁটি রেখে দিলে মাস খানেক পরে গজ বেরোবে। তখন আঁটির ভিতরে শ্বাস তৈরি হয় সেটি খাওয়া যায়।
৫. এবার চুলায় কড়াই বসিয়ে দিয়ে গুলা তাল ঢেলে দিতে হবে এবং চুলার আঁচ বাড়িয়ে দিয়ে ঘন ঘন নাড়তে হবে। এভাবে ১ ঘণ্টার মতো এভাবে রান্না করতে হবে।
৬. এরপর দেখা যাবে তাল অনেক কমে গেছে। এবং গাঢ় হয়ে গেছে তখন ৩ কাপ নারকেল কোরা দিয়ে আবারও বেশ কিছুক্ষণ ধরে রান্না করতে হবে।
৭. যখন একটু শুকনো শুকনো হলে একটা পাত্রে নামিয়ে নিতে। তৈরি হয়ে গেল আমাদের সুস্বাদু তালের ক্ষীর। এবার এইটা দিয়ে আমি পিঠা তৈরি করবো।
৮. এবার একটা পাত্র নিয়ে এতে তালের ক্ষীর নিতে হবে। এর ভিতর পরিমান মতো চালের গুঁড়া ও চিনি, কলা নিয়ে ভালো করে মেখে নিতে হবে।
৯. সব গুলো এক সাথে মেখে একটু গাঢ় থক থকে বেটার তৈরি করতে হবে।
১০. এবার কলার পাতা ছোটো ছোটো করে ছিড়ে একটা পরিস্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে।
১১. এবার এক টুকরো কলার পাতা নিতে হবে। এর উপর ওই বেটার থেকে একটু বেটার পাতার উপর রাখতে হবে।
১২. এবার এর উপর আর একটি পাতা দিয়ে ভালো চেপে দিতে হবে। ঠিক একই ভাবে বাকি গুলো তৈরি করে নিতে হবে।
১৩. এবার চুলায় একটা ফ্রাই প্যান বসিয়ে দিতে হবে। এবং চুলার আঁচ বাড়িয়ে দিতে হবে। ফ্রাইপ্যান গরম হলে একটা কলার পাতায় মোরা পিঠা দিয়ে দিতে হবে।
১৪. এবার অন্য পিঠ উল্টায় দিতে হবে। চুলার আঁচ কমিয়ে দিতে হবে।
১৫. এভাবে উল্টে পাল্টে বাদামী রং করে ভেজে নিতে হবে। পাতা একটু পুড়ে গেলে নামিয়ে নিয়ে কলার পাতা ফেলে দিতে হবে।
১৬. এবার দেখবেন পিঠা ও বাদামী রঙের হয়েছে। কলার পাতার পিঠা তৈরি। এভাবে বাকি পিঠা গুলো ভেজে নিতে হবে এবং এর পর একটা পাত্রে নামিয়ে নিতে হবে।
তৈরি হয়ে গেল আমাদের সুস্বাদু কলার পাতায় তালের পিঠা। এটি সন্ধ্যায় চা এর সাথে বা যেকোনো সময় খাওয়া যায়। এটি খুবই সুস্বাদু একটি পিঠা।
অনেক সুন্দর একটি রেসিপি। তালের এই ক্ষীর কখনো খাওয়া হয় নি। অনেক সুন্দর হয়েছে আপনার এই উপস্থাপনা আর ফটোগ্রাফি। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
বাহ্ কি সুন্দর পিঠা।আমি আগে কখনো তালের তৈরি এই ধরনের পিঠা খাওয়া হয়নি।দিদি অনেক সুন্দর সুন্দর রেসিপি তৈরি করেন।অসম্ভব সুন্দর হয়েছে যার কোন তুলনা হয় না। দিদির কাছ থেকে নতুন এক পিঠা বানানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম।আমাদের মাঝে এতো সুন্দর রেসিপি শেয়ার করার অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি।
আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপনার শেয়ার করা উপায় এবং ব্যাখ্যা খুব ভাল, বুঝতে খুব সহজ,
ভাগ করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ
বাহ অনেক সুন্দর রেসিপি তৈরি করেছেন তো আপু। আমি কোনো দিন তালের বানানো ক্ষীর দিয়ে যে পিঠাও বানানো যায় তা জানতাম না। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা জিনিস আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই পিঠা আমি কখনো খাইনি। এবং তালের এইরকম পিঠা আমি এই প্রথমবার দেখলাম। দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুব সুস্বাদু পিঠা। ধন্যবাদ এই ধরনের রেসিপি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।।
কলার পাতায় তৈরী তালের পিঠা আমার খুবই পছন্দের। আমার নানু বাড়িতে এই পিঠা গুলো বানায়। অনেক ভাল লাগে আমার কাছে। আপনাকে ধন্যবাদ আপু রেসিপিটি টি সুন্দর করে তুলে ধরার জন্য।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
দিদি আপনার তালের পিঠা তৈরীর ঐতিহ্যটা এখন গ্রামাঞ্চলেও ভিলিন হয়ে গেছে। মায়ের হাতে তালের পিঠা কত সুখ কত আনন্দ মজা করে খেতাম হেঁটে হেঁটে ঘুরে ঘুরে। আপনি অনেক পরিশ্রমী মানুষ টিন টিন বাবু এখনো অনেক ছোট টিনটিনকে নিয়েই সারাদিন ব্যস্ত থাকতে হয় আপনার। আপনি অনেক সুন্দর করে পোস্ট গুলো করেন। আপনি যেভাবে দেখিয়েছেন ধাপে ধাপে যখন ছোট ছিলাম তখন গ্রামবাংলায় ঠিক এভাবেই তালের পিঠা বানাতো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল দিদি
ঠিক বলেছেন এগুলো গ্রামে এখন তৈরি করে না। আমি ও অনেক আগে খেয়েছিলাম।আপনাকেও ধন্যবাদ এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
এই পিঠার রেসিপি আগে কখনো দেখিনি খুব সুন্দর লাগলো আমিও চেষ্টা করে দেখব
বাড়ীতে একদিন তৈরি করে দেখুন এটি খুবই সুস্বাদু একটি পিঠা।
অসাধারণ একটি পিঠা তালের তৈরি পিঠা।বৌদি বরাবরই আপনার রেসিপি গুলো সুন্দর হয়ে থাকে।আর আপনি বেশির ভাগ সময় রেসিপি নিয়ে পোস্ট করে থাকেন। আমি আপনার রেসিপির অনেক বড় ফ্যান বৌদি।আশা রাখছি সামনে আরো বেশি বেশি রেসিপি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।
শুভেচ্ছা ও অভিন্দন বৌদি।
আসলে ভাইয়া আমি দিনের ভিতর খুব একটা সময় পাই না। অন্যান্য বিষয় নিয়ে পোস্ট করতে চাইলেও সব সময় পারি না। আমার বাবু এখন খুব ছোটো তাই মোটেই সময় পাই না। আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া । এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপনার বাবুকেই এখন সময় দেওয়া প্রয়োজন বেশি বৌদি।
বৌদি আমার অলওয়েজ সুপার ডুপার । সুন্দর বানিয়েছেন বৌদি । শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া। বাবু সোনাটা কেমন আছে?
ভালো আছে বৌদি । তবে গতকাল থেকে হালকা জ্বর আছে ওর । তবে মেডিসিন ডাক্তারের সঙ্গে কাউন্সেলিং করেছি ।😊❤🙏