একটি ভূতের গল্পঃ " সন্ধ্যা রাতে ভূতের গন্ধ"(পর্ব -৩)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজ ভূতের গল্প তৃতীয় পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। চলুন শুরু করা যাক।

IMG_20220904_092651.jpg
মালিক, আপনার সাথে বসে চা খেতে পারলে নিজেরও ভালো লাগবে।কিন্তু এদিকে সে রকম দোকান বা রেস্টুরেন্ট নেই....।
" আমার বাড়িতে গেলে আমি কিন্তু আপনাকে কফি খাওয়াতে পারি।"হেসে বলল মালিক," তাছাড়া আমি ভালই রান্না করতে পারি। যদি বলেন....।"
তাকিয়ে দেখি মালিকের প্রস্তাবে মেয়েটার চোখ চকচক করে উঠলো। ও জিব্বা বুলিয়ে নিল ঠোঁটের উপর। বলল," "সত্যি, এটা তো ভেবে দেখিনি! চলুন, এই ঠান্ডায় কপি দারুন জমবে! কত দূরে আপনার বাড়ি?'
"এই তো - কাছেই। এখান থেকে হেঁটে যেতে আট কি নয় মিনিট লাগবে।"
"চলুন, আপনার সঙ্গে হাঁটতে আমার ভালই লাগবে।"
সর্বনাশ করেছে ! কী হবে এবার ?
" তো আপনার যাবেন না?"মালিক জিজ্ঞেস করল।
"না:, আজ আপনার সঙ্গে কফি খেতে ইচ্ছা করছে।"আর একা একা বাড়িতে এখন আর ভালো লাগে না।
মালিক বলল, " ঠিকই বলেছেন, আমার তো একটা কুকুর আছে। আপনার তো কথা বলার মতো কেউ নেই।"
ব্যাস! আমরা উল্টোদিকে ঘুরলাম। বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করলাম।
আমি তো চিন্তায় চিন্তায় পাগল হয়ে গেলাম। কি করি এখন? কি করে এই পেত্নীর হাত থেকে আবার হ্যাংলা মালিককে বাঁচাবো?
আমি চেঁচিয়ে উঠলাম, " থামো, মালিক থামো !একে তোমার বাড়িয়ে নিয়ে যেও না - তোমার অনেক বড় সর্বনাশ হবে।"
" আপনার কুকুরটা বড্ড ক্ষেপে গেছে। সারাক্ষণ ঘেউ ঘেউ করছে।"
মালিক আমার চেন ধরে টান মারলো। বলল, পাপ্পি চুপ কর। এবার নয় তো তোকে মারবো। তারপর মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলল," আপনার কোন চিন্তা নেই। বাড়ীতে ঢুকে আমি ওকে ঘরে বন্ধ করে রাখবো।তারপর শুধু আপনি, আমি, আর কফি।" কথা বলতে বলতে মালিক মেয়েটার দিকে তাকিয়ে রইলো।
" এবার তো চলুন।" মেয়েটি হেসে বলল
না:, আর তো চুপ থাকতে পারছি না। কিন্তু আমি যখনই আমি টান দিলাম তখনই মালিক আমাকে আরো শক্ত ধরলো। আমি কিছুই করতে পারলাম না।
অবশেষে আমরা বাড়ীতে পৌঁছায় গেছি। মালিক বলল," এটা আমার বাড়ি।"
" এত বড় বাড়িতে আপনি একা থাকেন।" মেয়েটি বলল।
আমরা ভিতরে ঢুকলাম, মালিক আমাকে খেঁচার ভিতরে আটকে রাখলো। চলুন আমরা এবার বসে কফি খাই।
মেয়েটি বলল, "এত বড় বাড়িতে আপনার একা থাকতে ভয় লাগে না ।"
দিনের বেলায় কাজের লোক জন থাকে। আর রাতে আমি আর পাপ্পি থাকি। তবে পাপ্পি খুবই শান্ত কিন্তু কেন জানি না আজ ওর কি হয়েছে?" তবে আপনার সঙ্গে গল্প করতে আমার বেশ ভালো লাগছে। তবে আপনার তো বাড়ি যেতে হবে ।
মেয়েটি বলল, " যদি আপনার কোন আপত্তি না থাকে তাহলে আজ রাতটা আপনার সঙ্গে গল্প করে কাটিয়ে দেই।"
"এ কথা শুনে আমার হ্যাংলা মালিক আনন্দে আত্মহারা হয়ে বলল আপত্তি কেন থাকবে। "
"মেয়েটির চোখ মুখ চকচক করে উঠলো।" আমি শুধু সুযোগের অপেক্ষায় আছি কখন মালিক আমাকে খাবার দিতে এসে দরজা খুলে দেয়।
আমি আরো জোড়ে জোড়ে ডাকতে লাগলাম। মালিক বিরক্ত হয়ে বলল, " তুই কিন্তু আজ আমাকে খুবই বিরক্ত করছিস, একটু চুপ কর।"
মালিক বিরক্ত হয়ে আমাকে খাবার দিতে আসলো এবং দরজা খুলে দিল। আমি বেরিয়ে খাবার খেতে লাগলাম।
মেয়েটি কাছে এসে বসতেই মালিক ঠান্ডা অনুভব করলো।
মালিক বলল, " আপনার শরীর এত ঠান্ডা কেনো?"
মেয়েটি হেসে বললো, "এবার তোমাকে আমার হাত থেকে কে বাঁচাবে।"এ কথা বলতেই চোখ দুটো আগুনের মতো জ্বলজ্বল করে উঠলো।

এবার আমি এক লাফে বিদ্যুৎঝলকের মত মালিকের পাশ কাটিয়ে হিংস্রভাবে ঝাঁপিয়ে পড়লাম মেয়েটার ওপরে।
কিন্তু কী আশ্চর্য ! হওয়া শুধু হওয়া!
শাড়ীটা দায় নাক ঠেকটেই সেই পঁচা গন্ধ পেলাম। বাতাসে দুলে উঠলো শাড়িটা। আর কী ঠান্ডা, কী ঠান্ডা!আমার মনে হলো আমি যেনো এভারেস্টের চূড়ায় নাক ঘষছি।
আমাদের অবাক করে শাড়িটায় আমার শরীর জড়িয়ে গেল। আমি হটাৎ নিচে পড়ে গেলাম। আর মেয়েটির শাড়ি, ব্লাউজ সব - খসে পড়ল মাটিতে। কিন্তু মেয়েটি কোথাও নেই - কোথায় চোখের পলকে কোথায় যেনো হারিয়ে গেলো।শুধু মাত্র একটা কর্কশ স্বরে বলে উঠলো এবার তোর কুকুরের জন্য বেঁচে গেলি। তবে তোকে আমি ছাড়বো না।

মালিক থর থর করে কাঁপতে শুরু করল কাঁদো কাঁদো স্বরে বলে উঠলো, "পাপ্পি তুই আমাকে বাঁচালি!"
আমি মালিকের কাছে গিয়ে গা ঘষলাম আর বললাম," তোমাকে তো কখন থেকে সাবধান করছি! তুমি তো আমার কোন কথাই কানে নেও নি!"
আমার ঘেউ ঘেউ শুনে মালিক আমার গায়ে মাথায় হাত বুলাতে লাগলো। আর বারবার আমার নাম ধরে ডাকতে লাগলো।

আজ এই পর্যন্ত। আশা করি, আগের পর্বের মতো এই পর্বটি ও আপনাদের ভালো লাগবে।

Sort:  
 2 years ago 

বৌদি আপনার গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগল। সত্যি কুকুটি ব্যাপার বুঝে যাওয়ার পর তার মালিকে বাঁচতে পেরেছে জেনে অনেক ভালো লাগল। সত্যি গল্পটা অসাধারণ ছিল।

 2 years ago 

অনেক সুন্দর একটি ভূতের গল্প আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। পুরো গল্পটি পড়ে আমি অভিভূত এবং মুগ্ধ হলাম।কুকুরটি যেভাবে মালিক কে বাঁচিয়ে নিল তা দেখে আমার খুবই ভালো লাগলো।এরকম আরো সুন্দর সুন্দর গল্প আপনার কাছে প্রত্যাশা করছি।♥♥

 2 years ago 

গল্পটা পড়তে পড়তে কিরকম একটা ভয় লাগতেছিল। আসলে কুকুরেরাও কিন্তু অনেক বেশি ভূমিকা পালন করে। শেষ পর্যন্ত যে মালিককে বাঁচাতে পেরেছে এটাই ভীষণ ভালো লাগলো। অনেক দারুন একটি গল্প লিখেছেন। গল্পটার মধ্যে সত্যি ই কিছু সুন্দর বিষয় ছিল।

 2 years ago 

প্রভু ভক্ত প্রাণী যাকে বলে। মালিকের জন্য নিজের জীবনওদিয়ে দেবে এরা। দারুন হয়েছে বৌদি! আমার উত্তেজনা বেড়েই চলেছে বাকি টা পড়ার জন্য। অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

পুরো গল্পটি পড়লাম, অসম্ভব সুন্দর লেগেছে আমার কাছে গল্পটি বৌদি।এইরকম গল্প আরো পড়তে চাই,আপনি খুবই সুন্দর লিখেছেন।ভাগ্যিস কুকুরটি ছিল না হলে যে কি হতো মালিকের!ধন্যবাদ বৌদি।।

 2 years ago 

বৌদি গল্পটা পড়ে বেশ ভয় পেয়ে গেলাম।
কুকুরটা কিন্তু শুরু থেকেই পুরোটাই বুঝে গেছিল এবং তার মালিককে বাঁচাতে চেষ্টা করছিল। যাক তবে শেষ পর্যন্ত ঐ কুকুরের জন্য সে বেঁচে গেছে এটাই বড় বিষয়। দারুন লিখেছেন বৌদি ✨

 2 years ago 

আসলে কুকুর নিয়ে এমন সত্যি গল্প ও অনেকবার শুনেছি।এটাও শুনেছি যে কুকুররা নাকি মানুষের আগেই অনেক কিছু টের পায়।বৌদি গল্পটা জাস্ট দারুণ।

 2 years ago 

কুকুর যে প্রভু ভক্ত প্রাণী তা বরাবরই প্রমাণ করে । পাপ্পির ঘটনাটা তার বাস্তব প্রমাণ। এই সিরিজের সব গুলো লেখাই আপনার পড়েছি বৌদি ।

বেশ ভালোই লেগেছে ।

 2 years ago (edited)

আসল খেলা তবে শুরু হলো এবার। পেত্নীর জিভ বের করার লাইন টা পড়ার সাথে সাথেই গা টা কেমন যেন শিউরে উঠলো দিদিভাই,, আপনি তো জানেনই আমি একটু ভয় পাই 😀। তবে কুকুর আসলেই অনেক বিশ্বস্ত একটা প্রাণী। মুনিবের জন্য সব কিছু করতে পারে।দেখা যাক পরের পর্বে কি হয়,,,,

 2 years ago 

প্রথমে তো ভাবছিলাম যে মালিক মনে হয় আজকে আর বাঁচতে পারবে না। কুকুরটিকে বন্ধি করে রেখেছে কে বাঁচবে। যাক অবশেষে কুকুরের বুদ্ধির জন্য তার মালিককে বাঁচাতে পারলো। খুব সুন্দর গুছিয়ে লিখেছেন বৌদি। ভালো লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59404.52
ETH 2610.92
USDT 1.00
SBD 2.41