"আমার বাংলা ব্লগ"প্রতিযোগিতা - ২৪ ( ফেলে আসা বন্ধুত্বের স্মৃতি )
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন।"আমার বাংলা ব্লগ " মানে নতুন কিছু সৃষ্টি। এত সুন্দর একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ফেলে আসা পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে গেলো।
বন্ধু মানে অবহেলা নয়,
বন্ধুকে আপন করে নিতে হয়।
বন্ধু হল সুখ দুঃখের সাথী,
বন্ধুর মত বন্ধু পেলে হয় না কোন ক্ষতি।।
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলো বন্ধুত্ব। এই পৃথিবীতে বন্ধুত্ব এমন এক সম্পর্ক যা কেবলমাত্র কোন প্রকার স্বার্থ ছাড়াই গড়ে উঠে। বন্ধুত্ব এমন এক সিমেন্ট যা সব সম্পর্কে পৃথিবীতে একত্রে রাখতে পারে। দুটি দেহে একটি আত্মার অবস্থান হল বন্ধুত্ব। পৃথিবীর সব সম্পর্ক শেষ হয়ে গেলেও বন্ধুত্ব কখনো শেষ হয় না। বন্ধু হল সুখ দুঃখের সঙ্গী। যে একে অপরের দুঃখে পাশে এসে দাঁড়ায়। মানুষ বন্ধুত্বের স্মৃতি কখনো ভুলে যেতে পারে না।
ফেলে আসা জীবনে বন্ধুত্বের স্মৃতি
অনেক বছর আগের সেই স্মৃতি মনে পড়ে গেল। সবার
স্কুল জীবনের ও কলেজ জীবনের অনেক বন্ধুত্বের স্মৃতি রয়েছে। এর ভেতরে কিছু কিছু বন্ধুত্বের স্মৃতি সারাজীবন রয়ে যায়। তেমনি আমার ও স্কুল কলেজ জীবনে অনেক বন্ধু ছিলো। সবার সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিলো। তবে ২০১০ সালের ঘটনা। আমি তখন উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময়। আমি গার্লস কলেজে পড়তাম এবং গার্লস হোস্টেলে থাকতাম।আমরা বেশ কয়েকজন বান্ধবী একসাথে থাকতাম। কিন্তু সবার ভিতরে আমার দুই বান্ধবী ছিলো তাদের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতাম।তাদের ভিতর একজন হলো সাথী অন্যজন হলো ইতি। আমরা যেখানে যেতাম তিন জনে একই সঙ্গে। আমরা তিন জনে একই রুমে থাকতাম। তাই আমরা যা কিছু করতাম সবই এক সাথে। আমরা কেউ কাউকে ছাড়া কিছুই করতাম না। এমন কি আমরা কেউ কাউকে ছাড়া কিছুই খেতাম না।এসব দেখে অনেকেই আমাদের হিংসা করতো। এমনকি আমাদের হোস্টেল সুপার ও এসব ভালো চোখে দেখতো না। তবুও আমাদের বন্ধুত্ব অটুট ছিলো।
একদিনের ঘটনা বলি তখন আমাদের পরীক্ষা চলছিলো। বলা হয়নি আমরা তিন জনে আলাদা আলাদা সাবজেক্টে পড়তাম। আমরা পরীক্ষার জন্য বেশ কিছুদিন বাড়ীতে যেতে পারিনি। আমরা একই সঙ্গে তিন জনে বাড়ীতে যেতাম। আবার যোগাযোগ করে একই সঙ্গে হোস্টেলে যেতাম। তবে সেবার ওদের পরীক্ষা আমার এক সপ্তাহ আগে শেষ হয়ে গেল আর তখনও আমার পরীক্ষা চলছিলো। তাই আমি ওদের বললাম তোরা বাড়ি চলে যা পরে আমি যাবো। এটা শুনে ইতি ও সাথী দুজনেই খুব রেগে গেল। ইতি আমাকে বলে বাড়ি তে আমরা তিনজনে একসাথে যাবো। আর কোন কথা বলবি না। যেহেতু আমার পরীক্ষা তাই রাত জেগে পড়াশুনা করতে হতো। আর ওরা আমার পাশে রাত জেগে বসে থাকতো। একদম ঠিক যেনো ছেলে বেলায় আমার মায়ের মতো আমাকে শাসন করতো। এভাবেই আমাদের আনন্দে সময় কেটে যাচ্ছিলো। আমরা পরীক্ষা শেষ করে বাড়ীতে গেলাম। ফোনে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছিলো। হটাৎ একদিন বিকালে সাথী আমাকে ফোন দিয়ে বললো আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। কথাটা শুনার পর একদিকে আনন্দ হচ্ছিলো অন্যদিকে খারাপ লাগছিলো। আমাদের তিনজনের থেকে একজন চলে যাবে। তবে সাথীর বিয়েতে আমি যেতে পারিনি। কারণ ওদের বাড়ি দূরে হওয়ার জন্য আর যাওয়া হয়নি। ওর বিয়ের প্রথম এক বছর আমাদের সবার সঙ্গে যোগাযোগ হতো। তার এক বছর পর ইতির ও বিয়ে হয়ে গেলো। আর আমি ও পড়াশুনার জন্য ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম। আর ওদের ও স্বামী সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায়। তাই আর সেই আগের মতো যোগাযোগ হয় না। দুই মাস বা তিন মাস পর একবার কথা হতো। তখনই আমরা আবার সেই আগের দিনগুলো নিয়ে কথা হতো। এরপর তার দুই বছর পর আমার ও বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পর আমি আমার সাথে ওদের আর কথা হয়নি। কারণ আমার বিয়ের সময় শুনেছিলাম ওদের স্বামীর চাকরির জন্য অনেক দূরে যেতে হয়। আর আমি ও আপনাদের দাদার সাথে চলে আছি। দূরত্ব আর যার যার সংসারের ব্যস্ততার কারণে আর যোগাযোগ হয়নি। কারণ আমরা যারযার স্বামী , সন্তান ও সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। এখন শুধু সেই দিন গুলো আমার স্মৃতির পাতায় থেকে যায়। তবে ওরা যেখানে থাকুক ভালো থাকুক এটাই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি। এই পোস্ট টি করার করার সময় ওদের কথা খুব মনে পড়ছিল। আবার সেই পুরোনো স্মৃতিতে ফিরে গিয়েছিলাম কিছু সময়ের জন্য। এটা ভেবে ভালো লাগছে যে ওদের কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারলাম। তবে এত এত স্মৃতি কি একটা পোস্টে তুলে ধরা সম্ভব হয় না। তবুও সংক্ষেপে আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
আপনার ফেলে আসা বন্ধুত্বের স্মৃতি পড়ে ভালো লাগল। আসলে স্কুল কলেজ জীবনের সময় টা অনেক আনন্দের হয়।লেখাপড়া শেষ হওয়ার পর যদি কর্মজীবন ও সংসার জীবনের ঢুকলে সময়ে সংকীর্ণতা যোগাযোগ হয়ে উঠে না।কথায় হয় না ঠিক কিন্তু বন্ধুত্বের স্মৃতি মনে রয়ে যায় আজীবন।
ঠিকই বলেছেন বন্ধু মানে সুখ-দুঃখে একে অপরের সাথে মিলেমিশে থাকা। স্কুল ও কলেজ জীবনে মানুষের বন্ধুত্ব এতটাই গভীর থাকে যে একদিন স্কুলে বা কলেজে একজনকে ছাড়া যাওয়া যায় না এমনটাই হতো। আর এমন একটা সময় আসে তখন আর এই বন্ধুত্বকে আর টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয় না। এই যে দেখুন আপনারা তিনজন কত ভালো বন্ধু ছিযেন এখন যার যার মত আলাদা জায়গায় থাকছেন এখন সেরকম করে যোগাযোগও হয় না। আপনি এই পোস্টটির লেখার সময় আপনার ছেলে বেলায় চলে গিয়েছেন আমিও বৌদি আপনার পোস্টটি পড়ে আমার ছেলে বেলায় চলে গিয়েছিলাম। খুবই ভালো লাগে এ ধরনের স্মৃতি গুলো মনে পড়লে অনেক ভালো লিখেছেন বৌদি।
আসলেই বন্ধুত সম্পর্কের সাথে আর কোন তুলনা হয় না।সময়ের ও কর্মব্যস্ততার কারনে কার সাথে কথা কিংবা দেখা হয়না ঠিক কিন্তু মাঝে মাঝে বন্ধুদের সাথে কাটানো মূহুর্ত গুলো অনেক মনে পরে।আপনার পরীক্ষার জন্য ইতি, সাথী দুইজনই হলো ছিলো।আসলে এমন বন্ধুত্ব এখন সহজে পাওয়া যায় না।যাই হোক সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা সকলেই আপনারা ভালো থাকেন।ধন্যবাদ
আসলে বন্ধুত্বের স্মৃতি কখনো ভোলা যায়না। এই বন্ধুদের স্মৃতি গুলো হৃদয় মাঝে থেকে যায় সারাজীবন। বন্ধুর মতো বন্ধু হলে কোন ক্ষতি হয় না। আপনার বন্ধুদের স্মৃতি গুলো জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। তারা আপনার পরীক্ষা শেষ অব্দি অপেক্ষা করেছে। তাদের পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে তারপরে অপেক্ষা করেছে। আসলে বিয়ের কারণে সংসার জীবনের ব্যস্ততার কারণে হয়তো আগের মতো আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে পারেন না, কিন্তু হৃদয়ের মাঝে সেই স্মৃতিগুলো রয়ে গেছে এই গল্পটি ভালো লাগলো।
এটাই জীবন বৌদি সময়ের সাথে সাথে সব কিছু পাল্টে যায়, নতুন বিষয় কিংবা পরিবেশ নিয়ে সবাই ব্যস্ত হয়ে যায়। তবে আপনাদের মাঝে খুব মিল ছিলো এবং একে অন্যের প্রতি যথেষ্ট আন্তরিক ও ভালোবাসা ছিলো, সেটা আপনার লেখার অনুভূতি পড়েই বুঝতে পেরেছি। যদিও আজকাল এমন বন্ধুত্ব খুঁজে পাওয়া কঠিন। আর হ্যা, শুরু কবিতাটি কিন্তু দারুণ ছিলো। ধন্যবাদ।
আপনার গল্পটিও অনেকটা আমার লাইফের মতো।মানে আমরা ৩ জন ছিলাম।বর্তমানে আমি এক প্রতিষ্ঠান এ, আরেকজন অন্য প্রতিষ্ঠান এ আর আর একজন মারা গিয়েছে।সত্যিই এসব ভুলার মতোই নয়।
ঠিক বলেছেন দিদি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলো বন্ধুত্ব। এই পৃথিবীতে বন্ধুত্ব এমন এক সম্পর্ক যা কেবলমাত্র কোন প্রকার স্বার্থ ছাড়াই গড়ে উঠে।এটা শুনে অনেক ভালো লাগল যে সাথী ও ইতি পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে ও আপনার পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছিল। মা বাবার মতো আপনাকে গাইড করেছে।আপনার বিয়ের পর ওদের সাথে আর কথা হয়নি।আসলে সবাই যার যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কথা বা দেখা না হোক বন্ধুত্বের স্মৃতি কখনো ভুলা যায় না। যাইহোক আপনার বন্ধুত্বের স্মৃতি বেঁচে থাকুক আজীবন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনার বন্ধুত্বের স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
প্রথমেই আমি কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করছি বৌদি , এতো ব্যস্ততার মাঝেও আমাদের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন, সেই জন্য । আর তাছাড়া সাথী ও ইতির ঘটনাটা বেশ ভালো লাগলো জেনে । তাদের জন্য শুভকামনা করি । কারণ তারা একটা সময় আপনার জীবনের বেশ বড় একটা অংশ জুড়ে ছিল ।
শুভেচ্ছা রইল বৌদি
দিদি আপনাকে নিয়ে একসাথে বাড়ি যাওয়ার জন্য সাথী আর ইতি আপু এক সাপ্তাহ হোস্টেলে রয়ে গেল। হোস্টেল লাইফ মজার একটি লাইফ। স্টুডেন্ট লাইফে হোস্টেলে না থাকতে পারলে স্টুডেন্ট লাইফের মজাই বুঝা যায় না। আপনার ফেলে আসার বন্ধুত্বের স্মৃতি পড়ে ভালই লাগলো। ধন্যবাদ দিদি।
বৌদি একদম মন থেকে কিছু কথা লিখেছেন আপনার এই পোস্ট পড়ে আমারও অনেক কথা মনে পড়ে গেল, কত বন্ধুত্ব আর কত স্মৃতি ছিল, আজ সময় আর সংসারে ভারে সবকিছু চাপা পড়ে গেছে।
তবে মাঝে মাঝে সত্যিই অনেক মনে পড়ে।