শৈশবের স্মৃতিচারণঃ ❝ পান চুরি করতে গিয়ে ধরা খাওয়ার গল্প। (পর্ব-১)❞

🤝আসসালামু-আলাইকুম🤝

---

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আজ আবারও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে চলে আসলাম। আমাদের শৈশবের স্মৃতিময় দিনগুলোর সুন্দর মুহূর্ত সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি আমাদের জন্য খুব সুন্দর একটি সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে আমরা একে অপরের শৈশবের সুন্দর সুন্দর ঘটনা গুলো সম্পর্কে জানতে পারছি। সবার শৈশবের ঘটনা গুলো পড়ে বারবার ছোটবেলার ঘটনাগুলো মনে পড়ে যায়। ঠিক আজকে আমার হঠাৎ করেই ছোটবেলার একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। তাই আর দেরি না করে সাথে সাথে আমার সেই ছোটবেলার ঘটনাটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি।

---

আজকে গল্পের মধ্যে আমি তুলে ধরবো ছোটবেলায় বান্ধবীদের সাথে পান চুরি করতে গিয়ে ধরা খাওয়ার গল্প। আশা করি আপনাদের সকলের অনেক ভালো লাগবে। তো চলুন তাহলে আর বেশি দেরি না করে গল্পটি শুরু করার যাক...আমি খুব ছোট বেলায় ঢাকা ছিলাম কিন্তু সবসময় ঢাকা থাকার সুযোগ হয়নি। কারণ আমার মাম মামী দু'জনে একসাথে মারা যাওয়ার পর আমার নানা আর নানুর দায়িত্ব নিতে আমার মা আবার আমাদের নিয়ে গ্ৰামে চলে যায়। অবশ্য গ্ৰামে গিয়েও বেশি দিন থাকা হয়নি, ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়ে আবার ঢাকায় চলে আসি। এর মাঝেই গ্ৰামে অনেক স্মৃতি রয়ে যায়। সেই সময়ের কথা মনে হলে এখন খুব হাসি পায়।

---

---

আমার পোস্ট থেকেই নেওয়া

---

আমরা চার বান্ধবী ছিলাম আর এক বান্ধবীর বাড়ি স্কুলের কাছেই ছিল। সেজন্য তার সাথে স্কুলে গেলেই মজা হতো। আমাদের তিনজনের বাড়ি একসাথে। ওদের দুজনের নাম হলো আছমা আর আকলিমা। যদিও আকলিমা মারা গিয়েছে কিন্তু তার সাথে এখনো হাজারো স্মৃতি রয়ে গিয়েছে। যাই হোক আমরা তখন ক্লাস সেভেনে পড়ি। আমাদের বাড়ি থেকে স্কুল অনেক দূরে ছিলো। ঐ সময় আমরা হেঁটে স্কুলে যেতাম। গ্ৰামের রাস্তায় সবাই একসাথে দল বেঁধে স্কুলে যাওয়ার মজাই আলাদা।

---

আমাদের স্কুলে যাওয়ার রাস্তা দু'টো ছিলো। একটি হলো মেইন রাস্তা আর একটি হলো মানুষের বাড়ির পিছন দিয়ে জঙ্গলের রাস্তা। জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে খুব তাড়াতাড়ি যাওয়া যেতো আর সেজন্য আমরা সেই রাস্তা দিয়েই বেশি যেতাম‌। একদিন স্কুল ছুটির পর তিনজনে গল্প করতে করতে আসছি। তখন সামনে একটি পানের ক্ষেত দেখতে পেলাম। আমাদের দিকে আবার পানের ক্ষেতের অভাব নেই। আমি একদমই পান খেতে পারি না। তবে ঈদ কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে গেলে সবার মধ্যে পড়ে একটু খাওয়া হয়। পান খাওয়ার সাথে সাথে মাথা ঘুরে পড়ে যাই।

---

পানের এত বড় ক্ষেত দেখে তিনজনেই সিদ্ধান্ত নিলাম আজ পান খাবো। কিন্তু শুধু পান খেলে তো হবে না সাথে চুন,সুপারি আর জর্দা প্রয়োজন সেগুলো পাবো কোথায়? এটা নিয়ে চিন্তা করতে থাকলাম। এরপর আমার এক বান্ধবী বলে চল যেকোনো এক বাড়িতে যাই আর সেখান থেকে বরং এগুলো নিয়ে আসি। তারপর রাস্তার পাশেই একটি বাড়িতে গেলাম আর একজন চাচিকে পেলাম। উনার মুখ দেখেই বুঝতে পেরেছি উনি পান খেতে পছন্দ করে। আমাদের দেখে বলে তোমরা কি চাও? উনি আমাদের দেখেই চিনতে পারছে কিন্তু আমরা উনাকে চিনি না। এরপর চাচির কাছ থেকে চুন,সুপারি আর জর্দা নিয়ে আসলাম।

---

চাচি পান দিতে চেয়েছিলো কিন্তু আমরা নেইনি। তখন মিথ্যা কথা বললাম। চাচি কে বললাম আমাদের কাছে পান আছে শুধু এগুলো হলেই চলবে। তখন ভাবতাম মিথ্যা বললে কিংবা চুরি করলে কিছু হবে না। কিন্তু তখন এই কথাটা একদমই বুঝতাম না, "মিথ্যা বলা মহাপাপ"। তখন এগুলো করে আনন্দ পেতাম বলে করা হতো। চাচির কাছ থেকে পান খাওয়ার জিনিসপত্র পেয়ে আমরা খুব খুশি মনে চলে আসলাম। কিন্তু পান চুরি করতে গিয়ে সেই আনন্দ নিমিষেই মাটি হয়ে গেলো। চলবে----

---

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন পরবর্তী পর্ব নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

---

আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।

---

---