আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আমিও হাজির হয়ে গেলাম আচার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে। শুরুতে হাফিজ ভাইয়াকে ধন্যবাদ জানাই যে এত সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য। এমন একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে যে অংশগ্রহণ না করে থাকা যায় না। আচার পছন্দ করে না এমন লোক পাওয়া যাবে না। ছোট বড় সকলেই আচার খুব পছন্দ করে। আর আমি তো প্রতিবছর বিভিন্ন সিজনে আচার বানাই। আমার কাছে খুব ভালো লাগে। যদিও আমি আচার খুব কম খাই, কিন্তু আমার কাছে আচার বানাতে খুব ভালো লাগে। আমার হাসবেন্ড খুব পছন্দ করে। বড় ছেলেটাও ইদানিং আচারের ভক্ত হয়েছে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আচার বানানোর আরো একটি সুযোগ পেয়ে গেলাম। তাই আর মিস করলাম না। আজকে আমি কাঁচা মরিচ, রসুন, খেজুর এবং তেঁতুল দিয়ে মিক্সড আচার তৈরি করেছি। আচারটি খেতে খুবই মজা হয়েছিল। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে ।
কাঁচা মরিচ, রসুন, খেজুর ও তেতুলের মিক্সড আচার।
এই আচার তৈরি করার সময় আমি মরিচগুলোকে হালকা ভাপিয়ে নিয়েছি। এর ফলে মরিচের ঝাল অনেকটাই কমে গিয়েছে। তাছাড়া আমি এর মধ্যে খেজুর দিয়েছি। খেজুর দেয়ার কারণে চিনির মিষ্টি ছাড়া অন্য রকমের একটা মিষ্টি হয়েছে। যেটা মুখে দেওয়ার পর বোঝা যায় । কাশ্মীরি মরিচের গুঁড়া দিয়েছি যার জন্য কালার ভালো আসে। তাছাড়া কাশ্মীরি মরিচের গুড়ার অন্যরকম একটা ঘ্রাণ আছে। যা খুব ভালো লাগে। আজকের আচারটা একটু ঝাল বেশি। যারা টক এবং ঝাল খুব পছন্দ করেন তাদের জন্য পারফেক্ট আজকের আচারটি। তাহলে কথা না বাড়িয়ে মূল পর্বে চলে যাই ।
কাঁচা মরিচ --২০টি
রসুন--৬টি
তেতুল --২৫০ গ্রাম
আজোয়া খেজুর--৭ টি
চিনি--১/২ কাপ
লবণ--১/৪ চা চামচ
আদা বাটা--১/২ চা চামচ
বিট লবণ-- ১/৪চা চামচ
কাশ্মীরি মরিচের গুঁড়া--২চা চামচ
হলুদের গুঁড়া-- ১/২চা চামচ
ভিনেগার-- ২ টেবিল চামচ
সরিষা--৩ টেবিল চামচ
পাঁচফোড়ন-- ১.৫ টেবিল চামচ
সরিষার তেল--১ কাপ
এলাচ--৩ টি
দারুচিনি--১ টুকরা
প্রথমে চুলায় একটি তাওয়া বসিয়ে দিয়ে পাঁচফোড়ন গুলো হালকা টেলে নিয়েছি। তারপরে ব্লেন্ডারে একদম গুঁড়ো করে নিয়েছি।
চুলায় একটি পাতিল বসিয়ে দিয়ে তার মধ্যে সামান্য একটু পানি দিয়ে দিয়েছি। পানি ফুটতে শুরু করলে মরিচগুলো দিয়ে দুই মিনিট জ্বাল দিয়েছি। তারপর মরিচগুলো চালনিতে পানি ঝরিয়ে রেখে দিয়েছি। এভাবে মরিচগুলো হালকা ভাপিয়ে নেওয়ার কারণে মরিচের ঝাল একটু কমে যাবে।
তেতুলগুলো পানি দিয়ে আধা ঘন্টায় ভিজিয়ে রেখেছিলাম। তারপর ভালোমতো হাত দিয়ে চটকে একটা চালনিতে চেলে তেতুলের কাথ বের করে নিয়েছি।
সরিষা গুলো ভালোমতো ধুয়ে আধা ঘন্টা পানি দিয়ে ভিজিয়ে রেখেছিলাম। তারপর ব্লেন্ডারে একটি মরিচ, সামান্য একটু লবণ এবং ভিনেগার দিয়ে ভালোমতো ব্লেন্ড করে নিয়েছি।
চুলায় একটি ফ্রাইপ্যান বসিয়ে দিয়ে তার মধ্যে সরিষার তেল দিয়ে দিয়েছি। সরিষার তেল গরম হলে রসুন গুলো দিয়ে একটু নেড়েচেড়ে নিব ।
সরিষার তেলের মধ্যে রসুন দেওয়ার পরে অনেক ফেনা হয়ে যায়। রসুনগুলো একটু নাড়াচাড়া করে সরিষা বাটা দিয়ে দিব। সরিষা বাটা দিয়ে একটু নেড়ে নিয়ে আদা বাটা দিয়ে দিব ।
তারপর মরিচের গুঁড়া এবং হলুদের গুড়া দিয়ে সব কিছু ভালোমত মিশিয়ে নিয়েছি।
এখন গুড়া করে রাখা পাঁচফোড়নের গুড়া অর্ধেকটুকু দিয়ে দিয়েছি ।
সবকিছু ভালোমতো তিন চার মিনিট নেড়ে মরিচগুলো দিয়ে দিয়েছি । মরিচগুলো দিয়ে আবারো তিন চার মিনিট রান্না করে নিব ।
এখন তেঁতুলের কাথ দিয়ে দিয়েছি। তারপর আবারও সব কিছু ভালোমতো মিশিয়ে ৫ মিনিট জ্বাল দিব ।
এ পর্যায়ে খেজুরগুলো দিয়ে দিব। খেজুরগুলো নরম হয়ে গেলে খেজুরগুলো চটকে দিব ।
সবকিছু ভালোমতো নেড়ে চিনি দিয়ে দিব। চিনি দেয়ার পর আবারো ৮-১০ মিনিটের মত রান্না করব। চিনি গুলো সম্পন্ন গলে গেলে বাকি অর্ধেক পাঁচফোরনের গুড়া দিয়ে দিব।
এখন আরো ৭/৮ মিনিট রান্না করবো। তারপর আমার আচার হয়ে গিয়েছে। এই পর্যায়ে চুলা বন্ধ করে দিব ।
এখন একটা বাটিতে পরিবেশনের জন্য উঠিয়ে নিয়েছি। এভাবেই তৈরি হয়ে গেল আমার আজকের আচার। আশা করি আপনাদের সকলের ভালো লেগেছে। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
| Photographer | @tania |
|---|
| Phone | oppo reno5 |
| আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
|---|
VOTE @bangla.witness as witness 
OR SET @rme as your proxy
রসুন খেজুর, কাঁচা মরিচ ও তেতুলের মিক্সড করে খুবই মজাদার একটি আচারের রেসিপি তৈরি করেছেন। দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। তবে এভাবে কখনো আচার তৈরি করে দেখিনি। কালার দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই মজাদার একটি আচার ঝাল মিষ্টি টক সব একসাথে। এত সুন্দর একটি আচারের রেসিপি নিয়ে প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক অভিনন্দন।
জি আপু খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। তেতুলের কারণে কালারটা এমন হয়েছে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার হাজব্যান্ড এবং বড় ছেলে আচারের খুব ভক্ত, তাহলে তো এই প্রতিযোগিতা আপনার জন্য অনেক দারুন হয়েছে।কাঁচা মরিচ, রসুন, খেজুর ও তেতুলের মিক্সড আচার আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। আসলে আচার তৈরি করার ক্ষেত্রে যে খেজুর ব্যবহার করা যায় এটা আমার জানা ছিল না।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আবারও আচার বানাতে পারলাম। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপু আপনি দেখছি রসুনের সাথে আরও বিভিন্ন উপকরণ মিলিয়ে আচার বানিয়ে নিয়ে এসেছেন। এভাবে আচার কখনো খাওয়া হয়নি তাই বুঝতে পারছিনা এর স্বাদ কেমন হবে। তবে আচারের এত সুন্দর কালার দেখে মনে হচ্ছে খুবই সুস্বাদু হয়েছিল। আমিও আপনার মতো আচার একটু কম খাই। কিন্তু প্রতি সিজনে কিছু না কিছু আচার বানানো হয়। আচার বানিয়ে রেখে দিতে খুব ভালো লাগে। এখন ছেলে ছোট বলে আর আগের মতো তেমন কিছু বানাতে পারিনা। আপনার আচার দেখে জিভে জল চলে আসল। ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। ধন্যবাদ এত সুস্বাদু আচারের রেসিপি শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
সব সময় শুধু রসুনের আচার বানাই। এবার ভাবলাম যে অন্যান্য জিনিসও এড করি। আসলেই খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল।
আপু রসুন, কাঁচামরিচ ,খেজুরের ,তেতুলের সমন্বয়ে আচারের রেসিপি দেখে আমার জাস্ট জিভে জল চলে এসেছে। এই আচ্ছা, নিশ্চয়ই ভাতের সাথে অথবা খিচুড়ির সাথে খেতে খুব ভালো লাগবে। টক ঝাল মিষ্টি সবকিছু আমার বেশ ভালো লাগে। আচার টি একেবারে পারফেক্ট হয়েছে।
খিচুড়ির সঙ্গে খেতে তো খুবই ভালো লাগে টক ঝাল মিষ্টি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ভাল করেছেন সুন্দর একটি আচারের রেসিপি দেখতে পেলাম।হুম ঠিক বলেছেন আপু আচার ছোট-বড় সবাই পছন্দ করে।আপনার মিক্সড আচার তো বেশ মজার হয়েছে দেখতে।কাঁচা মরিচ,রসুন ও তেঁতুল মিক্স করলে তো মজা হয়ে যাবে।রেসিপির ধাপগুলো অসাধারণ ছিলো।আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।
আচার ছোট বড় সকলেই পছন্দ করে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অনেক নতুন নতুন রেসিপি শিখতে পেরেছি। ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি শুধু অপেক্ষায় ছিলাম যে আপু কবে আচারের রেসিপি টা দিবে, আজ সেই মোক্ষম দিন। এমনিতে ঝাল কম খেলেও আচারের ঝাল ঠিকই খেতে পারি। বেশ আনকমন একটা রেসিপি শেয়ার করেছেন আপু। সব শেষ রং টা দূর্দান্ত এসেছে আচারের 👌👌। রসুন তো শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এমনিতে খুব একটা খাওয়া না হলেও আচারের সুবাদে বেশ খাওয়া হয়ে যাবে। আর এই আচারের একটা অন্যরকম ফ্লেবার আছে তাই নাহ আপু? ইস্ দেখে তো জিভ টা কেমন কেমন করছে। কবে খাওয়াবেন আপু? শুধু ভাই আর ভাগ্নে না তো, আমিও খুব পছন্দ করি আচার। আমার জন্য রেখে দেওয়া চাই ই চাই। আমি আসছি পরের সপ্তাহে।
আর হ্যাঁ আশা করি প্রতিযোগিতায় ভালো কিছু হবে। 💪✌️
এই যে আপনার অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়ে গেল। পরের সপ্তাহের মধ্যে আচার থাকবে কিনা জানিনা। এসে কোন লাভ নেই😜।
আপু আপনার কাঁচা মরিচ, রসুন, খেজুর ও তেতুলের মিক্সড আচার দেখে মনে হচ্ছে একদম ব্যতিক্রমী একটি ফ্লেভার। কারণ আমি কোনদিন কখনো খেজুরের আচার খেয়ে দেখি নি। আমার কাছে এই আচারটি ইউনিট মনে হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ। এত সুন্দর একটি আচারের রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। সেই সাথে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। অসংখ্য ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।♥♥
আপু সবকিছু দেয়ার কারণে একটা অন্যরকম স্বাদ হয়েছে। মুখে দিলে সবকিছুই ফ্লেভারই পাওয়া যায়। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
টক ঝাল আচার খেতে আমি ভীষণ পছন্দ করি। আপনি কাঁচা মরিচ, রসুন, খেজুর ও তেতুলের মিক্সড আচার দেখে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। আপনার হাজবেন্ড এবং বড় ছেলে আচার খেতে বেশি পছন্দ করে জেনে ভালো লাগলো। আচার খেতে পছন্দ করে না এরকম মানুষ খুবই কম আছে। আমার কথা বলতে গেলে আমি তো আচারের ভক্ত। বেশ ভালো ছিল আপনার তৈরি আচার ।
আপনি টক ঝাল মিষ্টি আচার খেতে পছন্দ করেন এবং আচারের ভক্ত জেনে ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আচার পছন্দ করে না এরকম মানুষকে কমই আছে। আপনার হাজব্যান্ড আচার পছন্দ করে এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো সেই সাথে আপনার বড় ছেলেও এখন আচার ভক্ত হয়ে গিয়েছে। আসলে পরিবারের একজন যদি আচার খেতে খুবই পছন্দ করে তাহলে অন্য সদস্যগুলোও আস্তে আস্তে খাওয়াটা শিখে যায়। আপনার এই আচার রেসিপিটি দেখে বোঝা যাচ্ছে অনেক বেশি লোভনীয় হয়েছিল বিশেষ করে কালার অনেকটাই লোভনীয়। দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। কমিউনিটিতে এরকম প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা নতুন নতুন রেসিপি দেখতে পাই এজন্য আমাদের কমিউনিটির সকল এডমিন এবং মডারেটরদের ধন্যবাদ জানাতে চাই সব সময়।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া একজন আচার খেলে তখন বাকিদেরও খেতে ইচ্ছা করে। ধন্যবাদ আপনার গঠনমূলক।
আপনি তো দেখছি অনেকগুলো উপকরণ দিয়ে মিক্সড আচার বেশ অসাধারণ তৈরি করেছেন। আর খেজুরের আচার আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। খেজুরের সাথে কাঁচা মরিচ, তেঁতুল রসুন সবকিছু এড করেছেন এই জন্য নিশ্চয়ই আরো বেশি মজাদার হয়েছে। আর ঠিক বলেছেন আপু আচার খাওয়া থেকেও তৈরি করতে ভীষণ ভালো লাগে। আপনার বড় ছেলেও দেখছি আচার ভীষণ পছন্দ করে। কাঁচামরিচ গুলোকে একটু ভাপিয়ে নিয়েছেন এটা বেশ ভালো করেছেন। সেজন্য ঝালটা একটু কম লাগবে।
আমার কাছে তো আচার বানাতেই বেশি ভালো লাগে। আমি তেমন একটা খাই না। ধন্যবাদ আপনাকে।