গল্প -“জীবনের গল্প”
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আপনাদের সঙ্গে একটি গল্প শেয়ার করবো। আজকের গল্পটিও কোন একজন মানুষের জীবনের বাস্তব কাহিনী নিয়ে লিখা। বাস্তব কাহিনী নিয়ে গল্প লিখতে আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। বানিয়ে গল্প লিখলে তো সুখের গল্প এবং কাল্পনিক গল্পই বেশি হয়। সেখান থেকে শেখার কিছুই থাকে না। কিন্তু বাস্তব জীবনের কাহিনী নিয়ে গল্প লেখলে অনেক কিছু শেখার এবং জানার থাকে। এজন্যই বাস্তব জীবন কাহিনী নিয়েই গল্প লিখতে আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। যাই হোক আজকের গল্পটি আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
জীবনের পরিণতি
করিম এবং সুফিয়ার সংসারে প্রথম ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। ছেলে হওয়াতে তারা খুব খুশি হয়। এভাবে তাদের সংসারে আরও দুটি ছেলে মেয়ে আসে। গরিব ঘরের হলেও খুব আদর যত্নে বড় হচ্ছিলো। তারা বড় ছেলের নাম সনেট।
সনের ছোটবেলা থেকেই খুব দুরন্ত ছিল।বিভিন্ন গাছে উঠতো। একদিন নারিকেল গাছের ডাব পারার জন্য উঠে গাছ থেকে পরে মেরুদন্ডে হাড় ভেঙে যায়। গরিব হলেও তার বাবা মা তাকে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তার এমন ক্ষতি হয় যে সেই হাড় আর ঠিক হয় না। মেরুদন্ড বাঁকা হয়ে যায়। তারপর থেকে সে শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েই বেড়ে উঠতে থাকে। পিঠের পিছনটা উঁচু হয়ে থাকে এবং সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। এভাবে ধীরে ধীরে সে বড় হতে থাকে। সোজা হয়ে দাঁড়াতে না পারার কারণে তাকে ছোট বাচ্চাদের মত লাগে দেখতে। কিন্তু সে এখন প্রাপ্তবয়স্ক।
কয়েক বছর পর তার বাবা মারা যায়। তার মা ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে খুব বিপদে পড়ে যায়। কোনো কুল কিনারা না পেয়ে তার ভাইয়ের বাড়িতে ওঠে। তার ভাই মোটামুটি স্বচ্ছল। কিন্তু এতগুলো লোকজনকে বসে বসে খাওয়ানোর মতন মন মানসিকতা কারোরই খুব একটা থাকে না। তাই তারা বসে থাকে না। তার মা মামার সংসারের যাবতীয় কাজ করে। সনেট এবং তার ভাই তার মামার জমি জমা দেখাশোনা করে। আর বোনটির বিয়ে দিয়ে দেয়। তাদের মামা গ্রামের ডাক্তার। সনেট তার মামার সঙ্গে থেকে কিছুটা ডাক্তারি শিখে এবং সে একটি ওষুধের দোকানে কাজ নেয়। এভাবে বেশ ভালোই যাচ্ছিল তাদের সংসার।
প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার কারণে তার পরিবার থেকে তাকে বিয়ে দেয়ার চিন্তা করে। কিন্তু এরকম শারীরিক প্রতিবন্ধীকে কোন ভালো ঘরের মেয়ে তো দিবে না। সেজন্য খুবই গরীব ঘর থেকে একটি মেয়ে দেখা হয়। মেয়ের বাড়ির লোকজন ঠিকমতো খেতে পায়না। মেয়ের বিয়ে হচ্ছে এই ভেবেই তারা খুশি। সনেটের সঙ্গে বিয়েতে তারা রাজি হয়ে যায়। মোটামুটি অনুষ্ঠান করেই সনেটের বিয়ে দেয় তার মামা। নতুন বউকে পেয়ে সনেটও খুব খুশি। কারণ সে কখনো ভাবেনি তার এই শারীরিক অবস্থায় কেউ তাকে পাত্রী দিবে। এভাবেই সনেট এর সংসার বেশ ভালোভাবেই পার করছিল।
মাঝে তাদের সংসারে একটি মেয়ে হয়। তাদের আনন্দের আর সীমা থাকে না। তাছাড়া তার ভাই কিছুদিন পরে বিয়ে করে বউ নিয়ে শহরে গার্মেন্টসে কাজ করতে চলে যায়। এভাবে চলতে থাকলে সনেট এর জীবন।
আজ এ পর্যন্তই পরবর্তীতে এই গল্পের বাকি পর্ব নিয়ে হাজির হবো। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ
@tania
Photographer | @tania |
---|---|
Phone | oppo reno5 |
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি অর্থনীতিতে অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা,আর্ট করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে এবং ব্লগিং করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সনেট গরিব পরিবারের ছেলে হলেও তার বাবা মা কখনো তার যত্নের ত্রুটি রাখেনি। এমনকি সে যখন গাছ থেকে পড়ে শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়েছিল তখন ও তার বাবা-মা তার চিকিৎসার জন্য চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কখনোই তার মেরুদন্ডের হার সোজা হবে না এটা ডাক্তার বলে দিয়েছিল। এরপর যখন তার বাবা মারা যায় তারা তার মামার বাড়িতে যায় এবং সেখানে গিয়ে তারা নিজেদের যোগ্যতায় গড়ে ওঠে। এরপর তাদের বোনকে বিয়ে দেয় এবং সনেট ও একটি মেয়েকে বিয়ে করে সুন্দর জীবন যাপন করছিল।এরপর তার বড় ভাই তার ভাবিকে নিয়ে গার্মেন্টসে কাজ করতে যায়।এ ধরনের গল্প গুলো পড়তে খুবই ভালো লাগে। পুরো একটা পরিবারের জীবন বৃত্তান্ত তুলে ধরেছেন আপু।পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু আমার গল্পটি শিরোনাম আকারে তুলে ধরার জন্য।
অনেক সুন্দর করে আপনি জীবনের গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন। সনেট দেখছি অল্প বয়সে শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে গিয়েছে। তার বাবা মারা যাওয়ার পর এখন তারা মোটামুটি একটা ভালো পর্যায়ে আছে শুনে ভালো লাগলো। আবার দেখছি তার বিয়ে হয়েছে। এটা শুনে একটু বেশি ভালো লেগেছে। আর তার সন্তানের কথা শুনে আরো খুশি হলাম। এখন অপেক্ষায় থাকলাম এই গল্পের পরবর্তী পর্বের রিভিউটা পড়ার জন্য।
জি আপু সে সনেট গাছ থেকে পড়ে শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে গিয়েছে। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
আসলে বাস্তব গল্প গুলো পড়তে কিন্তু খুব ভালো লাগে এবং অনেক সময় কিছু শেখাও যায়। যাইহোক সনেট শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার পরেও বিয়ে করতে পেরেছে, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। দেখা যাক সনেট এর জীবনে পরবর্তীতে কি হয়। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
এজন্যই আমার বাস্তব গল্প গুলো লেখতে বেশি ভালো লাগে। এ থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।