গল্প -“জীবনের পরিণতি”
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আপনাদের সঙ্গে "জীবনের পরিণতি" গল্পটির শেষ পর্ব শেয়ার করবো। গত পর্বে দেখেছিলাম সনেট এর পরিবারে একটি মেয়ে সন্তান হয় এবং মেয়ে সন্তানকে নিয়ে তাদের বেশ ভালোভাবে সংসার চলছিলো। এখন দেখা যাক পরবর্তীতে সনেটের কি হয়েছিল। আজকের পর্বটিও আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
জীবনের পরিণতি
বেশ কিছুদিন পর হঠাৎ একদিন খুব অসুস্থ হয়ে যায় সনেট। কারণ এমনিতে তার শারীরিক সমস্যা যেকোনো অসুবিধা তার জন্য অনেক বড় আকার ধারণ করে। সে টুকটাক ডাক্তারি শিখেছিল তাই সে বুঝতে পারছিল ভিতরে ভিতরে তার কোন বড় সমস্যা হচ্ছে। প্রথমে গ্রামের ডাক্তার দেখায়। পরে অবস্থা ধীরে ধীরে যখন আরো খারাপ হয়ে যায় তখন তার মামা তাকে শহরের হসপিটালে নিয়ে যায়। এখানে যাওয়ার পর ডাক্তাররা জানায় তার অবস্থা খুব খারাপ। কি হয়েছে তা তারা সরাসরি বলে না। খুব সম্ভবত ক্যান্সার।
ঢাকা নিয়ে যেতে হবে তাকে। কিন্তু ঢাকা নিলে তো অনেক অনেক টাকা পয়সার ব্যাপার। তার মামার হাতে নগত টাকা পয়সা নেই। এত টাকা পয়সা খরচ করতেও মনে চায় না। তাই তাকে ঢাকার পাঠানো হয় না। এভাবে আরো বেশ কিছুদিন সে হসপিটালে পড়ে থাকে। তারপর সনেটের মামা একদিন সনেটের ফুপার সঙ্গে আলোচনা করে। সে ঢাকায় থাকে। তার ফুপা সবকিছু শুনে বলে যে তাকে যেন ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সে সব ব্যবস্থা করবে। আর তার মামা পরে সব টাকা দিয়ে দিবে।
তার মামা যখন সনেটকে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করে কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। সে রাস্তাতেই মারা যায়। সনেটের লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বাড়িতে শোকের ছায়া পড়ে যায়।সনেটের বউ এখন কোথায় যাবে সেই চিন্তা করতে থাকে স্বামীকে হারিয়ে। স্বামী মারা যাওয়ার পর কিছুদিন সে এই বাড়িতেই থাকে। তার মামার সংসারের কাজ করে। কিন্তু এত অল্প বয়সে এই মেয়েকে নিয়ে সারা জীবন কিভাবে পার করবে সেই চিন্তা করে তার বাড়ির লোকজন তাকে আবারো বিয়ে দেয়। মেয়েটিকে তার দাদির কাছে রেখে যায়।
তার দাদির ও বয়স হয়েছে। সে আর আগের মত কাজ করতে পারে না। তাই সে তার পুরোনো বাড়িতে চলে যায়।সবাই টুকটাক যা সাহায্য করে তাই দিয়ে সে কোন রকম সংসার চালায়। মেয়েকে নিয়ে সে খুবই মানবতার জীবনযাপন করে। কিন্তু তার মামা চাইলেই এতিম বাচ্চাটিকে মানুষ করতে পারতো। কিন্তু তার মামী খুব একটা পছন্দ করত না জন্য তা আর সম্ভব হয়নি। এভাবেই সনেটের মেয়েটি বড় হচ্ছে সবার সাহায্য সহযোগিতায়।
কিছু কিছু মানুষের জীবনে দেখা যায় সুখের থেকে দুঃখের পরিমাণে বেশি। আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদের জন্য পরপারে ভালো কোন কিছু রেখেছেন। তাছাড়া সনেটের মেয়ে যেভাবে বড় হচ্ছে সে যেন তার দাদির দুঃখ কষ্ট বড় হয়ে বুঝতে পারে। বাবার মত মেয়েটির জীবনেও দুঃখের কোন শেষ নেই। এতিম মেয়ের জন্য সবাই মোটামুটি সাহায্য করে। বিশেষ করে পড়ালেখা এবং কাপড় চোপর দিয়ে। তারপরও মানুষের সাহায্যে আর কতদিন ভালোভাবে চলা যায়। এ অবস্থায় যদি মেয়েটির দাদির কিছু হয়ে যায় তাহলে তার কি হবে।
আশা করি মেয়েটি একটু বড় হওয়া পর্যন্ত যেন তার দাবি বেঁচে থাকে। যাই হোক এই ছিল আমার আজকের গল্প। আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বর্তমান সময়ে যদি আমাদের সমাজের আশেপাশে কিছু পরিবার দেখি তাহলে এমন বাস্তব ঘটনাই লক্ষ্য করা যাবে যেমনটা আপনি গল্পে শেয়ার করেছেন। হ্যাঁ সবশেষে দোয়া করি মেয়েটি একটু বড় হওয়ার আগ পর্যন্ত যেন তার দাদি বেঁচে থাকে।
জি ভাইয়া এই দোয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই আমাদের। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
আসলে কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যাদের কষ্টের শেষ থাকে না। তারা সারা জীবন কষ্ট করে। সনেটের মত তার মেয়েও দেখছি এখন অনেক কষ্ট করে জীবন পার করছে তার দাদীর সাথে। মানুষের জীবন আসলেই বড্ড কঠিন। কার জীবনে কখন কি হয়ে যায় এটা কেউ বুঝতে পারে না।
ঠিক বলেছেন আপু বাবার মত মেয়েরও এখন সারাজীবন কষ্টই কেটে যাবে। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।