জীবন, মৃত্যু ও পরকাল - পর্বঃ ১
আসসালামুআলাইকুম
বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভাল আছি। মৃত্যু যা ধ্রুব সত্য, নামটি শুনলেই যেন বুকের মাঝে কেমন কেঁপে ওঠে। হ্যাঁ বন্ধুরা জীবন, মৃত্যু ও পরকাল নিয়ে কয়েকটি পর্ব সাজিয়েছি যা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি। যদিও আমি সবার মত এত ভাল লিখতে পারি না তবে আশা করছি আপনাদের একটু হলেও ভাল লাগবে।আজকে এর প্রথম পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি।।চলুন চলে যাওয়া যাক তাহলে মূল পর্বে।
জন্ম নিলেই মৃত্যু অবধারিত ।পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীই মৃত্যু বরণ করবে।শুধু মানুষই নয় এই পৃথিবী, মহাবিশ্ব, প্রতিটি বস্তুই ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে শুধুমাত্র মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ ব্যতীত। এই পৃথিবী একটি পরীক্ষা ক্ষেত্র।আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন কার কর্ম বেশি উত্তম তা পরীক্ষার জন্য যা কোরআনে সুরা মুলক এ রয়েছে।এই পরীক্ষার কারণেই আমাদের জন্ম ও মৃত্যু। শুধু সুরা মুলক না, কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় মৃত্যু সম্পর্কে এবং পৃথিবী যে আমাদের জন্য একটি পরীক্ষাক্ষেত্র সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে।
যখন খুব ছোট ছিলাম তখন মৃত্যু নিয়ে নানান চিন্তা ভাবনা মাথায় ঘোরপাক খেত। খুবই ব্যথিত হতাম।খুব বেশি কষ্ট হতো।তখন ক্লিয়ার ছিলাম না যে সবাইকে একদিন পৃথিবী ছেড়ে চেলে যেতে হবে।আপনারা জানেন কিছুদিন আগে আমার বাবাকে হারিয়েছি। আমি বাবা মায়ের প্রথম সন্তান, আমার প্রতি বাবার টান ও ছিল গভীর। আর আমারও ছোটবেলা থেকেই বাবার প্রতি মায়ের থেকে বেশি টান ছিল,ভালোবাসাও ছিল অনেক বেশি।সেই বাবা আমাদেরকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন।আপনারা সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন বাবা যেন জান্নাতুল ফেরদৌসে দাখিল হন।সবাইকে এভাবে একদিন চলে যেতে হবে।এবার আসছি মূল বিষয়ে।ছোটবেলায় বাবার কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলাম আমরা কি সারা জীবন বেঁচে থাকবো না? সবাইকেই চলে যেতে হবে? তখন বাবা বলেছিল সবাইকেই একদিন পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে ,কেউ বেঁচে থাকবে না।তখন এই কথাটি শুনে আমার খুবই কষ্ট লেগেছিল। তখন বাবার কাছ থেকে আরও একটি কথা জানতে পেরেছিলাম যে আমাদের মৃত্যু হলেও পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর অর্থাৎ কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার পরে আবার জীবন দান করা হবে। তখন আর কোনদিনও মৃত্যু হবে না। তখন এই কথাটি শুনে এত আনন্দিত হয়েছিলাম যে তা আর বলে বুঝাতে পারবনা।আর কোনদিনও মৃত্যু বরণ করতে হবে না একবার মৃত্যু ছাড়া। ওই প্রথম আমার মৃত্যু সম্পর্কে অনেকটা ধারণা হয়।
আসলে মৃত্যু ঘটে শুধু আমাদের শরীরের, কিন্তু আমাদের আত্মা বা রুহ্ এর কখনো মৃত্যু ঘটনা।আল্লাহ কিন্তু আমাদের পৃথিবীতে পাঠানোর বহু আগে আমাদের রুহ্ সৃষ্টি করেছিলেন। এই পৃথিবীতে যত মানুষ ছিল, যত মানুষ আছে এবং যত মানুষ ভবিষ্যতে আসবে সকলের রুহ আল্লাহতালা একত্রে সৃষ্টি করেছিলেন এবং সেখান থেকেই ধীরে ধীরে এই পৃথিবীতে মায়ের গর্ভে পাঠানো হয়।এরপর পূর্ণাঙ্গ মানুষ রুপে আমরা এই পৃথিবীর মুখ দেখি। এরপর কিছুকাল অতিবাহিত হওয়ার পর আবার সেই রুহ্ আল্লাহর কাছে চলে যায়। অর্থাৎ রুহ্ এর কখনো মৃত্যু ঘটে না।
এবার আসছি একটু ভিন্ন রকমের কথায়।অনেক নাস্তিক রয়েছে যারা মৃত্যু বিশ্বাস করে কিন্তু মৃত্যুর পরের জীবন কে বিশ্বাস করে না।আসলে আল্লাহপাক আমাদের সৃষ্টিকর্তা তিনিই সমগ্র মানবজাতি সৃষ্টি করেছেন। তিনি সমগ্র মানবজাতির কাছে সতর্ককারী ( নবি ও রাসুল) পাঠিয়েছেন।এমন কোন মানবজাতি নেই যে তাদের কাছে কোন সতর্ককারী পাঠানো হয়নি, যাঁদের উদ্দ্যেশ্যই ছিল এক আল্লাহকে চেনানো এবং একমাত্র তাঁরই এবাদত করা। যুগে যুগে আল্লাহ তাআলা অনেক আসমানী কিতাব পাঠিয়েছেন। প্রতিটি কিতাবেই রয়েছে মৃত্যুর পরের জীবন সম্পর্কে। যাঁদের ভাল কাজের পাল্লা ভারি হবে তাঁরাই হবে জান্নাতবাসি,আর যাদের মন্দ কাজের পাল্লা ভারি হবে তারাই হবে জাহান্নামবাসী। আল্লাহ তা'আলা এই পৃথিবীতে প্রথম মানব এবং নবী হযরত আদম (আঃ) কে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন পরে সেখান থেকে মানবজাতি বিভিন্ন গোত্র এ ধর্মে ভাগ হয়ে গিয়েছে। পৃথিবীর প্রত্যেক ধর্মের মানুষই বিশ্বাস করে জান্নাত ও জাহান্নাম। বাঙালিরা বলে বেহেশত ও দোযখ,হিন্দুরা বলে স্বর্গ ও নরক ইংলিশরা বলে প্যারাডাইস ও হেল এবং আরও অন্যান্য ধর্মের যে মানুষগুলো রয়েছে তারাও এটি বিশ্বাস করে। তাহলে সব ধর্মই যদি একই কথা বলছে তাহলে তারা কেন বিশ্বাস করে না? যদি এমন হতো এক ধর্মে আছে মৃত্যুর পরের জীবন এবং অন্যান্য ধর্মে নেই, তাও নয়।প্রতিটি ধর্মেই একই কথা বলা আছে ,তাহলে তাদের কি হয়েছে? তারা নিজেদেরকে বেশি জ্ঞানী মনে করে।তাদের উচিত সকল ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা, এরপর প্রতিটি গ্রন্থ যাচাই বাছাই করা।তাহলেই সঠিক পথের সন্ধান পেয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।
আজকে তাহলে এতোটুকুই, পরবর্তীতে এর দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হব।
বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন। আমার এই ক্ষুদ্র জ্ঞানের পরিসর থেকে এতোটুকুই আলোচনা করলাম।আশা করি আপনাদের ভাল লেগেছে। পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব।
ধন্যবাদ,
👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
আপু প্রথমেই দোয়া করছি আল্লাহতায়ালা যেন আপনার বাবাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করে।আসলে প্রত্যেক প্রানীরই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করা লাগবে চিরন্তন সত্য কথা।তারপর ও মৃত্যকে আমরা অনেক ভয় পাই ঠিক,কিন্তু মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের জন্য যা যা করা লাগবে দুনিয়াতে কয়জনই বা আমরা পালন করি।আমাদের সকলকেই আল্লাহ হেদায়েত দান করুক। নাস্তিকদের কথা কি বলবো,তারা আসলে চোখ থাকিতে অন্ধ।
আপু কথা গুলো বেশ সুন্দর লিখেছেন। ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
আপু আপনার আজকের পোষ্টটি বেশ শিক্ষনীয় কিন্তু দুঃখের বিষয় এ ব্যাপারগুলো নিয়ে বিশেষ করে মৃত্যু সম্পর্কে আমরা কখনই খুব বেশি চিন্তা করিনা। যদি আমরা মৃত্যুর কথা স্মরন করতাম তাহলে অন্তত কেও খারাপ কাজ করতে পারতোনা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
জন্ম যেমন সত্য তেমনি মৃত্যু আমাদের জীবনে চিরন্তন সত্য। জন্ম নিলে একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে। কিছুদিন আগে আপনার বাবা মারা গিয়েছেন আমরা সকলেই জানি। আপন মানুষকে হারানোর কষ্ট শুধু সেই বুঝে যার হারিয়েছে। আপু আপনার বাবা যেন জান্নাতুল ফেরদৌসে দাখিল হন এই দোয়া করি। আপনার লেখাগুলো পড়ে আবেগ প্রবণ হয়ে গিয়েছিলাম। সৃষ্টিকর্তা যেন আপনাকে ধৈর্য ধারণ করার তৌফিক দান করেন এই প্রত্যাশাই করি।🤲🤲
আপু আপনার বাবাকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন এই দোয়া করি। আপনি আজ চিরন্তন সত্য যা একদিন না একদিন সবার জীবনে ঘটবে তা নিয়ে সুন্দর একটি ব্লগ নিয়ে এসেছেন। খুব ভাল লাগলো আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার মন আল্লাহ শীতল করে দিন, আমিন।
প্রথমেই আপনার বাবার জন্য দোয়া রইল। প্রত্যেকটি প্রাণীরই একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। ছোট বেলায় যখন একটা মানুষ এ বিষয়ে জানতে পারে এমনিতে তার মধ্যে এরকম প্রশ্ন জাগাটাই স্বাভাবিক। তবে আস্তে আস্তে বড় হয়ে যখন বুঝতে শিখেছি তখন বিষয়টা স্বাভাবিক লাগে। আমাদের সব সময় একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে দুনিয়াটা একটা পরীক্ষার ক্ষেত্র মাত্র। তাই দুনিয়ার কোন বিষয় নিয়ে আমাদের অহংকার করা কখনোই উচিত নয়। আপনি খুব সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু আপনি অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট লিখেছেন ৷ যেখান থেকে অনেক কিছু জানতে পারলাম ৷ আসলে এই পৃথিবীতে শুধু কিছু দিনের জন্য আসা যাওয়া৷ আর প্রতি ধর্মে লেখা মৃত্যু সে তো শরীরের হয়৷ আপনি যেটা বললেন ৷
যাকে আমাদের ধর্ম মতে আত্মা বলা হয়৷ আসলে এখানে বলা যায় যেমন আমরা একটু বস্ত্র ব্যবহার করি ৷ কিন্তু একটা সময় পুরাতন হয়৷ আর আমরা তা ফেলে দেই ৷
ঠিক তেমনি মৃত্যু তো হয় শরীরে আর আত্মা আবার নতুন দেহ ধারন করে ৷
যা হোক সর্বোপরি মৃত্যু কে মেনে নিতেই হবে ৷ এটা আজও সত্য এবং থাকবে ৷
মানুষ জন্মের পর থেকে যখন বুঝতে শুরু করে তখন অন্য মানুষকে মৃত্যুবরণ করতে দেখে তখন তার মধ্যে এই ধরনের প্রশ্ন জাগাটাই স্বাভাবিক। প্রতিটা মানুষকে কিভাবে চলে যেতে হবে কোনভাবে কি পৃথিবীতে আজীবন বেঁচে থাকার উপায় নেই? আসলে এটাই জীবন এটাই শুরু এটাই শেষ। মৃত্যু পরকাল সবই আল্লাহর হাতে কে কখন যাবে কেউ জানে না তবুও নিজের জীবনটা উপভোগ করে সঠিক পথে চলতে হবে।
প্রথমে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনি এই সচেতন একটা চিন্তাধারা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন দেখে খুশি হলাম। আমিও এই নিয়ে অনেকবার ভেবেছি এবং নিজের মধ্য থেকে একটাই ধ্যান-ধারণা, স্থির হয়েছে যে প্রয়োজনীয় বিষয়ের জায়গায় মানুষ যেন অলস জাতি। মানুষের যেখানে সর্বশ্রেষ্ঠ বিষয়ে অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন সেই স্থানে মানুষ যেন নিজেকে অলস হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। তবে জন্ম মৃত্যু সকল ধর্মেই একইভাবে বলা রয়েছে এ নিয়ে কোন মতভেদ নেই।
যার জন্ম আছে তাকে অবশ্যই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর হ্যাঁ আপনি পৃথিবীতে যে ভালো কাজ করবেন তার জন্য জান্নাত আর মন্দ কাজের জন্য জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। শুধু মুসলিমেরা নয়, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই বিশ্বাস করে মৃত্যুর পর আরো একটি জীবন আছে আর পৃথিবীতে যারা ভালো কাজ করবে তারা মৃত্যুর পরবর্তীতে সেই ভালো কাজের পুরস্কার পাবে।