আমার জীবনে ব্যবহার করা প্রথম স্মার্ট ফোন
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
বর্তমান যুগ তো কল্পনাই করা যায় না স্মার্টফোন ছাড়া। হ্যাঁ বন্ধুরা টাইটেল দেখেই বুঝতে পেরেছেন আমার আজকের টপিক। ধনী গরিব সকলের হাতেই এখন এই স্মার্টফোন দেখা যায়। আর বর্তমানে এই স্মার্টফোনের দাম তুলনামূলকভাবে কম বলে প্রায় সকলেই ব্যবহার করতে পারে। আমার মনে হয় না এখন আর কেউ বাটন ফোন ইউজ করে গুটিকয়েক লোকজন ছাড়া।যাইহোক আজকে আমি আমার জীবনের প্রথম স্মার্টফোন পাওয়ার অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আমার জীবনের প্রথম স্মার্ট ফোন ছিল samsung galaxy s6 edge. এর আগে বাংলাদেশে থাকতে আমার ব্যবহার করা প্রথম সেল ফোন ছিল মোটোরোলা ফোল্ডিং সেট। আমার যতদূর মনে পড়ে ফোনটির দাম পড়েছিল চৌদ্দ হাজার টাকার মত।তখন স্মার্ট ফোন বের হয়নি। খুবই প্রিয় ও যত্নে ছিল এই ফোনটি। ওই ফোনেও ইন্টারনেট ব্যবহার করা যেত, কিন্তু তখন ইন্টারনেট সম্পর্কে আমার মোটেও ধারণা ছিল না। আরেকটি আনন্দের বিষয় ছিল এই ফোনে ভিডিও সং ডাউনলোড করা যেত। আমি এই ফোনে মোট তিনটি ভিডিও সং ডাউনলোড করেছিলাম। মাঝে মাঝে দেখতাম খুবই ভালো লাগতো। এরপর যখন ইংল্যান্ডে চলে আসি তখন ফোনটি আমার মা কে দিয়ে আসি। সেই ফোনটি এখনো আমাদের বাসায় রয়েছে। আমার আম্মা ২/৩ বছর ইউজ করতে পেরেছিল।এরপর নষ্ট হয়ে যায়।
এরপর ইংল্যান্ডে চলে আসার পরে হাজবেন্ড সনি ইরেকশন এর একটি ফোন কিনে দেয়। বাটন ফোন ছিল। প্রায় 270 পাউন্ড দিয়ে ফোনটি কিনে দিয়েছিল যা বাংলাদেশি টাকার প্রায় ৩৮ হাজার টাকার মত ছিল। ওই সময় ওই ফোনটি ছিল লেটেস্ট।অবশ্য আমার হাজব্যান্ড সবসময়ই আমাকে লেটেস্ট ফোন কিনে দিয়েছে। এর পর পরই সম্ভবত বাজারে স্মার্টফোন আসে। এরপর যখন আমি রাস্তায় বের হতাম তখন অনেকের হাতেই দেখেছি স্মার্টফোনগুলো।বিশেষ করে যখন ট্রেনে যেতাম তখন অনেকের হাতেই এই স্মার্টফোনগুলো দেখতাম।ফিঙ্গার দিয়ে কত সুন্দর করে টাচ করে যাচ্ছে ফোন গুলোতে।তখন থেকে আমার শখ জাগে ওই ফোন কেনার।হাজব্যান্ড কে বলছিলাম এই ফোনগুলো কত সুন্দর তাই না? তখন হাজব্যান্ড এই ফোন আমাকে কিনে দিতে চায়।এরপর আমার বড় মেয়ের জন্ম হয়।ওর জন্মের ২/৩ মাসের মধ্যেই আমাকে স্মার্টফোন কিনে দেয়। ফোনটি ছিল samsung galaxy s6 edge. ফোনটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আজও অনেক যত্ন করে রেখে দিয়েছি। ফোনটি পাওয়ার পর অন্য এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করতো।খুবই ভালো লাগতো প্রথম প্রথম হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করতে।YouTube e ভিডিও দেখা যেত, সুন্দর সুন্দর ছবি তোলা যেত, ভিডিও করা যেত। তখন আমি প্রথম ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলি। খুবই ভালো লাগতো যখন মেয়ের ফটো গুলো আপলোড করতাম, ভিডিও আপলোড করতাম।
তখন থেকে শুধু samsung ফোনই ব্যবহার করতাম।এরপর বাজারে একটি পর একটি নতুন ফোন আসে সবগুলোই লেটেস্ট ফোন কিনতে থাকি। ফোনগুলো নষ্ট হতো না কিন্তু লেটেস্ট ফোন আসার পর আর বসে থাকতে পারতাম না।নতুন আরেকটি নিয়ে নিতাম। এরপর ধীরে ধীরে দেখি এদেশের বেশিরভাগ মানুষই আইফোন ব্যবহার করে এবং আইফোনের ব্যবহারকারীর মর্যাদা একটু বেশি এদেশে। তখন ডিসাইড করলাম আর স্যামসাং নয় এখন থেকে আইফোন ব্যবহার করব।এরপর আমার জীবনে আসে প্রথম আইফোন টেন এক্স ম্যাক্স। ওই ফোনটি ব্যবহার করে এত ভালো লেগেছে যে এরপর থেকে আইফোন ছাড়া আর কোন ফোনই ভালো লাগেনি। এখন পর্যন্ত আইফোনই ব্যবহার করছি। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন বর্তমানে iphone থার্টিন প্রোম্যাক্স ব্যবহার করছি। তবে এখানকার একটি ভালো সিস্টেম রয়েছে কোন কোম্পানির সাথে কন্টাক্ট করে ফোনগুলো কেনা যায়। যেমন আমরা রয়েছি sky কোম্পানিতে। সেখান থেকেই ফোনগুলো কিনি এবং ফোনগুলির ইন্সটলমেন্টে পেমেন্ট করতে হয়। ফোনের সাথে আরও রয়েছে মোবাইল ডাটা, ফ্রি কল, ফ্রি মেসেজ। সবকিছুর টাকা তারা মান্থলি একত্রে কেটে নেয়।বর্তমানে আমার ফোন সহ সবকিছুর পেছনে যাচ্ছে ফিফটি পাউন্ড করে। সামনে বছর আমার ফোনের পেমেন্ট দেয়া শেষ হয়ে যাবে।তখন নতুন আরেকটি নিতে পারব। তবে আপাতত কোন ফোন নিচ্ছি না, আমার মেয়ের জন্য একটি ফোন নিব। কারণ এখন তার ফোন লাগবে, হাই স্কুলে যাচ্ছে। স্কুলের বেশিরভাগ হোমওয়ার্ক গুলো মোবাইলের মাধ্যমে করতে হয়। এমনকি স্কুলেও নিয়ে যেতে হয়।আর আমার ফোনটিও একেবারেই নতুন রয়েছে।মন চাচ্ছে না এই ফোনটি পাল্টাতে। তবে আমার স্কাই কোম্পানি থেকে বারবার কল করছে নিউ ফোন নেওয়ার জন্য।বিভিন্ন অফার ও দিচ্ছে।দেখি আগামী বছর আসুক তখন ডিসাইড করব।
ওই সময় প্রচন্ড স্নো পরছিল। বাচ্চা ঘুমাচ্ছিলো।ঘুমের বাচ্চাকে নিয়ে চলে গিয়েছিলাম ছবি তুলতে।
বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে।
পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
ধন্যবাদ,
👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR
বর্তমান যুগে আপৎ ঠিকই স্মার্টফোন ছাড়া একটুও কল্পনা করা যায় না। যে মানুষটা স্মার্টফোন এবং নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত। তার ফোনে এক ঘন্টা নেট না থাকলে তার মাথায় কাজ করে না। আমার জীবনেও প্রথম ফোন অনেক শখের ছিল। আপনার জীবনের প্রথম ফোনটা আজকে দেখতে পেলাম।স্যামসাং একসময় অনেক ভালো একটি ব্র্যান্ডিং ফোন ছিল। যারা একটু ফোন সম্পর্কে কম বোঝে তারাও এন্ড্রয়েড ফোন ইউজ করে এখনকার সময়ে। আব্বু যখন ফোল্ডিং সেট কিনেছিল। আমি যে কি খুশি হয়েছিলাম সারাদিন ফোল্ডিং অন করতাম। সেই সময় ১০ টাকার এমবি কিনে গান নামাতাম।তখনকার সময়টা অনেক ভালো ছিল ।এখন এমবি ওয়াইফাই সবকিছু ফ্রি। কিছুই ভালো লাগেনা।এখন হোমওয়ার করার জন্য ফোনগুলি ভালো কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটা খুব ভালো একটি উদ্যোগ।
আপনার মটোরোলা মোবাইলটা আপনার যে জানের জান ছিল এজন্যই তো আম্মা এখনো যত্ন করে রেখে দিয়েছেন। ঠিকই বলেছেন আপু প্রথম স্মার্ট ফোন হাতে পাওয়ার পর অন্যরকম একটা আনন্দ সবার মধ্যে কাজ করেছিল। কেন যেন আমি iphone ইউজ করে আনন্দ পাই না। আমার পুরনো ফোনটাই বেশি ইউজ করা হয়।
আপনার স্মার্ট ফোনের গল্প পড়লাম।samsung ছিল প্রথম স্মার্ট ফোন।জেনে খুব ভালো লাগলো আপু। দেশে থাকতে আপনি মটোরোলা ফোন ইউজ করেন।ফোনটি আপনি ইউজ করে আপনার মটোরোলা সেটটি আন্টিকে দিয়েছিলেন।আন্টি দুবছর ব্যবহার ও করেছিলেন।এখন রেখে দিয়েছেন।কারন নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।আপনি বর্তমানে আই ফোন ব্যবহার করছেন।আপু আমার কেন জানি আই ফোন ভালো লাগেনা।samsung ই খুব ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপু অনুভূতিগুলো শেয়ার করার জন্য।
সেই মোটোরোলা থেকে আজকের এই আইফোন মাঝের জার্নিটা দেখছি অনেক বড় ছিল। আইফোন এই স্ট্যাটাসও মেইনটেইন করে। আর অধিকাংশই আপডেট আসলে সেটাই ব্যবহার করে। যেটা দেখছি আপনার ক্ষেএেও হয়েছে। ঐ সময়ে তোলা একটা ফটো আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নিয়েছেন। চমৎকার লাগল আপনার প্রথম স্মার্টফোন এর গল্পটা পড়ে।
বর্তমানে স্মার্ট ফোন ছাড়া আসলেই চলা যায় না। আপনার ব্যবহার করা প্রথম স্মার্ট ফোনটি দেখে আসলেই খুব ভালো লাগলো আপু। এই ফোনটি আমি ব্যবহার করেছিলাম। আমি স্যামসাং এর এস ২ থেকে শুরু করে এস ৯+ পর্যন্ত প্রায় সবগুলো ফোন ব্যবহার করেছি। মাঝখান দিয়ে স্যামসাং নোট সিরিজের কয়েকটি ফোন ব্যবহার করেছি এবং এখনও করছি। সাউথ কোরিয়াতে থাকা অবস্থায় প্রায় প্রতি বছরই ফোন পরিবর্তন করতাম। আইফোন ৬,৭,৮ ব্যবহার করেছিলাম মাঝখান দিয়ে। কিন্তু আমার কাছে স্যামসাং এর ফোন ব্যবহার করতে বেশি ভালো লাগে। যাইহোক ফেসবুকে প্রথম আপলোড করা ফটোগ্রাফিটা দেখে এবং পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
জীবনে প্রথমবার স্মার্টফোন হাতে পাওয়ার পর সবারই অন্যরকম একটা আনন্দ কাজ করে। আর ঠিকই বলেছেন আপু, বর্তমানে স্মার্ট ফোন ছাড়া কোন কিছুই কল্পনা করা যায় না। এখন ফোনের দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় ধনী থেকে গরিব সবার হাতেই স্মার্টফোনের দেখা মিলছে। আপনার জীবনের ব্যবহার করা প্রথম স্মার্টফোনের কাহিনী পড়ে খুবই ভালো লাগলো আপু।
আপনার জীবনের প্রথম স্মার্টফোন ব্যবহারের অনুভূতির কথাগুলো জানতে পেরে বেশ ভালো লেগেছে আমার। আসলে জীবনে প্রথম ব্যবহার করে স্মার্টফোনটি যত্ন করে রেখে দেওয়াটা সত্যি দারুন একটি বিষয়। এটাই জীবনের অন্যতম একটি স্মৃতি হয়ে থাকবে।