কিছু কথা কিছু মুহূর্ত
নমস্কার বন্ধুরা,
আমি জানিনা কিভাবে শুরু করবো।কিভাবে সবটা গুছিয়ে বলতে পারবো !তবুও কিছু কথা আজকে আপনাদের সাথে ভাগ করে নিলাম ।
আপনারা সকলেই জানেন গত তিনদিন আগে আমার মায়ের হঠাৎ অসুস্থতা ধরা পড়ে ।আসলে কিছু কিছু দিন মানুষের জীবনে ঠিক কেমন হয়ে আসে বোঝা যায় না ।অসুস্থ হওয়ার আগের দিন পর্যন্ত সবকিছু নরমাল ছিল বা যদিও কিছুটা বোঝা গিয়েছিল তবুও সেটা আমরা একেবারে ধরতে পারিনি যে পরবর্তীতে কি বিপদ আমাদের অপেক্ষা করছে।
শনিবার সকাল থেকে মায়ের হঠাৎ করে বুকে ব্যথা ।কিছু বুঝে ওঠার আগেই কাছাকাছি একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গেছিলাম ।কিন্তু সেখানে খুব প্রাথমিক ট্রিটমেন্ট হয়েছিল।যেহেতু খুব ছোটো নার্সিংহোম তাই সেখানে ECG করাতে মায়ের আর্টারিতে ব্লকেজ ধরা পড়লো। তাই সাথে সাথে আমাদের আইএলএস হসপিটাল এর এডমিট করতে বললো।সেটা আমাদের বাড়ির খুব কাছে তাই কোনো কিছু চিন্তাভাবনা না করেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভর্তি করালাম ।
ওই সময়টা আমার মধ্যে দিয়ে কি হচ্ছিল আমি সেটা বলে বোঝাতে পারবো না ।কারণ এমনিতেই মায়ের কিছু হলে কোনো সন্তানেরই মাথার ঠিক থাকে না । যখন আমি প্রথমে নার্সিংহোমে নিয়ে গেছিলাম তখন আমি পুরোটাই একা ছিলাম। যেহেতু আমার বাবা খুব অল্পতেই ভীষণ চিন্তা করে তাই বাবাকে পুরোটাই সাইডে রেখে দিয়েছিলাম তারপর যা কাজ করার করেছিলাম কিন্তু একা যখন সবকিছু সামলাচ্ছিলাম তখন যে আমার মনের উপর দিয়ে কি ঝড় বয়ে যাচ্ছিল একমাত্র আমি জানি ।
যাইহোক যখন আমরা মাকে ILS নিয়ে গেছিলাম খুব দ্রুত ওখানে চিকিৎসা করানো হয় ।যেহেতু আগের নার্সিংহোম থেকে পাঠানো হয়েছিল তাই সবকিছু তারাই রেডি করে আমাদের এখানে পাঠিয়েছিল। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্ত টেস্ট করানো হয়েছিল। ওখানে এনজিওগ্রাম করার পর জানা যায় ৯৯% মেন আর্টারিতে ব্লক রয়েছে । ডাক্তার বলেন ইমিডিয়েটলি এনজিওপ্লাস্টি করতে হবে । হঠাৎ করে এরকম শুনে খুব খারাপ লাগছিল ।কিন্তু আমরা আর অপেক্ষা না করেই দ্রুত চিকিৎসা করতে বললাম। আর তার মধ্যে আমাদের অনেকটা সময় চলে গেছিল ।যে জিনিসটা চার থেকে ছয় ঘন্টা সময় নিতে হয়, আমাদের প্রায় 24 ঘন্টার বেশি সময় কেটে গিয়েছিল। তাই আর কিছু না চিন্তা করে চিকিৎসা শুরু করতে বললাম। সাকসেসফুলি সব কিছু হল।
আর সেই সময়টা আমাদের দাদা(@rme ), ব্ল্যাকস ,দিদিভাই যেভাবে আমার পাশে ছিল আর যেভাবে প্রতি মুহূর্তে আমার খোঁজ খবর রেখেছে তার জন্য কি বলবো আমি নিজেও জানিনা ।আমি অনেকটা সাহস পেয়েছিলাম দাদার থেকে ।কারণ প্রতি মুহূর্তে দাদা আমার খবর নিয়েছে। আর ব্ল্যাকসকে কি বলবো ও তো সবসময় আমার সাথেই থেকেছে,ডাক্তারের দিকটা ওই সামলেছে। আর এই সময়টা নিজের মানুষ সাথে থাকা যে কতটা মনকে সাহস দেয়, সেটা একমাত্র তখন, যে পরিস্থিতির স্বীকার হয় সেই মানুষটাই একমাত্র জানে।
এরপর যখন মাকে দেখতে গেলাম বুঝতে পারলাম যে মা তখন মোটামুটি সবটাই জানতে পেরেছে। কারণ এনজিওপ্লাস্টির আগে মা কিছুই জানতো না যে কি হচ্ছে, কারণ আমরা কোনোভাবে মাকে চিন্তায় রাখতে চাইনি। আমরা সেদিন মাকে দেখে ডাক্তারের সাথে কথা বলে বাড়ি চলে এসেছিলাম ।
তবুও যখন ২৪ ঘন্টার অবসার্ভেশনে রাখা হয়েছিল সেই রাতটা যে কি কেটেছে ,বলতে গেলে সারারাত সেদিন ঘুমাতে পারিনি। খুব চিন্তায় ছিলাম।বাড়ি আসার পর যতবার সেদিন ফোন বেজেছিল ততবার বুকের ভিতরটা কেঁপে উঠেছিল ।এর পরের দিন যখন ডাক্তারের সাথে কথা বললাম তখন কিছুটা চিন্তা মুক্ত হয়েছিলাম ।
তারপরের দিন অর্থাৎ সোমবার মাকে ঘরে নিয়ে এসেছি ।ঘরে মা আসা মানে অনেকটা শান্তি ।কিন্তু এখন মা এতটাই দুর্বল যে কিছু খেতেও পারছে না ,উঠে বসতেও পারছে না এটা দেখতে যে কি খারাপ লাগছে , আর সেটা দেখে খুব কষ্ট হচ্ছে ।তবুও মন শক্ত করে মায়ের কাছে থাকছি যখন যা দরকার সমস্ত নিজের হাতে করছি ।আশা করি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে মা ।তবুও এই কটা দিন আমার মনের মধ্যে কি হয়েছে, কি চলেছে বলে বোঝাতে পারবো না ।আশা করি একটু যত্ন নিলে একটু ওষুধ পত্র ঠিক করে খেলে খুব তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে।
তবুও কিছু কথা আছে না বললেই নয় এই বিপদের সময়টাতে আমার বাংলা ব্লগের সকল জেনারেল ইউজার এবং প্রত্যেক এডমিন মডারেটর প্রতিমুহূর্তে আমার খবর রেখেছে। তাদের কাছে আমি অনেকটা কৃতজ্ঞ এবং তাদের প্রার্থনায় আমার মা সুস্থ হয়ে উঠেছে ।আর আপনাদের সকলের জন্য আমার তরফ থেকে অনেক অনেক ভালোবাসা থাকবে ।
তাছাড়াও একটা কথা খুব জরুরী সেটা হচ্ছে যে কখনো কোনো অবস্থায় আপনাদের কারো কোন সমস্যা হলে আমার মনে হয় কোনো কিছু ফেলে রাখা উচিত না । যথা শীঘ্রই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত ।কারণ আমি আজ এই পরিস্থিতি থেকে বুঝতে পারছি যে কোনো কিছুই নিজে থেকে ভেবে চিকিৎসা করার থেকে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিজের চিকিৎসা করা খুব দরকার।ভালো থাকবেন সকলে ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
তোমার মায়ের অসুস্থতার কথা শুনেছিলাম দিদি এবং সেই সময়টাতে যে তোমার উপর দিয়ে কি যাচ্ছিল, সেটাও আমরা কিছুটা সবাই উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম। তাছাড়া আমাদের দুই দাদা এবং বৌদি অনেক টেনশন করেছিল, সেটা দাদার একটা পোস্ট পড়ে কিছুটা বুঝতে পেরেছিলাম। তবে আমরা সবাই তোমার মায়ের জন্য তখন প্রার্থনা করেছিলাম দিদি। আর উনি যেহেতু এখন সুস্থ হয়ে বাড়ি এসেছেন, এটা আমাদের সকলের জন্য অনেক আনন্দের খবর।
আপনার মায়ের অসুস্থতার খবর শুনে সত্যিই ভীষণ খারাপ লেগেছিল বৌদি। তারপর দাদার পোস্টের মাধ্যমে যখন জানতে পারলাম অপারেশন সফল হয়েছে, তখন ভীষণ ভালো লেগেছিল। আসলেই সবার দোয়া সার্থক হয়েছে। এমন একটা পরিস্থিতিতে আপনার পাশে বড় দাদা, ছোট দাদা এবং তনুজা বৌদি ছিলেন বলে, আপনি আসলেই অনেক সাহস পেয়েছিলেন। আশা করি আপনার মা দ্রুত পুরোপুরিভাবে সুস্থ হয়ে উঠবেন। উনার জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল। ভালো থাকবেন বৌদি।
আপনার মায়ের খবরটা সেদিন জেনে খুব খারাপ লেগেছিলো দিদি। আসলে মা অসুস্থ হলে চারিদিকে অন্ধকার হয়ে যায়। নিজে মা হয়েছি তারপরেও এই অনুভূতির জায়গাটা একই রকম আছে।দোয়া করেছি আপনার মা সুস্থ হয়ে যাবেন।আপনি যত্ন নিচ্ছেন শুনে ভালো লাগলো। আল্লাহর উপর ভরসা করেন দিদি।আল্লাহ সবকিছু ঠিক করে দেবেন।বিপদে ধৈর্য ধরতে হয়।
আসলেই বৌদি, বিপদ কখনো বলে আসে না।যখনই শুনেছিলাম আপনার মা খুবই অসুস্থ তখনই মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল।আর নিজের মা অসুস্থ হয়ে পড়লে মনের উপর দিয়ে যে কি ঝড় বয়ে যায় সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না।তারপরও আপনি ধৈর্য্য ধরেছেন বৌদি,আপনার মা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন এটাই স্বস্তির বিষয়।ঈশ্বরের কাছে মন থেকে প্রে করি যাতে উনি আবার সুস্থ ও একেবারে আগের মতোই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেন।অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনাদের পরিবার ও আপনার মায়ের জন্য।
খুব প্রিয় মানুষ গুলো যখন হুট করে এমন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে, আমাদের ভেতর দিয়ে যেন ঝড় বয়ে যায়। আর সেই মানুষটা যদি হয় সবচেয়ে আপন মানুষ, মা, তবে নিজেকে ভীষণ অসহায় ই লাগে। যারা এমন পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে গেছেন, তারা সকলেই মানবেন এই কথাটি। যাই হোক, তবুও বেশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সবকিছু সামলে নিয়েছেন সকলে মিলে এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে। মাসিমার দ্রুত সুস্থতা কামনা করি দিদিভাই। মাসিমার পাশাপাশি নিজেরও খেয়াল রাখবেন। ❤️
আপনার এই কঠিন পরিস্থিতির কথা জেনে আমারও খারাপ লাগছিল। আসলে দিদি আমি এই মুহূর্তের অনুভূতিটা ভালোভাবে ফিল করতে পারি কারণ আমি আমার বাবা কে নিয়ে সেইম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছি। হেল্প করার মত পাশে কেউ ছিলনা সবকিছু একা একা হ্যান্ডেল করেছি।
যাইহোক, আন্টিকে একদম রেস্টে রাখেন। খাবারদাবারের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে কিন্তু। ওই বাসাতে যখন আপনি থাকবেন না তখনও খোঁজ খবর রাখবেন যে কি খাচ্ছে। খাদ্য অভ্যাস কেমন সেটা খেয়াল রাখতে হবে সবসময়। শাকসবজি জাতীয় খাবার দাবার খেতে হবে বেশি। বেশি ক্লোস্টেরল জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।
দিদি, প্রথমে যখন খবরটি শুনলাম তখন অনেকটাই খারাপ লেগেছিল। আমাদের কমিউনিটি সকলই মিলেই কিন্তু আপনার মায়ের জন্য দোয়া করেছি। অনেকাংশে সেই দোয়াটা সফল হয়েছে। আশা করছি আপনার মা খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আবার বাসায় ফিরে আসবেন।
দিদি আপনার মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে সত্যিই অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আর এরকম পরিস্থিতিতে কোন সন্তানই ঠিক থাকতে পারে না। আপনার ওপর দিয়ে অনেক বড় ঝড় গেছে বুঝতেই পারছি। আর এই সময় আপনার কাছের মানুষগুলো আপনার পাশে ছিল বলেই আপনি আরো সাহস পেয়েছেন এবং সবকিছু সামলাতে পেরেছেন। দিদি আপনার মা যেন পুরোপুরি ভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এই প্রার্থনাই করি।
মা অসুস্থ হলে দুনিয়ার কোনো কিছুই ভালো লাগে না। আপনার এই অবস্থা সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা আমার আগে থেকেই আছে। শেষ পর্যন্ত আপনার মা যে সুস্থ হয়ে গিয়েছে সেটা জেনে অনেক ভাল লাগলো দিদি। দোয়া করি আপনার মা দ্রুত পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠুক। আপনাদের জন্য অনেক শুভ কামনা রইলো।
আপনার লেখা পড়ে কিছুটা স্বস্তি পেলাম আপু,আন্টি এখন বাড়িতে আছে এটাই অনেকটা শান্তির।আপনি বেশি চিন্তা করবেন না আর অবশ্যই নিজের যত্ন নেবেন।সকলের দোয়া রয়েছে সাথে।আশা করছি আন্টি খুব দ্রুত রিকভার করে উঠবেন।আর আবার আমরা শীঘ্রই আপনার মুখের সে নিশ্চিন্ত হাসিটি দেখতে পাবো।