তৃতীয়াতে ঠাকুর দেখা।//১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে
নমস্কার বন্ধুরা,
আশা করি সবাই ভালো আছেন।সুস্থ আছেন।আজ আমি তৃতীয়াতে ঠাকুর দেখার কিছু মুহুর্ত ভাগ করে নিচ্ছি। আশা করি সকলের ভালো লাগবে।
প্রথমেই সবাইকে আজ শুভ চতুর্থীর শুভেচ্ছা জানাই। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন আমি পূজো উপলক্ষে শাড়ি কিনতে গিয়েছিলাম। যে তিনটে শাড়ি কিনেছিলাম সেই তিনটের মধ্যে প্রথম দিকে তিনটে পছন্দ হলো পরের দিকে একটি শাড়ি মনে হচ্ছিল আমাকে মানাবে না তাই জন্য কালকে সেই শাড়িটা চেঞ্জ করতে গিয়েছিলাম ।আমি গড়িয়াহাটের শ্রীনিকেতন থেকে শাড়ি কিনেছিলাম ।তো সেখানেই বিকেল বিকেল চলে যাই ওই শাড়িটা বদলানোর জন্য। প্রথমে তো কোনো শাড়ি আমার পছন্দ হচ্ছিল না তারপর সবশেষে একটা শাড়ি খুব পছন্দ হলো ওটাই নিয়ে নিলাম । ফেরার পথে ভাবলাম যে ঠাকুর দেখবো, আসলে এই বছর ব্ল্যাকস সাথে প্রথম পুজো কাটানো। কিন্তু ও এই বছর পুজোর দশটা দিন থাকবে না ওর ফিরতে ফিরতে লক্ষ্মী পুজো হয়ে যাবে । আসলে কাজের উপলক্ষে একটু বাইরে যাবে। তাই জন্য বাড়িতে ফেরার পথে দুটো ঠাকুর দেখে আসলাম ।যে দুটো ঠাকুর দেখেছি তা আমাদের দক্ষিণ কলকাতায় নামকরা পুজো গুলোর মধ্যে দুটি । তার মধ্যে একটি হলো সিংহী পার্কের পুজো আরেকটি হিন্দুস্তান ক্লাবের পুজো। এই জায়গাগুলোর পুজো থিমের মধ্যে সব থেকে বেস্ট।এককথায় দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম নামকরা দুটি পুজো।
তিলোত্তমার শহরে তৃতীয়ার দিনকে যে পরিমাণ মানুষের ঢল নেমেছে। সেটা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবেনা। শুধুই কি তিলোত্তমা শহর শহরের বিভিন্ন জায়গার মানুষ এই উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। আমি তো শুধু ভাবছিলাম যদি তৃতীয়াতেই এইরকম ভিড় হয় তাহলে পঞ্চমী ,ষষ্ঠী ,সপ্তমী ,অষ্টমী, নবমীতে কত ভিড় হবে ! আসলেই বাঙালি এই পাঁচটা দিনের পুজোর জন্য একটা বছর অপেক্ষা করে থাকে ।তাই আমার মনে হয় এই পাঁচটা দিন আনন্দে মেতে থাকাই হলো মানুষের ভালো থাকার উপায়।তার মধ্যে আবার দুটো বছর করোনা কাটিয়ে মানুষ এখন স্বাভাবিক নিয়মে আস্তে আস্তে ফিরছে তাই ভিড় হবে এটাই স্বাভাবিক। এই যে আমরা পূজা মন্ডপে যাচ্ছি, সেলফি তুলছি ,খাচ্ছি, ঘুরছি, ঠাকুর দেখছি কোথাও গিয়ে মনে হয় এই সব কিছুই আমাদের কাছে বাড়তি অক্সিজেন ।আর এই অক্সিজেনই আমরা সারাটা বছর বয়ে নিয়ে যাই।
প্রথমে আমরা মিলন চক্রের ঠাকুর দেখলাম। যে পুজোটা এই বছর 75বর্ষে পা দিয়েছে। এই পূজা মন্ডপটা পুরোটাই ঝুড়ি দিয়ে কারুকার্য করেছে ।এই মন্ডপের দুর্গা প্রতিমার সাথে শিল্পীর কারুকার্য আমার খুবই ভালো লেগেছে।
থিমের নাম- নারায়ণে নারায়নী
এরপরে দেখলাম সিংহী পার্কের পুজো। সিংহী পার্কের দুর্গাপূজায় ফুটে উঠেছে নারায়ণ দেবনাথের কালজয়ী সৃষ্টি কালজয়ী কার্টুন চরিত্রগুলোকে তুলে ধরা হয়েছে। নারায়ন দেবনাথের তৈরি কার্টুন স্ট্রিপ দিয়ে পূজা মন্ডপ সাজানো হয়েছে মণ্ডপে বাটুল দি গ্রেট এবং হাদা-ভোদার লাইফ সাইজ মডেলগুলি রাখা হয়েছে। এমনভাবে মণ্ডপটি উপস্থাপন করা হয়েছে যেখানে মণ্ডপের তিনটি প্রবেশদ্বারই কমিক্স বইয়ের আদলে তৈরি হয়েছে। এমনকি এখানে মন্ডপটা এমন ভাবে তৈরি হয়েছে যেখানে দর্শকরা ঢুকলেই মনে করবেন তারা যেন নারায়ণ দেবনাথের স্টুডিওতেই প্রবেশ করেছে।
থিমের নাম- স্ব-অধীন দেশ নয় মনে দ্বেষ।
এরপর আমরা হিন্দুস্তান ক্লাবের পূজো দেখতে গেলাম।এই মন্ডপ একদম ব্যতিক্রমী চিন্তাভাবনায় ফুটে উঠেছে। এই হিন্দুস্তান ক্লাবের পূজো এই বছর ষাট বছরে পদার্পণ করেছে। তার সাথে দেশের ৭৫ তম স্বাধীনতার বছর তাই এই দুই বিশেষ ঘটনাকে উদযাপন উপলক্ষ্যে এই ক্লাবের ভাবনা চিন্তা মণ্ডপের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। ২০০ বছরের সংগ্রামের পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেছে ভারতবর্ষ।তারপর কেটে গেছে অনেকগুলো বছর। পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে নিজের অধিকার কায়েম করেছে ভারতবর্ষ। তাও কি আমরা মননের দিক থেকে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন হতে পেরেছি? জাতি ধর্ম বর্ণ এসবের ঊর্ধ্বে উঠতে পেরেছি কিনা?এই প্রশ্নই দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে এই মন্ডপের মাধ্যমে।
এই সকল কিছুই টিনের তৈরি। এখানে শিল্পীর চিন্তাভাবনা সত্যি অবাক করে দিয়েছে। কারণ টিন কেটে এত সুন্দর ভাবে কারুকার্য রয়েছে যা দেখার মত ছিল। তার সাথে এখানে পুরানো বাংলার ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়েছে।
যাইহোক আমরা কাল যে তিনটে ঠাকুর দেখেছি সেই তিনটে ঠাকুর দক্ষিণ কলকাতার সবচেয়ে বড় ঠাকুর। কাল ব্ল্যাকস এর একটু তাড়া ছিল বলে এই তিনটা ঠাকুর দেখে বাড়ি চলে এসেছিলাম এবং খুব আনন্দ করেছিলাম কালকের সন্ধ্যেটা।
পুজো উপলক্ষে তিনটি শাড়ি কিনেছেন তার ভিতর একটি আবার পছন্দ হয়নি পাল্টাতে গিয়েছেন আসলে এরকম হয় আপু অনেক সময় কিনে আনার পরে আর ভালো লাগেনা তখন নিজের মনের ভিতর খুঁতখুত করে আপনি পাল্টিয়ে ভালোই করেছেন। আর দাদা কাজের জন্য দশ দিন থাকবে না ভালই করেছেন শাড়ি পাল্টাতে গিয়ে দাদার সাথে মিলে পূজোও দেখে নিয়েছেন ।ছোটবেলায় আমরাও অনেক পুজো দেখতাম এখন আর সেরকম দেখা হয় না। বিভিন্ন পূজার মণ্ডপে ঘুরতে ভালোই লাগে। এটা ঠিক বলেছেন দু'বছর করোনার পরে এবারকার পুজো টা খুব জমজমাট হয়ে উঠবে মনে হচ্ছে ।মিলনচক্রেট ঠাকুর ৭৫ বছরে পা দিয়েছে বাবাহ বেশ পুরনো তো ।থিমের নামটাও অনেক সুন্দর নারায়ণে নারায়নী পূজা মন্ডপের গেটটাও খুব ভালো লেগেছে।
আসলে শাড়িটা আমার ভালো লেগেছিল কিন্তু সবাই বলছিল আবার সেই শাড়িটা আমাকে মানাবে না তার জন্যই বদলাতে হলো। আর এই রকম বললে সত্যি মনের মধ্যে অনেক খুঁতখুত হয়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
You are very beatiful!
Thank you..
বাহ বলতেই হবে তাহলে বিশেষ একটা পূজো আপনার কাছে। কিন্তু দাদা তো থাকবে না এটা শুনে মন খারাপ হয়ে গেল। আমার কাছে হিন্দুস্তান ক্লাবের প্রতিমা টা বেশ ইউনিক এবং অন্যরকম লেগেছে। এবং ওদের প্যান্ডেল থিমটাও বেশ আলাদা। অনেক সুন্দর ছিল ফটোগ্রাফি গুলো। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য দিদি।।
অনেক ধন্যবাদ দাদা আপনাকে ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
😊😊😊
যাক,বহুদিন পরে স্টিকার ছাড়া আপনাদের একটা ছবি দেখতে পেয়ে ভালো লাগছে বেশ লাগছে।পুরো শহর দেখছি আলোকিত করে ফেলেছে একেবারে।
🤭😜।
দিদি জামা-কাপড় কিনে এনে পছন্দ না হলে আবার গিয়ে পাল্টানো অনেক মেয়েদের ক্ষেত্রেই এটা হয়, আমার বাসায়ও হয়। গড়িয়াহাট আমিও গিয়েছিলাম অনেক বড় মার্কেট। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো ব্ল্যাক দাদাকে আমি এই প্রথম দেখেছি। খুবই ভাল লাগছে দেখে। ব্ল্যাক দাদার সাথে আপনার প্রথম পুজো কাটানো হচ্ছে এটা শুনেও ভাল লাগছে। আপনার ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে পুজোগুলোর বড় আয়োজন হয়েছে। আপনার শেয়ার করা ছবিগুলো খুবই ভাল হয়েছে। আশা করি পুজোর বাকি দিনগুলো আপনারা খুব সুন্দরভাবে কাটাবেন। ধন্যবাদ দিদি।
মেয়েদের শাড়ি আর গয়না দোকানে একরকম লাগে আবার বাসায় আসলে আরেক রকম লাগে 🤣।আর ব্ল্যাকস শুধু তৃতীয়ার দিনই আমার সাথে ঠাকুর দেখেছে এখন বাইরে আছে ওর আসতে আসতে লক্ষ্মী পূজা।যাই হোক সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা।
দিদি লক্ষ্মী পূজা কি দুর্গাপূজার পরপরই হয়? পূজার হিসেব টা আমার পুরোপুরি জানা নেই।
হ্যা দাদা দুর্গাপূজোর শেষ হওয়ার চারদিন পর লক্ষীপূজা শুরু হয়।
পুজোর মন্ডপের ডেকোরেশন জাস্ট অসাধারণ। তবে দিদি আপনার শাড়ি গুলোতো তিনটেই অনেক সুন্দর ছিল । তাছাড়াও আপনাকে সব কাপড়েই বেশ ভালোই মানায় । দুজনকে এই প্রথম একফ্রেমে একসঙ্গে দেখে বেশ ভালো লাগলো ।
পুজোর সময় গুলো ভালো কাটুক আপনাদের ।
দুজনের জন্যই ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা রইল।
হ্যাঁ দাদা তিনটে শাড়ি সুন্দর ছিল কিন্তু তিন নম্বর মানে ওই লাস্ট শাড়িটা ফেসে যাওয়ার চান্স অনেকটা বেশি ছিল তাই বদলাতে হলো। আপনার জন্যও শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইলো দাদা ।
অনেক ভালো করেছেন দিদি,যে একটা শাড়ি পরিবর্তন করে নিয়েছেন।আসলে পছন্দসই না হলে তা চেঞ্জ করাই উচিত।দিদি আপনি আগে আগে পুজো দেখে নিলেন আর আপনার মাধ্যমে আমি ও কলকাতার পূজা দেখে নিলাম।খুবই ভালো লেগেছে থিমগুলি ও সুন্দর ছিল মায়ের মূর্তিগুলো।টিন কেটে যে কারুকার্য করা হয়েছে সেটা সত্যিই ভীষণ সুন্দর ও মনমুগ্ধকর।তবে আমি তো এতগুলো ঝুলন্ত ফাঁসি দেখে ভয় পাচ্ছিলাম, এইবছর করোনা কাটিয়ে মানুষ দারুণ পূজা কাটাবে।শুভকামনা রইলো দিদি।