কুঠিঘাটে কিছুটা সময়।। //১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে
নমস্কার বন্ধুরা,
আশা করি সবাই ভালো আছেন।সুস্থ আছেন।আগের পর্বে আমি আপনাদের সাথে বাগবাজারে যাওয়ার মুহূর্তটা ভাগ করে নিয়েছিলাম, আজকে আমি কুঠিঘাটে যাওয়ার মুহূর্তটা ভাগ করে নিচ্ছি।
বাগবাজার ঘাট খুব কম সময়ের মধ্যেই আমাদের ঘোরা হয়ে গেছিল। আর দেখাও হয়ে গেছিল ।আর সেদিন ভীষণ রকম গরম পড়েছিল । তার মধ্যে টিনটিনও সেদিন খুব বিরক্ত করছিল। ওই দিনকে তাই জন্য আরো কম সময়ের মধ্যে বাগবাজার ঘাটটা ঘোরা হয়ে গেছিল আমাদের ।যাইহোক যেহেতু তাড়াতাড়ি সবকিছু হয়ে গেছিল তাই ভাবছিলাম যে অন্য কোথাও ঘুরতে যাবো, কিন্তু অন্য কোন জায়গায় যাব সেটা বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তো দিদিকে বললাম চলো, লঞ্চে করে কুঠিঘাট যাব আর এদিকে লঞ্চেও ঘোরা হয়ে যাবে। দিদিরও ওই প্রথমবার লঞ্চে ওঠা। আমার লঞ্চে ঘুরতে খুব ভালো লাগে। যাইহোক লঞ্চে ওঠার জন্য প্রথমে টিকিট কাটতে হয় ।টিকিট কাউন্টারে গিয়ে তিনটে টিকিট কেটে নিলাম ।লঞ্চ আসার কথা ছিল ৫:১৫ তে ।আর আমরা সাড়ে চারটের সময় পৌঁছে গিয়েছিলাম ।তাই আমাদের ৪৫ মিনিট মতো অপেক্ষা করতে হলো। ব্ল্যাকস ততক্ষণে আইসক্রিম ,কোলড্রিংস, চিপস, ছোলা মাখা, চা সব নিয়ে আসছিল । আর আমরা খেয়ে যাচ্ছিলাম🤪 ।যাইহোক খেতে খেতে ঘাটের সৌন্দর্য দেখতে বেশ ভালোই লাগছিল।
দিদি তো প্রথমে লঞ্চে উঠতে একটু ভয় পাচ্ছিল ।যেহেতু প্রথম বার লঞ্চে ওঠা,তাই ভয় পাওয়াটাও স্বাভাবিক ছিল । যাইহোক আমিও একটু সাহস করে হাত ধরে ওঠালাম । তারপর বেশ দারুন লাগছিল। লঞ্চে করে কুঠিঘাট যেতে মোটামুটি ৪৫ মিনিট লাগলো। বেশ অনেকটাই সময় লেগেছিল ।আর কুঠিঘাটের অপরদিকে ছিল বেলুড় মঠ ।যেহেতু তাড়াতাড়ি বাড়ি আসার কথা ছিল তাই জন্য আর বেলুড় মঠ ঘুরতে যাইনি।অন্য একদিন সবাই মিলে যাবো এটাই ঠিক করেছি। তাই কুঠিঘাটেই গিয়ে ছিলাম। সব থেকে মজার ঘটনা এখানেই যে, যখন আমরা কুঠি-ঘাটে নামলাম ।নেমে আমি ওখানে একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম যে এর পরের লঞ্চ কখন ছাড়বে ?যথারীতি উনি বললেন এরপরের লঞ্চ ছাড়তে কুড়ি মিনিট লাগবে, তাই ভাবলাম কুড়ি মিনিটে কুঠিঘাটের আশেপাশে কিছু দেখার জিনিস রয়েছে সেগুলো দেখে কুড়ি মিনিটের মধ্যে চলে আসবো। তো ওখান থেকে বেরিয়ে একটু হেঁটে চারিপাশে কয়েকটা পুরানো বাড়ি ছিল যেগুলো সত্যি দেখার মত ছিল ।সেগুলো দেখলাম ।সামনে একটি অনেক পুরোনো মন্দির ছিল সেখানেও গেলাম ।কুটিঘাটের গঙ্গার ধারে যেখানে আজ থেকে অন্তত ৪০বছর আগে বরানগর থানা ছিল, এখন যেটা পোড়োবাড়িতে পরিণত হয়েছে, তার পাশেই কৃপাময়ী কালিবাড়ি বা জয় মিত্র কালীবাড়ি।কথিত আছে রানী রাসমণিএই স্থাপত্য দেখেই দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের স্থাপত্য অনুসরণ বা অনুকরণ করেছিলেন ।এখানেও দেখা যাবে নাট মন্দিরের সামনে মায়ের মন্দির, মন্দিরের চারপাশে বারোটি শিবের মন্দির আছে। যদিও আজ অযত্নের ফলে চারিপাশে আগাছা হয়ে গিয়েছে।
ঘুরে বেড়িয়ে ততক্ষণে ১৫ মিনিট হয়ে গেছে ।হাতে ছিল আর ৫ মিনিট আর আমরা হাঁটতে হাঁটতে অনেকটা দূরে চলে গেছিলাম। তাই জন্য ফেরার পথে একপ্রকার দৌড়েই লঞ্চঘাটে আসলাম ।এসে যখন ওখানে টিকিট কাটতে গেলাম তখন ওখানে শুনছি আর কোনো লঞ্চ সেখানে নেই ।এর পরের যে লঞ্চ আছে সেটা সাড়ে সাতটায়। আর আমাদের ঘড়িতে তখন বাজে হচ্ছে ৬:১৫ । ব্যাস সবার তো মাথায় হাত কারণ আমরা গাড়ি রেখে এসেছিলাম বাগবাজারে। একমাত্র লঞ্চে করে বাগবাজার যাওয়া পসিবল ছিল। তো কিছুক্ষণ বুঝেই উঠতে পারছিলাম না যে কিভাবে বাগবাজার পৌঁছাবো।যেহেতু জায়গাটা সবারই নতুন । একমাত্র আমারই চেনা তো আমি প্রথমে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম যে কি করে সবাইকে নিয়ে বাগবাজার যাবো। তার মধ্যে আমাদের সাড়ে সাতটা পর্যন্ত অপেক্ষা করলে অনেকটা দেরি হয়ে যাবে। কিছুক্ষণের জন্য আমার মাথা থেকেই বেরিয়ে গেছিল যে ওখান থেকে অটো করে ৫ মিনিটে সিঁথির মোড় চলে যাওয়া যাবে । আর ওখানে গাড়ি ডেকে নেওয়া যাবে।ব্যাস পাঁচ মিনিটে আমরা অটোতে করে সিঁথিরমোড় পৌছালাম ।
সেখানে আবার আরেকটা ঘটনা যেটা হলো ,সেই দিন গাড়ির ড্রাইভার নতুন ছিল তাকে বাগবাজার থেকে সিঁথিরমোর আসতে বলা হয়েছিল আর বাগবাজার থেকে সিঁথির মোড়ের দূরত্ব হচ্ছে গাড়ি করে ১৫ মিনিট । আর উনি চিড়িয়ামোড় এসে বলেই যাচ্ছে যে সিঁথিমোড় এসেগেছে । আর আমরা গাড়ি খুঁজতে খুঁজতেই ৩০ মিনিট মতো সিঁথির মোড়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।আমরা ৭ টার মধ্যে পৌঁছে গিয়েও ড্রাইভার এর জন্য সেই আটটাই বেজে গেল অপেক্ষা করতে করতে🤭।কি অদ্ভুত সিচুয়েশন যে হয়ে গেছিল। শেষমেষ বাধ্য হয়ে বাসে উঠে চিড়িয়ামোড় গিয়ে গাড়িতে উঠলাম।।একদিকে ভালোই হলো টিনটিনের সেইবার প্রথম বাসে ওঠা হল। সব মিলিয়ে ভালোই অভিজ্ঞতা হলো আমাদের। খুব মজাও করেছিলাম সেদিনকে ।আসলেই সব সময় একরকম যায় না ,বিভিন্ন অভিজ্ঞতা সম্মুখীন হলে কিছু কিছু মুহূর্ত ভীষণ মনের মধ্যে থেকে যায় । যেমন সেই দিনটা❤️।
বাগবাজার থেকে কুঠিঘাট ৪৫ মিনিট সময় লাগে সেটা তো অনেকটা দূরত্বের পথ, দিদি। যদিও লঞ্চ অনেকটা ধীরে ধীরে চলে এজন্য একটু বেশি সময়ের দরকার পড়ে। কুঠিঘাট থেকে লঞ্চ মিস করাই অনেকটা বিপাকে পড়তে হয়েছিল তোমাদের সবাইকে যা দেখছি।
যদিও তনুজা বৌদির বিগত পোস্টে লঞ্চ ভ্রমণের গল্প পড়েছিলাম তবে এতো যে ঝুট ঝামেলা বা আবার ঝামেলা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার ঘটনা এসব কিছুই জানতাম না । তবে দিদি আপনি বেশ বুদ্ধিমতি ভাগ্যিস সিঁথির মোড়ে যাওয়ার চিন্তাটা মাথায় এসেছিল ।
ভালোই লাগলো ভ্রমণ কাহিনী পড়ে ।
লঞ্চে উঠতে আমারও একটু ভয় ভয় লাগে সাঁতার পারি না সেজন্য । তারপরও বৌদি ভয় কাটিয়ে লঞ্চে উঠতে পেরেছে দেখে ভালো লাগলো । তাছাড়া আপনারা যেখানে গিয়েছেন সেখানে বেশ কিছু মন্দিরও রয়েছে। সব থেকে মজা লাগলো যে বিষয়টি যে আপনারা এত ঘোরাঘুরি করেও সেই আটটার সময় গাড়িতে উঠতে পারলেন। এর থেকে বরং আপনারা ওখানকার আশেপাশটা ঘুরে দেখলে সাড়ে সাতটার লঞ্চে করে ফিরতে পারতেন । এত কষ্ট করে তে হতো না । যাইহোক নতুন এক অভিজ্ঞতা হয়েছে নিশ্চয়ই। এরকম সিচুয়েশনে বিরক্ত লাগলেও মজাও লাগে খুব।
দিদি এই কথা গুলো আরেকবার পড়েছিলাম।এখন আবার পড়লাম। তবে সেবার থেকে আজকে একটু বেশি লিখেছেন। ছবিগুলোও নতুন দিয়েছেন। যায়হোক প্রতিদিন নতুন নতুন ঘটনা ঘটে,নতুন নতুন জিনিষ জানি,নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হয়। ধন্যবাদা দিদি।
আমার ও কখনো লঞ্চে উঠা হয় নি।খুব সুন্দর ছিল আপনার অভিজ্ঞতাটি দিদি।তারপর আপনারা মাত্র 20 মিনিটে কতটা ঝুঁকি নিয়েছিলেন ,নতুন জায়গায় খুব সমস্যা হয়।ভাগ্যিস আপনার চেনা জায়গা ছিল তাছাড়া ড্রাইভার নতুন বলেই সমস্যা।সবমিলিয়ে ভালো হয়েছে একইদিনে বাসে, লঞ্চে চড়া সঙ্গে পুরোনো বাড়ি ও মন্দির উপভোগ করা।
লঞ্চে কখনোই উঠলাম না আমি।তাই জানা ও নেই লঞ্চে উঠলে কেমন লাগে!কবে যে সে অভিজ্ঞতা হবে!বাসে টিনটিনের অভিজ্ঞতা কেমন ছিলো জানাবেন কিন্তু।কারণ,প্রথম বার সব কিছুর অভিজ্ঞতাই আমার মনে হয় মনে রাখার মতোই হয়।ব্ল্যাক্স ভাইকে তাহলে খাওয়া দাওয়া নিয়ে ভালোই খাটিয়েছেন হিহিহি।
বাগবাজার ঘাটের পর কুঠিঘাটে যাওয়ার ডিসিশন টা ভালই ছিল তা না হলে এরকম একটি থ্রিলিং বেপার মিস করে যেতেন। কুঠিঘাটে যেতে লঞ্চে ৪৫ মিনিট মানে বেশ অনেক সময় আপনারা লঞ্চে ছিলেন। লঞ্চ জার্নি আমার ভীষণ ভাল লাগে। আপনাদের দেখে ইচ্ছে করছে আবার লঞ্চে ঘুরে আসি। আপনাদের কুঠিঘাট থেকে ফিরতি পথে লঞ্চ না পাওয়া, পরবর্তী লঞ্চ পেতে রাত হয়ে যাওয়া, আপনার উপস্থিত বুদ্ধির কারনে দ্রুত সিথিরমোড় যাওয়া সবকিছু আমার কাছে থ্রিলিং একটা বেপার মনে হচ্ছে। যাই হোক সর্বোপরি আপনারা ঘুরাটা উপভোগ করেছেন এটাই বড় কথা। টিনটিনের প্রথম বাসে চড়ার অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই ভাল ছিল। ধন্যবাদ দিদি।
যা কথাটা শুনে একেবারে থ হয়ে যাওয়ার কথা। বৌদির লঞ্চে উঠা এবং টিনটিনের বাসে উঠা হলো একদিনে বাহ। এবং শেষভাগে ড্রাইভার এর দেরী করা। সবমিলিয়ে বেশ ভালো ঘোরাঘুরি করেছিলেন দিদি।।
বৌদির পোস্ট এ মনে হয় একবার পড়েছিলাম। সেদিন অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লেগেছিলো। লঞ্চ ভ্রমন আমি ভয় পাইনা। কারণ আমাদের গ্রামে যেতে হলে সব সময় লঞ্চ এ করেই যেতে হয়। ৩-৪ ঘন্টা লঞ্চ এই থাকতে হয়। তাই লঞ্চ এর ভয় আমার নেই বললেই চলে। খুবই উপভোগ করে সময় গুলো কাটিয়েছেন দিদি। জানতে পেরে খুবই ভালো লেগেছে।
দিদি গত পোষ্টে দেখেছিলাম বাগবাজার ঘাটে ৷
আর আজকে কুঠিঘাটে
টিনটিন বৌদি আপনি ছোট দাদা সবাই মিলে তো অনেক ইনজয় করেছেন ৷আর শুনে খুবই ভালো লাগলো যে বৌদি প্রথম লঞ্চে উঠেছে ৷ টিনটিন তো শুধু খাওয়াতেই ব্যস্ত ৷