পরিশ্রম করলে সফলতা আসবে || দুই বন্ধুর মুলা চাষ
আজ - মঙ্গলবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাই-বোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি মুলা চাষের বাম্পার ফলন নিয়ে। হয়তো এই পোস্ট দেখার পর একটি অবাক অনুভূতি ফিল করবেন। তাই চলুন আর দেরি না করে মেন অংশে যাওয়া যাক।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
---|
এই শীতে আমরা দুই স্থানে মূলা বুনেছিলাম। তবে আজ যেখানে আমরা মূলা তুলছি এই জায়গাটার উদ্দেশ্য ছিল মুলার শাক খাওয়ার জন্য। আমরা দুই বন্ধু পর্যাপ্ত পরিমাণে মূলার শাক খেয়েছি। অবশেষে যখন আর মুলার শাক খাওয়া হয়নি তখন রেখে দিয়েছিলাম মুলা বড় করার জন্য। মারুফের ধারণা ছিল শিকড়সহ তুলে ফেলে শাক খাওয়া আমি বলেছিলাম শুধু পাতাগুলো কেটে নিয়ে গেলে আবার পাতা বড় হবে এবং নিচে মূলা বড় হতে থাকবে। যাইহোক শেষ পর্যন্ত এটাই বাস্তব রূপ।
আমি যখন মুলা তুলছিলাম তখন এত বড় বড় দেখে সত্যিই অবাক হয়েছিলাম। আপনারা ফটোতে যে বাচ্চাটাকে মুলা হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখছেন ওটা আমার একটা স্টুডেন্ট। কিছুদিন আগে আমার সাথে এখানে আসার চেষ্টা করেছিল কিন্তু আমি ওকে বলেছিলাম বাবু আমার বাসায় ফিরতে রাত হয়ে যাবে তাই মাঝপথ থেকে ঘুরে গেছিল। সেদিন বিকাল টাইমে এসেছিল। তবে আজ দুপুর টাইমে আমাকে পুকুরপাড়ে দেখতে পেরে রাস্তা থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে গেছে। আসার পর সে তো আমার সবজি দেখে অবাক। বাচ্চাটা বারবার বলতে থাকলো স্যার আপনি এত সবজি করতে পারেন। ছেলেটা আমাদের মহল্লার একটি চাচাতো বোনের ছেলে। খুবই চঞ্চল এবং লেখাপড়ায় ভালো এক্সপার্ট। তবে কিছু ভুলের কারণে রোল নম্বর ১ থেকে ৩ হয়ে গেছে এবার। যাইহোক যতক্ষণ আমি আর মারুম মুলা উঠায় ছিলাম আমাদের সাথে ছিল। অবশ্য তার হাতে থাকা মূলাটা ওভাবেই বাসায় নিয়ে চলে গেছে। ইচ্ছা ছিল অনেকগুলো দেওয়ার কিন্তু ছোট্ট বাচ্চা না জানি কোথায় কিভাবে পড়ে যায় তাই দিতে পারি নাই। তবে সে এত বড় একটা মুলা আমার থেকে পাওয়াই অনেক খুশি। যেহেতু এটা পুকুরপাড়, অনেকগুলো পুকুর তারপর ফাঁকা মাঠ পেরিয়ে রাস্তা, তাই কিছুটা পথ তাকে এগিয়ে দিয়ে এসেছিলাম।
হাইব্রিড জাতের মুলা হাওয়ায় বেশি তোলার প্রয়োজন হয় না। মাত্র কয়েকটা মূলা তুললে দুজনার তরকারি হয়ে যায়। তবে মাঝেমধ্যে মুলাগুলো তোলার সময় ভেঙে মাটির নিচে থেকে যায়। আজকে অনেক যত্ন সহকারে তোলার চেষ্টা করেছিলাম। মাটি অনেকটা নরম থাকায় ভালোভাবে তুলতে সক্ষম হয়েছি। এবার চলুন পিছনের কিছু কাহিনী তুলে ধরে আপনাদের সামনে। আমি যখন প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলাম এখানে বিভিন্ন শাকসবজি ফলাবো তখন অনেকেই বলেছিল ও জায়গায় শাকসবজি করা মোটেও সম্ভব নয়, বন জঙ্গলে ঘেরা তবে সাধ্যমত চেষ্টার ফলে মাটি তৈরি করতে পেরেছি। লেবার নিয়ে প্রথম মাটি কুপিয়ে নিয়েছিলাম এরপরে দুজনার প্রচেষ্টায় এবং সে থেকে পরিচর্যার ফল আজ হাতে পাচ্ছি এভাবে।
আমি কখনো ভাবিনি যে এত বড় বড় মুলা হবে তবে। এই মুলা গাছগুলো থেকে একবার নয় দুইবার করে পাতা কেটে দিয়ে শাক রান্না করে খেয়েছি। আর সবচেয়ে অবিশ্বাস্য কথা যে এখানে তেমন একটা বেশি সার দেওয়া হয়নি। মূলা গুলোর জায়গাতে খুব জোর ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম সার দেওয়া হয়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য কথা। দুইবার দিয়েছিলাম পাতা বড় করার জন্য যেন শাক খেতে পারে। যেহেতু এটা পুকুরের মাটি নিচের মাটি উপরে তুলে দেয়া হয় পুকুর কাটার সময়, তাই বুঝতে পারছেন জমির নিচের মাটি বেশি উর্বর থাকে যার জন্য এত সুন্দর সবজি হয়েছে। তবে এতটা অবাক করার মত হবে তা কল্পনার বাইরে।
মুলাগুলো উঠানোর পরে উপর থেকে পাতাগুলো ভেঙ্গে নিলাম। চাইলে মাঝখানের নরম পাতাগুলো শাক রান্না করে খাওয়া যেত। তবে এদিকে অনেক পালন আর লালশাক রেছে। যার জন্য পাতাগুলো সব ছাগলের খাবার হিসেবে বস্তায় পুরে নিয়ে গেলাম। ইচ্ছে ছিল মুলার জুস বানিয়ে আপনাদেরকে দেখাবো। তবে এই মুহূর্তে আমার ব্যালেন্ডার নাই, আশা ছিল খুব শীঘ্রই একটা বেলেন্ডার ক্রয় করব কিন্তু আর্থিক দিক থেকে তেমন একটা ভালো পর্যায়ে দিনকাল চলছে না বলেই আপনাদের মুলার জুস বানিয়ে এই পর্যন্ত দেখাতে সক্ষম হয়নি। তবে ইচ্ছে রয়েছে খুব শীঘ্রই ইচ্ছা পূরণ করব মুলার জুস বানিয়ে। আশা করি আপনারা পাশেই থাকবেন।
💌আমার পরিচয়💌
আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)। বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। মড়কা বাজার, গাংনী,মেহেরপুর এ গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরি স্কুল নামক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারি শিক্ষক । ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও সৌর প্যানেল নিয়ে রিসার্চ করতে পছন্দ করি। প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। দীর্ঘদিনের আমি পাঙ্গাস মাছ চাষী এবং বিরহের কবিতা লেখতে খুবই ভালোবাসি। |
---|
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
ব্লগিং মোবাইল | Infinix hot 11s |
ক্যামেরা | camera-50mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৬ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্ট, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
This post was selected for Curación Manual (Manual Curation)
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 7/8) Get profit votes with @tipU :)
ঠিক বলেছেন পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই। আপনি যেখানে শ্রম দিবেন তার ফল আপনি পাবেন। দুই বন্ধুর মুলা চাষ করার উদ্যোগ দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনার এত বড় মুলা দেখে আমিও একটু অবাক হয়েছি। আপনার চাচাতো বোনের ছেলে এই মুলাটি পেয়ে অনেক খুশি হয়েছে দেখে বোঝা যাচ্ছে। অবশ্যই একদিন মুলার জুস তৈরি করে আমাদের দেখাবেন সে আশায় রইলাম।
এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি। পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই। আর তার থেকে বড় কথা নিজের ক্ষেতের সবজি খাওয়ার মজাই আলাদা। হাইব্রিড হওয়ার কারণে মুলাগুলো অনেক বড় বড় হয়েছে। খুব তৃপ্তি সহকারে রান্না করে খাবেন বোঝাই যাচ্ছে নিজের হাতের লাগানো জিনিস বলে কথা।
একদম ঠিক কথা বলেছেন, নিজেদের হাতে প্রচেষ্টা চাষ করা সবজি
পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি তার একটি উদাহরণ আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পেরেছি। আপনি মুলা চাষ করে চাহিদার থেকেও অনেক বেশি ফলন পেয়েছেন দেখে ভাল লাগল। আপনার শেয়ার করা প্রতিটি ছবি খুব সুন্দর এবং প্রানবন্ত লাগছে। আপনার চাচাত বোনের ছেলে দুষ্ট হলেও খুব কিউট। ভাইয়া পোস্টে অনেক বানান ভুল আছে দেখে নিবেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভয়েস টাইপিং করেছি তো অনেক ভুল ছিল। পরে সংশোধন করার সময় পায় নাই।
আসলে পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি। আপনারা দুইজন বন্ধু অনেক পরিশ্রম করে মুলা চাষ করেছেন। পরিশেষে সফল হয়েছেন। আসলে বর্তমান সময়ে অনেকেই কৃষি কাজ করতে চায় না। আপনাদের এই কৃষি উদ্যোগকে আমি স্বাগতম জানাই। আপনারা পরিশ্রম করার পরে সুন্দর ফসল উৎপাদন করতে পেরেছেন । ফসল তুলতে পেরে নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগলো। আসলে নিজে কোন কিছু চাষাবাদ করে ফসল উৎপাদন করার অনুভূতি সত্যি অন্যরকম হয়ে থাকে। এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
চেষ্টা করলে সুযোগ সুবিধা মত আপনি অনেক কিছু করে দেখাতে পারেন।
পরিশ্রম করলে একদিন সফলতা আসবেই। আপনি এবং মারুফ ভাই ভালোই উদ্যোগ নিলেন। মুলাগুলো দেখতে অনেক বড় হয়ে গেছে। তবে আপনি খুব সুন্দর করে মুলার ফটোগ্রাফি করলেন। আশা করি একসময় মুলার জুস বানিয়ে দেখাবেন। তবে আমি কখনো মুলার জুস বানায়নি এবং খাওয়া হয়নি। ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য।
মুলা জুস বানানোর বিষয়টা মারুফ সহায়তা করলে করে দেখাবো
আমি নিজেও অবাক হয়ে গেলাম এত বিশালাকালের মুলা হয়েছে দেখে।আমরা নিজেরা কখনো করিনি। কিন্তু পরিশ্রম করলে সফলতা আসে এটা সত্যি বলেছেন। আর পুকুরের মাটি হওয়ার কারণে এগুলোর উর্বরতা অনেক বেশি। আপনাদের পরিশ্রমের ফলাফলে এই মুলার চাষ পেয়েছেন। যাই হোক দুজনের চাহিদা পূরণ করতে পেরেছেন শুনে ভালো লাগলো। তারপর মুলার জুস এর কথায় আসি, হাফিজ ভাইয়া শুনলে কিন্তু খুবই খুশি হবে মুলা দিয়ে জুস তৈরি করলে।
আমরা দুই বন্ধু একসাথে থাকলে অনেক কিছুই করতে পারি।