মিস করি অতীতের সেই মুহূর্তগুলো

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম। শুভ রাত্রি আমার বাংলা ব্লগ ও স্টিমিয়ান বন্ধুরা। আশা করছি আল্লাহর অশেষ রহমতে সকলে ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের অনেক অনেক দোয়া এবং সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আমিও বেশ ভাল আছি।
আমার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে আবারও একটি ধন্যবাদ এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদেরকে চমৎকার একটি দিন অতিক্রম করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।

শীতকাল মানেই আবারও সেই কুয়াশার সকাল এবং সরিষা ফুলের ক্ষেত নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে স্কুলে যাওয়ার দিনগুলোকে মনে করা। যদিও এখন আর বন্ধুদের সঙ্গে ইস্কুলে যাওয়া হয় না কিংবা খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে খেজুরের রস খাওয়ার আনন্দ উপভোগ করা হয় না তবে তারপরেও দিনগুলো বেশ মনে পড়ে মাঝে মাঝে।

snow-6914042_1280.jpg

Pixabay
ফেসবুকে নোটিফিকেশন গুলো চেক করছিলাম এবং নিউজ ফিড ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম। এমন সময় হঠাৎ করেই একটি কুয়াশায় সকালে এক বন্ধু পোস্ট করেছে এবং সেখানে সে উল্লেখ করেছে শীতের দিনে কুয়াশা উপভোগ এবং শীতের সকাল।

বন্ধুর এই চমৎকার পোস্ট দেখে আমার ছোটবেলার কথা মনে হয়ে গেল এবং আমি আমার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য উপস্থিত হলাম।

এইতো সেদিনের কথা। যদিও শীতের দিনে কনকনে শীত পড়তো তবে তারপরেও খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে কুয়াশার ভেতরেই রাস্তা থেকে শুকনো খড় খুঁজে আনতাম এবং সকালে লাইট জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিতাম। আমি ছাড়াও আরো এলাকায় যারা বয়স্ক মানুষ রয়েছে তারা এসে সকলে মিলে আগুন পোহাতোএবং একসঙ্গে গল্প করত।।

তবে এই দিনগুলো যেন এখন শুধু আমার কাছে স্মৃতির খাঁচায় বন্দি।

rural-education-6091705_1280.jpg

Pixabay

এরপর সকাল আটটায় বাসায় ফিরে গোসল করে এবং সকালে নাস্তা শেষ করে বন্ধুদের সঙ্গে সরিষা ক্ষেতের ভেতর দিয়ে স্কুলে যেতাম। স্কুলে যাবার সময় স্কুলের ব্যাগ রেখে পাখির বাসায় ছুটে চলতাম পাখির বাচ্চাগুলো ধরার জন্য।

বাচ্চা গুলোকে হাতে নিয়ে আদর করতাম এবং বেশ কিছুক্ষণ পর বাচ্চা গুলোর মা যখন কান্না করবে এটা ভেবে আবার পাখিকে তার বাসায় রেখে আবারো স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা দিতাম।

এদিকে স্কুলের ঘন্টা পড়ে গেছে এবং ক্লাস শুরুর পূর্ব মুহূর্তে কোনরকম স্কুলে গিয়ে ক্লাস শুরু করতাম এবং ক্লাসে অমনোযোগী থাকতাম।

bangladesh-3561318_1280.jpg
Pixabay

বিকেলে পাড়ার সকল বন্ধুরা মিলে একটি খেলার মাঠে জড়ো হতাম এবং সেখানে খেলাধুলা করতাম। বিশেষ করে শীতকালের প্রধান খেলা গুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল মুরগির পাখা দিয়ে এবং খেজুর গাছের ডাল দিয়ে ব্যাট তৈরি করে ব্যাডমিন্টন খেলতাম।

মূলত তিনটা মুরগির পাখাকে একটি ছোট্ট বাঁশের তৈরি গোল এর মাধ্যমে ফেদার তৈরি করতাম এবং আমাদের খেলার রেকেট এর কাজ করতো খেজুর গাছের সেই মোটা ডাল।

যখন খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য গাছের এক অংশকে পরিষ্কার করে দেওয়া হয় এবং সেখান থেকে মোটা মোটা খেজুরের ডাল কাটা হয় সেই ডাল দিয়ে এবং মুরগির পাখা দিয়ে অনেক ব্যাডমিন্টন খেলতাম।

football-1273154_1280.jpg

Pixabay

বিকেলে সকল ছেলে-মেয়ে মিলে একসঙ্গে মাঠে ফুটবল খেলতাম এবং গোল্লাছুট খেলতাম। আমার এখনো মনে আছে। শীতকালে সরিষা ক্ষেতের পাশে আমরা ফুটবল খেলতাম এবং তখন যদি সরিষা ক্ষেতের মালিক খেতে আসতো তখন আমরা দৌড়ে পালিয়ে যেতাম।

তাছাড়াও মাঝে মাঝে আমাদের খেলার সামগ্রীগুলো যখন মসুর গম অথবা সরিষা ক্ষেতের মাঝে চলে যেত আমরা কৃষকের ভয়ে খুব লুকিয়ে লুকিয়ে বলগুলো কিংবা সামগ্রীগুলো খুজে আনার চেষ্টা করতাম।

সন্ধ্যা পার হয়ে যাবার পরেও আমাদের খেলার যেন শেষ ছিল না এবং আনন্দের যেন শেষ ছিল না। তবে সেই দিনগুলো এখন কোথায়?? সব দিনগুলো যেন স্মৃতির পাতায় মিশে আছে এবং দিনগুলো এখন যেন অতীতের মায়ায় পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে। তবে তারপরেও অনেক অনেক মিস করি অতীতের সেই দিনগুলো।

abb.gif

Amarbanglablog Discord server link


kind regards

@steem-for-future

Sort:  
 9 months ago 

আসলে যারা গ্রামে বাস করে তারা এই স্মৃতিগুলোকে খুব কাছ থেকে অনুভব করতে পারে। আপনার এই পোস্ট পড়ে আমিও আপনার মত আমার অতীতের দিন গুলোকে আবার নতুন করে স্মরণ করছি। আসলেই সব সময় অতীতের দিনগুলো সেরা হয়।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

আমি প্রায় 18 বছরের ও বেশি সময় গ্রামে থেকেছি। মূলত গ্রামের স্মৃতিগুলো আমার এখনো বেশ মনে পড়ে।

 9 months ago 

ঠিকই বলেছেন ছোট বেলার স্মৃতিগুলো আসলে এখন আমাদের কাছে শুধু অতীত । সে স্মৃতি গুলো মনে করলে সত্যিই খুব ভালো লাগে । ছোটবেলা যখন শীতের দিনে গ্রামের বাড়িতে যেতাম তখন আমরাও রোদের পাশে বসে রোদ পোহাতাম আবার ছোলা পুড়িয়ে খেতাম । শীতকালীন বিকেলবেলার খেলা গুলো আসলেই অনেক মজার ছিল । মুরগির পাখা ও খেজুর গাছের ডাল দিয়ে কিভাবে ব্যাট তৈরি করতেন সেটা খুব দেখতে ইচ্ছা করছে । সত্যি সেদিনগুলোর কথা মনে পড়লে আবার সেই ছোট বেলায় ফিরে যেতে ইচ্ছা করে ।

 9 months ago 

মুরগির পাখা দিয়ে ফেদার তৈরি করা হতো
। অর্থাৎ তিনটা মুরগির পাখাকে একটি বাশের কঞ্চির ভেতরে প্রবেশ করানো হতো এবং এটি যখন উপরে ছুড়ে মারা হতো তখন এটি অরিজিনাল ফেদারের মতোই ঘুরতো এবং খেজুরের ডালের ব্যাট দিয়ে আমরা সেটাকে খেলতাম। তবে আপু এখন আর এটা দেখানো সম্ভব না। প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে খেলাটা। এখন সবাই বাজার থেকে কিনে ব্যাডমিন্টন খেলে।

 9 months ago 

ভাই,আস্তে আস্তে বড় হচ্ছি আমাদের জীবন থেকে মনে হচ্ছে, আনন্দ গুলি চলে যাচ্ছে। আগেকার সময়টায় আমাদের সুন্দর কাটতো মুহূর্তগুলি। শীতকাল মানেই সরিষা ফুলের ক্ষেতে বন্ধুদের সাথে সুন্দর মুহূর্ত যাপন করা ও কুয়াশা ভরা সকাল ভীষণ ভালো লাগে। শীতের সকালে প্রাইভেট পড়তে যেতাম, অনেক কষ্ট করে। সে দিনটাই অনেক ভালো ছিল। অনেক ভালো লাগতো। সকালে কিছু দেখা যাইতো না। সকালবেলায় উঠেই তো আমরা সূর্যের তাপের জন্য অপেক্ষা করে থাকি এবং আগুন পোহায়। শীতকাল আসলেই বিকালবেলায় সব বন্ধু মিলে ব্যাডমিন্টন খেলতে যেতাম এবং আপনি ঠিক বলেছেন সেই সময় মুরগির পাখা দিয়ে আমরাও কত ব্যাডমিন্টন খেলেছি কিন্তু এখন অনেক ব্যাডমিন্টন কিনতে পারি কিন্তু, সে সময়টা আর নেই।খেজুরের রস খেতে যেতাম, সন্ধ্যাবেলায় কি দারুন লাগতো। বলে বোঝানো যাবে না। আপনি তো দেখছি অতীতের কথা মনে করাই দিচ্ছেন ভাইয়া, আমরা খেলা খেলতাম ফসলের পাশে এবং বল যদি ফসলের মধ্যে যেত, আমরা ভয়ে ভয়ে লুকিয়ে বলগুলো নিয়ে আনার চেষ্টা করতাম। অনেক ভালো লাগলো। অনেক কিছু স্মৃতি মনে পড়ে গেল। ঠিক বলেছেন ভাইয়া দিনগুলো হারিয়ে গিয়েছে অতীতে। অতীতের দিনগুলি খুবই মিস করি।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

সত্যি ভাই অনুভূতিগুলো আপনার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পেরে আমি আনন্দিত। সব সময় অনেক অনেক ভালো লাগে যখন পোস্ট এর সাথে কেউ সামঞ্জস্য রেখে মন্তব্য করে এবং আপনার মত আরো অনেকে আছে যাদের সঙ্গে আমারও ছেলেবেলা গুলো মিলে যায়।

শৈশবের স্মৃতি নিয়ে আমার এই ব্লগ পূর্ণতা পেয়েছে আপনার চমৎকার মন্তব্যের মাধ্যমে। শুভেচ্ছা রইল প্রিয় ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 59249.61
ETH 2526.11
USDT 1.00
SBD 2.46